বিরাট-বিতর্কই প্রথম নয়, ভারতীয় ক্রিকেটে অধিনায়কের নৌকো টলমল হয়েছে বারবার

ইদানিং বেশ কয়েকদিন হয়ে গেল খবরের শিরোনামে রয়েছে বিরাট কোহলি এবং ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড বিসিসিআইয়ের তরজা। অক্টোবর মাসে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে বিরাট কোহলি যখন ঘোষণা করেছিলেন, তিনি পরবর্তীতে টি-টোয়েন্টিতে ভারতের অধিনায়ক থাকতে চান না, তখন থেকেই বিরাট কোহলি এবং বোর্ডের মধ্যে একটা সমস্যা শুরু হয়েছিল। নিউজিল্যান্ড সিরিজে তিনি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেললেন না। তাঁর জায়গায় অধিনায়ক হিসেবে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেললেন রোহিত শর্মা। 

আবার টেস্ট সিরিজেও বিশ্রাম নিলেন বিরাট কোহলি। তখন থেকেই মনে হচ্ছিল এবারে কোন একটি বড় সমস্যা শুরু হতে চলেছে ভারতীয় ক্রিকেটে। তার মধ্যেই ঘোষণা হয়ে গেল দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের দিনক্ষণ। টেস্ট দল ঘোষিত হল বিরাট কোহলিকে ক্যাপ্টেন রেখে। কিন্তু তারপরেই বোমা ফাটালেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এবং জয় শাহ। ঘোষণা করে দেওয়া হল, সীমিত ওভারের এক দিবসীয় আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতের অধিনায়কত্ব করবেন রোহিত শর্মা। সাদা বলের ক্রিকেট শুরু হল রোহিত যুগ। 

প্রথম দিকে বিরাট কোহলির কাছ থেকে কোন প্রতিক্রিয়া না পাওয়া গেলেও জল্পনা-কল্পনা চলছিলই অনেকদিন ধরে। যে বিরাট রোহিত এক টেবিলে ভাত খান না, ইনস্টাগ্রামে একে অপরকে ফলো করেন না, তাঁরা এই অধিনায়কত্ব বিতর্ক নিয়ে এতটা চুপচাপ কি করে রয়েছেন। তার মধ্যেই আবার বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বলে বসলেন, তিনি নাকি নিজে অনুরোধ করেছিলেন বিরাটকে টি-টোয়েন্টি অধিনায়কত্ব না ছাড়তে। অন্য দিকে, বিরাট কোহলি তৈরি করলেন আরও বড় বিতর্ক। আনুষ্ঠানিকভাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে বিসিসিআইকে এক হাত নিয়ে বিরাট কোহলি ঘোষণা করে দিলেন না সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, না বিসিসিআই কেউ তাঁকে টি-টোয়েন্টি অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়ার সময় ফোন করেননি। রীতিমতো বিতর্কের ঝড় উঠে গেল বিসিসিআইয়ের বিরুদ্ধে। তবে অধিনায়কত্ব বিষয় নিয়ে বিরাট কোহলি নিজের দিকটা পরিষ্কার করতে চাইলেও, বিসিসিআই-এর ইতিহাসে অধিনায়কত্ব নিয়ে বিতর্ক খুব একটা নতুন বিষয় নয়। ৯০ বছরের ইতিহাসে ভারতীয় ক্রিকেটে অধিনায়কত্ব নিয়ে বহু সাইক্লোন বয়ে গিয়েছে।  কিছু কিছু বিতর্ক এতটাই তীব্র হয়েছে  শেষকালে ঢোক গিলতে হয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডেকেই। ভারতীয় ক্রিকেটের এমন কিছু অধিনায়ক-বিতর্ক নিয়েই আড্ডা জমাতে এই লেখা।

সালটা ১৯৫৮, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ খেলছে ভারত। সেই সময় প্রথম টেস্টে অধিনায়ক করা হলো পলি উমৃগরকে। দ্বিতীয় টেস্টে অধিনায়ক হিসেবে খেললেন গুলাম আহমেদ। প্রথম টেস্টে যদিও গুলাম আহমেদকে খেলতে দেখা যায়নি। দ্বিতীয় টেষ্টে অধিনায়ক থাকার পরে তৃতীয় টেস্টের পর ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেন গুলাম আহমেদ। তৃতীয় টেস্টে অধিনায়কত্ব করলেন পলি। কিন্তু তারপরেই আবার বিতর্ক। চতুর্থ টেস্টের সকালে পলির কাছে এল একটা টেলিগ্রাম। সেই টেলিগ্রামে লেখা, বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট রতিবাই প্যাটেল চাইছেন যেন অফস্পিনার জেসু প্যাটেলকে ১১- র মধ্যে নেওয়া হোক। কিন্তু ততক্ষণে পলি নিজের মতো করে দল তৈরি করে নিয়েছেন। টেলিগ্রাম আসার পরেই ভয়ঙ্কর চটে গেলেন পলি উমৃগর। টস হবার আগেই অধিনায়কত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলেন পলি। চতুর্থ টেস্টের জন্য অধিনায়ক নির্বাচন করা হলো বিনু মানকরকে। 

পঞ্চম টেস্টে আবার পালাবদল। বিনুকে সরিয়ে পঞ্চম টেস্টের জন্য অধিনায়ক হলেন হেমু অধিকারী। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ শেষ হয়ে গেলে ইংল্যান্ড টেস্ট সিরিজের জন্য আবারও নতুন অধিনায়ক। ইংল্যান্ড সিরিজের জন্য অধিনায়ক নির্বাচিত হলেন ডিকে গায়কোয়াড়। এক বছরের মধ্যেই সবার অধিনায়ক বদল করল ভারতীয় ক্রিকেটের বিগ ব্রাদার বিসিসিআই। 

এরপর চলে আসা যাক ১৯৭০ এর দশকে। সেই সময় ভারতের ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মনসুর আলি খান পতৌদি। হঠাৎ করেই মনসুর একদিন জানতে পারলেন, তাঁকে ভারতীয় ক্রিকেটের অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এবং যিনি জড়িয়েছেন তিনি হলেন তদানীন্তন বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট বিজয় মার্চেন্ট। জুনিয়র পতৌদি যেখানে প্রথম বারের জন্য বিদেশে সিরিজ জয় করে অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত সেখানে তাঁকে কেন হঠাৎ করে অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হল? যদিও, মনসুর আলি খান পতৌদির অপসারণের পিছনে বিজয় মার্চেন্টের ব্যক্তিগত স্বার্থ কাজ করেছিল বলে অনেকেই দাবি করেন।

বিষয়টা জানার জন্য যেতে হবে একটু পিছনে। সালটা তখন ১৯৪৬, ভারত এবং ইংল্যান্ডের সফর হওয়ার কথা। সে সময় ভারতের স্টার পারফরমার বিজয় মার্চেন্ট। সকলে প্রায় ধরেই নিয়েছিলেন, ভারতের অধিনায়ক হতে চলেছেন বিজয়। অপরদিকে, অধিনায়কত্ব দাবি করে রয়েছেন দুই রাজঘরনা ব্যক্তিত্ব। একজন হলেন পতৌদির নবাব ইফতিকার আলি খান এবং অপরজন হলেন ভিজির রাজা। ভিজি সরে গেলে ইফতিকার আলি খান এবং বিজয় মার্চেন্ট এর মধ্যে অধিনায়কত্ব নিয়ে লড়াই চলতে থাকে। সেই সময় বিজয় দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছেন। কিন্তু ইফতিকার রাজ ঘরানার ব্যক্তিত্ব। তাই তদানীন্তন বোর্ড সভাপতি প্রায় জোর করেই বিজয় মার্চেন্টের জায়গায় অধিনায়কত্ব দিয়ে দিলেন ইফতিকার আলি খানকে। কার্যত সেই দিনের শোধ বিজয় তুললেন ইফতিকার আলি খানের পুত্র মনসুর আলী খান পতৌদির ওপর দিয়ে।

রাতারাতি অধিনায়ক হয়ে গেলেন তরুণ ক্রিকেটার অজিত ওয়াদেকার। শোনা যায় তিনি নাকি বাজারে গিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে। বাড়ি ফেরার সময় তিনি দেখেন তার বাড়ির সামনে সাংবাদিকদের ভিড় লেগে রয়েছে। তখন তাদের কাছ থেকে অজিত ওয়াদেকার শোনেন তিনি নাকি পরবর্তী সিরিজের জন্য ভারতের অধিনায়ক হয়েছেন। পতৌদি একেবারেই বিষয়টিকে ভালোভাবে গ্রহণ করলেন না। আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার অজুহাতে ক্রিকেট থেকে কিছুদিনের জন্য সরে গেলেন মনসুর। ঐতিহাসিকভাবে ওয়াদেকারের নেতৃত্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে জয়লাভ করলো ভারত। কিন্তু, ১৯৭৪ সালে ইংল্যান্ডের কাছে অত্যন্ত খারাপ ভাবে পরাজিত হয়ে ফিরে আসার পর ওয়াদেকার অবসর নিলেন। তার জায়গায় আবারো নিযুক্ত হলেন মনসুর আলি খান পতৌদি।

এর পরবর্তী ঘটনাটি ঘটেছিল ১৯৭৯ সালে। ভারত তখন ইংল্যান্ড সফর থেকে পরাজিত হয়ে ফিরছে। এই সময় দলের অধিনায়ক ছিলেন শ্রীনিবাস ভেঙ্কটরাঘবন। ফ্লাইটের একটি ঘোষণায় শ্রীনিবাস জানতে পারেন, তাঁকে ভারতের অধিনায়ক হিসেবে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার জায়গায় ভারতের অধিনায়ক হয়েছেন সুনীল গাভাস্কার। অথচ দু'জনেই একই ফ্লাইটে করে দেশে ফিরছেন। 

কিন্তু সুনীল গাভাস্কারের অধিনায়কত্ব বারবার পরিবর্তিত হতে থেকেছে। হঠাৎ করেই ১৯৮৩ বিশ্বকাপের কয়েক বছর আগে ভারতীয় ক্রিকেটের অধিনায়কত্ব চলে যায় কপিল দেবের হাতে। সেই সময় কপিল দেব ছিলেন দুর্দান্ত একজন অলরাউন্ডার। ১৯৮৩ বিশ্বকাপে ভারতকে জয়লাভ করিয়েছিলেন কপিল দেব নিখাঞ্জ। কিন্তু তার বছর খানেকের মধ্যেই তার হাত থেকে অধিনায়কত্ব ছিনিয়ে নেওয়া হয়। কপিল দেবের পরিবর্তে আবারও ভারতের অধিনায়ক হিসেবে ফিরে আসেন সুনীল গাভাস্কার। এমনকি, ১৯৮৪ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে কলকাতা টেস্ট থেকেও বাদ পড়েন কপিল দেব। শোনা যায়, আগের ম্যাচে একটি খারাপ শট খেলার জন্য তাকে পরের ম্যাচে নির্বাসন দিয়েছে বিসিসিআই। যদিও পরবর্তীতে আবারও কপিল দেবকে অধিনায়ক করার একটা প্রক্রিয়া শুরু হয়।

কিন্তু সেখানে আছে আবারও একটা বিতর্ক। ১৯৮৭ সালের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর। কপিল দেব নিজেকে অধিনায়কত্ব থেকে ততক্ষনে সরিয়ে ফেলেছেন। বোর্ডের একজন কর্মকর্তা মহিন্দর অমরনাথকে ফোন মারফত জানিয়েছেন, তিনি হতে চলেছেন ভারতের পরবর্তী অধিনায়ক। তিনি বেশ ভালো মেজাজে রয়েছেন। চন্ডিগড় স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচ। ফ্লাইট থেকে নেমেই যেই না নিজেকে অধিনায়ক প্রমাণ করতে যাবেন মহিন্দর অমরনাথ, তখন হঠাৎ করেই তিনি জানতে পারেন তিনি নন বরং ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের অধিনায়ক হয়েছেন দিলীপ বেংসরকার। হঠাৎ করেই অপ্রস্তুত অবস্থায় পড়ে যান মহিন্দর অমরনাথ। 

তারপরের ঘটনাটি ঘটে ১৯৮৯ সালে, যখন দিলীপ বেংসরকারকে সরিয়ে ক্যাপ্টেন হলেন কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্ত। সেই সময়ে রবি শাস্ত্রী চেয়েছিলেন ভারতের অধিনায়ক হতে। কিন্তু, বিসিসিআইয়ের তরফ থেকে কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্তকে করা হলো ভারতের অধিনায়ক। সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল, কিন্তু সমস্যা শুরু হল যখন পাকিস্তান সফরে অত্যন্ত খারাপ পারফর্মেন্স করলেন কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্ত। ক্যাপ্টেন হিসেবে এত হতশ্রী পারফরম্যান্স দেখে বিসিসিআই তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত নিল অধিনায়ক বদলের। তখন রবি শাস্ত্রির অধিনায়ক হওয়া প্রায় পাকা। কিন্তু হঠাৎ করেই বিসিসিআইয়ের তরফ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, অধিনায়ক হতে চলেছেন মহম্মদ আজহারউদ্দিন। কিন্তু সেই সময় সম্পূর্ণরূপে অধিনায়ক দিয়ে তৈরি ছিলেন না আজহারউদ্দিন। এমনকী রমন লাম্বা যদি শেষ মুহূর্তে হাতে চোট না পেতেন তাহলে হয়তো আজহারউদ্দিন করাচি টেস্টে জায়গাই পেতেন না। কিন্তু তারপরেও হঠাৎ করে আজহারউদ্দিনকে অধিনায়ক করায় বিতরকের মুখে পড়েছিল বিসিসিআই।

তারপরের গল্প আরও অদ্ভুত। ১৯৯৯ সালে যখন অস্ট্রেলিয়া সিরিজে গো-হারা হেরে ভারতীয় দল ফিরে আসছে, তখন তদানীন্তন অধিনায়ক সচিন তেন্ডুলকর জানতে পারেন তিনি অধিনায়ক পদ থেকে ছাঁটাই হতে চলেছেন। তিনি জানতে পারেন, শুধুমাত্র দক্ষিণ আফ্রিকার তিনটি টেস্টের জন্য তাঁকে অধিনায়ক রেখেছে বিসিসিআই, তার পরেই তার জায়গা দখল করবেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। নিজের আত্মজীবনীতে বিষয়টিকে অত্যন্ত অপমানজনক বিষয় হিসেবে উল্লেখ করেছেন মাস্টারব্লাস্টার। তিনি লিখেছেন, "সিরিজের শেষে, আমাকে হঠাৎ করেই অধিনায়ক পদ থেকে ছাঁটাই করে দেওয়া হল বিসিসিআইয়ের তরফ থেকে। বিসিসিআই এর পক্ষ থেকে কেউ আমাকে ফোন পর্যন্ত করলেন না, বা আমাকে জানানোর প্রয়োজন মনে করলেন না। বিষয়টা আমার জন্য অত্যন্ত অপমানজনক ছিল।"

তবে এই সমস্ত বিতর্ককেও ছাপিয়ে যায় সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে গ্রেগ চ্যাপেলের বিতর্ক। ২০০৫ সালে দাদা যখন ভালোভাবেই ভারতের অধিনায়কত্ব সামলাচ্ছেন সেই সময় হঠাৎ তাঁর সঙ্গে বিতর্ক শুরু হলো গ্রেগ চ্যাপেলের। চ্যাপেলকে দাদাই ভারতের হেড কোচ হিসেবে নিযুক্ত করার জন্য বিসিসিআইকে জানিয়েছিলেন। কিন্তু সেই কোচ গ্রেগ চ্যাপেল নিজেই সৌরভকে অধিনায়ক থেকে বাদ দেন। বিসিসিআইকে একটি ই-মেইল পাঠিয়ে গ্রেগ চ্যপেল বলেছিলেন, সৌরভ নাকি মানসিক  এবং শারীরিক ভাবে অধিনায়ক হওয়ার জন্য অক্ষম। এরপরেই সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় কিছুদিনের জন্য। তারপরে তাঁকে আবার অধিনায়ক হিসেবে ফিরিয়ে আনা হলেও, খুব একটা বেশি দিনের জন্য অধিনায়ক তিনি ছিলেন না।

অধিনায়ক হিসেবে সাফল্য অর্জন করলেও রাহুল দ্রাবিড়ের সঙ্গেও এই একই রকম আচরণ করেছিল বিসিসিআই। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে যখন ২০০৫ সালে দল থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়, তখন ভারতীয় ক্রিকেট দলের হাল ধরেছিলেন রাহুল দ্রাবিড়। যদিও তাঁকে সে ভাবে অধিনায়কের মর্যাদা কোনও দিনই তাঁকে দেওয়া হয়নি বলে দ্রাবিড় সমর্থকরা দাবি করেন। বরং তিনি সবসময় আড়ালেই থেকে গিয়েছেন।

এই পরম্পরারই যেন অংশ বিরাট।  বিসিসিআইয়ের তরফ থেকে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেওয়ার পরে অধিনায়ক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো বিরাটকে। এই নিয়ে বিরাট-পন্থীরা বেশ ক্ষুব্ধ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের উপরে। কিছু রিপোর্টের দাবি রোহিত শর্মা নাকি সীমিত ওভারের ক্রিকেটের সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিজে নিতে চেয়েছিলেন, তাই বাদ পড়েছেন কোহলি। 

বিরাট কোহলি এবং বিসিসিআই-এর মধ্যে সম্পর্কে এখনও খুব একটা ভালো হয়নি। তার মধ্যেই ওমিক্রন ভাইরাসের হাতছানির মধ্যেই দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যেতে চলেছে ভারতীয় ক্রিকেট দল। সেখানে রোহিত শর্মার অধিনায়কত্বে ক্রিকেট খেলবেন বিরাট কোহলি। ২২ গজের বিতর্কের তালিকায় কি যুক্ত হবে আরও কিছু নতুন নাম? উত্তরটা দেবে সময়।

More Articles