সুপার আই-কিউ, সপ্তাহে ৮০ ঘণ্টা কাজ! কোন চাকরির জন্য লোক খুঁজছেন এলন মাস্ক?
Elon Musk DOGE Hiring: মাস্ক এবং রামাস্বামী ব্যক্তিগতভাবে, বাছাই করা সেরা ১% আবেদনকারীদের পর্যালোচনা করবেন।
এলন মাস্ক এখন খোদ আমেরিকার প্রশাসনের খাস লোক। ট্রাম্পের বিশেষ বিভাগের দায়িত্ব তাঁরই কাঁধে। দ্বিতীয়বারের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে ট্রাম্প এলন মাস্ক আর বিবেক রামাস্বামীকে ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সির (DOGE) দায়িত্ব দিয়েছেন। এই সরকারি দক্ষতা বিভাগের মাথা হচ্ছেন এলন মাস্ক। এবার এই বিভাগে চাকরি দিচ্ছেন মাস্ক, খুঁজছেন যোগ্য ও দক্ষ প্রার্থী। বিজ্ঞাপন দিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম X-এ। কেমন চাকরি? কেমন আবেদনকারী খুঁজছেন মাস্ক?
DOGE-এর একটি নিজস্ব এক্স অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়েছে এই সপ্তাহের শুরুতেই। ইতিমধ্যেই ১.২ মিলিয়ন ফলোয়ার হয়ে গিয়েছে ট্রাম্পের এই বিভাগের। বৃহস্পতিবারই চাকরির বিজ্ঞপ্তি পোস্ট করেছেন মাস্ক। লেখা হয়েছে, হাজার হাজার আমেরিকান যারা DOGE-এ আমাদের সাহায্য করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে বিভাগ৷ DOGE অবশ্য স্পষ্ট করে জানিয়েছে, খুচরো 'পার্ট-টাইম আইডিয়া জেনারেটর' খুঁজছে না তারা। এই বিভাগে কাজ করতে গেলে থাকতে হবে 'সুপার হাই-আইকিউ'। মার্কিন প্রশাসনের অস্বাভাবিক খরচ কমাতে প্রতি সপ্তাহে যারা ৮০ ঘণ্টার বেশি কাজ করতে ইচ্ছুক।
আরও পড়ুন- ভোটে জেতানোর পুরস্কার! ট্রাম্পের প্রশাসনে যে দায়িত্ব পেলেন এলন মাস্ক
কিছুকাল আগেই ভারতে নারায়ণ মূর্তি বলেছিলেন, নতুন প্রজন্মের উচিত সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা কাজ করা। অর্থাৎ, যদি ১ দিন ছুটি ধরা হয় তাহলে সপ্তাহে ৬ দিনে অন্তত ১২ ঘণ্টার কাছাকাছি কাজ। মাস্ক বলছেন সপ্তাহে ৮০ ঘণ্টা কাজ করতে হবে। মানে ৬ দিন ধরলে, দিনে ১৪ ঘণ্টার কাছাকাছি। চাকরির জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষা বা অভিজ্ঞতা কী দরকার? এই নিয়ে স্পষ্ট কিছুই জানায়নি মাস্কের বিভাগ। বলা হয়েছে DOGE-এ আবেদনকারীদেরকে তাদের বিস্তারিত তথ্য X-এ সরাসরি মেসেজ করে পাঠাতে বলা হয়েছে। তবে, শুধুমাত্র 'ভেরিফায়েড' প্রিমিয়াম X সাবস্ক্রিপশন আছে এমন ব্যবহারকারীরাই আবেদন করতে পারবেন। অর্থাৎ মাসিক ৮ ডলার সাবস্ক্রিপশন দেন এমন মানুষই আবেদন করতে পারবেন।
মাস্ক এবং রামাস্বামী ব্যক্তিগতভাবে, বাছাই করা সেরা ১% আবেদনকারীদের পর্যালোচনা করবেন। যদিও এই আবেদনকারীদের র্যাঙ্কিংয়ের মানদণ্ডও নির্দিষ্ট করা হয়নি। মাস্ক স্পষ্ট জানিয়েছেন, এটি ক্লান্তিকর কাজ হতে চলেছে। এর ফলে প্রচুর শত্রুও তৈরি করবে এবং এর ক্ষতিপূরণও শূন্য। মাস্ক এবং রামাস্বামী স্পষ্ট করে দিয়েছেন, অনেক সরকারি আমলাই সামান্য কাজ করেন বা প্রায় কোনও কাজই করেন না। তারা লোকেদেরকে সেটুকুই বলেন যা তারা শুনতে চান এবং কাজের চেয়ে বেশি অর্থ উপার্জন করেন। মাস্ক যেমন লোক চাইছেন তারা এই সরকারি আমলাদের মতো হবেন না একেবারেই।
আরও পড়ুন- বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তি এবার মার্কিন প্রশাসনে! যেভাবে বিশ্ব দখলের পথে এগোচ্ছেন মাস্ক
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত মঙ্গলবার DOGE গঠনের ঘোষণা করেছিলেন। বলেছিলেন মার্কিন প্রশাসনে খরচ কমানো, অতিরিক্ত বিধি-নিষেধ কমানো এবং ফেডারেল এজেন্সি পুনর্গঠন করার জন্য মাস্ক এবং রামাস্বামীকে দায়িত্ব দিয়েছেন তিনি। এই বিভাগটি ফেডারেল সরকারের বাইরে থেকেই কাজ করবে। সরকারের বাইরে থেকেই সরকারকে পরামর্শ এবং নির্দেশনা দেবে।
ট্রাম্প DOGE-এর কাজের জন্য একটি সময়সীমাও নির্দিষ্ট করেছেন। এর লক্ষ্য ২০২৬ সালের ৪ জুলাইয়ের মধ্যে কাজ শেষ করা। মাস্ক চাকরি দিচ্ছেন ঠিকই, কিন্তু যে অস্বাভাবিক কাজের সময় ও 'আইকিউ' তিনি চাইছেন তা পূরণ হবে তো? ধীরে ধীরে বিশ্বে ১৪ ঘণ্টা কাজ কি স্বাভাবিক হয়ে ওঠার পথে? মাস্কের মতো মানুষ, বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তি যখন প্রশাসনের অংশ হয়ে ওঠেন বা নিয়োগের জায়গায় চলে আসেন, স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে চাকরির পরিবেশ নিয়ে। মুনাফা সর্বোচ্চ করার লক্ষ্যে মাস্কের মতো উদ্যোগপতিরা কি কর্মীদের অধিকারকে আরও পিষে ফেলার দিকেই এগোচ্ছেন না?