টিকিট পাননি, পাঁচ বছরে যাদবপুরের জন্য কী করলেন মিমি চক্রবর্তী?
Mimi Chakraborty Jadavpur MP Performance: ২০১৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ১১ টি সিনেমা করেছেন মিমি। এই বছরই বাংলাদেশের তারকা শাকিবের সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করছেন।
মিমি চক্রবর্তী। তৃণমূলের টিকিটে যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে জিতে ২০১৯ সালে সাংসদ হয়ে দিল্লি পাড়ি দেন। পাড়ি দেন বললে অবশ্য খুবই ভুল বলা হয়। মাঝে সাঝে তিনি ওপাড়ায় গেছেন বটে, কিন্তু সাংসদ হিসেবে ঠিক কী ভূমিকা পালন করেছেন তা ২০২৪ সালে এসে দলই তাঁকে বুঝিয়ে দিয়েছে। টিকিট পাননি যাদবপুর আসন থেকে। তৃণমূল তালিকা ঘোষণার ঢের আগেই মিমি সাংসদ পদকে বিদায় বলে বেরিয়ে এসেছেন রাজনীতি থেকে। শোনা যাচ্ছে, নিজের কেন্দ্রে তাঁকে পাওয়া যায়নি। অত্যন্ত দুর্বল পারফর্ম্যান্সের জেরেই মিমিকে এবার টিকিট যে দেওয়া হবে না তা জানতেন অভিনেত্রী। তাই নিজেই সরে এসেছেন। তাহলে পাঁচ বছরে কী করলেন মিমি?
এই পাঁচ বছরে সংসদে তাঁর উপস্থিতির হার ২১ শতাংশ মাত্র! মাত্র ৭ টি বিতর্কে অংশ নিয়েছেন তিনি। এর মধ্যে সোনারপুর আর চম্পাহাটি স্টেশনে ফ্লাইওভার চেয়েছেন। বিদ্যাধরপুরে লেভেল ক্রসিং চেয়েছেন আর গড়িয়া স্টেশনে পৃথক প্ল্যাটফর্মের দাবি ছাড়া নিজের লোকসভার জন্য কোনও সওয়াল তিনি করেননি। ২০১৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ১১ টি সিনেমা করেছেন মিমি। এই বছরই বাংলাদেশের তারকা শাকিবের সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করছেন। সবই চলছে কেবল যাদবপুর কেন্দ্রে আর তিনি নেই। রাজনীতিতে আর মিমি নেই।
আরও পড়ুন- মিমি, নুসরত এমনকী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও! সংসদে সবচেয়ে কম উপস্থিত এই ‘তারকা’রা
২০১৯ সালে যাদবপুর আসনে তিনি ৬,৮৮, ৪৭২ ভোটে জেতেন বিজেপির অনুপম হাজরা আর সিপিআইএমের বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যকে হারিয়ে। সেই সময় একটি ভিডিও খুবই ভাইরাল হয় যাতে রেগে গিয়ে মিমি যা বলেছিলেন তার সারবত্তা হচ্ছে তিনি মানুষের জন্য কাজ করতে এসেছেন তাই মানুষের কৃতজ্ঞ থাকা উচিত। মিমির এই চিৎকার, এই ঔদ্ধত্য কি সাধারণ মানুষের পাওনা ছিল? দলের কি চোখে আসেনি এই অহঙ্কার?
মিমি নিজের সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করেছিলেন তিনি সাংসদ কোটা থেকে কত টাকা নিজের এলাকার জন্য খরচ করেছেন। পাঁচবছরে একজন সাংসদ ২৫ কোটি টাকা পান নিজের এলাকায় খরচের জন্য। মিমি ১৭ কোটি টাকার মতো খরচা করেছেন বলে হিসেব দিয়েছেন। ২০১৯ সালের ভোটের আগে হলফনামায় জানিয়েছিলেন তাঁর আয় বছরে ১৫ লাখের কিছু বেশি। দু'খানা বিলাসবহুল গাড়ির মালিক মিমি। একটির দাম ১১ লাখ ৭২ হাজার ২৫০। আর একটি অডি গাড়িও আছে তার। দাম ৩০ লক্ষ ৫১ হাজার টাকা। প্রায় ৯ লক্ষ টাকার সোনা আছে। থাকেন ১ কোটি ২০ লাখের বাড়িতে। স্থাবর-অস্থাবর মিলে সম্পত্তির পরিমাণ ২.৫০ কোটি টাকা প্রায়।
পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষে তাঁর মনে হচ্ছে তিনি রাজনীতির মানুষ নন। এই পাঁচ বছরে সাংসদকে এলাকায় কতবার দেখা গেছে? স্থানীয় মানুষ খুব ভালো করে জানেন টলিউডের এই নায়িকা সাংসদ তাঁদের ধরাছোঁয়ার বাইরে। ভাঙড়ের মতো সংবেদনশীল বিধানসভা কেন্দ্রে, যা যাদবপুর লোকসভারই অন্তর্গত সেখানে দেখা যায়নি মিমিকে। তৃণমূল এই কেন্দ্রে সায়নী ঘোষকে প্রার্থী করেছে। মিমি তালিকা ঘোষণার আগেই 'আলবিদা' বলেছেন যাদবপুর কেন্দ্রের সেই মানুষদের যাদের ভোট তাঁকে দিল্লি পাঠিয়েছিল।