যে কোনও মুহূর্তে হিটস্ট্রোক হতে পারে আপনারও! যে উপসর্গ দেখলেই সতর্ক হবেন...

Heatstroke: এই গরম আবহাওয়ায় ভালোভাবে নিজের শরীরকে হাইড্রেটেড না রাখলেই চরম বিপদ।

মাত্রাছাড়া তাপপ্রবাহ চলছে দেশজুড়ে। সকাল হতে না হতেই প্রচণ্ড দাবদাহে জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে চামড়া, শুকিয়ে যাচ্ছে দেহের জল। গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই এমন প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ চলছে দেশের প্রায় সর্বত্র। পশ্চিমবঙ্গে তাপপ্রবাহ থেকে বাঁচতে স্কুলগুলি ছুটি দেওয়া হয়েছে আপাতত। তবে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে যে পূর্ব ভারতে তাপপ্রবাহের এই চরম পরিস্থিতি কমপক্ষে আরও চার দিন অব্যাহত থাকবে। তাপমাত্রা যত বেড়েছে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে হিটস্ট্রোক। গত রবিবার এক পুরস্কার অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পরেই মহারাষ্ট্রে হিটস্ট্রোকে ১৩ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। রাস্তায় বেরোলেই মাথা ঘোরা, তেষ্টা, ঘামে জেরবার হয়ে পড়া থেকে বাঁচতে কী করণীয়? বিশেষজ্ঞরা বলছেন এই গরম আবহাওয়ায় ভালোভাবে নিজের শরীরকে হাইড্রেটেড না রাখলেই চরম বিপদ।

তীব্র তাপপ্রবাহ হিটস্ট্রোকের কারণ। সাধারণত শরীরের অতিরিক্ত উত্তাপের কারণেই এই স্ট্রোক হয়। উচ্চ তাপমাত্রায় দীর্ঘক্ষণ থাকার ফলে বা গরম আবহাওয়ায় শারীরিক পরিশ্রমের কারণেও এমনটা হতে পারে। তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে বেড়ে গেলেই শরীরের যত্ন প্রয়োজন। হিটস্ট্রোক হচ্ছে সবচেয়ে মারাত্মক তাপজনিত অসুস্থতা। এতে শরীরের তাপমাত্রা এত দ্রুত বৃদ্ধি পায় যে ঘামের মতো স্বাভাবিক প্রক্রিয়াও শরীরকে ঠান্ডা করতে ব্যর্থ হয়।

সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন অনুসারে, শরীরের তাপমাত্রা ১০ থেকে ১৫ মিনিটের জন্য খুব বেশি বেড়ে যেতে পারে এবং যদি আক্রান্ত ব্যক্তি জরুরি চিকিৎসা না পান তাহলে স্থায়ী অক্ষমতা বা মৃত্যুও হতে পারে।

আরও পড়ুন- ভারতে হু হু করে বাড়বে তাপপ্রবাহ, ধ্বস নামবে অর্থনীতিতেও? যে আশঙ্কা দানা বাঁধছে

হিটস্ট্রোকের লক্ষণ

মানসিক অবস্থার পরিবর্তন, কথাবার্তা অসংলগ্ন হয়ে যাওয়া

জ্ঞান হারানো

গরম, শুষ্ক ত্বক এবং অতিরিক্ত ঘাম

খিঁচুনি

কীভাবে হিটস্ট্রোক প্রতিরোধ করবেন?

হিটস্ট্রোক এড়াতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো প্রচুর পরিমাণে জল খাওয়া এবং শরীরকে হাইড্রেটেড রাখা। বিশেষজ্ঞরা গ্রীষ্মকালীন পানীয় যেমন ডাবের জল, পুদিনার জল, লেবু জল, তাজা ফলের রস এবং বাটারমিল্ক খেতে বলেছেন বারেবারে।

প্রতি ২-৩ ঘণ্টা অন্তর সানস্ক্রিন প্রয়োগ করে আপনার ত্বক তীব্র রোদে পোড়া থেকে বাঁচতে পারে।

হালকা, ঢিলেঢালা, সুতির পোশাক পরুন শরীর ঠান্ডা রাখার জন্য এবং সরাসরি সূর্যের আলো থেকে বাঁচতে অবশ্যই মাথা ঢেকে রাখুন।

রোদে বের হওয়ার সময় অবশ্যই ছাতা ব্যবহার করুন এবং যখনই সম্ভব সরাসরি সূর্যালোক এড়িয়ে চলুন।

আরও পড়ুন- খোদ ওয়ারেন হেস্টিংসের পছন্দ ছিল এই পদ, ডায়েট যুগেও কেন ভরসার নাম গরিবের ‘পান্তা’

খাবারের সঙ্গে অবশ্যই তাজা ফল এবং সবজির রস খান।

দিনের বেলা আপনার ঘরের জানালা এবং পর্দা বন্ধ রাখুন, বিশেষ করে আপনার বাড়ির যে অংশে রোদ বেশি পড়ে সেই দিকে। ঠান্ডা হাওয়া যাতে ঢুকতে পারে সেই জন্য রাতে এগুলি খুলে ফেলুন।

বর্তমান আবহাওয়ায় উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত নয় একেবারেই। আমিষ খাবার গরমের সময় দেহে জলের অভাব সৃষ্টি করে কারণ এই ধরনের খাবার হজম করতে সময় লাগে।

হজম প্রক্রিয়া দীর্ঘ হলে তা শরীরে তাপ বাড়ায়, ডিহাইড্রেশন ঘটায়। পেট ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে বা শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে চা এবং কফির পরিবর্তে লেবু জল, ডাবের জল, বাটারমিল্ক এবং ইলেক্ট্রোলাইট সমৃদ্ধ তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে বেশি। মশলাদার খাবার একেবারেই এড়িয়ে চলা উচিত।

More Articles