কী দিন চেয়েছিলেন আর কী পেলেন মণিপুরের সেই নগ্নিকারা?

Manipur Violence: আজকের মণিপুর দেখাচ্ছে, বন্দুকের নল নয়, পুরুষ-অঙ্গেই রয়েছে সমস্ত ক্ষমতার ভাণ্ডার। যা ক্রমাগত তাক করা রয়েছে মণিপুরের মেয়েদের দিকে।

দৃশ্য ১

খুব কাছেই সন্তানের জন্মের মুহূর্ত। যে কোনও সময় শরীর কুঁকড়ে উঠতে পারে প্রসববেদনা। ভাঙতে পারে জল। সেই অবস্থাতেই জঙ্গল, মাঠ পেরিয়ে প্রাণপণ দৌড়চ্ছেন অন্তঃসত্ত্বা। নিজের সম্ভ্রম, শরীরটুকু সামলে দৌড়েই চলেছেন। যে ভাবেই হোক বাঁচাতে হবে সন্তানকে। সেই সন্তান যে এখনও পৃথিবীর আলোটুকু পর্যন্ত দেখার সুযোগ পায়নি। পিছনে দাউদাউ করে জ্বলছে ঘর। সে সব কিছু ছেড়ে পালাচ্ছেন বছর তিরিশের হিঙ্গবল। যিনি কিনা আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই জন্ম দেবেন সন্তানের। যাঁর ঠাঁই হবে সিসিপুরের অন্ধকার একটি অস্থায়ী শিবিরে। অপুষ্টিতে ভোগা শীর্ণ শরীর বিদ্রোহ করে উঠবে। বহু চেষ্টাতেও এক ফোঁটা দুধ শরীর থেকে টানতে পারবে না সদ্যোজাত। না, সদ্য মা হওয়া মহিলাদের জন্য কোনও বিশেষ সুবিধা এই শিবিরে নেই। থাকা সম্ভবও নয়। আপাতত সন্তানের জন্য বিকল্প দুধের ব্যবস্থা করতে পারবেন কি হিঙ্গবল, আগুনে রাত, সাপখোপ ঘেরা জঙ্গল পেরিয়ে সন্তানের জন্ম দিতে পেরেছিলেন, সেই সন্তানকে বাঁচাতে পারবেন কি!মুখে তুলে দিতে পারবেন দুধের ফোঁটাটুকু? সে রাতে কাদের হাত থেকে পালিয়েছিলেন হিঙ্গবল? পুরুষ, জাতির প্রশ্নে খণ্ড খণ্ড হয়ে থাকা সমাজ, রাজ্য নাকি রাষ্ট্রের হাত থেকে!

দৃশ্য ২

চোখের সামনে ওরা আগুন লাগিয়ে দিল স্বামীর গায়ে। দাউ দাউ আগুনে জ্বলছেন স্বামী। পুড়ে যাচ্ছে গোটা শরীর। পোড়া চামড়ার গন্ধ পাচ্ছেন ৩৫ বছরের বইসি। অনেক চেষ্টা করেছিলেন উন্মত্ত জনতাকে আটকাতে। স্বামীকে বাঁচিয়ে আনার চেষ্টা করেছিলেন প্রাণপণ। পারেননি। চোখের সামনে ছটফট করতে করতে মারা গেল লোকটা। পুলিশে দায়ের হল এফআইআর। পুলিশ এসে সরিয়ে নিয়ে গেল জ্বলাপোড়া দেহ। বইসি না হাতে পেলেন স্বামীর দেহ, না পেলেন এফআইআরের কপি। চারটি সন্তান নিয়ে দিগ্বিদিক অবস্থা বইসি-র। সারা রাত দু'চোখের পাতা এক করতে পারেন না। দগ্ধ স্বামীর চিৎকার শুনতে পান খালি। চোখের সামনে ভেসে ওঠে সেই রাতের ঘটনা। আতঙ্কে দম বন্ধ হয়ে আসে তাঁর। তবু এই বধ্যভূমিতে জেগে থাকেন বইসি। জেগে থাকতে হয় বলে।

দৃশ্য ৩

ইম্ফলের এই রাজবাড়িটি এখন কলেজ। সরকারি ডান্স কলেজ। অন্য সময় পড়ুয়াদের কলকাকলিতে ভরে থাকত ক্যাম্পাস। আজ সেখানে শ্মশানের নীরবতা। এক চোখ শূন্যতা নিয়ে বসে রয়েছেন শুধু বাসন্তী, রিনিতা ও নন্দকিশোরী, কথা বলছেন একে অপরের সঙ্গে। চোখ ভিজে যাচ্ছে বসতবাটির স্মৃতিতে। মে মাসের গোড়ায় মোরে এলাকা থেকে প্রাণ, সম্ভ্রম, শরীর বাঁচিয়ে কোনওমতে পালিয়ে এসেছিলেন তাঁরা। হঠাৎ করেই হিংসার পরিস্থিতি তৈরি হয়ে গেল গ্রামে। জাতিহিংসার নামে বেপরোয়া ভাবে চলল ভাঙচুর, জ্বালিয়ে দেওয়া হল ঘর। চোখের সামনে ছেলেকে মরতে দেখলেন কত বৃদ্ধা মা। মহিলাদের টেনে হিঁচড়ে ঘর থেকে বের করে এনে চলল গণধর্ষণ। সে সব স্মৃতি মনে পড়লে নিজের দেশটাকে নিজের ভাবতে এখন অস্বস্তি লাগছে বেঁচে ফেরা মানুষগুলোর।

আরও পড়ুন: একদিকে রাস্তায় হাঁটছেন নগ্ন মেয়ে, অন্যপ্রান্তে ২ আদিবাসী তরুণীর গণধর্ষণ, চলছেটা কী মণিপুরে?


- 'এই মৃত্যুর উপত্যকা' কি সত্যিই আমার দেশ? 'এই জল্লাদের হত্যামঞ্চের' নামই কি ভারত? সংবিধানে যাকে ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। যেখানে ধর্ম, ভাষা, জাতি এমন নিক্তিতে মেপে বৈষম্য যেখানে অনৈতিক, অসংবিধানিক। তবে সংবিধান তো থাকে মোটা মোটা বইয়ে। দেশ লেগে থাকে উপরের দৃশ্যমালায়। যা দেখে, যা শুনে স্তম্ভিত হতে হয়, ফিরে তাকাতে হয় ক্যালেন্ডারের দিকে। সত্যিই একবিংশ শতাব্দীতেই দাঁড়িয়ে আছি তো আমরা!

ভারতের মধ্যে যে গুটিকতক মাতৃতান্ত্রিক দেশ বেঁচে রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম মণিপুর। সেই মাতৃতান্ত্রিক মণিপুর আজ জ্বলছে। বিগত তিন মাস ধরেই ছারখার হয়ে গিয়েছে জাতি হিংসার নামে। আর সে রাজ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থান বোধহয় মেয়েদের। প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার দুর্দান্ত এক ক্যানভাস যেন মণিপুর মেয়েদের শরীর। তাই তাঁদের যখন তখন টেনে হিঁচড়ে বের করে আনা যায় বাড়ির বাইরে। লুন্ঠন করা যায় শরীর। ছিঁড়ে, উপড়ে ফেলে যাওয়া যায় ক্ষেতের ধারে। কিংবা বিবস্ত্র করে জনসমক্ষে হাঁটানো যায়, করানো যায় প্যারেড। কারণ যৌনহিংসার থেকে মহান 'সবক' আর কী আছে বলুন ধর্মাবতার!

প্রশাসন চুপ, পুলিশ বিকলাঙ্গ। রাষ্ট্র মজা দেখছে। খুঁজে বের করছে অন্য কোন কোন রাজ্যে, কোন কোন জনপদে এমন বর্বরতা আকছার ঘটে। কারণ গত কয়েক বছরে আমরা জেনে গিয়েছি, ডাকাতির চেয়ে শ্রেয় চুরি, খুনের চেয়ে শ্রেয় পঙ্গু করে ফেলে রাখা। এ-ও এক উপশম যেন। আসলে দেশ চলছে দাঁড়িপাল্লায়। 'ক' রাজ্যে নারী নির্যাতনের পরিমাণ ৯৯ শতাংশ,'খ' রাজ্যে ৯৭ শতাংশ। ফলে বলাই যায়, 'খ' রাজ্যের বাসিন্দারা বহুগুণে ভালো আছেন। কারণ 'ক' রাজ্যের থেকে 'খ' রাজ্যে যে নারীর উপর অত্যাচার ২ শতাংশ কম। একে সরকার এবং প্রশাসনের সাফল্য ছাড়া আর কী-ই বা বলবেন। আপনার রাজ্যে 'আচ্ছে দিন' এনে দিয়েছে আমাদের সরকার। অতএব ভোটটা কিন্তু আমাদের প্রার্থীরই প্রাপ্য। প্রশ্ন করবেন ভাবছেন? উহু, প্রশ্ন চলবে না, কারণ সরকার চলছে। এগোচ্ছে ডিজিটাল ভারত।

'রাজা আসে যায়, লাল জামা গায়ে নীল জামা গায়ে', মণিপুর বদলায় না। কংগ্রেস আমলে বদলায়নি, বিজেপি আমলে বদলাবে না। মণিপুর থেকে যাবে মণিপুরেই। মাতৃতান্ত্রিক মণিপুরের একটি বাজার রয়েছে 'এমা' নামে। স্থানীয়রা বলেন এমা মার্কেট। মণিপুরী ভাষায় 'এমা' শব্দের অর্থ মা। মায়েদের বাজার। কেউ কেউ আবার মেইরা পাইবি নামে ডাকেন তাকে। মোদ্দা কথা, মেয়েদের বাজার। সেখানে বিকিকিনি ব্যবসা সমস্তটাই পরিচালিত হয় মেয়েদের দ্বারা। আজও রাজ্যের সীমানা জুড়ে প্রহরা দেন সশস্ত্র মেয়েরা। অদ্ভুত দ্বিচারিতা দেখুন, সেই মণিপুরেই যৌনাঙ্গে গুলি করে মারা হয়েছিল মনোরমাকে। মারার আগে অবশ্য যৌন লালসা মেটাতে ভোলেনি অসম রাইফেলসের সেনারা। তারপর শরীর ভেদ করে গিয়েছিল একের পর এক গুলি। ভেদ করে গিয়েছিল মৃতদেহ। কেন? কী বলবেন একে? শুধুই খুন, না তার চেয়েও বড় কোনও জিঘাংসা, প্রতিহিংসার ছবি। প্রশাসন আইনি পথে গোটা ব্যাপারটাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। আদালতেও তেমন ভাবে সুবিচার পাননি মনোরমা। সেসময় মেয়েদের সুরক্ষার দাবিতে নগ্ন হয়ে হেঁটে গিয়েছিলেন নানা বয়সের মহিলা, দাবি জানিয়েছিলেন সুবিচারের। তাঁরা সকলেই মনোরমার মা। সেদিন মেয়েদের সুরক্ষিত ভবিষ্য়তের জন্য যেভাবে নিজের লজ্জা, সম্ভ্রম ত্যাগ করে পথে নেমেছিলেন মণিপুরের মায়েরা, তা কি আজকের এই দিন দেখবেন বলে? ঝাপসা চোখে রাজ্য জুড়ে রদেভু দেখছেন যেন তাঁরা।

উনিশটা বছর কাটল। কিচ্ছু পাল্টাল না মণিপুরে। সেদিন ওই বারো জন নগ্ন প্রতিবাদী মায়ের ভিড়ে ছিলেন জ্ঞানেশ্বরী। আজ তিনি সত্তর ছুঁই ছুঁই। গলায় ঝরে পড়ে ক্ষোভ। বলেন, 'এটা যুদ্ধপরিস্থিতি। প্রতিবাদ ছাড়া দ্বিতীয় কোনও রাস্তা খোলা নেই আমাদের কাছে।' সেদিনও তো রাস্তায় নেমেছিলেন জ্ঞানেশ্বরীরা, মণিপুরের মেয়েদের জন্য সুরক্ষা চেয়ে। 'আবার তেমন প্রতিবাদ প্রয়োজন, দোষীদের কড়া শাস্তির প্রয়োজন'- বলতে থাকেন জ্ঞানেশ্বরী।

প্রায় দু'দশক আগে সেই নগ্ন আন্দোলনে পা মিলিয়েছিলেন রামানি। ৯৫ বছরে এসে ঝাপসা হয়েছে চোখ। অথচ সেই ঝাপসা চোখেও মণিপুরের পরিস্থিতি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছেন রামানি, যা এতগুলো দিন, এতগুলো মাস ধরে চোখে পড়েনি কোনও সরকার, কোনও মানবাধিকার কর্মীর। কেন? মণিপুরে ভোট নেই বলে? না মণিপুরের ভোটব্যাঙ্ক নিয়ে মাথা ঘামায় না কেন্দ্রে বসে থাকা সরকার। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থেকে যান কেন্দ্রের হাতে বাঁধা পুতুল হিসেবে। মোদি সরকার হ্যাঁ বললে তিনিও হ্যাঁ বলেন। না বললে দু'পাশে মাথা নাড়ান। যেন 'পাপেট' সরকার চলছে মণিপুরে। কিন্তু নবতিপর বৃদ্ধা মনে করেন, উনিশ বছর আগে মেয়েদের জন্য রুখে দাঁড়িয়েছিলেন তাঁরা। আজও মণিপুর জুড়ে সব দিক থেকে চাঁদমারিতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন সেই মেয়েরাই। এটা ভাবলে তাঁর অসহায় লাগে। প্রশাসনের কাছে বৃদ্ধার অনুরোধ, মেয়েদের উপর অত্যাচারের অভিযোগগুলিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখুক প্রশাসন। প্রয়োজন মতো ব্যবস্থা নেওয়া হোক। একই কথা ৭২ বছরের নাঙ্গবির। 'কড়া পদক্ষেপ চাই।' একটা সময় যেভাবে যে যে পথে লড়া সম্ভব লড়েছেন তাঁরা। আজ তাঁরা শারীরিক ভাবে হয়তো অসমর্থ, কিন্তু লড়াইয়ের ময়দান ছাড়তে নারাজ। নাঙ্গবি বলেন, কুকি না মেইতেই, বড় কথা নয়। রাজ্যে মেয়েদের উপর যে কোনও ধরনের অত্যাচার রুখতে সরকারের হস্তক্ষেপ দরকার।

সেদিন মনোরমার জন্য যে ১২ জন বীরাঙ্গনা নগ্ন হেঁটেছিলেন, তাঁরা সকলেই ছিলেন মেইতেই সম্প্রদায়ের। সেদিন অভিযোগের আঙুল ছিল অসম রাইফেলসের একদল সেনার বিরুদ্ধে। আজ সেখানে অন্য পুরুষ, যারা জাতিহিংসার নামে রাজ্যটাকে কার্যত নরক করে তুলেছে। না, মেইতেই বা কুকি নয়, আসল সম্প্রদায় বোধহয় এখানে লিঙ্গ। এখানে ক্ষমতার কথা শেষপর্যন্ত বলে পুরুষ-অঙ্গই। মণিপুরে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এই হিংসা বোধহয় আসলে জাতিহিংসা নয়, লিঙ্গ-হিংসা। যেখানে সব দিক থেকে নিশানায় মেয়েরা। সরকার-প্রশাসন দেখছে বুঝছে সব, তবু চোখে ঠুলি, মুখে কুলুপ এঁটে বসে রয়েছে। 'অচ্ছে দিন'-র খোয়াব-গুড়ে চুবিয়ে রাখতে চাইছে দেশবাসীকে। মানুষ কিছুটা দেখছে। দেখে রিমোট ঘুরিয়ে চলে যাচ্ছে অন্য চ্যানেলে। কারণ এমন সব কিছু দেখে বিষাদ বাড়ে বই তো আর নয়! তার চেয়ে চলো, কার্টুন নেটওয়ার্ক দেখি, কিংবা চিল করি নেটফ্লিক্সে। যেখানে ওয়েবসিরিজে হিংসা, ধর্ষণ, দাঙ্গা দেখে শিউরে উঠব, সিরিজের শেষ অবধি টিকে থাকব সুবিচারের আশা দু'চোখে নিয়ে। আর 'চিঙ্কি', 'চিনা'-দের রাজ্যে মেয়েরা মরে ঝরে থাকবেন ক্ষেতে, আলে। বিবস্ত্র হয়ে হেঁটে যাবেন মানচিত্র ধরে। এ রাজ্য থেকে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে যাবে বিশেষজ্ঞ দল, ও রাজ্য থেকে ছুটে যাবে পর্যবেক্ষক দল। মিডিয়ার সামনে এসে তাঁরা লম্বাচওড়া ভাষণ দেবে। কিন্তু কিচ্ছুটি বদলাবে না মণিপুরে।

একদিন বিশেষ আইনবলে সেনাবাহিনীর হাতে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল, তেমন অশান্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইন হাতে তুলে নেওয়ার। প্রয়োজনে চালানো যেতে পারে নাকি মানুষের উপরে গুলিও। বাচ্চাদের হাতে খেলনা তুলে দেওয়ার মতোই এই আইনের দুর্দান্ত রকম সব সদ্ব্যবহার করেছেন সেনা। জন্ম হয়েছে মনোরমা-দের, মৃত্যুও হয়েছে সারা শরীরে ধর্ষণের আঁচড় আর গুলির ক্ষত নিয়ে। সেই সময় আফস্পা তোলার দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছিল মণিপুর। সেই আফস্পা আজ অনেকটাই ক্ষমতা হারিয়েছে। মাও সে তুং বলেছিলেন, বন্দুকের নলই নাকি ক্ষমতার উৎস। আজকের মণিপুর দেখাচ্ছে, বন্দুকের নল নয়, পুরুষ-অঙ্গেই রয়েছে সমস্ত ক্ষমতার ভাণ্ডার। যা ক্রমাগত তাক করা রয়েছে মণিপুরের মেয়েদের দিকে।

আরও পড়ুন: মণিপুর ঢাকতে বিজেপির চাই একটা শরীর? রাজা তোর কাপড় কোথায়!

সেই মণিপুর, যেখানে মেয়েদের সবসময় দেখা হয়েছে যোদ্ধা হিসেবে। যখন যখন দুর্বৃত্তদের বাড়বাড়ন্ত হয়েছে, অধর্ম চরমে পৌঁছেছে... ভগবদ্গীতায় বলা আছে, সেখানেই নাকি ধর্ম রক্ষা করতে নানা রূপে অবতীর্ণ হয়েছেন ঈশ্বর, সর্বশক্তিমান। মণিপুরে ঈশ্বর তো দূরের, পৌঁছয়নি কেন্দ্রীয় সরকারের একজন দূতও! সেই কবে থেকে মণিপুরে শান্তি ফেরানোর দাবিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে নানা মহল। সেসব আদৌ তিনি ছুঁয়ে পর্যন্ত দেখেছেন কিনা বলা মুশকিল। অসুরের হাত থেকে পৃথিবীকে বাঁচাতে ভগবতীকে ডেকে তুলেছিলেন দেবগণ, সাজিয়ে দিয়েছিলেন অস্ত্রে। মণিপুরে জাগবে না মেয়েরা? আমরা তাঁদের হাতে তুলে দেব না লিঙ্গ-হিংসা রুখে দেওয়ার অস্ত্র? বীরদুহিতাদের রাজ্যে গল্পটা কি পাল্টে যাবে না একদিন ঠিক? সেইদিনটার অপেক্ষায় আজও প্রতিদিন সূর্য উঠছে মণিপুরে।

কমলিকা সেনগুপ্ত সিএনএন নেটওয়ার্ক ১৮ এর পূর্বাঞ্চলীয় সম্পাদক।

অনুলিখন-সোহিনী দাস

More Articles