বলিউডের মন্দারমণি! কেন সব তারকাই মলদ্বীপ ঘুরতে যান?

India-Maldives row : ছুটির সেরা গন্তব্য হয়ে ওঠার পিছনে অন্যতম আরেকটি কারণ হচ্ছে এখানে ওয়ান আইল্যান্ড-ওয়ান রিসর্ট ব্যবস্থা রয়েছে।

ছাপোষা মানুষের 'দি-পু-দা' ভরসা। যারা পকেটে ছাপোষা কিন্তু মনে কিঞ্চিৎ বোহেমিয়ান তাঁদের দৌড় বড়জোর উত্তরবঙ্গের অফবিট ডেস্টিনেশন বা উইকেন্ডে মন্দারমণির ঝাঁ চকচকে রিসর্ট। কিন্তু মুম্বই স্বপ্ননগরীর তারকাদের কি কোনই 'দি-পু-দা' নেই? আলবাত আছে। হাতে অল্পখানি সময় থাকলেই তারা যেখানে যান তা আসলে এখন বড়লোকদের মন্দারমণি বলা যায়। সম্প্রতি সেই অভিজাত মন্দারমণি অর্থাৎ মলদ্বীপ নিয়ে হইচই। হইচই লাক্ষাদ্বীপ নিয়েও। বলিউডের এমন কোনও 'তারকা' নেই যারা মলদ্বীপে ছুটি কাটাতে যাননি। বড় তারকা, মেজ তারকা, উঠতি তারকা- মলদ্বীপে গিয়ে নীল জল সমুদ্র ছুঁয়ে আসেননি এমন কেউই নেই। কত ঘনঘন যে তারা মলদ্বীপ যান তা তাঁদের ইন্সটাগ্রাম প্রোফাইল দেখলেই বোঝা যায়। কিন্তু এত জায়গা থাকতে বলিউড সেলেবদের পছন্দ মলদ্বীপ কেন?

করোনাকালীন লকডাউন পর্বে সকলেই বাড়িতে আটকেছিলেন। সরকার লকডাউন তুলে নিতেই হুড়মুড়িয়ে তারকাদের ছুটতে দেখা যায় মলদ্বীপে। কেন সবাই সেই সময় মলদ্বীপকেই বেছে নিয়েছেন অবসর কাটানোর সেরা জায়গা? এর নেপথ্যে ছিল এয়ার বাবল ব্যবস্থা। মলদ্বীপের সঙ্গে ভারতের এয়ার বাবলের ব্যবস্থাপনা হচ্ছে দু'টি দেশের মধ্যে একটি এমন বন্দোবস্ত যাতে দুই দেশের মধ্যে দুই দিকেই যাতায়াতের যাত্রী বিমান পাওয়া যায়। করোনভাইরাস মহামারীর কারণে বন্ধ হয়ে যায় সেই ব্যবস্থা। ভারত এবং মলদ্বীপ অন্যান্য বেশ কয়েকটি দেশের মতো একটি এয়ার বাবল ব্যবস্থা শুরু করে যার একটি অংশ হিসাবে এই দেশগুলির স্থানীয়রা কর্মসংস্থান, পর্যটন, জরুরি চিকিৎসার জন্য এই দেশগুলিতে যাতায়াত করতে পারে৷ এই দেশগুলির সরকারের জারি করা নিয়ম কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে পর্যটকদের।

 

 
 
 
 
 
View this post on Instagram
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 

A post shared by Sonakshi Sinha (@aslisona)

তাহলে ভারত ও মলদ্বীপের মধ্যে এখন কূটনৈতিক দ্বন্দ্ব কীসের? ভারত, মলদ্বীপের হাইকমিশনার ইব্রাহিম সাহেবকে তলব করেছে, মালেতে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত মলদ্বীপের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেছেন। মলদ্বীপের পর্যটন ব্যবসাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার লক্ষ্যে লাক্ষাদ্বীপের প্রচার দেখার পরই মলদ্বীপের কয়েকজন রাজনীতিবিদ ভারতীয়দের বিরুদ্ধে বিরূপ কিছু মন্তব্যও করেছেন। আসলে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির লাক্ষাদ্বীপ ভ্রমণে যান। সেখানকার ছবি ছড়িয়ে পড়ে দ্রুত। মলদ্বীপের রাজনৈতিক নেতাদের একাংশ মোদিকে 'ক্লাউন', ‘ইজরায়েলের পুতুল' বলে অপমান করতে থাকেন। অথচ ভারতীয় তারকাদের পছন্দের ঠিকানা মলদ্বীপ!

আরও পড়ুন- ফ্যাশনের ‘অ আ ক খ’! যেমন ছিল ভারতের সবচেয়ে ফ্যাশনেবল রানিদের ওয়াড্রব

 

 
 
 
 
 
View this post on Instagram
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 

A post shared by VarunDhawan (@varundvn)

মলদ্বীপকে সেরা ট্রাভেল ডেস্টিনেশন হিসেবে বেছে নেওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো সেখানকার আবহাওয়া। নভেম্বর থেকে এপ্রিল মলদ্বীপ ঘোরার উপযুক্ত সময়। এই সময় গড় তাপমাত্রা থাকে ২৯°সেলসিয়াস থেকে ৩১°সেলসিয়াসের মধ্যে। এই সময়ে বৃষ্টিপাত কম হয় এবং জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে আর্দ্রতাও খুবই কম থাকে। সাদা-বালির সৈকত এবং জলজ অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদের জন্য তাই স্বর্গ মলদ্বীপ। আরব সাগরের এই দ্বীপপুঞ্জে মাত্র ২০০ টি জনবসতি আছে। এর মধ্যে মাত্র ৫০টির মতো দ্বীপেই কেবল পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। মলদ্বীপে সব দ্বীপ দেখতে একই রকম এমন ভাবাটাও ভুল, প্রতিটি দ্বীপের নিজস্ব আকর্ষণ এবং বিশেষত্ব রয়েছে। বেশিরভাগ পর্যটক মাফুশি দ্বীপ পছন্দ করেন। সেখানে প্রায় ৩০টি গেস্ট হাউস রয়েছে।

 

 
 
 
 
 
View this post on Instagram
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 

A post shared by Katrina Kaif (@katrinakaif)

ভারতীয় পাসপোর্ট রয়েছে এমন মানুষদের জন্য ছুটির সেরা গন্তব্য হয়ে ওঠার পিছনে অন্যতম আরেকটি কারণ হচ্ছে এখানে ওয়ান আইল্যান্ড-ওয়ান রিসর্ট ব্যবস্থা রয়েছে। মলদ্বীপ হচ্ছে মূলত একটি দ্বীপপুঞ্জ যেখানে ১,১৯০ টিরও বেশি প্রবাল দ্বীপ রয়েছে। বাকি সমস্ত কোলাহল, সীমানা থেকে দূরে সমুদ্রের বুকে এক দ্বীপপুঞ্জ। এখানকার রিসর্ট এবং অন্যান্য পর্যটন প্রতিষ্ঠানগুলি পর্যটন মন্ত্রকের নির্দেশিকা মেনে চলে, যার ফলে নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্যবিধির মান বজায় থাকে। দ্বীপগুলিতে 'ওয়ান আইল্যান্ড-ওয়ান রিসর্ট' ব্যবস্থা মেনে চলা হয় অর্থাৎ মালদ্বীপে ভ্রমণকারীরা যে রিসর্টে আছেন সেই রিসর্টেই কেবল থাকবেন। ওই দ্বীপে কেবল সেই রিসর্টে তিনিই থাকবেন। যার ফলে মলদ্বীপ অন্যান্য স্থানের তুলনায় অনেক বেশি নিরাপদ। ভারতীয় পাসপোর্ট আছে যাদের তারা মলদ্বীপে আসার পরে ৩০ দিনের ফ্রি ভিসা পান।

ফলে এমন নিরাপত্তা আর এলাহি বন্দোবস্ত পেতে ক্যাটরিনা কাইফ, দিশা পাটানি, টাইগার শ্রফ, বর্তমানে, সোনাক্ষী সিনহা, সোফি চৌধুরী থেকে শুরু করে তারা সুতারিয়া, আদার জৈন, এলি আভরাম, বরুণ ধাওয়ান, তাপসী পান্নু, রাকুল প্রীত সিং, অঙ্গদ বেদী, নেহা ধুপিয়া কে নেই মলদ্বীপ প্রেমীর তালিকায়। এবার লাক্ষাদ্বীপ বনাম মলদ্বীপ দ্বন্দ্বে ভারতীয় তারকারা কি মোদির পাশেই আছেন? মলদ্বীপ কি আর মুম্বইবাসী তারকাদের মন্দারমণি রইবে না? উত্তর সময়ের পকেটেই।

More Articles