অলিম্পিক ও ভারত
অলিম্পিক এ ভারত এর সোনা , রূপো আসেনা মানে কম আসে এই নিয়ে ভিশুন চিন্তা আপামর জনসাধারণের বিশেষত বাঙালির। ব্যাক্তি কেন্দ্রীক নির্ভেজাল চিন্তা ভাবনা আর দুপুর বেলা বেশ ইলিশ মাছের তেল দিয়ে ভাত শুরু করে চাটনি দিয়ে শেষ , শেষ পাতে দই । কিত্তু মোদ্দা কথা হলো অলিম্পিকে সোনা কই ??
চিন এগিয়ে,জাপান এগিয়ে, আমেরিকা সবাই এগিয়ে উগান্ডা , জামাকিকা, চিলি, ইউক্রেন, নেদারল্যান্ড সবাই এগিয়ে, কি হবে ভারতের ?
ভারতের দ্বারা কিছুই কি হবে না ?
কি নেই ভারতের, সব আছে তাও পিছিয়ে পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম সেনাবাহিনী, চতুর্থ বৃহত্তম বিমান বাহিনী আছে তাও ব্যাটা অলিম্পিক এ সোনা নেই।
কিন্তু কেনো?
ওই দিকে দেখাযাক ফুটবল , সব খেলার সেরা বাঙালির তুমি যাই হোক না কেনো প্রাপ্তির নিরিখে তোমার পিছু ছাড়ছে না কেউ।
এই পটভূমিকায় আমাদের গল্প আরম্ভ হলো , হাসতে হোক কাঁদতে ভালোবাসি আমরা সবাই। ছোটো ছোটো জিনিস নিয়ে আমাদের স্বপ্নের শেষ নেই এই সব কিছু নিয়ে অতীত টার ভাবনা আরম্ভ হলো ।
প্রথম বারের জন্য অলিম্পিক এ ভারত যোগদান করে ১৯০০ সালে , 'নরম্যান প্রিটচর্ড' নামক একজন ব্রিটিশ দৌড়বিদ দুটো রূপো নিয়ে আসে তদানীন্তন ব্রিটিশ ইন্ডিয়া র জন্য। তার ইতিহাস টা একটু বলে রাখা দরকার , 'নরম্যান প্রিটচর্ড' এর জন্ম হয় এই কলকাতায় ২৩ শে জুন, ১৮৭৫ , সে কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স এর ছাত্র ছিল। তার পর অলিম্পিক এর আসর বসে বেলজিয়াম ১৯২০ সালে তাতেও প্রতিনিধিত্ব করে আর একজন বঙ্গ সন্তান তিনি হলেন "পূর্মা ব্যানার্জী" ১০০ মিটার ও ৪০০ মিটার এ
(তথ্য : https://en.wikipedia.org/wiki/India_at_the_1920_Summer_Olympics)
আরো আছে, ১৯২৪, 'ট্রেন্স পিট' আমাদের খিদিরপুর এ জন্ম, ও 'নোরা পলি' জন্ম ২৯ সে জুলাই ১৮৯৪ , ব্রিটিশ শাসিত বঙ্গে।
এই উজ্জ্বল আলো গুলো সব বেমানান হয় শুধুমাত্র বর্তমান না পাওয়া গুলো যখন ঘিরে ধরে।
স্বাধীন ভারতের প্রথম অলিম্পিকেও বাঙালির উপস্থিতি আছে "কেশব চন্দ্র দত্ত" ভারতীয় হকি দলের 'হাফ ব্যাক' ।
তবে বোঝা গেলো বাঙালির অলিম্পিক দৌড় কতটা?
এখন কার প্রজন্ম বলবে, কি হয়েছে তাতে হলো তো ৭০,৭৫ বছর আমরা এখনো পিছিয়ে।
সত্যি টা আমরা পিছিয়ে। বর্তমান সময় তেলের দামের আধিক্য আর বেঁচে থাকার নুনতম রোঝগার এর অনুপাত কোনো ভাবেই কোনো 'কেশব চন্দ্র ' অঙ্কে প্রমাণিত করতে পারবেন না আর সেটা সম্ভব ও নয়।
কিন্তু অদ্ভুদ ভাবে দেখা যাচ্ছে ক্রিকেট এ আমাদের কে পিছনে ফেলার মতো বোধ হয় খুব একটা কেউ নেই । কারণ
কারণটা আর কিছু নয় কারণটা ডার্টি পিকচারের ডায়ালগ এর মতো " এন্টারটেইনমেন্ট, এন্টারটেইনমেন্ট আউর এন্টারটেইনমেন্ট"
মানুষ খাচ্ছে কি ? আচ্ছা আমরা সকলেই মানি যে মানিক ,ঋত্বিক, মৃণাল এর সব সৃষ্টি সমাদৃত সর্বত্র,
কিন্তু 'ঋত্বিক ঘটক ' বাবুর কটা ছায়াছবি মানুষ হল এ বসে দেখেছে ?
দেখলে হয়তো আরো কিছু কালজয়ী র উদ্ভাবন হতো।
' নিলাম' শব্দটা আগের রূপ কি ছিল সাধারন মধ্যবিত্ত ভারতীয় র কাছে ? সেটা ছিল একটু ভয় , হারিয়ে ফেলা , ও কিছু নেতিবাচক চিন্তা ভাবনায় মোরা।
আর এখন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স এর নিলাম সারা পৃথিবীর মানুষ হৈ হৈ করে দেখছে ভালোবাসছে আনন্দ করছে, কারণ টাকা আছে আর ওই 'এন্টারটেইনমেন্ট ' ।
আর ছোট্ট গ্রামের মেয়ে টা , শাড়ি পড়ে একের পর এক লাফ দিচ্ছে দুটো ভিউ বাড়ানোর জন্য তাও আবার 'টিক টক ' এ।
ধর তক্তা মার পেরেক চিন্তা ভাবনা , মানুষের যৌক্তিক বুদ্ধি , কাউকে বা কোনো বিষয় কে উৎসাহিত করার মতন আবেগ কে মেরে ফেলে দিয়েছে ' হাতরাশ ' এর মত ছবির প্রতিচ্ছবি তে।
তাই একটু খিল্লি করার মানসিকতা নিয়ে এগণই বেশ আরাম দায়ক।
এন্টারটেইনমেন্ট, জনতা , দু বেলা পেটপুরে ভাত, অনিল আম্বানি, রাফেল, পরিযায়ী শ্রমিক, স্যালারি দিডাকশন, করোনা, ভাইপো, দিদি, কখনো ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স ওয়ান এই সব চিন্তা ভাবনা গুলো যারা ছোটো ছোটো ভাবে একা একা নিজের শরীর এর বাঁধা গুলো কে উড়িয়ে বিশ্ব রেকর্ড করে তাদের কে কুর্নিশ , আর যে সমস্ত খেলা ধুলা বড় বড় মানুষের সরকারি সিলমোহর যুক্ত জুয়ায় পরিণত করে তাদের কে ও কুর্নিশ ।
আমাদেরও তো খেতে পড়তে হবে,
"আমাদেরও তো ইচ্ছে করে কখন কখন,
টুক করে ইলিশ মাছ পড়বে কখন "
যারা আসল গান টা জানেন তারা কিছু মনে করবেন না, ওটাই বাস্তব,
বাকি টা সব.....
মায়া।