ফের রকেট হামলা! গাজার হাসপাতালের পর এবার টার্গেট চার্চ!

Israel-Hamas war: বৃহস্পতিবার রাতে আচমকাই বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে সেন্ট পরফিরাস গ্রিক অর্থোডক্স চার্চ ক্যাম্পাস। বিশ্বের প্রাচীনতম গির্জার মধ্যে একটি এটি।

দু'দিন আগেই গাজার হাসপাতালের উপর নেমেছিল ভয়াবহ হামলা। মুহূর্তে মৃতদেহ হয়ে গিয়েছিল পাঁচশো মানুষ। যার মধ্যে ছিল অসংখ্য শিশু, বয়স্ক ও অসুস্থরা। সেই হামলার দায় গাজার স্থানীয় জঙ্গিসংগঠনের ঘাড়েই চাপাতে চেয়েছিল ইজরায়েল। আর সেই ঘটনার দিন কয়েকের মধ্যেই ফের ইজরায়েলের হামলার মুখে গাজা। এবার সেন্ট্রাল গাজা সিটির একটি গির্জা লক্ষ্য করে হামলা চালাল নেতানিয়াহু বাহিনী। বহু হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার রাতে আচমকাই বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে সেন্ট পরফিরাস গ্রিক অর্থোডক্স চার্চ ক্যাম্পাস। বিশ্বের প্রাচীনতম গির্জার মধ্যে একটি এটি। হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার অভ্যন্তরীণ মন্ত্রক জানিয়েছে, অসংখ্য বাস্তুচ্যূত মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন গাজার ওই চার্চটিতে। আর সেখানেই আকাশ পথে হামলা করে ইজরায়েলি সেনা।

আরও পড়ুন: গাজার শরণার্থীদের জন্য দরজা খুলল মিশর, কতটা চাপে ইজরায়েল!

আশঙ্কা করা যাচ্ছে, গ্রিক অর্থোডক্স চার্চের ওই হামলায় অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হয়েছে। যদিও এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও বিবৃতি দেয়নি ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স। তবে জানা গিয়েছে, অন্তত পাঁচশো জনের কাছাকাছি শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছিলেন ওই চার্চটিতে। বিস্ফোরণের সময় তাঁরা তো ছিলেনই, পাশাপাশি সেখানে উপস্থিত ছিলেন চার্চ কাউন্সিলের অন্তত ৮০ জন সদস্য।

Israel-Hamas war Many feared dead after explosion rocks one of world's oldest churches in Gaza city

ধ্বংসস্তূপের নিচে এমন ভাবে চাপা পড়ে রয়েছেন মানুষ যে, তাঁদের উদ্ধার করা কঠিন হয়ে পড়েছে। কয়েক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। গাজা জুড়ে প্রায় সমস্ত হাসপাতালের অসংখ্য যুদ্ধাক্রান্তদের ভিড়। চারপাশে শুধু হাহাকার আর মৃত্য়ুমিছিল। আর সেই মৃত্যুমিছিলেই এসে জুড়ল আরও অসংখ্য শরীর। যারা কোনও কারণে প্রার্থনা করতে গিয়েছিলেন ওই চার্চে গিয়ে। কিংবা চার্চে আশ্রয় নিয়েছিলেন ঘরবাড়ি ভিটেমাটি হারিয়ে।

গত ৭ অক্টোবর ইজরায়েলে অতর্কিতে হামলা করেছিল হামাস জঙ্গিবাহিনী। তার পরেই হামাসের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা করে দেয় ইজরায়েল। তার পর থেকেই চাঁদমারিতে বিঁধে রয়েছে গাজার অসংখ্য নিরপরাধ মানুষের জীবন। হামাস জঙ্গিরা তাদের বানিয়েছে মানবঢাল আর ইজরায়েল করেছে নিশানা। এই দুয়ের মধ্যিখানে পড়ে মরছে অসংখ্য সাধারণ মানুষ শুধু। এখনও পর্যন্ত ৬ হাজারেরও বেশি রকেট হামলা চালিয়েছে ইজরায়েল গাজার উপর। একটি মানবাধিকার পর্যবেক্ষক দল জানিয়েছে, গাজার উপর ইজরায়েল এখনও পর্যন্ত যত রকেট হামলা চালিয়েছে, তা একত্রিত করলে পারমাণবিক বোমার এক চতুর্থাংশে দাঁড়ায়।

আরও পড়ুন: বন্ধুত্বে অন্ধ! গাজার হাসপাতালে ইজরায়েলি ধ্বংসলীলার দায় অন্য ঘাড়ে চাপাচ্ছেন বাইডেন?

গাজার হাসপাতালে হামলার দায় স্থানীয় জঙ্গি সংগঠনের কাঁধে ঠেলেছিল ইজরায়েল। স্বাভাবিক ভাবেই বিশ্বের মানবাধিকার সংগঠনগুলি তো বটেই, প্রায় কুড়িটির কাছাকাছি দেশ ইজরায়েলের বিরোধিতায় সরব হয়েছে। গাজায় অনিয়ন্ত্রিত হিংসা ছড়াচ্ছে ইজরায়েল বলে অভিযোগ করেছে তারা। একদিন আগেই গাজার শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার কথা জানিয়েছে মিশর। তবে সীমিত সংখ্যক গাজা শরণার্থীকেই ঢুকতে দেওয়ার কথা জানিয়েছে তারা। ইতিমধ্যেই ইজরায়েল সফর সেরেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইটেন, গিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনকও। খুব শিগগিরই ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাকরোঁরও যাওয়ার কথা রয়েছে ইজরায়েলে। তবে যুদ্ধ গোটানোর যে পরিকল্পনা নেই বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সরকারের, তা একের পর এক হামলার মাধ্যমে প্রমাণ করে দিয়েছে তারা। মধ্যিখানে নেই হয়ে যাচ্ছে শুধু হাজার হাজার নিরপরাধ আম মানুষ, যাদের যুদ্ধের সঙ্গে, যুদ্ধের ফলাফলের সঙ্গে যোগটুকুও ছিল না কোনও কালে।

 

More Articles