দ্রুত গতিতে বাড়ছে পুরুষদের লিঙ্গের দৈর্ঘ্য! আনন্দ নয়, চরম ভয়ের কারণ শোনালেন গবেষকরা
Male Genitalia Size: রাসায়নিকের ফলে ছেলে এবং মেয়েদের এখন আগেই বয়ঃসন্ধিকাল চলে আসছে।
বহুকাল ধরেই, পুরুষাঙ্গই ক্ষমতার উৎস এই জাতীয় একটি ধারণা প্রোথিত রয়েছে। তবে সব পুরুষাঙ্গ নয়, দৈর্ঘ্যের নিরিখে বড় পুরুষাঙ্গকে ক্ষমতা, শৌর্য, প্রতিভা ইত্যাদি ইত্যাদির ধারক ও বাহক মনে করা হয়েছে, এখনও হয়। কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে, লিঙ্গের দৈর্ঘ্য তো জৈবিক বিষয়। তা ছোট হবে না বড়, নানা বিষয়ের উপর নির্ভর করে যাতে পুরুষটির কোনও হাতই থাকে না। বহু প্রাচীনকালে বিবিধ নগ্ন পুরুষের ভাস্কর্য, ছবিতে দেখে গিয়েছে পুরুষাঙ্গের আকার (উত্থিত অবস্থাতে নয়) বেশ ছোট। তাহলে ইদানীংকালে পুরুষের যৌনাঙ্গ বড় না ছোট এই নিয়ে এত মাতামাতি কীসের? ১৯৪২ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত পুরুষদের লিঙ্গের আকার নিয়ে একটি সমীক্ষা করা হয়েছিল। দেখা গেছে যে গত ৩০ বছরে উত্থিত লিঙ্গের গড় দৈর্ঘ্য উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, অথচ অনুত্থিত অবস্থায় লিঙ্গের দৈর্ঘ্য একই রয়ে গেছে।
বিষয়টি অনেকের কাছে স্বস্তির, অনেকের কাছে নিরপেক্ষ শোনাতে পারে। কিন্তু এই গবেষণার প্রধান গবেষক বলেছেন বিষয়টি চিন্তার। আমাদের হরমোনের সঙ্গে নানান রাসায়নিকের মিথস্ক্রিয়ার মতো কারণগুলির কারণে লিঙ্গের দৈর্ঘ্য বাড়তে পারে। এই বিশ্লেষণ ও গবেষণাতে গত আট দশকের লিঙ্গ দৈর্ঘ্যের গবেষণার দিকে নজর দেওয়া হয়েছে। সারা বিশ্বের ৫৫,৭৬১ জন পুরুষের তথ্য এই গবেষণাতে ব্যবহৃত হয়েছে। তবে নিজে কেউ নিজের লিঙ্গের দৈর্ঘ্য মেপে সেই তথ্য দিয়েছেন এমনটা নয়, যদি পরিমাপটি কোনও বিশেষ সমীক্ষক করে থাকেন, তাহলেই সেই তথ্য গৃহীত হয়েছে। লিঙ্গের মূল (পিউবো-পেনাইল জংশন) থেকে ডোরসাল পৃষ্ঠের গ্ল্যান্সের ডগা (মেটাস) পর্যন্ত লিঙ্গের দৈর্ঘ্যটি মাপা হয়েছে। অনুত্থিত লিঙ্গের দৈর্ঘ্যে কোনও বৃদ্ধি বা হ্রাস পাওয়া যায়নি। তবে উত্থিত লিঙ্গের দৈর্ঘ্যে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি নজরে এসেছে।
আরও পড়ুন- বিখ্যাত সব ছবি, ভাস্কর্যে পুরুষাঙ্গের আকার এত ছোট কেন? চমকে উঠবেন কারণ জেনে
বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে এবং সমস্ত বয়সের গোষ্ঠীতে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উত্থিত লিঙ্গের দৈর্ঘ্য উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, জানিয়েছেন গবেষকরা। ভৌগলিক অঞ্চল, পুরুষের বয়স এবং জনসংখ্যার বিষয়টি নজরে রেখে দেখা গেছে; গত ২৯ বছরে উত্থিত লিঙ্গের দৈর্ঘ্য ২৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। মাত্র তিন দশকেরও কম সময়ে ১২.৩ সেন্টিমিটার (৪.৮ ইঞ্চি) থেকে ১৫.২ সেন্টিমিটার (৬ ইঞ্চি) বেড়েছে লিঙ্গের দৈর্ঘ্য।
ওয়ার্ল্ড জার্নাল অব মেনস হেলথ-এ প্রকাশিত গবেষণায় গবেষকরা ব্যাখ্যা করেছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে পুরুষদের প্রজনন স্বাস্থ্যের অন্যান্য পরিবর্তনের কারণে, যেমন শুক্রাণুর সংখ্যা হ্রাস পাওয়ার কারণে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে লিঙ্গের আকারের তুলনার বিষয়টি ভাবায়। স্ট্যানফোর্ড মেডিসিনের ইউরোলজি বিভাগের প্রধান গবেষক মাইকেল আইজেনবার্গ জানান, "পুরুষদের প্রজনন স্বাস্থ্যের অন্যান্য সমস্যার যে প্রবণতা আমরা দেখেছি তাতে ভেবেছিলাম পরিবেশগত নানা কারণে পুরুষাঙ্গের দৈর্ঘ্য হ্রাস পেতে পারে।" কিন্তু দেখা গেল বিষয়টা উলটো! কিন্তু আইজেনবার্গ বিশ্বাস করেন, পরিবেশের পরিবর্তনের ফলেই এই বৃদ্ধি ঘটেছে।
আরও পড়ুন- লিঙ্গের দৈর্ঘ্যে ভারতের অবস্থান বিশ্বে কোথায়? যৌনাঙ্গের মাপ নিয়ে অবাক করা তথ্য এল সামনে
"রাসায়নিকের সংস্পর্শে আসা, যেমন কীটনাশক বা স্বাস্থ্যসংক্রান্ত পণ্য, আমাদের হরমোন ব্যবস্থার সঙ্গে নানা মিথস্ক্রিয়া ঘটায়। এই হরমোন বিঘ্নিতকারী রাসায়নিকগুলি আমাদের পরিবেশে এবং আমাদের খাদ্যে বিপুল পরিমাণে রয়েছে। যেহেতু আমাদের শরীরের গঠন ও কার্যকারিতা পরিবর্তিত হয় তাই সেটি আমাদের হরমোনের অবস্থাকেও প্রভাবিত করে। রাসায়নিকের ফলে ছেলে এবং মেয়েদের এখন আগেই বয়ঃসন্ধিকাল চলে আসছে। এটিও যৌনাঙ্গের বিকাশকে প্রভাবিত করতে পারে," বলেছেন গবেষকরা।
গবেষকরা আরও জানিয়েছেন, অন্যান্য কারণগুলি, যেমন দৈর্ঘ্য, তাপমাত্রা এবং পুরুষটির উত্তেজনা পরিমাপও এই দৈর্ঘ্যের ফলাফল্কে প্রভাবিত করতে পারে। তবে, পুরুষদের প্রজনন স্বাস্থ্যের জন্য এই বিষয়টির আরও গভীরে গবেষণা প্রয়োজন। "এই বৃদ্ধিটি তুলনামূলকভাবে অল্প সময়ের মধ্যে ঘটেছে।আমরা দ্রুত এই পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছি, তাহলে এর মানে হচ্ছে যে আমাদের শরীরে শক্তিশালী কিছু ঘটছে," জানিয়েছেন আইজেনবার্গ।