আসন ভাগ করতে চাননি রাজ্যে, এবার কি ইন্ডিয়া জোটের মাথা হতে চাইবেন মমতা?
Mamata Banerjee Lok Sabha Election 2024: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, কংগ্রেসের দীর্ঘদিনের যোদ্ধা, বহরমপুরের 'রবিনহুড' অধীর নাকি আসলে কংগ্রেসই নন, তিনি একজন বিজেপি।
৪০০ পার তো দূর অস্ত! ৩০০ পার করতেই হিমশিম খাচ্ছে বিজেপি। অর্থাৎ না তো বিজেপির ৪০০ পারের বুলি সত্য হলো, না ৩৭০ আসন জয়ের খোয়াব! বিজেপি আপাতত ২৪০ টি আসন পেয়েছে। আর বাংলায় পেয়েছে ১২ টি আসন। কমে গিয়েছে বিজেপির প্রাপ্ত আসন সংখ্যা। ভোটের ফলাফল সবটা প্রকাশ হয়নি এখনও। তার আগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কালীঘাটের বাড়িতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে এই জয়ের উল্লাস শুরু করে দিয়েছেন। এবারের ভোটের ফলাফলে চমক রয়েছে বহু। সেই চমকে ভূমিকা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীরও।
মমতা এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে, বুথফেরত সমীক্ষা বিষয়টিকেই আক্রমণ করেন প্রথম। মমতা বলছেন, এক্সিট পোল নিয়ে মাতামাতি করে অনেকের মনোবল ভেঙে দিয়েছিলেন কিছু মানুষ। "আমি নিশ্চিত বিজেপির দফতর থেকে মনোবল ভেঙে দেওয়ার জন্যই ওই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছিল" সরাসরি আক্রমণও করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন- রায়বরেলি কংগ্রেসেরই! দুই আসনেই যেভাবে ব্যাপক জয়ের মুখে রাহুল গান্ধি!
ইন্ডিয়া জোটে তিনি ছিলেন ঠিকই। কিন্তু জোটসুলভ কোনও আচরণই করেননি। রাজ্যে বাম বা কংগ্রেসের সঙ্গে আসন ভাগ করতেও চাননি। উল্টে কংগ্রেস সিপিএমের সঙ্গে জোট করাতে জিতি কংগ্রেসের উপর, বিশেষ করে অধীর চৌধুরীর উপর ক্ষুব্ধ হন। সেই ক্ষোভ এতটাই যে গুজরাত থেকে ইউসূফ পাঠানকে বাংলায় এনে তাঁকে বহরমপুর আসনে প্রার্থী করে দেন। আর ইউসূফ, রাজনীতিতে অনভিজ্ঞ হয়েও ২৫ বছরের সাংসদ অধীর চৌধুরীকে হারিয়ে দেন। জোটকে নির্বাচনের আগে গুরুত্ব না দিলেও দেশজুড়ে ইন্ডিয়া জোটের ফল দেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন বলছেন, ‘‘এই জয় মানুষের জয়, বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র জয়। আমি আমার সমস্ত ‘ইন্ডিয়া’র সঙ্গীদের সমর্থন জানাচ্ছি। যাঁরা আছেন। যাঁরা আমাদের সঙ্গে জুড়তে চান। তাঁদের প্রত্যেককে আমার শুভেচ্ছা।’’
তবে এই জোটে অধীরকে তিনি মেনে নেবেন না একথাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন মমতা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, কংগ্রেসের দীর্ঘদিনের যোদ্ধা, বহরমপুরের 'রবিনহুড' অধীর নাকি আসলে কংগ্রেসই নন, তিনি একজন বিজেপি। অধীররঞ্জন চৌধুরীর এই অভাবনীয় হারের পর জোটসঙ্গীকে সরাসরি 'বিজেপি' বলেই আক্রমণ করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আক্রমণ করছেন নির্বাচন কমিশনকেও। নির্বাচন কমিশন বিজেপির ‘হিজ় মাস্টার্স ভয়েস’ বলে কটাক্ষ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কটাক্ষ করেছেন উত্তরপ্রদেশে মোদির হার নিয়েও। অযোধ্যায় রাম মন্দির গড়েও ভোট পেতে হিমশিম দশা হয়েছে বিজেপির। সারা উত্তরপ্রদেশেই ইন্ডিয়া জোট অপ্রত্যাশিত ভালো ফল করেছে।
অন্যদিকে, রাহুল গান্ধিও সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছিলেন। ইন্ডিয়া জোটের লড়াই নিয়ে খুশি রাহুল। "দেশ নরেন্দ্র মোদিকে পরিষ্কার বলে দিয়েছে, আমরা আপনাকে চাই না। আমরা চাই না মোদি এবং শাহ এই দেশ চালান, যেভাবে এই সংবিধানের অধিকার খর্ব করা হয়েছে, তারা পছন্দ করেননি। এই সংবিধান বাঁচানোর কাজ করেছেন দেশের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির মানুষেরা। তাঁদের ধন্যবাদ,’’ দেশজুড়ে ভালো ফল করার কৃতিত্ব দেশের নাগরিকদেরই দিয়েছেন রাহুল গান্ধি।