উত্তপ্ত নেপাল! পদত্যাগ প্রধানমন্ত্রীর, দেশ ছাড়বেন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি?

Nepal PM resigns: ইতোমধ্যেই শাসকদলের ভিত আরও নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। এখন চিকিৎসার আছিলায় নেপালের প্রধানমন্ত্রী দুবাই যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে উঠে এসেছে।

নেপালে একের পর এক মন্ত্রীর ইস্তফার জেরে কোণঠাসা প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। ইতিমধ্যেই পদত্যাগ করেছেন তিনি।  বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে লেখা হচ্ছে কেপি ওলি শর্মা যে কোনও মুহূর্তে দেশ ছেড়ে চলে যাবেন। প্রাইভেট বিমানে চলে যেতে পারেন দুবাইয়ে। এই ঘটনা মনে করাচ্ছে ঠিক এক বছর আগে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশ ছেড়ে পলায়ন।

নেপালেজুড়ে সরকার বিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বিক্ষোভের দ্বিতীয় দিনে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলির পদত্যাগের দাবি তুলেছেন তাঁরা। এখন গোটা নেপালে কার্ফু চলছে। জায়গায় জায়গায় সংঘর্ষের কথা উঠে আসছে সংবাদ শিরোনামে। ইতোমধ্যেই ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত ২৫০ জনের ও বেশি।

আরও পড়ুন- নেপালে জেনারেশন জি-এর বিপ্লব, কেন ফুঁসছে সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা

বিক্ষোভকারীরা নেপালের একের পর এক মন্ত্রীর বাড়ি জ্বালিয়ে দিচ্ছেন। বিক্ষোভের জেরে নেপালের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, কৃষিমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই পদত্যাগ করেছেন। এর ফলে ইতোমধ্যেই শাসকদলের ভিত আরও নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। এখন চিকিৎসার আছিলায় নেপালের প্রধানমন্ত্রী দুবাই যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে উঠে এসেছে।

অন্যদিকে, নেপালের পরিস্থিতি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গেরও চিন্তা বাড়ছে। কারণ, দার্জিলিং-সহ উত্তরবঙ্গের একটি বড় অংশ নেপাল সীমান্তে। এই পরিস্থিতিতে উত্তরবঙ্গের পুলিশকর্তাদেরও সজাগ থাকতে হচ্ছে। নেপালে বসবাসকারী ভারতীয়দেরও সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রক।

উল্লেখ্য, নেপালে জেনারেশন জি-এর নেতৃত্বে কেপি শর্মা ওলি সরকারের দুর্নীতি ও সামাজিক মাধ্যম নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিবাদে নামেন হাজার ছাত্রছাত্রী। দীর্ঘদিন ধরেই কেপি ওলির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে ছিল। এই তরুণদের নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের সূত্রপাত হয় ৪ সেপ্টেম্বর। অনলাইনে শুরু হওয়া এই আন্দোলন ক্রমেই ৮ সেপ্টেম্বর রাস্তায় নেমে আসে। বিক্ষোভের পুরো ভাগে ছাত্রছাত্রীরা থাকলেও, এই বিক্ষোভে দক্ষিণপন্থীরাও সামিল হয়েছেন বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

আরও পড়ুন-  বিশ্বজুড়ে ভোট কারচুপি! গণতন্ত্র টিকবে?

নেপাল সরকার ২৬টি সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্ম বন্ধের সিদ্ধান্ত নিলে তরুণ প্রজন্ম প্রতিবাদ শুরু করে। যার মধ্যে ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইউটিউব রয়েছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে নথিভুক্ত না করার কারণে এই প্ল্যাটফর্মগুলি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় নেপাল সরকার। সরকার দাবি করছে, এই নিষেধাজ্ঞা নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা। কিন্তু প্রতিবাদীরা এই সিদ্ধান্তকে কণ্ঠরোধ হিসেবে দেখছে। সংগঠিত প্রতিবাদ দমনের জন্য সরাসরি সেন্সরশিপ হিসেবে দেখছে।

বিবিসি-র তথ্য অনুযায়ী, নেপালে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৯ জনের মৃত্যুর পর দেশটিতে এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে।

অনেকটা বাংলাদেশের মতোই নেপালের বর্তমান পরিস্থিতি। গত বছর ছাত্র আন্দোলনের মুখে ঠিক যে ভাবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়েছিলেন, ঠিক একই ভাবেই নেপাল ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন কেপি শর্মা ওলি।

দেশে যখন সরকার কার্যত চাপে, তখন প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ যাওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে তীব্র প্রশ্ন উঠছে।

More Articles