সবচেয়ে বেশি মৃত্যু এতেই, হু হু করে অল্প বয়সী মহিলাদের মধ্যে বাড়ছে যে বিশেষ ক্যান্সার

Pancreatic cancer Symptoms: অগ্ন্যাশয় পেটের ঠিক পিছনে অবস্থিত। এটি হরমোন এবং উৎসেচক তৈরি করে যা চিনি এবং খাবার হজমে সহায়তা করে।

অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার। সমস্ত ধরনের ক্যান্সারের মধ্যে অন্যতম ভয়াবহ এবং মারণরোগ। অনেকেরই ধারণা, অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারে বেশি আক্রান্ত হন পুরুষরাই। কিন্তু সম্প্রতি, সিডারস-সিনাই ক্যান্সার সেন্টারের গবেষকরা দেখেছেন, সমবয়সী পুরুষদের তুলনায় কম বয়সী মহিলাদের অগ্ন্যাশয় ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। সিডারস-সিনাইয়ের প্যানক্রিয়াটিক বিলিয়ারি রিসার্চের সহযোগী পরিচালক এবং গবেষক শ্রীনিবাস গদ্দাম জানাচ্ছেন, মহিলাদের মধ্যে অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের হার দ্রুত বাড়ছে, যা প্রমাণ করছে, এই বিষয়টি নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন।

ভারতে, আর পাঁচটা সামাজিক বিষয়ের মতোই চিকিৎসার ক্ষেত্রে লিঙ্গভেদের বৈষম্য প্রবল। যার ফলে অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের প্রাথমিক ক্ষেত্রে তা ধরা পড়ার হার অত্যন্ত কম। মহিলাদের চিকিৎসা বিষয়ে সামাজিক অনীহা পরিস্থিতিকে আরও ভয়াল করেছে। তবে কেন কম বয়সী মহিলাদের মধ্যে এই ক্যান্সারের প্রকোপ বাড়ছে তা বোঝা এবং যথোপযুক্ত চিকিৎসা ও সচেতনতার প্রসার বৃদ্ধি মহিলাদের চিকিত্সার ক্ষেত্রে বৈষম্যকে আগামীতে প্রতিরোধ করতে পারে।

অগ্ন্যাশয় পেটের ঠিক পিছনে অবস্থিত। এটি হরমোন এবং উৎসেচক তৈরি করে যা চিনি এবং খাবার হজমে সহায়তা করে। বেশির ভাগ পুরুষই অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। এমনকী ক্যান্সারের মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি এই অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের ক্ষেত্রেই, আমেরিকায় ক্যান্সারে মৃত্যুর ৩ শতাংশ ঘটে এই প্যানক্রিয়াস ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েই। দ্য ন্যাশনাল প্রোগ্রাম অব ক্যান্সার রেজিস্ট্রির (এনসিপিআর) তথ্য বলছে, ২০০১ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে ধরা পড়া ক্যান্সার রোগীদের সংখ্যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যার প্রায় ৬৪.৫%!

আরও পড়ুন- কীভাবে বৃদ্ধি পাবে ক্যান্সার রোগীদের আয়ু! যে ইঙ্গিত দিচ্ছেন অস্ট্রেলিয় বিজ্ঞানীরা

গবেষকরা আবিষ্কার করেছেন যে, নারী এবং পুরুষ দু'জনের ক্ষেত্রেই অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের হার বৃদ্ধি ঘটছে। গবেষকরা জানিয়েছেন, টিউমারের ধরন এবং অবস্থান এক্ষেত্রে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য। গবেষকরা আবিষ্কার করেছেন, প্যানক্রিয়েটিক হেড অ্যাডেনোকার্সিনোমা, অর্থাৎ অগ্ন্যাশয়ের মাথায় অবস্থিত এক বিশেষ মারাত্মক এবং আক্রমণাত্মক ধরনের টিউমারের প্রকোপ বাড়ছে ক্রমেই।

৫৫ বছরের কম বয়সী মহিলাদের মধ্যে এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার হার একই বয়সের পুরুষদের তুলনায় ২.৪% বেশি বেড়েছে। তরুণ কৃষ্ণাঙ্গ মহিলাদের মধ্যে আক্রান্ত হওয়ার হার তরুণ কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষদের তুলনায় ২.২৩% বেশি বেড়েছে।

অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের লক্ষণ কী কী?

পিঠব্যথা

বমি বমি ভাব

ক্ষুধামান্দ্য

জন্ডিস (ত্বকের এবং চোখের সাদা অংশ হলুদ হওয়া)

হালকা রঙের মলত্যাগ

গাঢ় প্রস্রাব

চামড়ায় চুলকানি

ডায়াবেটিস ধরা পড়া

ডায়াবেটিস মারাত্মক হয়ে ওঠা

রক্ত জমাট বাঁধা

ক্লান্তি

দীর্ঘদিন ধরে পেটে ব্যথায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রায়শই উদ্বিগ্ন হন যে তাদের অগ্ন্যাশয় ক্যান্সার রয়েছে। তবে গবেষকরা বলছেন, এটি সাধারণত অন্য অবস্থার লক্ষণ। ওজন হ্রাস বা জন্ডিস, মানে ত্বকের এবং চোখের সাদা অংশ হলুদ হওয়ার মতো লক্ষণ এখানে গুরুত্বপূর্ণ। অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে ধূমপান বন্ধ করা, কম মদ্যপান, স্বাস্থ্যকর খাওয়া দাওয়া, নিয়মিত ব্যায়াম এবং ওজন নিয়ন্ত্রণ করার দিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন গবেষকরা।

More Articles