ক্যাপ্টেন কোহলির 'বিরাট' সরে যাওয়া, যা রেখে গেলেন...

শনিবার, ১৫ জানুয়ারি, ভারতীয় ক্রিকেটের মসনদে শেষ হলো বিরাট কোহলির আগ্রাসী যুগ। ক্রিকেটের বৃহত্তম ফরম্যাটের অধিনায়কত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়ে দায়মুক্ত হলেন ভারতের সবথেকে সফল টেস্ট অধিনায়ক। কোনও প্রেস কনফারেন্স নয়, কিংবা বোর্ডের সঙ্গে কোনও আনুষ্ঠানিক বৈঠক নয়, স্রেফ সোশ্যাল মিডিয়াতে একটি দীর্ঘ পোস্টের মাধ্যমে নিজের অধিনায়কত্ব ছাড়ার ঘোষণাটি করে দিয়ে গেলেন বিরাট। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ভারতের হার হয়তো এই সিদ্ধান্তের কারণ নয়, কারণ ভারত এর আগেও এমন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে বহুবার গিয়েছে। ২০১৭ হোক কিংবা তারও আগে, প্রোটিয়াজদের বিরুদ্ধে ভারতের ট্র্যাক রেকর্ড বরাবরই কিছুটা খারাপের দিকে। 

তাহলে একটা সিরিজ হারের পরেই কেন পদত্যাগ করলেন বিরাট কোহলি? হয়তো কারণটা লুকিয়ে আছে অনেকটা গভীরে। সোশ্যাল মিডিয়াতে ট্রোলিং, সাদা বলে ক্যাপ্টেন্সি হাড়ছাড়া হওয়া, ব্যাট হাতে একের পর এক খারাপ ইনিংস, সব কিছু মিলিয়ে নিজেও সম্ভবত তীব্র মানসিক অশান্তিতে ভুগছিলেন কিং কোহলি। তাতে ক্ষতি হচ্ছিল তাঁর নিজের ক্রিকেটের। তাই হয়তো নিজে থেকেই দায়মুক্ত হতে চাইলেন কোহলি।

গত বছরের সেপ্টেম্বর, বিশ্ব ক্রিকেটের ক্ষুদ্রতম ফরম্যাট টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিলেন অধিনায়ক বিরাট কোহলি। তার ব্যাখ্যাও দিলেন তিনি নিজেই। আনুষ্ঠানিক ভাবেই তার ঘোষণা, মানসিক চাপ এবং কাজের আধিক্য কম করার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। তার পরের ঘটনাটা ঘটল ঠিক তার তিন মাস পর। ডিসেম্বর, ২০২১, আনুষ্ঠানিক বার্তা দিয়ে বিসিসিআই ঘোষণা করল, এক দিবসীয় দলের অধিনায়কত্ব থেকে ছেঁটে ফেলা হয়েছে বিরাট কোহলিকে। তারপর থেকেই বিরাট কোহলি এবং বিসিসিআই এর মধ্যে সম্পর্কের অধঃপতন শুরু। অবশেষে ১৫ জানুয়ারি জল্পনার অবসান। ট্যুইটারে একটি দীর্ঘ পোস্ট লিখে নিজের অধিনায়ক জীবনের ইতি টেনে দিলেন তিনি নিজেই।

নিজের বিদায় বার্তায় ধন্যবাদ জানিয়ে গেলেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি এবং তার অধিনায়ক জীবনের দ্রোণাচার্য রবি শাস্ত্রীকে। বিশ্ব ক্রিকেটের সবথেকে প্রভাবশালী অধিনায়কের সমস্ত ফরম্যাটের ক্রিকেট থেকে বিদায় নিয়ে জোরালো চর্চা তো চলছেই। চলছে দোষারোপ-পাল্টা দোষারোপের পালা, কেউ বলছেন বিরাট কোহলির পক্ষে, আবার কেউ রয়েছেন দাদা-দ্রাবিড় জুটির পক্ষে। তবে যতই বিতর্ক থাকুক না কেন, ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসের সবথেকে সফল টেস্ট অধিনায়ক কিন্তু এখনও বিরাট কোহলি। তার দীর্ঘ ৭ বছরের অধিনায়ক জীবনে ছিল একাধিক চড়াই-উতরাই, সাফল্য-ব্যর্থতা সবকিছুই। হোম গ্রাউন্ডে একের পর এক টিমকে পরাস্ত করা থেকে শুরু করে বিদেশের মাটিতে সেই টিমের সঙ্গে চোখে চোখ রেখে লড়াই, বিরাট কোহলির আগ্রাসী মনোভাবটাই যেন ছিল ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের অনুপ্রেরণা। ফিরে দেখা যাক অধিনায়ক বিরাট কোহলির ৭ বছরের অধিনায়ক জীবনের কিছু ঝলক।

২০১৪, ডিসেম্বর ৩০, টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা করলেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। আর ওই অস্ট্রেলিয়া টেস্টের চতুর্থ ম্যাচ থেকেই ভারতীয় টেস্ট দলের সম্পূর্ণ দায়িত্ব গ্রহণ করলেন বিরাট কোহলি। অস্ট্রেলিয়া সিরিজের প্রথম টেস্টে যখন আঙুলে চোট লাগার জন্য মহেন্দ্র সিংহ ধোনি প্রথম ম্যাচ থেকে বাদ গেলেন, তখন থেকেই অধিনায়ক বিরাট কোহলির উত্থান। যদিও প্রথমে একজন সাময়িক অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব সামলালেও, অধিনায়কত্বের দিক থেকে কোন অংশে খামতি রাখেননি কোহলি। ।

টেস্ট ম্যাচের আগে একটি সাংবাদিক সম্মেলনে কোহলি বলেছিলেন, 'আমি আগামীকাল ভারতীয় দলের অধিনায়কত্ব করব। তবে আমি চাই, মহেন্দ্র সিংহ ধোনি যেন আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ফিট হয়ে আবারো ভারতীয় দলের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।' কেউই হয়তো আশা করেনি, ওই টেস্টটাই হবে ধোনির জীবনের শেষ টেস্ট। মহেন্দ্র সিংহ ধোনিরও ওই টেস্টের আগে অবসর গ্রহণের কোনো পরিকল্পনা ছিল না। কিন্তু, কোহলির অধিনায়কত্ব দেখেই তিনি হঠাৎ সিদ্ধান্ত নেন।

প্রথম টেস্টে ৪৮ রানে ভারতীয় দল পরাজিত হলেও সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বিরাট কোহলি। দুটি ইনিংসে ব্যাক-টু-ব্যাক সেঞ্চুরি, এবং অস্ট্রেলিয়ার পিচে দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করা, বিরাট কোহলির এই মানসিকতাই তাকে করে তুলেছিল ভারতের অধিনায়ক। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় টেস্ট ভারতের জন্য তেমন সুখকর হয়নি। চতুর্থ টেস্টেও ভারত অস্ট্রেলিয়ার কাছে ড্র করে সিরিজ শেষ করে। তখন কে জানত, চার বছর পরে বিরাট কোহলিই হতে চলেছেন একমাত্র এশিয়ান অধিনায়ক, যিনি অস্ট্রেলিয়া টেস্ট সিরিজ জিতবেন! 

ভারতের অধিনায়কদের মধ্যে বিরাটই হলেন একমাত্র, যিনি বিশ্বের সেরা ৪ টেস্ট অধিনায়কের তালিকায় স্থান পেয়েছেন। গ্রেম স্মিথ, স্টিভ ওয়াহ এবং রিকি পন্টিংদের পর তিনি হলেন সেই তালিকার চতুর্থ। শুধুমাত্র যে বিদেশের মাটিতে টেস্ট সিরিজ জয় করেছেন বিরাট তাই নয়, তার অধিনায়কত্বে ভারতের মাটিতেও জয়ের ধারা অব্যাহত রেখেছে ভারতীয় ক্রিকেট টিম। ৬৮ ম্যাচের মধ্যে ৪০ টিতে জয়লাভ, সৌরভ গাঙ্গুলী কিংবা মহেন্দ্র সিং ধোনির থেকেও অনেক বেশি টেস্ট জয়ের রেকর্ড রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। 

এক বছরে বিদেশের মাটিতে চার চারটি জয় -

পাশাপাশি, বিরাট কোহলি ভারতের একমাত্র ক্রিকেট অধিনায়ক যিনি এক বছরের মধ্যেই বিদেশের মাটিতে চারটি টেস্ট জয় করেছেন। শুধু একবার নয়, এই কাজটি তিনি করেছেন পরপর দুইবার। ব্রিসবেন, লর্ডস, ওভাল এবং সেঞ্চুরিয়ানে পরপর জয় দিয়ে তিনি শুরু করেছিলেন নিজের অধিনায়কত্বের কেরিয়ার। ঠিক একই ঘটনা তিনি ঘটিয়েছিলেন ২০১৮ তে যখন জোহানেসবার্গ, নটিংহ্যাম, অ্যাডিলেড এবং মেলবোর্নে ভারতীয় ক্রিকেট দল জয়লাভ করে।

​​​​​​সেঞ্চুরিয়ান জয় করা প্রথম এশিয়ান অধিনায়ক 

দক্ষিণ আফ্রিকার মাটি, কার্যত অন্য টিমের কাছে দুর্জয় ঘাঁটি বলেই পরিচিত। বিশেষ করে সেঞ্চুরিয়ান এমন একটি গ্রাউন্ড, যেখানে বিশ্বের তাবড় তাবড় টিম পর্যন্ত টিকতে পারে না। সেখানে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে সিরিজের প্রথম জয় ছিনিয়ে এনেছিলেন বিরাট কোহলি। হয়েছিলেন ভারতীয় তথা এশিয়ার ক্রিকেটের একমাত্র অধিনায়ক যিনি এই কৃতিত্ব অর্জন করেছেন। আর সারা বিশ্বের অধিনায়কদের মধ্যে তিনি তৃতীয় যার মুকুটে এই পালক উঠলো। আগের দুজন ছিলেন ইংল্যান্ডের নাসির হোসেন, এবং অস্ট্রেলিয়ার মাইকেল ক্লার্ক।

SENA দেশগুলিতে সর্বাধিক টেস্ট জয়ী অধিনায়ক

দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়া (SENA) এই চারটি দেশের মধ্যে টেস্ট ম্যাচে জয়লাভ করা এশিয়ান অধিনায়কদের মধ্যে বিরাট কোহলি হলেন সর্বোচ্চ। এতদিন পর্যন্ত যত অধিনায়ক এসেছেন তারা এই চারটি দেশে ৬ এর বেশি টেস্ট জয় করতে পারেননি। কিন্তু বিরাট কোহলি সেঞ্চুরিয়ানে টেস্ট জিতে SENA দেশের মধ্যে সপ্তম টেস্ট জয় করলেন, যা এশিয়ান অধিনায়কদের তালিকায় তাকে স্থান দিয়েছে একেবারে প্রথমে।

দুটি বক্সিং-ডে টেস্ট জয়ী একমাত্র এশিয়ান অধিনায়ক 

দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে বক্সিং ডে টেস্ট সেঞ্চুরিয়ানে জয়ের পর বিরাট কোহলি হলেন প্রথম এশিয়ান অধিনায়ক যিনি দুটি বক্সিং ডে টেস্ট জয়লাভ করেছেন। এর আগে, ২০১৮-তে বক্সিং ডে টেস্টে ভারত জিতেছিল অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে। ওই টেস্ট জয় দিয়েই শুরু হয়েছিল ভারতের অস্ট্রেলিয়া সফর। পরবর্তীতে ওই টেস্ট সিরিজে ২-১ ব্যবধানে অস্ট্রেলিয়াকে পরাস্ত করে ভারত।

দক্ষিণ আফ্রিকায় দুটি টেস্ট জয় করা একমাত্র ভারতীয় অধিনায়ক - 

৩৩ বছর বয়সী প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি হলেন একমাত্র ভারতীয় অধিনায়ক যিনি দক্ষিণ আফ্রিকার দুটি টেস্ট ম্যাচে জয়লাভ করেছেন। ২০১৮ সালে কোহলির অধিনায়কত্বে ভারত একটি টেস্ট ম্যাচ জিতেছিল দক্ষিণ আফ্রিকায়। তারপর এই সেঞ্চুরিয়ান এর জয়, যা ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য একটি বড়ো ঘটনা ছিল। 

বিরাট কোহলির ব্যাটিং এবং বিরাট অধিনায়কত্ব নিয়ে যতই বিতর্ক থাকুক না কেন, ভারতীয় টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে তার থেকে ভালো অধিনায়ক এখন পর্যন্ত ভারত পায়নি। টেস্ট ম্যাচে জয়ের সংখ্যা হোক কিংবা জয়ের হার, সবদিক থেকেই টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে বিরাট কোহলি ভারতের সবথেকে ভালো ক্যাপ্টেন। মহেন্দ্র সিংহ ধোনির জুতোয় পা গলিয়ে ভারতকে সেই সফলতায় পৌঁছানো খুব একটা সহজ কাজ নয়। কিন্তু কোহলি নিজের আগ্রাসী মনোভাব এবং দুর্দান্ত ব্যাটিং দক্ষতায় নিজের অধিনায়কত্বের বারবার প্রমাণ দিয়েছেন। তার অধিনায়কত্বে থাকাকালীন সময়েই টেস্ট বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌঁছে ছিল ভারত। 

তবে শুধু অধিনায়ক হিসেবেই নয়, দারুন ব্যাটসম্যান হিসেবেও বারবার নিজেকে প্রমাণ করেছেন বিরাট কোহলি। বিশ্ব ক্রিকেটের দীর্ঘতম ফরম্যাটে বিরাট কোহলির ঝুলিতে রয়েছে সাত সাতটি ডাবল সেঞ্চুরি। সঙ্গেই কোন ভারতীয় অধিনায়ক হিসেবে সবথেকে বেশি টেস্ট সেঞ্চুরি করার রেকর্ড রয়েছে বিরাট কোহলির ঝুলিতে। তার পাশাপাশি, কোহলির অধিনায়কত্বে হোম গ্রাউন্ডে ভারত ছিল কার্যত অপরাজিত। এই ৭ বছরে সর্বসাকুল্যে মাত্র ২টি ম্যাচে পরাজয়ের সম্মুখীন হতে হয়েছিল ভারতকে। 

এ হেন একজন অধিনায়কের সরে দাঁড়ানো মেনে নিতে পারছেন না ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীরা। তবে বিরাট কোহলির জন্য সময় যে একেবারে শেষ হয়ে গিয়েছে তা কিন্তু নয়। বরং ক্রিকেট পৃথিবীতে শুধুমাত্র একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে মুক্তবিহঙ্গ হয়ে উড়ে বেড়ানোর সুযোগ রইল বিরাট কোহলির কাছে। ২০০০ এ যখন সচিন টেন্ডুলকর সৌরভের হাতে ব্যাটন তুলে দিয়ে নিজের ব্যাটিং এর উপরে জোর দিয়েছিলেন, সেরকম কিছুটা পরিকল্পনা কোহলির রয়েছেই রয়েছে। এই নিয়ে কোনো সংশয় নেই, ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড যে রকম ভাবে তার হাত থেকে এক দিবসীয় ক্রিকেটের অধিনায়কত্ব কেড়ে নিয়েছিল, তাদের চূড়ান্ত অপমানিত হয়েছিলেন কোহলি। দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ চলাকালীন সময়ে নির্বাচন প্রধান চেতন শর্মা তাকে নিশানা করে একাধিক কড়া কথা শুনিয়ে গিয়েছিলেন, যার প্রত্যুত্তর হয়তো দিতে পারেননি কোহলি। 

বোর্ডের সঙ্গে কোহলির বৈঠকে কী হয়েছিল, তা কেউ জানেন না, হয়তো কেউ কোনও দিন জানতে পারবেন না। কোহলি বুঝতে পেরেছিলেন, ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড এবং তার মধ্যে শুধুমাত্র যে দূরত্ব বেড়েছে তাই নয়, বরং তিক্ততাও আরও গভীর হয়েছে। অনেকেই মনে করেছিলেন, কোহলি খুব শীঘ্রই সব কিছু ছেড়ে দিয়ে একজন সাধারণ ক্রিকেটার হিসেবে থাকাটাই শ্রেয় মনে করবেন। আর হলোও ঠিক তাই। মনের মধ্যে এক রাশ অভিমান জমা রেখে নিজের বিদায় ঘোষণা করলেন প্রাক্তন অধিনায়ক। 

বিদায়ী বার্তায় লিখলেন, 'সম্পূর্ণ সততা দিয়ে দায়িত্ব সামলানোর চেষ্টা করেছি। ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য আমি আমার ১২০ শতাংশ দেওয়ার চেষ্টা করেছি সব সময়। হয়তো কখনো বা পতন হয়েছে, কিন্তু আমি কোনদিন তাগিদের অভাব করিনি।' ক্যাপ্টেন ধোনি যখন বিরাট কোহলির হাতে ভারতের অধিনায়কত্ব তুলে দিলেন তখন ভারত রয়েছে ৭ নম্বরে। সেখান থেকে শুরু কোহলির উত্থান। দীর্ঘ পাঁচ বছর ১ নম্বরে থেকেছে ভারতীয় দল। বিশ্বের মাটিতেও একই রকম দাপট নিয়ে খেলেছে কোহলির নেতৃত্বাধীন ভারত। কিন্তু রবি শাস্ত্রী চলে যেতেই কোহলির জন্য ভারতীয় ক্রিকেট দুর্বোধ্য হতে শুরু করল। রাহুল দ্রাবিড়ের সঙ্গে বিরাট কোহলির মতের মিল খুব কম সময়ই দেখা গিয়েছে। বিসিসিআইয়ের হাব ভাব দেখেই বোঝা যায়, এখন তারা বিরাট কোহলির উপরে নয়, বরং ভরসা রাখছেন প্রধান কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের উপরে। তাই ব্যাটসম্যান হিসেবে শতরান খুঁজতে থাকা কোহলি আর হয়তো নিজেকে ক্ষতবিক্ষত করতে চাইছিলেন না। এর মধ্যেই আবার দক্ষিণ আফ্রিকায় সহজ টিমের বিরুদ্ধে জঘন্য পরাজয়, বিরাট কোহলির কাছে ছিল একেবারে বজ্রপাতের মত। তার সঙ্গেই ডিআরএস বিতর্কে জড়িয়ে ফের একবার নিন্দার ঝড় কোহলির বিরুদ্ধে। সব নিয়েই দীর্ঘদিন তীব্র মানসিক অশান্তিতে ভুগছেন কোহলি। তাই হয়তো আর নিজের আত্মসম্মানের সঙ্গে আপোস না করে মনের মধ্যে একরাশ গ্লানি চেপে রেখেই মুকুটটা নামিয়ে রাখলেন কিং কোহলি। 

More Articles