নাদাল-জকোভিচের থেকে পিছিয়ে, তবু টেনিস দুনিয়ার রাজা কেন রজারই
Roger Federer: কিং রজার যে এত তাড়াতাড়ি মাঠ ছাড়বেন, এটা হয়তো ভাবতে পারেননি পৃথিবীর কোনও টেনিসপ্রেমী।
ক্রিকেট, ফুটবলের মতো টেনিস খেলার সঙ্গে আমাদের শৈশব বা কৈশোরের কোনও পাড়াতুতো আবেগ জড়িয়ে নেই। ভারতে ব্যাডমিন্টনের জনপ্রিয়তা থাকলেও, বিকেল হতেই অলিতে-গলিতে ছোট পরিসরে কোনও দিন টেনিস খেলায় মেতে উঠত না কেউ। ব্যাডমিন্টন খেলাকে কেন্দ্র করে শীতকালে কিছুটা উৎসব এবং আমেজের দেখা মিললেও, টেনিসকে নিয়ে তেমন মাতামাতি কোনও দিনই হয় না। ফলে এই খেলার প্রতি স্থানিক নৈকট্যের উন্মাদনাও তৈরি হয়নি কোনও দিন।
কিন্তু তারপরেও ভারতের বিপুল সংখ্যক মানুষ রয়েছেন, যারা টেনিসপ্রেমী। একক বা দ্বৈত খেলোয়াড়ের এই প্রতিযোগিতাকে ঘিরে ভারতের এই টেনিসপ্রেমীদের মধ্যে থাকে প্রবল উৎসাহ। অস্ট্রেলিয়ান ওপেন দেখতে জানুয়ারির ঠান্ডায় অনেকেই ভোরবেলা উঠে টিভি সেটের সামনে বসেন। আবার গভীর রাত অবধি ফ্রেঞ্চ ওপেন দেখার জন্য ঘুমকে বিসর্জন দেন অনেকে।
কিন্তু কীভাবে পড়লেন তাঁরা এই র্যাকেটনির্ভর খেলাটির প্রেমে? এক-একজনের যুক্তি এক-একরকম হলেও, নবপ্রজন্মের সংখ্যাগরিষ্ঠর কথা বলতে গেলে, নিশ্চিতভাবেই তাদের টেনিসপ্রেমের কারণ তিনজন ব্যক্তিত্ব- রাফায়েল নাদাল, নোভাক জকোভিচ এবং সর্বোপরি রজার ফেডেরার। এই তিনজন মিলেই বিগত দুই দশক ধরে শাসন করেছেন বিশ্বের টেনিস ময়দানকে। তিনজন মিলে জয় করেছেন ৬৩টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম। তাঁরা তিনজনেই কখনও না কখনও ছিলেন বিশ্বের খেলোয়াড়দের তালিকার একেবারে শীর্ষে। তবে, এদের মধ্যে একজন এমন ব্যক্তিত্ব রয়েছেন, যিনি নিজের বর্ণোজ্জ্বল কেরিয়ারের জোরে হয়ে উঠেছিলেন এই সবুজ মাঠের রাজা। পরিচিতি পেয়েছিলেন কিং রজার হিসেবে।
আরও পড়ুন: গরিমা হারাবে রজার পরবর্তী টেনিস! অবসরের খবরে কী বলছেন সানিয়া, সচিন, মেসিরা?
কিন্তু এই কিং রজার যে এত তাড়াতাড়ি মাঠ ছাড়বেন, এটা হয়তো ভাবতে পারেননি পৃথিবীর কোনও টেনিসপ্রেমী। ২০২২ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা একটি আবেগমথিত চিঠি দিয়ে তিনি জানিয়ে দিলেন, আসছে সপ্তাহ থেকে শুরু হতে যাওয়া লন্ডনের লেভার কাপ হবে এই কিংবদন্তির সর্বশেষ এটিপি টুর্নামেন্ট। যদিও অস্তরাগের আভা বেশ অনেকদিন আগেই ছড়িয়ে পড়েছিল। কিন্তু তারপরেও ক্ষীণ একটা আশায় বুক বেঁধেছিলেন বিশ্বের টেনিসপ্রেমীরা। আশা করেছিলেন, আরেকবার যদি গ্র্যান্ড স্ল্যাম টুর্নামেন্টে দেখা যায় তাঁকে! বয়সকে একটি সংখ্যামাত্র বলে প্রমাণ করেছেন তো কতবারই, আরেকটিবার কি পারবেন না? কিন্তু আর পারলেন না। ২০২০ সালে হাঁটুতে দুটো বড় অস্ত্রোপচারের ধাক্কা সামলে ফিরেছিলেন আবার। ২০২১ উইম্বলডন কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে বিদায় নেওয়ার পর আবারও হাঁটুর ওপরে চলল ছুরি-কাঁচি। হয়তো ফেরার জন্যই! কিন্তু আর সম্ভব হলো না। ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা চিঠিতে রাজা রজার জানিয়ে দিলেন, একচল্লিশ পেরনো শরীর আর নিতে পারছে না। তাই এটাই হবে শেষবার।
প্রতিযোগিতামূলক টেনিসে ২৪ বছর ধরে রাজত্ব করেছেন এই ৪১ বছরের সুইস তারকা। ১৫০০-রও বেশি ম্যাচে অংশ নিয়েছেন তিনি। দীর্ঘ এই কেরিয়ারে কী না করেছেন রজার ফেডেরার! ১০৩টি এটিপি একক শিরোপা, ৮টি উইম্বলডন, ৫টি ইউএস ওপেন, ৬টি অস্ট্রেলিয়ান ওপেন, এবং ১টি ফ্রেঞ্চ ওপেন জিতেছেন তিনি। সব মিলিয়ে তাঁর ঝুলিতে রয়েছে ২০টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম।
১৯৯৮ সালে উইম্বলডন জুনিয়র চ্যাম্পিয়ন হয়ে নিজের আগমন ঘোষণা করে দিয়েছিলেন রজার ফেডেরার। ২০০৩ সালে, মাত্র ২১ বছর বয়সে প্রথম মেজর একক শিরোপা জিতে সকলকে চমকে দেন রজার। ২০০৩ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ২৮টি মেজর একক ফাইনালের মধ্যে ২১টিতে জয়লাভ করেন তিনি। আর এই সময়ের মধ্যে জিতে নেন ১৫টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম। এর মধ্যে ছিল ৬টি উইম্বলডন, ৫টি ইউএস ওপেন এবং ৩টি অস্ট্রেলিয়ান ওপেন। ২০০৯ সালেই প্রথমবার তাঁর হাতে ওঠে বহু-প্রতীক্ষিত ফ্রেঞ্চ ওপেন। এর আগে টানা তিন বছর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রাফায়েল নাদালের কাছে হারতে হয়েছিল রজার ফেডেরারকে। ২০০৯ সালটি তাঁর জীবনে ছিল আরও একটি কারণে স্মরণীয়। কারণ সেই বছরই তিনি উইম্বলডন জয়ের মাধ্যমে মাত্র ২৭ বছর বয়সে ১৫তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতে নিয়ে ১৪টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ী পিট সাম্প্রাসকে পিছনে ফেলে দিয়েছিলেন।
২০০৮ সালে অলিম্পিক ডাবলসে স্বর্ণপদক জেতেন ফেডেরার। তবে সিঙ্গলসে স্বর্ণপদক জিততে পারেননি রজার। ফাইনালে অ্যান্ডি মারের কাছে হেরে গিয়ে ২০১২ সালের রৌপ্য পদক নিয়ে খুশি থাকতে হয়েছিল তাঁকে। তবে তাঁর কেরিয়ারের আরও দু'টি হাইলাইট ছিল ৬টি এন্ড অফ সিজন ট্যুর ফাইনাল, এবং ২০১৪ সালে স্তান ভাভ্রিংকার সঙ্গে মিলে ডেভিস কাপে জেতা, তাও আবার নিজের দেশ সুইজারল্যান্ডের হয়ে। পাঁচবার বছর শেষে ১ নম্বর স্থান অধিকার করেছিলেন তিনি। ২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০০৮ সালের অগাস্ট মাস পর্যন্ত টানা ২৩৭ সপ্তাহ ধরে বিশ্ব তালিকার এক নম্বরে অবস্থান করেছিলেন তিনি। তবে তাঁর সেই জয়যাত্রায় ছেদ টেনেছিলেন, তাঁর সবথেকে বড় প্রতিদ্বন্দী রাফায়েল নাদাল।
২০০৯ সালের পর থেকেই কিছুটা নিচের দিকে নামতে শুরু করে রজার ফেডেরারের কেরিয়ার। ২০১০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত মাত্র ৫টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম প্রতিযোগিতায় জয় পেয়েছিলেন রজার। এর মধ্যে ২০১৭ সাল ছিল তাঁর জন্য সবথেকে সফল। সেবার অস্ট্রেলিয়ান ওপেন এবং উইম্বলডন, দু'টি শিরোপা এই জয়লাভ করেছিলেন রজার ফেডেরার। ২০১৮ সালেও বছরটা শুরু করেছিলেন ভালোভাবেই। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের মুকুট মাথায় তুলে, নিজের প্রত্যাবর্তনের আহ্বান দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে, এটি ছিল তা সর্বশেষ গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়। এরপর থেকে মাঝে-মধ্যে ফেরার আশা জাগালেও, আর সম্ভব হয়ে ওঠেনি।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কিছুটা চোটপ্রবণও হয়ে উঠেছিলেন রজার ফেডেরার। চোটের কারণ, এই ২০২১ সালের উইম্বলডন কোয়ার্টার ফাইনালে নোভাক জকোভিচের কাছে পরাজিত হয়ে বিদায় নিতে হয় রজারকে। সেসময় মাঠ ছাড়ার আগে হয়তো জানতেন না, আর কখনও তাঁর ফেরা হবে না সক্রিয় খেলোয়াড় হিসেবে। গত বছরের ওই টুর্নামেন্ট থেকেই মূলত টেনিসের বাইরে চলে গিয়েছিলেন রজার ফেডেরার। এরই মধ্যে একাধিকবার সার্জারি করাতে হয়েছে তাঁকে। হাঁটুর চোটটা বেশ অনেক বছর ধরেই ভুগিয়েছে তাঁকে। ২০২০ সালে দু'বার সার্জারি করাতে হয়েছিল এই হাঁটুতেই।
তাই এরকম চোটপ্রবণ শরীরের সঙ্গে কার্যত বোঝাপড়া করে সমাপ্তির সিদ্ধান্তটা নিতেই হলো রজার-কে। তিনি লিখলেন, "সম্প্রতি আমার শরীর জবাব দিতে শুরু করেছে। ২৪ বছর ধরে দেড় হাজারের বেশি ম্যাচ খেলেছি আমি। এখন আমাকে মেনে নিতেই হবে যে সময় এসেছে, আমার প্রতিযোগিতামূলক কেরিয়ারে ইতি টানার। টেনিস খেলাকে আমি বলব, আমি তোমাকে ভালবাসি, কখনওই ছেড়ে যেতে পারব না।" টেনিসের প্রতি রজার ফেডেরারের মনের মধ্যে যে প্রেম এবং নির্ভেজাল ভালবাসা রয়েছে, সে-ব্যাপারে কোনও সন্দেহের অবকাশ নেই। তা না হলে কি এই 'বুড়ো বয়স' পর্যন্ত এই খেলাটিতে টিকে থাকার জন্য তিনি কামব্যাক চালিয়ে যান! হয়তো তাঁর মনের মধ্যে একটা সুপ্ত বাসনা ছিল, ওপেন যুগে সর্বোচ্চ গ্র্যান্ড স্ল্যামের রেকর্ড নিজের করে নেওয়ার। যেখানে নাদালের নামের পাশে রয়েছে ২২টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম, জকোভিচের নামের পাশে রয়েছে ২১টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিরোপা, সেখানে রজারকে থামতে হচ্ছে ২০-তেই। অর্থাৎ, টেনিসকে বিদায় বলার আগে, শিরোপার হিসেবে একে তো নয়, বরং রয়েছেন তিনি তিনে।
View this post on Instagram
অবশ্য এই ব্যর্থতার জন্য হয়তো অন্য কাউকে নয় বরং তিনি নিজেকেই দায়ী করবেন। এই তালিকার শীর্ষে থাকার সুযোগ তাঁর কাছে একাধিকবার এসেছে। ২২টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম ঘরে তুলতে রাফায়েল নাদাল যেখানে ৩৮ বার পৌঁছেছেন সেমিফাইনালে, সেখানে ফেডেরার সেমিফাইনাল খেলেছেন ৪৬ বার। এমনকী, জকোভিচের থেকেও তিনবার বেশি সেমিফাইনাল খেলেছেন তিনি। কিন্তু, সেমিফাইনাল থেকে গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়, এই পথটা তাঁর কাছে ছিল অনেকটাই বেশি দুর্বোধ্য। তাই শিরোপার ইঁদুর দৌড়ে দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর থেকেই পিছিয়ে রয়েছেন রজার ফেডেরার।
তবে শুধুমাত্র কি একজন খেলোয়াড়কে শিরোপা দিয়ে বিচার করা যায়? হয়তো না। টেনিসের সর্বকালের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে ফেডেরারকে বেছে নেওয়ার একাধিক কারণ রয়েছে। অনেকেই, রাফায়েল নাদাল এবং নোভাক জকোভিচকে বাদ দিয়ে টেনিসের শ্রেষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে বিচার করেন রজার ফেডেরারকে। সংখ্যার নিষ্প্রাণ অঙ্কে তিনি হয়তো দু'জনের থেকেই পিছিয়ে। বয়সের কারণেও তিনি হয়তো শেষ লগ্নে এসে মার খেয়েছেন। নাদাল এবং জকোভিচের থেকে যথাক্রমে ৬ এবং ৫ বছরের বড় রজার ফেডেরার। তাই হয়তো কেরিয়ারের শেষ লগ্নে এসে তাঁকে টপকে এগিয়ে গিয়েছেন অনেকে। তবে তিনি যখন নিজের কেরিয়ারের মধ্যগগনে ছিলেন, সেই সময় যে তাঁকে হারিয়ে দেওয়ার মতো কোনও খেলোয়াড় ছিল না, সেটা তো আর অস্বীকার করা যায় না।
ইনজুরি-র কারণে তাঁর দুরন্ত প্রত্যাবর্তনের উচ্ছ্বাস কখনোই দীর্ঘস্থায়ী থাকেনি। ২০১৭ সালে ভালো শুরু করেও শেষমেশ ২০১৮ সালে চোটের কারণে ছিটকে যেতে হয় টেনিসের ময়দান থেকে। কিন্তু যে অসামান্য মনের জোর তিনি ওই বয়সেও দেখিয়েছেন এবং তারপরেও সাড়ে চার বছর ধরে দেখিয়ে গিয়েছেন, তা সত্যিই কোনও তুলনা হয় না। 'নিজ প্রজন্মের সেরা অ্যাথলেট' তকমাও লেগেছে তাঁর গায়ে। ২০১৮ সালে ২০তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয় করার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রর জনপ্রিয় ক্রীড়া সাংবাদিক ক্রিস চেজ লিখেছিলেন, "যদি এখনও ভুলে না গিয়ে থাকেন, তাহলে এখনই ভুলে যান টম ব্র্যাডির কথা, ভুলে যান টাইগার উডসের কথা। অস্ট্রেলিয়ান ওপেন ফাইনালে ৫ সেটের রোমাঞ্চকর লড়াইয়ের মাধ্যমে আবারও সেরা হয়ে উঠেছেন রজার ফেডেরার। আবারও জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি ফিরে এসেছেন। জিতে নিয়েছেন তাঁর জীবনের ২০তম মেজর শিরোপা এবং সন্দেহাতীতভাবেই নিজের প্রজন্মের সেরা অ্যাথলিটের জায়গাটাও দখল করে নিয়েছেন তিনি।"
তবে যেমন চাঁদেরও কলঙ্ক থাকে, তেমনই ফেডেরারের কেরিয়ারেও আছে একাধিক অপূর্ণতা। অনেক বিশেষজ্ঞরাই রজার ফেডেরারকে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ টেনিস খেলোয়াড় হিসেবে বিচার করতে রাজি নন। তাদের মতে নাদাল কিংবা জকোভিচ, রজারের থেকে অনেক বেশি ওপরে। ফেডেরারের বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগটি হলো, তিনি খেলেছিলেন 'অপেক্ষাকৃত দুর্বল' প্রজন্মে। সেরকম যদি নাই হতো, তাহলে এতগুলো গ্র্যান্ড স্ল্যাম শুধুমাত্র সেই তিনজন কেন জিতে গেলেন? সেই সময় ওই তিনজন এবং অ্যান্ডি মারে-কে ধরে চারজন ছাড়া সেই মানের টেনিস খেলোয়াড় ছিল না। দ্বিতীয়ত, কখনও একসঙ্গে চারটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিরোপা নিজের দখলে রাখতে পারেননি রজার ফেডেরার। তৃতীয়ত, মুখোমুখি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চির-প্রতিদ্বন্দ্বী রাফায়েল নাদাল এবং নোভাক জকোভিচের থেকে সর্বদাই একধাপ পিছিয়েছিলেন রজার ফেডেরার। গ্র্যান্ড স্ল্যামের মতো একটি বড় প্রতিযোগিতায় রজার ফেডেরারের ব্যর্থতা অত্যন্ত দৃষ্টিকটু। চতুর্থত, অলিম্পিকেও স্বর্ণপদক জিততে ব্যর্থ হয়েছিলেন রজার ফেডেরার।
তবে পক্ষে-বিপক্ষে যতই ঝাঁঝালো বিতর্ক থাকুক না কেন, রজার ফেডেরারের দৃষ্টিনন্দন সেই সমস্ত ব্যাক হ্যান্ড শটগুলোকে অবশ্যই মিস করবে টেনিস বিশ্ব। চাবুকের গতিতে চলা ফোরহ্যান্ড শট, বেজ লাইন থেকে হাফ ভলি, অ্যারাউন্ড দ্য নেট, ওভারহেড শট, ক্যাজুয়াল টুইনারের মতো শটগুলিকে মিস করবে তামাম টেনিস দুনিয়া। তাঁর মতো শৈল্পিক সার্ভ করার ক্ষমতাও খুব কম জনের কাছেই রয়েছে। তাঁর মতো অ্যান্টিসিপেশন এবং কোর্ট সেন্স দেখানোর ক্ষমতা হয়তো রাফায়েল নাদালেরও নেই। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলেও তাঁর মতো সংযম প্রদর্শনের ক্ষমতাও রয়েছে খুব কম জনের কাছেই। টেনিস আদপেই একক-আধিপত্যের খেলা। সেই খেলাতে বিপক্ষের চোখে চোখ রেখেও বিস্ময়াবিষ্ট বিশুদ্ধতা প্রদর্শনের ক্ষমতা হয়তো খুব খেলোয়াড়েরই থাকবে। তাই রাজা রজার এক নম্বর না হতেই পারেন, তবু ফেডেরার একজনই!