মৃত চিকিৎসকের দেহ যে বীভৎস অবস্থায় দেখেছেন, জানালেন প্রতিবেশী
RG Kar Rape Victim: চশমা ভেঙে গুঁড়িয়ে চোখ রক্তারক্তি করে দেওয়া হয়েছে, শ্বাস রোধ করে দেওয়া হয়েছে তারপর চলেছে ধর্ষণ! একজন স্বপ্নদর্শী তরুণী এই চেয়েছিলেন?
বেটি বাঁচাও আর বেটি পড়াওয়ের ডাক দিয়েছিল মোদি সরকার। তারপর যা হয়। স্লোগান, স্লোগানেই আটকে থাকে। অনেক বেটিই আর বড় হয়ে উঠতেই পারে না কারণ তাঁদের ধর্ষণ হওয়ার থাকে, পা চিরে দেওয়ার থাকে, পাশবিক অত্যাচার ও উল্লাসের মধ্যে স্রেফ 'ধর্ষিতা' পরিচয়ে বেঁচে যাওয়া থাকে। আরজি কর হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসক তো স্বপ্ন দেখেছিলেন। রোগী প্রাণ বাঁচানোর কাজ ছিল তাঁর। নিজের প্রাণ খোওয়ালেন নিজেরই হাসপাতালে। এই চিকিৎসকের মৃত্যু ও ধর্ষণের বিচার চেয়ে উত্তাল হয়েছে বাংলা। বিচার চেয়ে এবার সোজা প্রধানমন্ত্রীর কাছেই আর্জি জানিয়েছেন মৃতার প্রতিবেশী।
নাম প্রকাশ না করে মৃতার প্রতিবেশী এক মহিলা জানিয়েছেন, রাত্রি সাড়ে দশটা নাগাদ শোনেন তাঁর প্রতিবেশীর বাড়িতে চিৎকার শোনেন তিনি। চিৎকারে মিশে আছে নাড়ি ছেঁড়া কান্না। তরুণী চিকিৎসকের বাড়িতে দৌড়ে যান প্রতিবেশী। চিকিৎসকের মা জানান, সব শেষ হয়ে গেছে! হাসপাতাল থেকে ফোন করা হয়েছে তাঁদের। তাতে বলা হয়েছে, তাঁদের মেয়ে আত্মহত্যা করেছেন হাসপাতালে। পাশের বাড়ির প্রাণবন্ত মেয়েটি যে আত্মহত্যা করতে পারে তা বিশ্বাস করেননি প্রতিবেশীও। জিজ্ঞাসা করেন, "কে বলল আত্মহত্যা?” মৃতার মা জানান, হাসপাতাল থেকে ফোনে তেমনই জানানো হয়েছে।
কালবিলম্ব না করে ওই প্রতিবেশী তাঁদের সঙ্গে আরেকজনকে নিয়ে মৃতার মা-বাবার সঙ্গে রওনা দেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের দিকে। তাঁর অভিযোগ হাসপাতালে পৌঁছেও তাঁদের ৩ ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয়। দেখতে দেওয়া হয় না মেয়ের দেহ। প্রতিবেশী বলছেন, মৃতার মা হাত জোড় করে পুলিশের কাছে অনুনয় বিনয় করেন যাতে একটিবার তাঁর সন্তানকে দেখতে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন- চোখ আটকে নীরজের রুপো জয়ে! মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগে যা করছিলেন আরজি করের তরুণী
ঘণ্টা তিনেক পর বাবা-মাকে সেমিনার হলে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। সেখানে গিয়ে বাবা মেয়ের ছবি তুলে আনেন। রক্তস্নাত কন্যা, মুখ ভেসে যাচ্ছে রক্তে। ওই ছবিটিই প্রতিবেশীকে দেখান। ততক্ষণে সব শেষ। এত বছর ধরে যত্নে গড়ে তোলা কন্যা তখন শুধুই লাশ!
ওই ভয়াবহ দৃশ্য ভুলতে পারছেন না প্রতিবেশী। জানিয়েছেন, মেয়ের দেহে কোনও কাপড় ছিল না। দু'পা বাঁকিয়ে দেওয়া হয়েছে অত্যাচারে! যতক্ষণ না পেলভিক বোন ভেঙে যাচ্ছে ততক্ষণ ওইভাবেই কষ্ট দেওয়া হয়েছে তাঁর প্রতিবেশীর কন্যাকে। তাঁর কন্যাসমাকে যাঁকে তিনি প্রতিদিন চোখে দেখেছেন হাসপাতালে যেতে, গর্ব করেছেন। চশমা ভেঙে গুঁড়িয়ে চোখ রক্তারক্তি করে দেওয়া হয়েছে, শ্বাস রোধ করে দেওয়া হয়েছে তারপর চলেছে ধর্ষণ! একজন স্বপ্নদর্শী তরুণী এই চেয়েছিলেন?
সোজা প্রধানমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন, একজন মেধাবী চিকিৎসক, যিনি নিজের পরিশ্রমে, মেধায় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন, সম্ভাবনাময়ী চিকিৎসক হয়েছেন তাঁকে তারই হাসপাতালে ধর্ষণ করার সাহস হলো অপরাধী/অপরাধীদের? এভাবে একজনকে হত্যা করা যায়? দেশের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে আর্জি জানিয়েছেন মৃতার প্রতিবেশী। কোনওভাবেই যেন এই অপরাধ করে পার না পেয়ে যায় দুষ্কৃতী। যেন বিচার পান ওই চিকিৎসক, তাঁর পরিবার।