'ওকে বেচে দাও', পিএসজির হারের পর ফের মেসির ওপর বিশ্বকাপের 'বদলা' নিচ্ছে ফরাসিরা?

Lionel Messi PSG Defeat : মেসির ওপর তেড়েফুঁড়ে ওঠেন ফরাসি সমর্থকরা। সরাসরি তাঁদের বক্তব্য, “মেসিকে বেচে দাও। এঁদের আর দরকার নেই।”

বিশ্বকাপ পেরিয়ে গিয়েছে বহুদিন পেরিয়ে গিয়েছে। নিজেদের ক্লাবে ফিরে গিয়েছেন খেলোয়াড়রা। জোরকদমে শুরু হয়েছে ক্লাব ফুটবলের মহারণ। কিন্তু লিওনেল মেসি আর আর্জেন্টিনার ওপর ফরাসি সমর্থকদের রাগ যে কমেনি, সেটা এখনও বোঝা যাচ্ছে। ৯ ফেব্রুয়ারি ছিল ফ্রান্সের লিগ ওয়ানের হাইভোল্টেজ ম্যাচ। পিএসজির মুখোমুখি হয়েছিল মার্সেই। সেই ম্যাচেই মেসি-নেইমারের পিএসজিকে ২-১ গোলে হারিয়ে দেয় মার্সেই। তারপরই মেসির ওপর তেড়েফুঁড়ে ওঠেন ফরাসি সমর্থকরা। সরাসরি তাঁদের বক্তব্য, “মেসিকে বেচে দাও। নেইমারকেও বেচে দাও। এঁদের আর দরকার নেই।”

আগুনে ঘি ঢালার কাজটি পরোক্ষে করেছেন কিলিয়ান এমবাপে। ফ্রান্সের এই তারকা ফুটবলারও পিএসজির হয়ে খেলেন। কিন্তু আগামী কয়েকটি ম্যাচ তিনি দলের বাইরে আছেন। ক্লাবের সূত্রে আগে থেকেই এই খবর জানানো হয়েছিল। তাই মার্সেইয়ের মিরুদ্ধে ম্যাচেও ছিলেন না এমবাপে। আক্রমণ ভাগে মেসি-নেইমার দুজনকে রেখেই দল সাজিয়েছিলেন কোচ। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। পিএসজির একমাত্র গোলটি করেন সার্জিও র্যা মোস। ম্যাচের পরিসংখ্যান দেখলেই অবশ্য পিএসজির অবস্থা দেখা যাবে। গোটা ম্যাচে মেসি-নেইমাররা গোলমুখী শট মেরেছেন মাত্র তিনটি। আর মার্সেই মোট আটটি শট টার্গেটে রেখেছে।

বিশ্বকাপের ঠিক পরেই একটি ম্যাচে পিএসজির হারের পর মেসির ওপর আক্রমণ হানে ফরাসি মিডিয়া। দোসর হিসেবে উঠে আসে ফরাসি সমর্থকরাও। এরপর মার্সেইয়ের বিরুদ্ধে হারের পর ফের একবার শুরু হয় আক্রমণ। সোশ্যাল মিডিয়ায় পিএসজি সমর্থকদের একটাই মন্তব্য, মেসিকে শিগগিরই দল থেকে সরাও। সঙ্গে নেইমারকেও। বরং গোটা ফরাসি মিডিয়া ও সমর্থকদের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছেন কিলিয়াম এমবাপে। ম্যাচে এমবাপে না থাকায় সেই ঝড় আরও বেশি করে মেসির ওপর পড়েছে। ২০২২ কাতার বিশ্বকাপের পরই এমবাপে ফ্রান্সের আশা-ভরসার প্রতীক হয়ে উঠেছেন। ক্লাব ফুটবলেও সেই রেশ ধরা দিয়েছে। সমর্থকদের দাবি একটাই, এমবাপেকে গুরুত্ব দিয়ে, তাঁকে সামনে রেখে দল সাজানো হোক।

১৮ ডিসেম্বর, বিশ্বকাপের ফাইনালের পর থেকেই মেসির বিরুদ্ধে এমন বিষোদগার চলছে। এটা ঠিকই যে, মার্সেই ম্যাচে সেভাবে খেলতে পারেননি মেসি। খেলতে পারেননি নেইমারও। পাস বাড়ালেও গোলের মুখ খুলতে পারেননি দুজনের কেউই। কিন্তু ‘মেসিকে সরাও, এমবাপেকে আনো’-র যে দাবি উঠছে, সেটি ঠিক কতটা যুক্তিসঙ্গত? সেই প্রশ্ন তুলেছেন মেসি ভক্তরাও। কারণ, এমবাপে নিজেও কয়েকটা ম্যাচে সেভাবে কিছু করতে পারেননি। একটি ম্যাচে পাঁচ গোল করেছিলেন, এটাই যা। গোলের সামনে বল পেয়েও বাইরে মেরেছেন। তখন এমবাপেকে নিয়ে কেন কিছু বলা হয়নি? ফাইনালে আর্জেন্টিনার জয়ের পর মেসিই এখন ফরাসিদের ‘সফট টার্গেট’? মেসি ভক্তদেরও পাল্টা দাবি ভেসে উঠছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

অবশ্য মেসি আর পিএসজি – এই সম্পর্ক আর কতদিন থাকবে সেটা নিয়েও নানা জল্পনা এখনও জারি আছে। আরবের আল হিলাল, আল ইত্তেহাদ থেকে স্পেনে বার্সেলোনায় প্রত্যাবর্তন – নানারকম সম্ভাবনার কথাই উঠে আসছে বিগত কয়েকদিনে। মেসি এখনও পিএসজি-তে চুক্তি নবীকরণ করাননি। ফ্রান্স ছেড়ে বেরিয়ে যেতে পারেন মেসি, সেই সম্ভাবনা অনেকেই দেখছেন। সেটাই কি সত্যি হতে চলেছে? আপাতত এদিকেই নজর সবার।

More Articles