খাবারে বিষ! ভারতের যুবক-যুবতীদের জীবন চরম সঙ্কটে, যে চাঞ্চল্যকর সত্য প্রকাশ সমীক্ষায়
Food Habits of Indians: বিভিন্ন সমীক্ষা দেখাচ্ছে, ভারতে প্রাপ্তবয়স্কদের স্থূলতার হার তিনগুণেরও বেশি বেড়েছে।
অস্বাস্থ্যকর অভ্যাসে তলিয়ে যাচ্ছে ভারতের যুবসমাজ। এই মুহূর্তে ভারতের কর্মক্ষম যে জনসংখ্যা, যার অধিকাংশটাই যুবক-যুবতী, তাঁদের জীবন ফুরিয়ে যাচ্ছে বিবিধ অস্বাস্থ্যকর অভ্যাসে যা তাতের কর্মক্ষমতা কমিয়ে দিচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়া, স্ক্রিনটাইম এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এই মুহূর্তে ভারতীয় অর্থনীতির বড় সমস্যা। গত সোমবার নির্মলা সীতারমণের দেওয়া অর্থনৈতিক সমীক্ষায় এমনই ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে।
ভারতে কর্মসংস্থান এই মুহূর্তে বড় সমস্যা। মানুষ বাড়ছে, চাকরি কমছে। শুধু চাকরি নয়, কমে যাচ্ছে কর্মক্ষম মানুষের শারীরিক যোগ্যতাও! কর্মক্ষম মানুষের কর্মসংস্থানের জন্য দক্ষতা এবং সুস্বাস্থ্যের প্রয়োজন। অর্থনৈতিক সমীক্ষা এবং সোশ্যাল মিডিয়া অনুসারে, স্ক্রিনটাইম, টানা বসে থাকার অভ্যাস এবং অস্বাস্থ্যকর খাবারের ভয়াবহ অভ্যাসে জনস্বাস্থ্য মারাত্মক আক্রান্ত। কর্মক্ষম মানুষের উৎপাদনশীলতাও কমে যাচ্ছে। যার ফলে ভারতের অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে প্রভূত।
আরও পড়ুন- স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে নয়! জানেন, হস্তমৈথুন ঠেকাতেই তৈরি হয়েছিল কেলগ’স কর্নফ্লেক্স!
সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয় হলো। এই 'বিষাক্ত' অভ্যাস তৈরিতে বেসরকারি খাতের অবদান রয়েছে সবচেয়ে বেশি। সমীক্ষাটি বলছে, ভারতীয়দের মধ্যে যে নতুন খাদ্যাভ্যাস দেখা যাচ্ছে তা শুধুমাত্র অস্বাস্থ্যকর নয়, পরিবেশগতভাবেও এর কুপ্রভাব পড়ছে। "বহু শতাব্দী ধরেই ভারতের ঐতিহ্যবাহী জীবনধারা, খাদ্য এবং খাবার তৈরির প্রক্রিয়ার মধ্যেই কীভাবে স্বাস্থ্যকরভাবে, প্রকৃতি এবং পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে জীবনযাপন করা যায় তার উল্লেখ আছে। ভারতীয়দের বাণিজ্যিক স্বার্থেই এই খাদ্যাভ্যাস, পদ্ধতিকে শেখাটা দরকার," বলা হচ্ছে সমীক্ষায়। বিশ্বের অন্য অঞ্চলের খাদ্যাভ্যাস, খাদ্যরীতিকে আপন করার চেয়ে ভারতীয় শৈলীকে প্রচার করা জরুরি কারণ এর বিশ্বব্যাপী বাজার রয়েছে।
বিভিন্ন সমীক্ষা দেখাচ্ছে, ভারতে প্রাপ্তবয়স্কদের স্থূলতার হার তিনগুণেরও বেশি বেড়েছে। ওয়ার্ল্ড ওবেসিটি ফেডারেশনের তথ্য অনুসারে, ভিয়েতনাম এবং নামিবিয়ার পরে ভারতেই শিশুদের বার্ষিক বৃদ্ধি বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
ভারতের প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার মধ্যে স্থূলতা ক্রমেই মহামারীর আকার নিচ্ছে। জাতীয় পারিবারিক স্বাস্থ্য সমীক্ষা ৫ (NFHS-5) অনুসারে, ১৮ থেকে ৬৯ বছর বয়সে স্থূলতার সম্মুখীন হওয়া পুরুষদের হার এখন ২২.৯ শতাংশ। গত জাতীয় পারিবারিক সমীক্ষা ৪-এ তা ছিল ১৮.৯%। মহিলাদের ক্ষেত্রে গত সমীক্ষায় তা ছিল ২০.৬% (NFHS-4)। এখন তা বেড়ে ২৪.০% (NFHS-5) হয়েছে।
আরও পড়ুন-স্নান-খাওয়ার জলটুকুও নেই! দূষিত সমুদ্রের জলেই বাঁচছে গাজার শরণার্থী শিশুরা
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিকেল রিসার্চ বলছে, ভারতে মোট রোগের ৫৬.৪ শতাংশই অস্বাস্থ্যকর খাবারের কারণে। শর্করা এবং চর্বিযুক্ত উচ্চ প্রক্রিয়াজাত খাবারের ব্যবহার যত বৃদ্ধি পেয়েছে ততই শারীরিক কার্যকলাপ হ্রাস পেয়েছে। বিভিন্ন খাবারে মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টের ঘাটতিও অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতার সমস্যাকে বাড়িয়ে তুলছে।
অর্থনৈতিক সমীক্ষা অনুসারে, এই মুহূর্তে ভারতের যুবক-যুবতী, যারা আগামীতে চাকরি করবেন, উৎপাদনশীলতায় যোগ দেবেন, তাঁদের বাঁচাতে হলে সুষম এবং বৈচিত্র্যময় খাবারের প্রতি চালনা করা গুরুত্বপূর্ণ।