তামাকের বিজ্ঞাপনের জন্য বন্ধ টুর্নামেন্ট! টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট শুরুর ইতিহাস চমকে দেবে
T20 World Cup: যুবসমাজের কাছে টেস্ট এবং একদিবসীয় ক্রিকেটের থেকেও বেশি আকর্ষণের হয়ে উঠেছে ২০ ওভারের এই ক্রিকেট।
শুরু হয়ে গেল ক্রিকেটের সবথেকে ছোট সংস্করণ, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সবথেকে বড় আসর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এবারের বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ অস্ট্রেলিয়া। একটা সময়ে স্রেফ বিনোদনের জন্য তৈরি হলেও আজ সারা বিশ্বে ২০ ওভারের ক্রিকেট যেন হয়ে উঠেছে একটা আবেগ। এই খেলার মূল উদ্দেশ্য হলো, ক্রিকেট খেলাকে আরও বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করে তোলা। পাশাপাশি মাঠে দর্শকদের আরও কাছে টেনে নিয়ে এসে টেলিভিশনের পর্দায় দর্শকদের নির্মল আনন্দ উপহার দেওয়া।
তবে, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের এই উত্থান আজ থেকে প্রায় বছর ২০ আগে। সেই সময় বিশ্বস্তরে ক্রিকেট মানে শুধুই ছিল টেস্ট ক্রিকেট অথবা একদিবসীয় ক্রিকেট। সেই সময় ২০ ওভারের এই ক্রিকেট শুরু হয়েছিল একটি সাইড শো হিসেবে। কিন্তু মাত্র কুড়ি বছরেই এই ক্রিকেট হয়ে উঠেছে বিশ্বস্তরের ক্রিকেটের অন্যতম অঙ্গ। সঙ্গেই, পাল্লা দিয়ে বেড়েছে অতিরিক্ত টাকা রোজগারের সুযোগ। যুবসমাজের কাছে টেস্ট এবং একদিবসীয় ক্রিকেটের থেকেও বেশি আকর্ষণের হয়ে উঠেছে ২০ ওভারের এই ক্রিকেট। আইপিএল, বিগ ব্যাশ লিগ, এবং অন্যান্য কাউন্টি ক্রিকেটগুলো এই ২০ ওভারের ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ।
কীভাবে শুরু হয়েছিল টি-টোয়েন্টি?
একটি তামাক সংস্থার বিজ্ঞাপনের জন্য ২০০২ সালে ইংল্যান্ডের প্রসিদ্ধ ক্রিকেট প্রতিযোগিতা বেনসন অ্যান্ড হেজেস কাপ সম্পূর্ণরূপে ব্যান হয়ে যায়। এর প্রভাব সরাসরি পড়ে ইংল্যান্ডের ক্রিকেটের ডোমেস্টিক ক্যালেন্ডারের ওপর। এই বিশেষ টুর্নামেন্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে ইংল্যান্ডের ডোমেস্টিক ক্রিকেটে লাগাতার গ্যাপ আসতে শুরু করে। তৎকালীন সময়ে ইংল্যান্ড এবং ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের মার্কেটিং ম্যানেজার ছিলেন স্টুয়ার্ট রবার্টসন। তাঁর পরামর্শমতোই জুনিয়র ক্রিকেটের একটি ফরম্যাটকে তুলে আনা হয় নতুন করে। আর এইটিই ছিল এই কুড়ি ওভারের ফরম্যাট।
আরও পড়ুন: টি-টোয়েন্টির রমরমায় ক্রিকেটাররা এখন কর্পোরেট চাকুরে?
এই ফরম্যাটের ক্রিকেটে দু'টি দল ২০ ওভার করে ব্যাটিং অথবা বোলিং করার সুযোগ পেত। ফলে, সময় কম লাগার পাশাপাশি এই খেলায় রান তোলার সুযোগ ছিল ব্যাপক। মূলত, ক্রিকেটের প্রতি কিশোরদের আকর্ষণ বৃদ্ধি ছিল এই ২০ ওভারের ফরম্যাটের মূল লক্ষ্য। টেস্ট এবং একদিবসীয় ম্যাচ শেষ হতে সময় লাগত। তবে এই ফরম্যাটে খুব কম সময়ের মধ্যে ম্যাচের মীমাংসা করা সম্ভব। ফলে ইংল্যান্ডে শুরু থেকেই জনপ্রিয়তা লাভ করতে শুরু করে এই ফরম্যাটের ক্রিকেট।
তবে প্রথমবার টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০০৩ সালে ইংল্যান্ডে একটি আন্তঃকাউন্টি ক্রিকেট প্রতিযোগিতার মাধ্যমে। এই ম্যাচ দেখতে উপস্থিত হয়েছিলেন প্রায় ২৭,০০০ মানুষ। ইংল্যান্ডের ঐতিহ্যবাহী লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে মিডলসেক্সের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমেছিল সারে কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব। ১৯৫৩ সালের পরে এই প্রথম 'হোম অফ ক্রিকেটে' কোনও কাউন্টি ক্রিকেট খেলা হচ্ছিল। ফলে দু'টি দলের জন্যই এই ম্যাচ ছিল অত্যন্ত গর্বের। দুর্দান্ত পেস বোলিং এবং ব্যাটসম্যানদের একের পর এক ছক্কা হাঁকানোর কারণে এই ম্যাচে দর্শকদের মনোরঞ্জনের পরিসরটা ছিল অনেকটাই বড়। কিন্তু তবুও, প্রকৃত ক্রিকেটের তকমা তখনও লাগেনি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের গায়ে।
আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও বিশ্বকাপ
২০০৫ সালে প্রথম টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের মধ্যে। সেই ম্যাচে পরচুলা, নকল গোঁফ এবং ১৯৮০ সালের ক্রিকেট কিট পরে মাঠে নেমেছিলেন অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের খেলোয়াড়রা। গ্লেন ম্যাকগ্রা সেই ম্যাচে করেছিলেন আন্ডারআর্ম বল, তো অন্যদিকে, আম্পায়ার বিলি বাউডেনও কিন্তু কম যান না। পকেট থেকে লাল কার্ড বের করে অজি বোলারকে সতর্ক করেছিলেন তিনি। রঙ্গরসিকতায় ভরা সেই ম্যাচে কী হয়নি? গল্পটা সিনেমার মতো হলেও ক্রিকেটের এই নবীন সদস্যকে কার্যত অদ্ভুতভাবেই বরণ করে নিয়েছিল ক্রিকেট-বিশ্ব। ম্যাচের পরে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক তথা ম্যান-অফ-দ্য-ম্যাচ রিকি পন্টিং বলেছিলেন, 'আমার মনে হয় সত্যিই এই ফরম্যাটে খেলা কঠিন।'
এই ম্যাচের পর থেকেই এই ফরম্যাটের ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা এত বৃদ্ধি পায় যে, আইসিসি এর দু'বছর পরেই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের প্রথম বিশ্বকাপ আয়োজন করে ২০০৭ সালে। আর সেই ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকায়। রোমহর্ষক ফাইনাল ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে হারিয়ে সেই টুর্নামেন্ট জিতে নিয়েছিল ভারত।
পরের আসর ঠিক দুই বছর পর ২০০৯ সালে বসে ক্রিকেটের তীর্থভূমি ইংল্যান্ডে। আগেরবার ফাইনালে ভারতের কাছে পরাজিত হলেও এবার কিন্তু সেরার শিরোপা হাতছাড়া করেনি পাকিস্তান। এরপর ২০১০ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজে বসে টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতার আসর। ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড দ্বৈরথে জয় পায় ইংল্যান্ড। সেই সময়ে একদিবসীয় ফরম্যাটের বিশ্বকাপে চারটি ট্রফি জিতলেও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতা হয়নি অজিদের।
২০১২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসর বসে শ্রীলঙ্কায়। প্রথমবার এশিয়ার মাটিতে এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজিত হয়। ২০১২ সালের টুর্নামেন্টের সুপার এইট পর্বে ছিল সুপার ওভারের গড়ানো দু'টি নাটকীয় ম্যাচ। শ্রীলঙ্কা এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ- দুই ফাইনালিস্ট সুপার ওভার খেলেছিল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। কিন্তু একটিতেও যেতে পারল না কিউইরা। হোস্ট হিসেবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছিল শ্রীলঙ্কা। কিন্তু ফাইনালের তুমুল লড়াইয়ে ক্যারিবিয়ানদের কাছে হারতে হয়েছিল সাঙ্গাকারা-জয়বর্ধনেদের। মজার বিষয় হলো, গ্রুপ ম্যাচে একটি ম্যাচও জিততে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ! অস্ট্রেলিয়ার কাছে প্রথম ম্যাচ হেরে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হলে নেট রান রেটে এগিয়ে গিয়ে সুপার এইটে উঠে গিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পঞ্চম আসর বসেছিল বাংলাদেশে। ২০১৪ সালের আসরে ভিন্নভাবে বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল আইসিসি। বাছাই-পর্ব থেকে ওপরে আসা ছয়টি সহযোগী দেশ টেস্ট খেলা দলগুলোর মধ্যে ক্রমতালিকায় নিচের দিকের দু'টি দলের সঙ্গে খেলেছিল। এই পর্বের নাম দেওয়া হয়েছিল কোয়ালিফায়ার। সেখান থেকে দু'টি দলকে বেছে নিয়ে তৈরি করা হয়েছিল সুপার টেন। এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল শ্রীলঙ্কা।
এরপর ২০১৬ সালে ভারতে এই টুর্নামেন্টের আয়োজন হয়েছিল, যেখানে জয়লাভ করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সবশেষে ২০২১ সালে আরবে আয়োজিত হয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এই বিশ্বকাপে ফাইনালে উঠেছিল নিউজিল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়া। কিউইদের হয়ে অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন ৮৫ রানের একটি ঝোড়ো ইনিংস খেললেও, সুবিধে বিশেষ কিছু হয়নি। মিচেল মার্শ এবং ডেভিড ওয়ার্নারের ব্যাটিংয়ের ওপর ভরসা করে আট উইকেটে ব্ল্যাক ক্যাপসদের পরাজিত করে প্রথমবারের জন্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিজের করে নেয় অস্ট্রেলিয়া।
ক্লাব টুর্নামেন্ট ফ্যাক্টর
ফুটবলে যেরকম বিশ্বকাপের পাশাপাশি প্রিমিয়ার লিগ, লা-লিগা, বুন্দেসলীগা, লিগ্যু ১ বা এরেদিভিসি-র মতো টুর্নামেন্ট রয়েছে, সেরকমভাবেই ক্রিকেটের কুড়ি ওভারের ফরম্যাটটিকে নিয়ে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু ক্লাব ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। ভারতের আইপিএল হোক বা অস্ট্রেলিয়ার বিগ ব্যাশ লিগ, এমনকী, ইংল্যান্ডের ব্লাস্ট টি-টোয়েন্টি লিগও এখন ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে ক্রিকেটের ময়দানে।
যেরকমভাবে ১৯৮৩ সালে ভারতের বিশ্ব-বিজয়ের পর লিমিটেড ওভার ফরম্যাটের প্রতি ভারতীয়দের আকর্ষণ বৃদ্ধি পেয়েছিল, ২০০৭ সালে ক্রিকেটের সব থেকে ক্ষুদ্রতম ফরম্যাটে ভারতের জয়লাভের পরেও বিষয়টা দাঁড়ায় একই রকম। ২০০৮ সালের আগে ভারতে ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লিগ নামের একটি প্রাইভেট টি-টোয়েন্টি ইভেন্ট চলত। তবে বিসিসিআই এই ইভেন্ট থেকে কখনওই নিজেদেরকে ক্যাপিটালাইজ করতে পারেনি। তাই ২০০৮ সালে ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লিগ বন্ধ করে বিসিসিআই শুরু করে একটি নতুন টি-টোয়েন্টি ক্লাব টুর্নামেন্ট, নাম দেওয়া হয় ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ বা আইপিএল।
ছয় সপ্তাহের এই নাতিদীর্ঘ প্রতিযোগিতা যেন ভারতীয় ক্রিকেটের একেবারে ভোল পাল্টে দেয়। এই টুর্নামেন্ট পুরোপুরিভাবে শহরকেন্দ্রিক একটি ক্লাব ক্রিকেট টুর্নামেন্ট, যেখানে দল এবং খেলোয়াড়দের ফান্ড করেন ধনী ব্যাবসায়ী এবং বলিউড তারকারা। খেলোয়াড় নিলামের পাশাপাশি নতুন খেলোয়ারদের সুযোগ দেওয়া হয় এই প্রতিযোগিতায়। মাত্র দেড় মাসের প্রতিযোগিতা থেকেই কোটি কোটি টাকা রোজগার করার সুযোগ পান নামীদামি খেলোয়াড়রা।
এতদিন পর্যন্ত ক্রিকেটার হিসেবে অর্থ উপার্জনের একমাত্র রাস্তা ছিল টেস্ট ক্রিকেট অথবা একদিবসীয় ক্রিকেটে ভালো কেরিয়ার তৈরি করা এবং এর পরবর্তীতে কিছু স্পনসরশিপ ডিল থেকে অর্থ উপার্জন। তবে, এই কারণে অনেকে এমন খেলোয়াড়ও থাকতেন, যাঁরা হয়তো ভালো খেললেও কখনও জাতীয় দলে থাকার সুযোগ পেতেন না। এই প্রথাকেই পরিবর্তন করার জন্য আবির্ভাব হয়েছিল আইপিএল-এর।
আইপিএলের জনপ্রিয়তার পরবর্তীতে, আরও কিছু ক্লাব টি-২০ লিগের আবির্ভাব ঘটে। অস্ট্রেলিয়ার বিগ ব্যাশ লিগ, ইংল্যান্ডের ব্লাস্ট টি-টোয়েন্টি লিগও একইরকমভাবে জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে। বৈশ্বিক টি-টোয়েন্টি সার্কিটে এই ক্লাব লিগগুলির যথেষ্ট জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। আর এই জনপ্রিয়তার কারণেই মূলত পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজও বর্তমানে এই তালিকায় নিজেদের নাম সংযুক্ত করেছে।
ভবিষ্যৎ
আইপিএল এই মুহূর্তে বিশ্ব ক্রিকেটে এতটাই বেশি প্রভাব বিস্তার করে ফেলেছে যে আইসিসি-ও এপ্রিল-মে মাসের মধ্যে কোনও বড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করে না। আন্তর্জাতিক কোনও বড় দ্বিপাক্ষিক ম্যাচও হয় না এই সময়। উচ্চমানের ক্রিকেটাররা যাতে উপলব্ধ থাকেন, সেই জন্য আইসিসি পর্যন্ত পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছে তাদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সিডিউল।
এপ্রিল থেকে মে মাস পর্যন্ত বিরাট কোহলি বা রোহিত শর্মা ভারতীয় দলের সদস্য হওয়ার পরিবর্তে হয়ে ওঠেন রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর ও মুম্বই ইন্ডিয়ানস-এর সদস্য। শুধু ভারতীয় ক্রিকেটারদের মধ্যেই যে এই বিষয়টা কাজ করে সেরকম নয়। এই দু'মাসের জন্য প্যাট কামিন্সও অস্ট্রেলিয়া দলের পরিবর্তে হয়ে ওঠেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের সদস্য। আর এই টি-টোয়েন্টি লিগের ফলেই ধীরে ধীরে অস্তিত্ব সংকটে পড়তে শুরু করেছে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের মতো কিছু টুর্নামেন্ট।
বিরাট কোহলি যদিও বা বলেছেন, তিনি ক্লাব ক্রিকেটের পাশাপাশি টেস্ট ক্রিকেটের জন্যও নিজের পুরোটা দেবেন। কিন্তু, কতদিন পর্যন্ত বিরাটের এই মনোভাব থাকবে- তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। হয়তো বিরাট বা রোহিতের মতো বড় ক্রিকেটাররা ক্লাব ক্রিকেটের পাশাপাশি বিশ্ব ক্রিকেটেও ভালো পারফরম্যান্স করে দেখাবেন। কিন্তু, নতুন খেলোয়াড় যাঁরা আসছেন, তাঁদের খেলা কি একইরকম থাকবে? ক্লাব ক্রিকেটে মোটা টাকা পাওয়ার পর দেশের জার্সিতে কি তাদের পারফরম্যান্সে সেই ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে? উদাহরণস্বরূপ বলা যায় ভারতের জনপ্রিয় ওপেনার কে এল রাহুলের কথা, যিনি ক্লাব ক্রিকেটে দুর্ধর্ষ খেললেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ময়দানে ধারাবাহিকভাবে খারাপ পারফরম্যান্স করে আসছেন।
এরকমই অবস্থা ভারতের অন্যান্য উঠতি ক্রিকেটারদেরও হবে না তো? ২০২৩ থেকে আবার দক্ষিণ আফ্রিকা, আমেরিকা এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহি-তেও শুরু হবে টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট। সেখানে আবারও সুযোগ থাকবে মোটা টাকা উপার্জনের। তাই অভিজ্ঞ ক্রিকেট-বিশেষজ্ঞদের একটাই প্রশ্ন, মোটা টাকা উপার্জনের হাতছানিতে শেষমেশ দেশের হয়ে খেলার ইচ্ছেটা হারিয়ে যাবে না তো নতুন ক্রিকেটারদের?

Whatsapp
