জেভিয়ার্সের অন্দরে লুকিয়ে গোয়েথালসের নিজস্ব রত্নকক্ষ
St. Xavier's Goethals Library: পার্ক স্ট্রিটের শশব্যস্ত ট্রাফিকবহুল রাস্তা, তার হর্ন আর যান্ত্রিক নানা আওয়াজ, কলেজ ছাত্রছাত্রীদের হৈ-হল্লার শব্দ, চেঁচামেচি – কোনও চিহ্ন গ্রন্থাগারে নেই।
১
এক একটা দিন আলিবাবার গুহার মতো। হঠাৎ দরজা খুলে যায়। ভেতরে ঢুকে একেবারে ভ্যাবাচাকা। থরে থরে সাজানো মণিমাণিক্য। এক স্মৃতির তেরছা আলোয় অন্য স্মৃতির সিন্দুক খুলে যায়। আমি যেন কল্পনার চোখে দেখতে পাই একের পর এক ফেলে আসা দিন, পুরনো সময়। যে সময় পুরোটাই অজানা। আমার জন্মের বহু বহু যুগ আগের সেই সোনালি ডানার সময় নিয়ে ভাবতে বসি। কত মুখ, কত মানুষ, কত ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব এবং ঘটনা কল্পনায় চোখের সামনে ভেসে ওঠে। আবার হারিয়ে যায়। বর্তমান আর অতীতের সেইসব টানাপড়েনের সামনে আমি রোমাঞ্চিত হতে থাকি।
ঠিক যেখানে এসে গতবারের কিস্তি শেষ করেছিলাম সেখান থেকেই এবার জেগে উঠুক ঘটনা আর অতীতচারণ। কয়েকদিন ধরে, কেন জানি না, মাথায় ঘুরছে চার্লস ডিকেন্সের লেখা ‘A tale of Two Cities’ উপন্যাসের প্রথম পঙ্ক্তিটি। ১৮৫৯ সালে প্রকাশিত এই মহা-উপন্যাসটি অবশ্য অতীতচারী এক উপন্যাস। উনিশ শতকে মুদ্রিত হলেও এর কেন্দ্রে আছে ফেলে আসা ফরাসি বিপ্লবের কাহিনি। ফরাসি বিপ্লব মানেই আঠারো শতকের শেষ দিককার ঘটনাবলি। কিন্তু, সেসব কথা জানাবার জন্য আমি ঝাঁপ খুলে বসিনি। প্রথম পঙ্ক্তি তথা উপন্যাসের শুরুটাই ছিল চমকপ্রদ – ‘It was best of times, it was worst of times’.
সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের ফাদার ডেপেলচিন অডিটোরিয়ামের ঠিক উল্টোদিকের বাড়িতে ঢুকতেই আমি বিস্ময়ে নির্বাক হয়ে গেলাম। উল্টোদিকের বাড়িটি তুলনায় নীরব এবং শান্ত। মূল বাড়ির কর্মকাণ্ড, ছাত্র ছাত্রীদের অনবরত চলাচল, ছোটখাটো জটলা, সিকিউরিটি এবং দারোয়ানদের উপস্থিতি এবং ব্যস্ততার পাশে, এ যেন খানিকটা অন্য ভুবন। ফটক দিয়ে ঢুকে দেখা যাবে ‘Main Chapel’ লেখা বিরাট কাঠের দরজা। সেসব ঠেলে ঢুকলেই থ হয়ে যেতে হবে। দ্বিতল বিশিষ্ট এক চ্যাপেল বা উপাসনালয়। খ্রিস্টান রীতিতে একটি সুরম্য মঞ্চ। তার সামনে বেশ কিছু বেঞ্চি। দেখলেই বোঝা যায়, এই চ্যাপেল বা উপাসনালয়টি অন্তত দুশো বছরের পুরনো, নাকি দেড়শ? অত্যন্ত মার্জিত এবং শিল্পিতভাবে সম্প্রতি মেরামত এবং রঙ হয়েছে। মূল কাঠামো অবশ্য অবিকৃতই আছে। শুনলাম ওই চ্যাপেলে রবিবার বা অন্যান্য ধর্মীয় দিনে নিয়মিত প্রার্থনা এবং স্তোত্র উচ্চারিত হয়, জনসমাগম কমে এলেও একেবারে শূন্য হয়ে যায়নি। শার্সির ফাঁক দিয়ে তখন দুপুরবেলার রৌদ্রের কিছু কণা ঢুকে পড়ছিল। ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসের শেষদিকের সেইসব রৌদ্রকণা অবশ্য খুব একটা পাল্টায়নি। আমি কল্পনা করছিলাম, ১৮৯০ বা ১৯২০ সালের রৌদ্রকণায় উজ্জ্বল এই চ্যাপেলটিকে। ভাবছিলাম কোন্ কোন্ মহাত্মা বা বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, তৎকালীন ওজনদার নারী-পুরুষ বা পাদ্রি, কারা ঢুকছেন এই চ্যাপেলে। ধরা যাক ১৮৯৭ সালের ২৮ জানুয়ারি কিংবা ১৯০৮ সালের বা ১৯৩৭ সালের অথবা ১৯৪৭ সালের ২৮ জানুয়ারি – কী ঘটছে তখন চ্যাপেলের মধ্যে? কোনও অর্গান বাজছে কি, কোনও ধর্মীয় সংগীত কি শোনানো হচ্ছে অথবা কোনও বিশেষ অনুষ্ঠানে কোনও বিশপ কি পড়ে শোনাচ্ছেন বাইবেল থেকে কোনও বিশেষ সুসমাচার?
আরও পড়ুন-সুরা-মাংস-কবরখানার পথ! যেভাবে বদলে যাচ্ছে পার্কস্ট্রিটের সড়ক বাস্তবতা
২
ফিরে যাই চার্লস ডিকেন্সের সেই উপন্যাসে। বলা ভালো, প্রথম লাইনের সেই অমোঘ অনুভূতি। ফরাসি বিপ্লবের উথাল-পাতাল ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণের সঙ্গে নিশ্চয়ই তুলনীয় নয়, কিন্তু বেশ কয়েকমাস জুড়ে আমার মাথার মধ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে সেই দশদিক কাঁপানো বাক্য – ‘It was best of times, it was worst of times’...। এ কি শুধু বর্তমানের এই ক্লিন্ন, বিবর্ণ, রক্তক্ষতময়, বধির এবং আর্তনাদে মুখর কালপর্বের কথা? যখন, বের্টোল্ট ব্রেখ্টের ভাষায় অন্ধকারের দিনগুলিকে নিয়ে লেখালেখির শ্রেষ্ঠ সময়? ঠিক জানি না, ওই চ্যাপেলে গিয়ে সেই রৌদ্রোজ্জ্বল দুপুরে আমি এক আশ্চর্য শান্তির সন্ধান পেয়েছিলাম। আমার মনে হচ্ছিল, বেশ কিছুদিন যাবৎ যে অস্থিরতা আমার শিরা-ধমনীতে দ্রুতলয়ে ছুটে বেড়াচ্ছিল, সুদূর প্যালেস্তাইনের শিশুদের শব থেকে আমাদের স্বদেশ-স্বকালের অজস্র বীভৎসতার ট্রমা, সব মিলে মিশে আমাকে বিষণ্ণ আর হতাশ করে তুলেছিল, তার যেন মুহূর্তের জন্য হলেও ওই ঘরে একটা আশ্রয় খুঁজে পেয়েছিল, যুগ-যুগান্তরের নীরবতা আর নিষ্পলক শুভ সংকল্পগুলি এক ধরনের প্রশান্তি বর্ষণ করেছিল। কী জানি, সবটাই হয়তো আমার মনের ভুল!
দোতলায় উঠলে পুরো ঘরটার একটা অন্য অ্যাঙ্গেল পাওয়া যায়। কয়েক সপ্তাহ আগে দৈবাৎ আমি মাঘোৎসব উৎসবে গান শুনতে ঢুকেছিলাম, বিদ্যাসাগর কলেজের উল্টোদিকে ব্রাহ্ম সমাজের প্রেক্ষাগৃহে। মনে পড়ল, সেই অনুষ্ঠান কক্ষের আকারপ্রকারও ছিল এই ধরনের। যতদূর খবর পেলাম, ১৮৬০ সালে প্রতিষ্ঠিত সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের প্রতিষ্ঠানলগ্ন থেকেই এই চ্যাপেলটি এখানে রয়েছে। যদিও, এটির অস্তিত্ব, অনেকেই বলেন, কলেজ প্রতিষ্ঠার আগে থেকেই ছিল।
আরও পড়ুন-শীতার্ত কলকাতা, হুইস্কি এবং ব্যর্থ প্রোপোজালগুচ্ছ
৩
চ্যাপেল থেকে বেরিয়ে সিঁড়ি ভেঙে তিনতলায় উঠলাম। এখানে রয়েছে লুকোনো এক জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র। একটি গ্রন্থাগার। সেই গ্রন্থাগারে, বেশ কয়েক দিন কাটালাম আমি। সবথেকে আশ্চর্য কথা হলো, পার্ক স্ট্রিটের শশব্যস্ত ট্রাফিকবহুল রাস্তা, তার হর্ন আর যান্ত্রিক নানা আওয়াজ, কলেজ ছাত্রছাত্রীদের হৈ-হল্লার শব্দ, চেঁচামেচি – কোনও চিহ্ন গ্রন্থাগারে নেই। এ যেন এক অপরূপ বিকল্প পৃথিবী। বড় বড় আলমারি, কিছু শিল্প সামগ্রী ছড়ানো-ছিটানো, প্রচুর-প্রচুর সযত্ন রক্ষিত গ্রন্থরাজি এবং নানা মানুষের ছবি। আর নীরবতার আবেশ। কলেজ বাড়ি এবং পার্ক স্ট্রিটের সঙ্গে এই নিস্তব্ধ জ্ঞানচর্চা পরিসরের কোনও সম্পর্কই নেই। মনে হয় অন্য একটা গ্রহে এসে গেছি।
এই লাইব্রেরির ইতিহাসও বেশ জমজমাট। এই লাইব্রেরি এখন সেন্ট জেভিয়ার্স-এর নিজস্ব রত্নকক্ষ হলেও প্রকৃতপক্ষে জেসুইট পাদ্রিরা উত্তরাধিকার সূত্রে এটি পেয়েছিলেন ১৯০৮ সালে। তৎকালীন কলকাতার আর্চ বিশপ পল গোয়েথালস, এস. জে (Paul Goethals, S.J)-র কাছ থেকে। এই গ্রন্থাগারের নামটিই সেজন্য ‘The Goethals Indian Library & Research society’. আর্চ বিশপ ভদ্রলোকের একটি তৈলচিত্র এই গ্রন্থাগারের প্রবেশ পথে ঝোলানো হয়েছে। তাঁর সময়কাল ১৮৩২ থেকে ১৯০১। এই পল গোয়েথালস একটি ক্যাটালগ বা নথি তৈরি করেছিলেন ১৮৯৮ সালে। যার ভিত্তি ছিল এই গ্রন্থাগার।
গ্রন্থাগারে রয়েছে আলমারির পর আলমারি। মোট চারটি ঘর। বড় বড় টেবিলে বেশ কিছু বই, ছবি এবং নথিপত্র দর্শকদের জন্য সাজানো রয়েছে। এই গ্রন্থাগারের সংগ্রহশালায় বইয়ের পাশাপাশি রয়েছে প্রচুর ছবি। যেমন, ‘ওরিয়েন্টাল সিনারি’ বিভাগে ১৭৯৫ মার্চ থেকে ১৮০৩ জুনে প্রস্তুত টমাস এবং উইলিয়াম ড্যানিয়েলের রঙিন এনগ্রেভিং। ছ' খানা খণ্ড জুড়ে তাঁর মুদ্রণ। এছাড়াও পুরাতত্ত্ব, ইতিহাস, ধর্ম, দর্শন, সমাজতত্ত্ব, ভারততত্ত্ব, পর্যটন অভিজ্ঞতা, সাময়িক পত্র, গেজেটিয়ার, বাঁধানো নানা জ্ঞানচর্চার গ্রন্থ – সেসব দেখে চোখ ছানাবড়া হয়ে যাবার যোগাড়। প্রাচ্যবিদ্যাচর্চার সঙ্গে সংযুক্ত পত্র-পত্রিকার এক বিশাল সম্ভার এই গ্রন্থাগারের নিজস্ব সংগ্রহে রয়েছে। এদের মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য হলো – ‘Bengal past and present’ (১৯০৭ সাল থেকে), ‘The Calcutta review’ (১৯৮ খণ্ড), ‘Modern reviews’ (১৯০৭-১৯৭৮), ‘Light of the east’ (পুরো সেট/ ১৯২২-১৯৪৬), ‘Journal of the Asiatic Society Bengal’ (প্রথম সংখ্যা, ১৮৩২ থেকে)। এছাড়াও আছে নানা সংবাদপত্র, সাময়িকপত্রের বড় একটি সংগ্রহশালা, যেখানে বহু মুক্তামাণিক সযত্নে রক্ষিত। এ হলো গবেষকদের কাছে এক অনাবিষ্কৃত খনি। বিশেষত যারা আঠারো-উনিশ শতকের কলকাতা, বাংলা বা ভারত নিয়ে নানা সিরিয়াস সন্ধানে রত আছেন।
বলে রাখা ভালো, এই লাইব্রেরির ডিরেক্টর ফাদার ফেলিক্স রাজ। ঠিকানা ৩০ পার্ক স্ট্রিট, কলকাতা – ৭০০০১৬ এবং ইমেল – goethals@VSNL.com। এছাড়া ওয়েবসাইট www.goethals.org। সন্ধানী এবং জিজ্ঞাসুরা এখানে যোগাযোগ করতে পারেন। আমার অমলিন, আশ্চর্য অভিজ্ঞতার দু-এক টুকরো এখানে পেশ করব, তবে তাঁর আগে বলে রাখি, এই গ্রন্থাগার ব্যবহার করতে গেলে গবেষকের প্রতিষ্ঠান বা তত্ত্বাবধায়কের একটি পত্র প্রয়োজন।
এক ঘর থেকে অন্য ঘরে ঘুরতে ঘুরতে কত নতুন নতুন অভিমুখ যে নজরে আসে, সেসব কথা এক কিস্তিতে শেষ করা মুশকিল। এক একটি কোণে কয়েকটি আলমারি জুড়ে কোনও নির্দিষ্ট বিষয়ের বইপত্র এবং সাময়িকপত্র রাখা আছে।
আরও পড়ুন-সাঁ সুসি থিয়েটার এবং আরেকটা কলকাতা
৪
এক আদিকালের কাঠের সুদৃশ্য কারুকাজ করা ফ্রেমে একটি মুখ দেখে চমকে উঠলাম। তাঁর নাম ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়। রবীন্দ্রনাথের সমবয়সী এই অত্যাশ্চর্য মানুষটির পাণ্ডুলিপি তথা বহু তথ্য এই গ্রন্থাগারে সঞ্চয় করা আছে। খ্রিস্টধর্ম প্রচারক হিসেবে হয়তো তিনি এইসব বই, লেখাপত্র এই গ্রন্থাগারে উপহার হিসেবে পাঠিয়েছিলেন। ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়ের সময়কাল ১৮৬১ থেকে ১৯০৭। বিচিত্র জীবন। শৈশবে তাঁর নাম ছিল ভবানীচরণ। এরপর কেশবচন্দ্র সেনের সংস্পর্শে প্রথমে ব্রাহ্মধর্মের প্রচারক হন। গিয়েছিলেন সিন্ধু প্রদেশে। সেখানে রোমান ক্যাথলিক পাদ্রিদের সহযোগে তিনি প্রথমে প্রোটেস্টান্ট এবং পরে রোমান ক্যাথলিক সম্প্রদায়ভুক্ত হন। সেই সূত্রে তিনি ‘ভারতীয় খ্রিস্টান’ ধর্মতত্ত্ব প্রচারে উদ্যোগী হন। তারপর ‘হিন্দু ক্যাথলিক’ বা ‘ঈশাপন্থী হিন্দু সন্ন্যাসী’ গড়ে তোলার কাজে উৎসাহী হয়েছিলেন। প্রতিষ্ঠা করেছিলেন নর্মদার তীরে ‘ক্যাথলিক মঠ’ যেটি জব্বলপুরে অবস্থিত। সেই সূত্রে ‘কঙ্কর্ড ক্লাব’ এবং ‘কঙ্কর্ড’ পত্রিকা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯০১ সালে আবার স্বামী বিবেকানন্দের প্রভাবে হিন্দুধর্মে প্রত্যাবর্তন করেন। তখন তাঁর নাম হয়, ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়। এই অতুলনীয় মানুষটি রবীন্দ্রনাথকে, ‘ব্রহ্মচর্য বিদ্যালয়’ স্থাপনের (১৯০১) সময় শান্তিনিকেতনে প্রভূত সাহায্য করেন। ব্রহ্মবান্ধব মনে করতেন সরকারি নিয়ন্ত্রণাধীন বিশ্ববিদ্যালয় আসলে ‘গোলদিঘির গোলামখানা’। তেজস্বী এবং অনমনীয় এই দেশপ্রেমিক মানুষটি অক্সফোর্ড এবং কেমব্রিজে বিশ শতকের গোড়ায় হিন্দুধর্ম সম্পর্কে একাধিক ভাষণ দিয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতে, ব্রহ্মবান্ধব ছিলেন – ‘রোমান ক্যাথলিক সন্ন্যাসী, অপরপক্ষে বৈদান্তিক – তেজস্বী, নির্ভীক, ত্যাগী, বহুশ্রুত ও অসামান্য প্রতিভাশালী’। পরবর্তীকালে এই মননশীল মানুষটি বিপ্লব প্রচারে সক্রিয় হয়ে ওঠেন। ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে গর্জন করে ওঠেন।
৫
গ্রন্থাগারে তাঁর ছবির সামনে দাঁড়িয়ে ভাবছিলাম আরও নানা কথা। এই যে মানুষটির জীবন, এই যে সমাজের নানা স্তরে মানুষের সঙ্গে অহরহ বন্ধুতা আর মৈত্রীর কাহিনি – তাঁর মেধা এবং বিদ্রোহ, সবই তো আজ বহুলাংশে বিস্মৃত। তবু তিনি চালিয়ে গিয়েছিলেন তাঁর মরণপণ সংগ্রাম। সেই সূত্রেই তাঁর মৃত্যু। এমন এক চিরস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব কি কখনও মনে করেছিলেন সেই উত্তাল সময়ে, ‘It was best of times, it was worst of times’...
সময় আর কালচক্র নিয়ে গ্রন্থাগারে বসে ভাবি। মনে হয় জ্ঞানভাণ্ডার আর বেলা অবেলা কালবেলা পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত। কথা এই নিয়েই চলবে পরের কিস্তিতে।