২০০ বছর আগেও ছিল ‘চকলেট ডে’-এর রেওয়াজ, ইতিহাস জানলে অবাক হবেন আপনিও

Chocolate Day history : ভিক্টোরিয়া যুগেও প্রেম বিনিময়ের মাধ্যম ছিল এই চকলেট

ফেব্রুয়ারি মাস মানেই শহরে প্রেমের মরশুম। কলকাতা শহর তো বটেই, পাশাপাশি শহরতলির অলিগলি জুড়েও প্রেমের উপহারের পসরা সাজায় দোকানিরা। জীবনের ভ্যালেন্টাইনকে উপহার দেওয়ার এই যে রেওয়াজ তাতেই পরিচিত অনুষঙ্গ চকলেট। হালকা খিদে অথবা মিষ্টি মুখের পাশাপাশি মনের মানুষের মন ভালো করতেও তাই চকলেটের বিকল্প নেই। বর্তমানে বাহারি বক্সে চকলেট সাজিয়ে বিক্রি হয় প্রায়শই। তবে চকলেট খাওয়ার এই যে চল তার শুরুটা কিন্তু আজকের নয়। শোনা যায়, ময়া সভ্যতার মানুষও নাকি খেত চকলেট। সে এক লম্বা ইতিহাস। তবে এই ইতিহাসের বাইরে গিয়েও আজকের দিনে দাড়িয়ে আরও একটা প্রশ্ন উঁকি দেয়। তা হল এই ‘চকলেট ডে’ এর গল্প।

ঠিক কবে থেকে শুরু হল প্রেমের সপ্তাহে চকলেটের অনুষঙ্গ? কেনোই বা আস্ত একটা দিন নির্ধারিত করা হল চকলেটের উদ্যেশে? এই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে ফিরে যেতে হবে আজ থেকে প্রায় ২০০ বছর আগে।

চকলেট হল সর্বজন স্বীকৃত একটি ডেজার্ট। যে কোনও মানুষের মুখে এক লহমায় হাসি এনে দিতে এর জুড়ি মেলা ভার। তাই মনের মানুষকে উপহার দিতেই হোক অথবা বিশেষ কোনও আবেগঘন মুহূর্তকে উদযাপন করতেই হোক, বারবার খোঁজ পড়ে একটা চকলেটের। আজকের দিনে অবশ্য ডায়েট চার্ট মানতে গিয়ে ছেদ পড়ে এই স্বাদে। বিকল্প হিসেবে কেউ কেউ বেছে নেন ডার্ক চকলেটের প্যাকেট। এভাবেও ভ্যালেন্টাইন সপ্তাহে একটা দিন চকলেটকে উৎসর্গ করে অনেকেই।

আরও পড়ুন - মায়া সভ্যতার মানুষও চকোলেট খেত! কেমন স্বাদ ছিল? কতটা বদলেছে কয়েক হাজার বছরে?

কিন্তু প্রেমিক প্রেমিকার মধ্যে এই চকলেট বিনিময়ের প্রথা শুরু হয়েছিল এক অভিনব উপায়ে। আজ থেকে প্রায় ২০০ বছর আগে। ভিক্টোরিয়া যুগে প্রেম বিনিময়ের মাধ্যম ছিল এই চকলেট। ভালোবাসার উৎসবে মিষ্টি হিসেবে ইউরোপ এবং আমেরিকাতেও ব্যবহার করা হতো চকলেটকেই। যদিও সেই সময় চকলেট একটি পানীয় হিসেবে ব্যবহার করা হতো। উৎসব অনুষ্ঠানেও চকলেট পানীয় রাখার রেওয়াজ ছিল। জে এস ফ্রাই অ্যান্ড সন্স সংস্থা প্রথম ১৮৪৭ সালে শক্ত চকলেট তৈরি শুরু করল। এরপর ১৮৪৯ সালে রিচার্ড ক্যাডবেরি শুরু করলেন এমন চকলেট তৈরি‌‌।

অর্থাৎ ব্রিটিশ পরিবারের হাত ধরেই শক্ত চকলেট বিনিময়ের প্রথা শুরু। আজকের দিনে এই যে বাহারি উপহারের বাক্স সাজিয়ে দেওয়ার চল, তার শুরুটাও হয়েছিল সেই সময়। তখনই একটি সুন্দর বাক্সে কিউপিড ও গোলাপ কুঁড়ি এবং তার সঙ্গে মিষ্টি মুখ হিসেবে ভরে দেওয়া হতো চকলেট। ভালোবাসার দূত হিসেবে এই বাক্সটি পাঠানো হতো মনের মানুষের উদ্দেশ্যে। এরপর থেকেই প্রেমের উপহার হিসেবে ব্যবহারিক জীবনে জায়গা পায় চকলেটের বাক্স। অনেকে এই বাক্সর মধ্যে প্রেমের চিঠিও জমিয়ে রাখতে শুরু করেন। প্রেমের অনুষঙ্গ হিসেবে চকলেট জনপ্রিয়তা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ভ্যালেন্টাইন সপ্তাহে জাঁকিয়ে বসে ‘চকলেট ডে’।

 

More Articles