সাঁ সুসি থিয়েটার এবং আরেকটা কলকাতা

Sans Souci Theatre Kolkata: ১৮৩৯ সালে ‘চৌরঙ্গী থিয়েটার’ নামক সুবিখ্যাত রঙ্গালয়টি ভস্মীভূত হয়ে যাবার পর, বিদেশি রঙ্গালয় হিসেবে মুখ্য হয়ে দেখা দিল সাঁ সুসি থিয়েটার।

সাঁ-সুসি থিয়েটার পাহারা দিচ্ছেন ফেলুদা আর সত্যজিৎ রায়! এরকম একটা জবরদস্ত লাইন দিয়ে এবারের কিস্তি শুরু করলাম। ঘটনাটা একদিক দিয়ে ডাহা সত্যি, আবার অন্যদিক থেকে তলিয়ে ভাবলে অর্ধসত্য। শীতের দিনগুলোয়, আমি আবার বলছি, একটা জাদু আছে। বিশেষত দুপুরের ঝলমলে রোদে এই কলকাতার চেনা-অচেনা রাস্তাঘাট, কবরখানা, ফাঁকা পার্ক, শ্যামবাজারের নেতাজি মূর্তি, প্রিন্সেপ ঘাট, ফাঁকা ইডেনের ক্লাব হাউস, লেকের ধারের বেঞ্চি, চিড়িয়াখানার সিংহের খাঁচা, বাইপাসের ধারের জলা, ফ্লাইওভারের থেকে দেখা হোটেলের ছাদ, সল্টলেকের রবীন্দ্র-ওকাকুরা ভবনের দক্ষিণ দিকে দুর্দান্ত কৃষ্ণচূড়া – সবই যেন কেমন অবাস্তব লাগে। নানা অতি পরিচিত পথঘাট দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ যেন আবিষ্কার করে ফেলি একটা বাড়ি, একটা বৈঠকখানা, একটা মসজিদ, একটা হারানো ইতিহাস। শীতের মায়াময় কলকাতা সেই অবাক হওয়া দেখে খিলখিল করে হেসে ওঠে। যেন বলে চুপিচুপি, তোমাদের চোখের সামনেই এসব ছড়ানো রয়েছে কতদিন ধরে, তোমরা দেখতেই চাওনি!

গিয়েছিলুম, পার্ক স্ট্রিটের কবরখানায়। হারিয়ে যাওয়া কিছু মানুষ আর হারিয়ে যাওয়া কিছু স্মৃতির সন্ধানে। সেসব খোঁজাখুঁজির পাল্লা শেষ করে আমি ঢুকলাম বিখ্যাত সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের মূল ফটকের সামনে। নজরে এল বিশাল এক ফ্লেক্স। প্রতিষ্ঠার সাল ১৮৬০। রবীন্দ্রনাথের থেকে এক বছরের বড় এই কলেজের সারস্বত ঐতিহ্য তো সকলেরই জানা। সেই কলেজের প্রেক্ষাগৃহ ফাদার ডেপেলচিন অডিটোরিয়াম নিয়েই এই গালগল্পের ঝুলি খোলা যাক। গালগল্প অবশ্য নয়, একেবারে পরতে পরতে খাঁটি ইতিহাস। ওই কলেজের ডাকসাইটে অধ্যাপক রাজীব চৌধুরী আমাকে এইসব সুলুকসন্ধান জুগিয়ে নানা প্রশ্ন উস্কে দিয়েছেন।

উনিশ শতকের নামজাদা থিয়েটার স্টেজ বা রঙ্গালয় ছিল সাঁ সুসি থিয়েটার (Sans Souci Theatre)। নানা বাধা বিপত্তির মধ্য দিয়ে এই নাট্যশালা গড়ে তুলেছিলেন এক ইংরেজ মহিলা, মিসেস লীচ। বিগত সেই অতীত। উনিশ শতকের এক শ্রেষ্ঠ রঙ্গালয় হিসেবে একে গড়ে তোলা হয়েছিল পার্ক স্ট্রিটে। বিদেশি রঙ্গালয়টি গড়ে তোলার পেছনে অর্থ সাহায্য করেছিলেন সে সময়ের বহু বিশিষ্ট মানুষ। অর্থ সাহায্যের জন্য আবেদন করেছিলেন মিসেস লীচ ‘ইংলিশম্যান’ সংবাদপত্রে। তারিখটা ছিল ১৪ ফেব্রুয়ারি ১৮৪০। সেই আবেদনের সূত্রে হাজার টাকা চাঁদা পাঠালেন বড়লাট অকল্যান্ড। তারপর, এক হাজার টাকা অনুদান পাঠালেন বাবু দ্বারকানাথ ঠাকুর। রবীন্দ্রনাথের পিতামহ ইওরোপিয় রঙ্গালয়ের নির্মিতিতে টাকা ঢালছেন, এ বেশ আশ্চর্য তথ্য! এছাড়া, লক্ষ্য করুন কারা সাঁ সুসি থিয়েটার নির্মাণে সাহায্য করেছিলেন। মতিলাল শীল ৫০০্‌, রুস্তমজী কয়াজি ৩০০্‌, স্যার জে. পি. গ্র্যান্ট ২০০্‌, মেজর এইচ. বি. হেন্ডারসন ১৫০্‌, অ্যালেকজান্ডার গ্রান্ট ১০০্‌, রমানাথ ঠাকুর ৫০্‌, রসময় দত্ত ৫০্‌, এবং আরও বহু স্বদেশি বিদেশি বিশিষ্টজন। এই রঙ্গালয় শুরু করার জন্য ইংল্যান্ড থেকে আনা হয়েছিল দুই নামজাদা অভিনেতা-অভিনেত্রীকে। এলেন জেম্‌স ব্যারী এবং তাঁর সহধর্মিণী। এলেন মিসেস ডীকল। মিসেস ডীকল সম্পর্কে একটা-দুটো কথা না বললেই নয়। এই অভিনেত্রীর ক্লিওপেট্রা চরিত্রে অভিনয় ছিল প্রবাদপ্রতিম। বিলেতের অ্যাডলফি থিয়েটার তাঁর অভিনয় দেখে হর্ষধ্বনিতে মুখর হয়ে উঠত। শুধু এঁরাই নয়, আরও বহু অভিনেতা-অভিনেত্রী এসেছেন পরবর্তীকালে সুদূর ইংল্যান্ড থেকে, সুদূর লন্ডন থেকে, ইওরোপিয়ান এবং বাঙালি দর্শকদের মনোরঞ্জন করতে।

আরও পড়ুন- সুরা-মাংস-কবরখানার পথ! যেভাবে বদলে যাচ্ছে পার্কস্ট্রিটের সড়ক বাস্তবতা

১৮৩৯ সালে ‘চৌরঙ্গী থিয়েটার’ নামক সুবিখ্যাত রঙ্গালয়টি ভস্মীভূত হয়ে যাবার পর, বিদেশি রঙ্গালয় হিসেবে মুখ্য হয়ে দেখা দিল সাঁ সুসি থিয়েটার। শহর কলকাতায় শোরগোল পড়ে গেল এই খবরের পরিপ্রেক্ষিতে। লিখতে লিখতে আশ্চর্য হয়ে দেখি সাঁ সুসি থিয়েটারের দ্বারোদঘাটন হয়েছিল ১৮৪১ সালের ৮ মার্চ! ৮ মার্চ, নারী দিবস। এই রঙ্গালয়ের কর্ণধার ছিলেন এক নারী। মিসেস লীচ। অবাক হওয়ার পালা এখানেই শেষ নয়। এই লেখা যখন ‘ইনস্ক্রিপ্টে’ প্রকাশিত হবে, বই পাঠকের দরবারে পৌঁছবে – সেদিনের তারিখটা হলো ৯ মার্চ, ২০২৫!

সাঁ সুসি থিয়েটার যেদিন উদ্বোধন হল, নানা সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, সেই উদ্বোধনের বর্ণাঢ্য উদযাপনের নানা কীর্তি আর মুহূর্তের কথা। আমন্ত্রিত হয়ে এসেছিলেন তৎকালীন বড়লাট অকল্যান্ড এবং তাঁর দুই ভগ্নী। এছাড়া স্যার জে. পি. গ্র্যান্ট, হিউম, স্টোকলার, টাটর্ন প্রমুখ উচ্চবর্গের কেষ্ট-বিষ্টুরা। প্রায় আশিজন অভ্যাগত সেদিন সমবেত হয়েছিলেন। তারপর, গোঁড়া রাজভক্ত ইংরেজরা মহারানির উদ্দেশ্যে ‘টোস্ট’ দিয়ে নৈশভোজে অংশ নিয়েছিল। একটি পিয়ানোর চারদিকে জড়ো হয়ে তৎকালীন নামকরা গায়ক-গায়িকাদের কণ্ঠে সুরে-সুরে উচ্চারিত হয়েছিল ইংল্যান্ডের জাতীয় সংগীত। ‘গড সেভ দ্য কুইন’ গানটির সুরেলা উপস্থাপনা হয়েছিল সমবেত কণ্ঠে। তার রেশ ছুটে গিয়েছিল অন্ধকার পার্ক স্ট্রিটে। এখন ভাবলেই, গা-ছমছম করে। অনেক পাল্কি, ঘোড়ার গাড়ি, সহিস-কোচোয়ান, পাল্কি বাহক আর সিগারেট-পাইপের ধোঁয়া, কোট প্যান্ট আর পাগড়ি মেশানো সেই আঁধার মাখা আবছা দৃশ্যপট। কিছুটা দেখা যায়, কিছুটা বোঝা যায় না।

গভীর রাত পর্যন্ত চলেছিল এই সঙ্গীত নৃত্যের হৈ-হুল্লোড়। সে যুগের খ্যাতকীর্তি অভিনেত্রী তথা এই নাট্যশালার মালিক মিসেস লীচ অভিনয় করেছিলেন ‘দি ওয়াইফ’ নামের একটি নাটক। সেই ৮ মার্চের রাতে যেসব মহামনিষীদের জন্য পানপাত্রের মাধ্যমে ‘টোস্ট’ করা হয়েছিল, তাঁরা হলেন মহান স্রষ্টা উইলিয়ম শেক্সপিয়র, বড়লাট লর্ড অকল্যান্ড, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান এবং অন্যান্য বিচারপতি, মিসেস লীচ প্রমুখ। তালিকা দীর্ঘ। মনে রাখতে হবে, এইসব ঘটনা যখন ঘটছে তখন ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন। কলকাতা তখন সেই রাজত্বের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু। হয়তো সেই কারণেই লন্ডন থেকে এত সহজে নামীদামী অভিনেতা অভিনেত্রীরা চলে আসতেন কলকাতায়। সাঁ সুসি তো বটেই, এমনকী অন্যান্য বহু নাট্যশালায়। কলকাতার বিদেশি রঙ্গালয়ের ইতিহাস এমন বহু ঘটনা এবং উত্থান পতনের সাক্ষী। কলকাতার এইসব রঙ্গালয়ের মাধ্যমে ইংরেজ এবং অন্যান্য ইওরোপিয় জনগোষ্ঠীর মনোরঞ্জন হতো। অর্থ সংক্রান্ত টানাপড়েনে ব্যতিব্যস্ত হয়ে এই রঙ্গালয় সংলগ্ন প্রাঙ্গণে ঘোড়া, কুকুর এবং জোকারদের নানা কাজকারবারের হইচই টিকিট কেটে দেখানোর কথাও ভাবা হয়েছিল। সাঁ সুসি থিয়েটার নিয়ে দু'টি কাহিনি শোনাতে ইচ্ছে করছে। সেখানে যাবার আগে প্রসঙ্গত বলে যাই, এই থিয়েটারের স্বত্বাধিকারী হিসেবে একের পর এক ইংরেজ মহিলাকে আমরা দেখতে পাব। নারী দিবসের প্রাক্কালে এই তথ্যটি হয়তো বিশেষ গুরুত্বের।

১৮৪১ সালেই হিন্দু কলেজের প্রসিদ্ধ অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন ডি. এল. রিচার্ডসন তাঁর প্রথম নাটকটি রচনা করেন, সাঁ-সুসি রঙ্গালয়ের জন্য। রজার্সের ‘দ্য ব্যাগ অভ গোল্ড’ গল্পটিকে তিনি নাট্যরূপ দেন। তৎকালীন সংবাদপত্রে এর খবর পাওয়া যায়।

ইংল্যান্ড থেকে জবরদস্ত নাট্যশিল্পীরা আসতেন এই সাঁ সুসি থিয়েটারে এবং তার মালিক ছিলেন শ্রীমতী লীচ। এই সূত্রে বেশ কয়েকজন শিল্পীর নাম পাওয়া যায়। বোঝা যায়, শুধু ইংল্যান্ডই নয় সাঁ সুসি থিয়েটারের নামডাক পৌঁছেছিল বিশ্বের সমস্ত প্রান্তেই। লন্ডন থেকে এসেছিলেন প্রথম যুগে জেমস ব্যারী এবং তাঁর সহধর্মিণী। এসেছিলেন অভিনেত্রী মিসেস ডীকল এবং মিস কাউলি। অস্ট্রেলিয়া থেকে যশস্বী অভিনেত্রী মাদাম দেরম্যাঁভিয়ে কলকাতার মঞ্চে অভিনয়ের জন্য আসেন এবং এই মঞ্চের সঙ্গে যুক্ত হন। অন্যদিকে, দ্বিতীয় পর্বে লন্ডন শহরের বিভিন্ন মঞ্চে দাপিয়ে অভিনয় করা জেমস ভাইনিং এলেন কলকাতায়। এখানকার দর্শককে মাতিয়ে দিলেন তাঁর ‘মার্চেন্ট অফ ভেনিস’ নাটকে শাইলকের ভূমিকায়। সালটা ১৮৪৩ আর তারিখ ২ নভেম্বর।

তারিখটি সাঁ সুসি নাট্যশালার ইতিহাসে এক নিদারুণ স্মৃতির। ‘মার্চেন্ট অব ভেনিস’ নাটকের পর অভিনয় হয় একটি প্রহসন, ‘হ্যান্ডসাম হাজব্যান্ড’। এই নাটক চলাকালীন অসামান্য অভিনেত্রী এবং সাঁ সুসি রঙ্গালয়ের মালিক মিসেস লীচের পোশাকে মঞ্চের এক বাতির শিখা থেকে আগুন লেগে যায়। দর্শকরা তখন প্রহসনের হাস্যরঙ্গে মত্ত। ‘Calcutta Star’ সংবাদপত্রে 4th November, 1843 এই দুর্ঘটনার বিবরণ পাওয়া যায়।

'… Mrs. Leach’s dress had caught fire, and before it could be extinguished she was most severely burnt on the hands, arms and neck, although the promptest assistance was given by those nearest to her…’

অশেষ জ্বালা যন্ত্রণা ভোগ করে ১৮ নভেম্বর কলকাতা মঞ্চের এক প্রতিভাময়ী শিল্পী শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন। ‘ক্যালকাটা স্টার’ পত্রিকা জানাচ্ছে, ‘…Mrs. Leach has left three children unprovided for, a boy in England and two girls in Calcutta…’ ভবানীপুরের মিলিটারি সিমেট্রিতে এখনও জরাজীর্ণ অবস্থায় আছে তাঁর সমাধি। আমি অবশ্য দেখিনি। শুনেছি এবং পড়েছি মাত্র।
মিসেস লীচের এই দুই কন্যার একজন হলেন মিসেস অ্যান্ডারসন। তিনিও মায়ের মতোই প্রতিভাময়ী অভিনেত্রী ছিলেন। এই অভিনেত্রী সাঁ-সুসি থিয়েটারে নিপুণ অভিনয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করেছিলেন। তাঁর অভিনীত ডেসডিমোনা চরিত্র তৎকালীন নাট্যসমালোচক এবং সাময়িক পত্রের সংবাদদাতাদের অকুণ্ঠ প্রশংসা লাভ করেছিলেন। মিসেস অ্যান্ডারসনের অভিনয়ে অনেকে দেখেছিলেন তাঁর মায়ের ছায়া। অথচ, হাওড়ায় একটি নাটকে অভিনয় করে ফেরার সময় ১৮৫৯ সালে, গভীর রাতে, এই মহিলা এবং আরও কয়েকজনের গঙ্গাবক্ষে বয়ার সঙ্গে ধাক্কা লেগে নৌকা উল্টে সলিল সমাধি হয়। তখন অগাস্ট মাস। ভরা শ্রাবণের উথাল স্রোতে মিসেস অ্যান্ডারসনের কোনও হদিশ পাওয়া যায়নি। তাঁর শিশুকন্যাও সেদিন সঙ্গে ছিল এবং তারও করুণ পরিণতি হয়।

আরও পড়ুন- শীতার্ত কলকাতা, হুইস্কি এবং ব্যর্থ প্রোপোজালগুচ্ছ

এইসব ভাবতে ভাবতে আজ যদি আপনি পা রাখেন সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে, দেখবেন সেই সাঁ সুসি থিয়েটার এখন হয়ে গেছে এক ঝলমলে আধুনিক প্রেক্ষাগৃহ। এই মঞ্চে এখন প্রধানত কলেজের ছাত্রছাত্রীদের নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়, কলেজের নিজস্ব বৈঠক বা ভাষণও পরিবেশিত হয়ে থাকে। বিশাল সেই সুসজ্জিত, সুপরিকল্পিত এবং সুনির্মিত কক্ষের দিকে তাকালে পুরনো সেই দিনের দৃশ্য কল্পনা করাও শক্ত। ১৮৪৯ সালের ১৯ মে, ‘বেঙ্গল হরকরা’ থেকে জানা যাচ্ছে, মিস্টার ব্যারীর ফেয়ারওয়েল নাইট হিসেবে ২১ মে-র অভিনয়ই এই রঙ্গালয়ের শেষ অভিনয়। এরপর একসময় বেলজিয়ামের জেসুইট সম্প্রদায়ের ফাদাররা বাড়িটি এবং প্রাঙ্গণটি কিনে নেন। সেই সাঁ সুসি থিয়েটার!

এখন যেই ঢুকতে গেছি দেখি বাইরে লম্বা করিডোরে বিপুল আকারের সত্যজিৎ রায়ের ছবি। তাঁর নানা মুড আর মুহূর্তের সাদাকালো চিত্রমালা। বিভিন্ন চলচ্চিত্র নির্মাণের টুকরো-টুকরো দৃশ্য। এইসব স্থিরচিত্র দেখতে দেখতে বুঝতে পারি, আশ্চর্য দক্ষতায় এগুলি তোলা হয়েছে। তার কৌণিক চিত্রায়ন, তার আলো, তার কম্পোজিশন তার পরিপ্রেক্ষিত সবই নিবিড় কুশলতায় সেরা! জানতে পারলাম, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলোকচিত্রী নিমাই ঘোষ এই ছবিগুলি সেন্ট জেভিয়ার্সকে উপহার দিয়েছেন। কলেজ এখানে এভাবেই সযত্নে সংরক্ষণ করেছে ছবিগুলি। সেই ব্লো-আপ করা ছবিতে চলচ্চিত্রের অগ্রগণ্য মহানির্মাতার উজ্জ্বল এক প্রতিচিত্র ভাস্বর হয়ে ওঠে। ওই যে দেখা যাচ্ছে ফেলুদা আর মন্দার বোস-কে। সাঁ সুসি থেকে এবার আমরা চলেছি, সোনার কেল্লার সন্ধানে!

তবে, এখানেই শেষ নয়, কলেজ চত্বরে আছে আরও একাধিক লুকোনো রত্নরাজি। আমি ফাদার ডেপেলচিন অডিটোরিয়াম থেকে বেরিয়ে ঠিক উল্টোদিকে এগোলাম। সে সব গল্প পরের কিস্তিতে। সেও এক রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা!

More Articles