দীর্ঘদিন ধরে কেবল মুখেই মাখছেন সানস্ক্রিন? যে ভয়াবহ আশঙ্কা বাড়চ্ছেন জীবনে...
Use of Sunscreen: ত্বকের ক্ষতি কমাতে কেবল মুখে না ঘাড়ে বা গলার মতো নরম জায়গাতেও সানস্ক্রিন প্রয়োগ দরকার।
রোদে বাইরে বেরোতে হলে সানস্ক্রিন 'মাস্ট'! বছর ৩০ আগেও এত বাড়াবাড়ি ছিল না, রোদেরও না, সানস্ক্রিন মাখার হিড়িকেরও না। তবে একথা তো সত্য, সূর্য ত্বকের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। আমাদের ত্বকের কোশগুলিকে ভয়ঙ্কর ক্ষতির মুখে ফেলে সূর্যের তাপ, যা নির্দিষ্ট ক্যান্সারের দিকে এগিয়ে যেতে পারে। তাই সানস্ক্রিন কিন্তু নিছক আর সৌন্দর্য রক্ষার প্রসাধান নয়। ক্ষতিকারক বিকিরণের ফলে ত্বকের মারাত্মক বিপদ ঠেকাতে বাজারে তাই হরেক কিসিমের ক্রিম। কিন্তু এই সানস্ক্রিন আসলে কতটা কার্যকর? একজন ৯২ বছরের বৃদ্ধের মুখ এবং ঘাড়ের অবস্থা বলছে, সানস্ক্রিন আসলে অত্যন্ত জরুরি বিষয়।
এই ছবিটি প্রকাশিত হয় ইউরোপিয়ান আকাডেমি অব ডার্মাটোলজি অ্যান্ড ভেনারোলজি জার্নালে। ৯২ বছর বয়সি একজনের মুখ এবং ঘাড়ের স্পষ্ট ছবি রয়েছে এতে। এই বৃদ্ধ নিজের মুখে UV-প্রতিরক্ষামূলক ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করেছিলেন নিয়মিত কিন্তু ঘাড়ে বা গলায় কোনওদিন লাগাননি। আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি আমাদের ত্বকের ঠিক কতটা ক্ষতির করে, তা একেবারে স্পষ্টভাবে ধরা পড়েছে ছবিতে।

সূর্যের রোদে সরাসরি থাকলে তা আমাদের ত্বকে বার্ধক্যজনিত প্রভাব ফেলতে পারে। সূর্যের অতিবেগুনি বা UV রশ্মি ত্বকের স্তরগুলি ভেদ করতে পারে এবং সহজেই আমাদের কোশগুলির ক্ষতি করতেও পারে। স্বাভাবিক নিয়মে বয়স বাড়া, ত্বকে বার্ধক্যের ছাপ পড়া একেবারেই আলাদা বিষয়। কিন্তু সূর্যের রোদের কারণে বয়স্ক দেখানোকে বলা হয় ফটোএজিং।
আরও পড়ুন- ক্যান্সারের ভয়াবহ উপাদান মিলল ড্রাই শ্যাম্পুতে! কোন কোন শ্যাম্পু বিপজ্জনক, জেনে নিন
সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মির কারণে সরাসরি প্রভাবিত হয় মানুষের ত্বক। আমাদের শরীরের যে যে অংশগুলি সাধারণত উন্মুক্ত থাকে, মুখ, ঘাড়, গলা বাহু এবং হাত সাধারণত ঢেকে থাকা জায়গাগুলির তুলনায় বেশি বুড়িয়ে যায়। ত্বকের বয়স বাড়ানোর পাশাপাশি, সূর্যের এই রশ্মি ত্বকের কোশের ডিএনএরও ক্ষতি করতে পারে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ক্ষতি জেনেটিক মিউটেশনের ঝুঁকি বাড়ায় যা ক্যান্সারের জন্ম দিতে পারে। তাই রোদের সঙ্গে ক্যান্সার এবং বার্ধক্য অত্যন্ত জড়িত।
ত্বকের ক্যান্সারের গবেষক-বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি বার্ধক্যের লক্ষণগুলির চিকিত্সা করা যায় তবে ক্যান্সার রোগের ঝুঁকিও কমানো সম্ভব। বিভিন্ন কারণেই মানুষ বার্ধক্যকে ঠেকিয়ে রাখতে চায়। শুধু তো চেহারায় বদল না, বার্ধক্য এমন রোগ ডেকে আনে যা বাকি জীবনকে বিষিয়ে দেয়। সুতরাং, যদি ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়াকে, ত্বকের রোগকে ঠেকাতেই হয়, সূর্যের রোদ থেকে সঠিক উপায়ে বাঁচাতে হবে নিজেকে। ক্যান্সারের নানা বৈশিষ্ট্য এবং বার্ধক্যের বৈশিষ্ট্যের মধ্যে যথেষ্ট মিল রয়েছে। বার্ধক্যজনিত জৈবিক পরিবর্তনগুলির মোকাবিলা করতে পারলে ক্যান্সারের কিছু লক্ষণ বিষয়েও সতর্ক হওয়া যাবে।
যে ত্বক সময়ের ঢের আগেই অনেকখানি বুড়িয়ে যায় তার নেপথ্যে থাকে কোশের ক্ষতি, যা ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। খাদ্যাভ্যাস হোক বা জীবনযাপন, বদলাতে হবেই। সাধারণ সানস্ক্রিনও বার্ধক্য প্রতিরোধ করে, ত্বকের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হতে পারে। হ্যাঁ, সানস্ক্রিন কখনই ক্যান্সারের ঝুঁকি দূর করবে না তবে ত্বকের ক্ষতি কমাতে কেবল মুখে না ঘাড়ে বা গলার মতো নরম জায়গাতেও সানস্ক্রিন প্রয়োগ দরকার। কারণ, এই ছবিটিই বলে দেয় ফারাক কতখানি!

Whatsapp
