১১১ বছর পর ভাইরাল হল ঐতিহাসিক মেনু কার্ড! কী কী খাবার পরিবেশন করা হয়েছিল টাইটানিকে?

TITANIC Menu Chart : সমুদ্রে ডুবে যাওয়া সেই বিখ্যাত টাইটানিকের খাবারের মেনু কার্ড সামনে এল, এতগুলো বছর পেরিয়ে এসেও যেন বিস্ময় জাগায় এ ঘটনা...

সেই অমোঘ দৃশ্য। আটলান্টিকের বরফগলা জলে ভাসছে দরজার একটা পাল্লা। সেটুকুকেই খড়কুটোর মতো আঁকড়ে রয়েছেন নায়িকা। নায়ক জ্যাকও লুটোচ্ছে প্রাণপণ ওই ভাসমান পাল্লা আঁকড়েই। পরে অবশ্য একটি স্পিডবোট এসে নায়িকা রোজকে বাঁচায় তবে নায়ক হারিয়ে যান অতল গভীরেই। ছবির নাম ‘টাইটানিক’। ১৯৯৭-এ মুক্তি প্রাপ্ত হলিউডি এপিক। যা কেবল ইংরেজি ভাষাই নয় ঘোর ধরায় অন্যান্য ভাষাভাষীদের মধ্যেও। তবে এ ঘটনা কেবল গল্প নয়, ঘোর বাস্তব থেকে তুলে আনা পটচিত্র মাত্র।

সময় থেমে থাকে না। এ ঘটনার পর কেটে গিয়েছে প্রায় ১১১ বছর। বিশ্ব অবশ্য আজও ভুলতে পারেনি সেই দুর্বিষহ ঘটনাকে। ‘টাইটানিক’ নিছক দুর্ঘটনা নাকি জাহাজডুবির কোনও ছক, আজও উত্তর মেলেনি এমন আরও অনেক প্রশ্নের। কেবল ইতিহাসের পাতায় বিভীষিকার মতো থেকে গিয়েছে জাহাজের এই নামটুকু। সিনেমার সেই টাইটানিক আসল ছিল না। পুরোটাই সাজানো। তাহলে আসলটা কী রকম ছিল, এই প্রশ্ন জাগাটাই স্বাভাবিক। কেননা সিলভার স্ক্রিনেই অনেকের চোখ কপালে উঠেছিল। জাহাজও এরকম হতে পারে। টাইটানিক ছিল সাজ সরঞ্জামে ভরপুর একটা জাহাজ। ১৯১১ সালে দাঁড়িয়ে পৃথিবীর বুকে ওরকম একটা জাহাজ তৈরি করাই ছিল এক আবিষ্কার। যার অন্দরমহলটাও ছিল দেখবার মতো। কারুকার্য এবং মানুষের সৃজনশীলতার মিশেল ছিল সে জাহাজ। আজও এতগুলো দিন পেরিয়ে এসে যা নিয়ে আগ্রহ টলে না এক রত্তিও।

titanic menu chart remain a history itself

আরও পড়ুন - কোনওদিন ডোবেইনি আসল টাইটানিক! আড়ালে ছিল কোন ষড়যন্ত্র?

আগ্রহ তো ছিলই, এবার তার সঙ্গে যোগ হল কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্যও। সম্প্রতি নেট মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে এমনই একটি ঘটনা। টাইটানিকের ডুবে যাওয়ার ১১১ তম বার্ষিকী উপলক্ষে, Taste Atlas নামক একটি জনপ্রিয় ইনস্টাগ্রাম পেজ জাহাজের বিভিন্ন ক্লাসে পরিবেশিত মেনুর ছবি শেয়ার করেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। একেই রহস্য ছিল, তার ওপর এরকম একটি তথ্য সামনে আশায় ইতিমধ্যেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে চতুর্দিকে। হলদে হয়ে যাওয়া পুরনো মেনুর পাতা যেন আস্ত একটা ইতিহাস তুলে ধরে আমাদের সামনে। সেই ইতিহাসের প্রতি টানই আমাদের নিয়ে যায় আজ থেকে ১১১ বছর আগের টাইটানিকের হেঁশেলে। জানেন কী ছিল সেই মেনুতে?

 
 
 
 
 
View this post on Instagram
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 

A post shared by TasteAtlas (@tasteatlas)

জাহাজ যখন এহেন বিলাসবহুল তখন তার মেনুও যে কম চমকপ্রদ কিছু হবে না, তা অবশ্য সহজেই আঁচ করা যায়। ব্রিল, কর্নড বিফ, সবজি, ডাম্পলিংস থেকে শুরু করে সুইডিশ রুটি, মার্মালেড, ব্রেড ও মাখন, স্মোকড হেরিংস, জ্যাকেট পটেটো, বয়েলড হোমিনি সহ আরও কত ধরণের খাবার! আজকের সময়ে দাঁড়িয়েও এই মেনু সহজেই টেক্কা দেবে হালফিলের ক্যাফে রেস্তোরাঁকেও।

প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় শ্রেণীর যাত্রীদের ক্ষেত্রে খাবারের মেনুতে বিশেষ কিছু বদলও লক্ষ্য করা যায়। প্রথম শ্রেণির যাত্রীদের জন্য মেনু ছিল এলাহি। ব্রিল, কর্নড বিফ, সবজি, ডাম্পলিংস, গ্রিলড মটন, কাস্টার্ড পুডিং, চিংড়ি, নরওয়েজিয়ান অ্যাঙ্কোভিস এবং বিভিন্ন ধরণের চিজের আইটেম পরিবেশন করা হয়েছিল। অন্যদিকে, তৃতীয় শ্রেণির প্রাতঃরাশ এবং রাতের খাবার ছিল সীমিত। সেখানে শুধুমাত্র ওটমিল পোরিজ এবং দুধ, স্মোকড হেরিংস, জ্যাকেট আলু, হ্যাম এবং ডিম, ব্রেড ও মাখন, মার্মালেড এবং সুইডিশ রুটি ছিল। এখানেই শেষ নয়, শোনা গিয়েছে, টাইটানিকের সেই শেষ লাঞ্চ এর মেনু কার্ডকে সম্প্রতি চড়ানো হচ্ছে নিলামেও। আশা করা হচ্ছে ৫০,০০০ থেকে ৭০,০০০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত দাম পাওয়া যাবে এতে।

More Articles