পায়ে হেঁটেই বিদেশ যাওয়া যায় এখান থেকে! জানেন ভারতের সর্বশেষ রেলস্টেশন কোনটি?
Last railway station in India : হাঁটা দূরত্বেই বিদেশের হাতছানি! ভারতের শেষপ্রান্তে অবস্থিত এই রেলওয়ে স্টেশনটিকে চেনেন?
ভারতীয় রেল মানেই আস্ত একটা যুগের অবয়ব। ওই লোহার চাকার ঘর্ষণে যে কত শত ইতিহাস জমা আছে, তার হিসেব কষা নেহাতই ছেলেমানুষী। রেলপথের আবিস্কারের হাত ধরে বদলে গিয়েছিল গোটা সমাজটা। বিবর্তনের ইতিহাস তাই ভারতীয় রেলের জায়গাটা চিরকালই বেশ পাকা। যদিও সময় বদলেছে। যাতায়াত ব্যবস্থাতেও এসেছে অদলবদল। আজকালকার ব্যস্ত সময় সড়কপথ অথবা আকাশপথে ভ্রমণকে বিকল্প হিসেবে বেছে নিচ্ছেন অনেকই। তবে এসবের পরেও ট্রেনের জায়গাটা টলে না এক রত্তিও। মুহূর্তের মধ্যে দূরপাল্লার ট্রেনের টিকিট ফুরিয়ে যাওয়ার হিসেব দেখলে সে কথা ভালোই আঁচ করা যায়।
সময়ের সঙ্গে রেল ব্যবস্থাতেও বদল এসেছে। যাত্রী সুবিধার কথা মাথায় রেখে এসেছে নয়া প্রযুক্তি। অফলাইনের একচেটিয়া জগতে থাবা বসিয়েছে হালফিলের অনলাইন মাধ্যম। ভারতীয় রেলও প্রয়োজনের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে সাজিয়ে তুলেছে নিজেকে। প্রসঙ্গত জেনে রাখা দরকার, ভারতের মতো জনবহুল দেশে রেলপথই হল সুলভ ও সহজতম পরিবহন মাধ্যম। মাঝে করোনা পরিস্থিতিতে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় কার্যত থমকে গিয়েছিল দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা। শুধু তাই নয়, এর প্রভাব পড়েছিল দেশের অর্থনীতিতেও। তারপর আবার পরিস্থিতির বদল হওয়ায় চালু হয় ট্রেন। পাশাপাশি এ কথা জেনে রাখা দরকার, ভারতীয় রেল বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম রেল নেটওয়ার্ক এবং এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা। আমাদের দেশে মোট ৭,৩৪৯টি রেল স্টেশন রয়েছে।
আরও পড়ুন - বিনা টিকিটে মাছিও পারে না গলতে! ১কোটি টাকার জরিমানা তুলে রেকর্ড সাঁতরাগাছির টিকিট চেকারের
ভারতের এই এতগুলি স্টেশনের মধ্যে এমন অনেক স্টেশন রয়েছে যাদের ঘিরে আজও দানা বাঁধে রহস্য। কোথাও আবার আজকের সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লালিত হয় ইতিহাসও। এরকমই একটি রেল স্টেশন হল সিঙ্গাবাদ। শুনলে অবাক হবেন, এখন থেকে মাত্র ঢিল ছোঁড়া দূরত্বের মধ্যেই রয়েছে বিদেশের হাতছানি। ফলে এখান থেকে পায়ে হেঁটেই পৌঁছে যাওয়া যায় ভিনদেশে। যদিও কেবল পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলের জন্যই ব্যবহৃত হয় এই সিঙ্গাবাদ রেল স্টেশনটি। পশ্চিমবঙ্গের মালদহ জেলার হাবিবপুরে অবস্থিত এই স্টেশনের একটা বিশেষত্ব আছে। এই স্টেশন থেকে বাংলাদেশের সীমান্তের দূরত্ব খুবই সামান্য। এতটাই সামান্য যে এখান থেকে মানুষ পায়ে হেঁটে সহজেই ভিনদেশে বেড়াতে চলে যেতে পারে।
যদিও ভারত-পাকিস্তান ভাগের পর বন্ধ হয়ে যায় এই স্টেশনটি। তবে, আবার ১৯৭৮ সালে ট্রেন আসা-যাওয়া শুরু করে সিঙ্গাবাদ স্টেশনে। আজও ব্রিটিশ আমলের স্মৃতি বহন করে চলেছে এই স্টেশনটি। এখনকার সিগন্যাল থেকে শুরু করে ব্যবহৃত মেশিন সবই ব্রিটিশ আমলের। বর্তমানে এই সিঙ্গাবাদ রেলস্টেশন থেকে ট্রেনের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে নেপালে সার রফতানি করা হয়। তবে বহুদিন যাবৎ এই স্টেশনটি যাত্রী চলাচলের জন্য ব্যবহৃত হতো না অতঃপর ২০০৮ সাল থেকে এই স্টেশনে শুরু হয় যাত্রী ট্রেনের পরিষেবা। তবে যাত্রীবাহী ট্রেনের সংখ্যা মাত্র ২টি। এই সিঙ্গাবাদ রেল স্টেশনটি ভারতের সীমান্তকে সূচিত করে। স্টেশনের সাইনবোর্ডেও রয়েছে সেই সাক্ষ্য।