মাস্ক মোটেই ঠেকায়নি কোভিড-১৯ কে! কেন তবে দেশে বাধ্যতামূলক হলো মাস্ক?
Covid-19 Face Mask: ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে কোভিড-১৯ কে ঠেকাতে মাস্ক পরার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে প্রচারে আনা হয়।
একটা সার্জিকাল মাস্ক, তার উপর একটা এন-৯৫। নাক মুখের কোনও ছিদ্র দিয়েই কোভিড-১৯ ভাইরাসের প্রবেশ নাস্তি! মহামারী, মৃত্যু, পরিযায়ী দুর্ভোগ- তিন বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গিয়েছে। বিশ্বজুড়ে লাখে লাখে মানুষের মৃত্যু আতঙ্ক বাড়িয়ে মানুষকে ঘরবন্দি করেছে। সেই সময় একমাত্র ত্রাতা হয়ে দেখা দেয় ফেস মাস্ক এবং স্যানিটাইজার। মাস্ক ভাইরাস রোধ করতে সক্ষম বলে প্রচার করা হলেও এখন শোনা যাচ্ছে সম্পূর্ণ উলটো এক তথ্য। মাস্ক পরলে শ্বাসযন্ত্রে করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধ করা যায় কিনা তার নাকি যথেষ্ট প্রমাণই মেলেনি! রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (Centers for Disease Control and Prevention) প্রাথমিকভাবে দাবি করেছিল, মাস্ক বাধ্যতামূলক। ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে কোভিড-১৯ কে ঠেকাতে মাস্ক পরার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে প্রচারে আনা হয়। তারপর থেকে সারা বিশ্বে ভিড়ে, বা প্রকাশ্য স্থানে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক হয়ে ওঠে। খুব সম্প্রতি মাস্ক বিষয়টি আবার অপ্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে কোভিডের প্রকোপ কমায়।
তবে এখন এমন এক গবেষণা প্রকাশ্যে এসেছে যা প্রশ্ন তুলছে মাস্ক ব্যবহার নিয়েই! বিশ্বের তাবড় কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ জন গবেষকের একটি পর্যালোচনা বলেছে, কোভিড-১৯ সংক্রমণ ঠেকাতে মাস্ক পরার তেমন কোনও ভূমিকাই নেই। কোশ্যারন লাইব্রেরি প্রকাশিত এই গবেষণায় ফেসমাস্ক এবং হাত ধোয়া সহ নানা শারীরিক প্রতিরোধ ভাইরাসের বিস্তারকে রোধ করে কিনা তা পরীক্ষা করার জন্য ৭৮টি পরীক্ষা চালানো হয়েছে।
আরও পড়ুন- বুকে ব্যথা, মাথায় অসহ্য যন্ত্রণা! যে বিপদ মাথাচাড়া দিচ্ছে কোভিড ভ্যাকসিনের নেওয়ার পর
গবেষকরা কোভিড-১৯ প্রতিরোধে মাস্ক পরা আর মাস্ক না পরা এই দুই পরিস্থিতির মধ্যে তুলনা করেছেন। এই পরীক্ষার পর্যালোচনায় জানা গিয়েছে, ফেসমাস্ক পরা খুব সামান্যই ফারাক গড়ে বা আসলে কোনও পার্থক্যই গড়ে না।
গবেষণায় আরও দাবি করা হয়েছে, মেডিকেল/সার্জিক্যাল মাস্ক এবং N95-এর মধ্যে আসলে কোনও সুস্পষ্ট পার্থক্য নেই। ৮৪০৭ জনের মধ্যে সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে যে, N95/P2 মাস্ক পরা সম্ভবত কোনও পার্থক্যই গড়েনি। ফ্লু-এর মতো অসুস্থতায় আক্রান্ত হওয়া প্রায় ৮৪০৭ জন মানুষের দেহে মাস্ক পরার পরে সামান্যই ফারাক দেখা গিয়েছে। মোট ৭৮টি গবেষণায় সমস্ত আয়ের, সমস্ত স্তরের এবং সমস্ত দেশের মানুষদের থেকেই নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
গবেষকরা ২০০৯ সালে H1N1 ফ্লু মহামারী, ২০১৬ সাল পর্যন্ত সাধারণ ফ্লু, ঋতুকালীন ফ্লু এবং COVID-19 মহামারীর সময়কার তথ্য সংগ্রহ করেন। ব্লুমবার্গের একটি প্রতিবেদন বলছে এই পর্যালোচনায় অন্তর্ভুক্ত কিছু গবেষণা কোভিডের আগে করা হয়েছিল যখন ভাইরাসের সংক্রমণ ততটা তীব্র ছিল না। অনেক মানুষই সেই সময় নিয়ম করে ফেস্ক মাস্ক পরেননি। অন্যান্য গবেষণা দেখা যাচ্ছে, মাস্ক কোভিড সংক্রমণের হারকে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করতে পারে। বিশেষত বদ্ধ পরিবেশে মাস্ক সংক্রমণ ঠেকাতে গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হয়ে উঠেছে।

Whatsapp
