সততার প্রতীক প্রশ্নের মুখে, ঘুরে দাঁড়াতে কী করবেন মমতা?

মমতার ছত্রছায়ায় থেকে কীভাবে কোটি কোটি টাকা গিলে ফেললেন দলের নেতারা, ‘মা-মাটি-মানুষ’ দরদি নেত্রী তা টের পেলেন না কীভাবে, ‘নিজের মেয়ে’-কেই এখন প্রশ্ন করছে গোটা বাংলা।

চালকের পাশের আসনে কোনওরকমে সেঁধিয়ে রয়েছেন তিনি। দুই হাতে চেপে ধরে রয়েছেন বাঁ পা। খোলা দরজার বাইরে থেকে ফ্ল্যাশের ঝলকানিতে চোখে ধাঁধাঁ লেগে যাওয়ার মতো অবস্থা তখন। তার মধ্যেই কাতর স্বরে জানালেন, খুব জোরে লেগেছে। ফুলে গিয়েছে পা। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচন যখন দোরগোড়ায়, নন্দীগ্রামের সেই রাতই ভোটের ফলাফল নির্ধারণ করে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট ছিল। নির্বাচনের আগে রাজ্যজুড়ে যে গেরুয়া দাপট অনুভূত হচ্ছিল, হাওয়ার গতি পরিবর্তনে মুহূর্তে তা পরিণত হয় হুজুগে। তার পরই আগের থেকে ভোট বাড়িয়ে তৃতীয় বার ক্ষমতায় ফেরে তৃণমূল, সর্বোপরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু নন্দীগ্রামে মমতাকে আহত হতে দেখে, দিল্লির নেতাদের ‘দিদি ও দিদি’ ডাকে বিদ্ধ হতে দেখে, রাজ্যে গেরুয়া দাপটের গতি রোধ করেছিলেন যে বঙ্গবাসী, ঠিক সাড়ে তেরো মাস পর তাঁদের আচরণেই এবার পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে, যার নেপথ্যে রয়েছে, তৃণমূল নেত্রীর দুই ঘনিষ্ঠের কোটি কোটি টাকার দুর্নীতিতে জড়িয়ে যাওয়ার ঘটনাপর্ব।

মনুষ্যচরিত্র থেকে সমাজ-সংসার, সময়ের সঙ্গে সবকিছুতেই পরিবর্তন আসে। রাজনীতিতেও তেমনই পরিবর্তনে ধারা বজায় রয়েছে যুগ যুগ ধরে। তাই পাঠ্যবই থেকে চায়ের টেবিলে তর্কের আসর, কথায় কথায় পরিবর্তনের কথা উঠলেও, বাংলার রাজনীতিতে 'পরিবর্তন' শব্দটিকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন খোদ মমতাই। দীর্ঘ সাড়ে তিন দশকের বাম শাসনের অবসান ঘটাতে পরিবর্তনের ডাক দিয়েছিলেন তিনি। ২০১১ সালে সেই পরিবর্তন আসে তাঁর হাত ধরেই। দিল্লির নেতাদের ঘনঘন যাতায়াত, সভা-মিছিল ঘিরে যখন গেরুয়া আবেগ মাথাচাড়া দিতে শুরু করে বাংলায়, সেই সময়ও মানুষের মনে পরিবর্তন ঘটাতে পেরেছিলেন মমতা। কিন্তু রাজনীতিকে কারবার হিসেবে দেখার সনাতনী প্রথা, সাত-পুরুষের বসে খাওয়ার ব্যবস্থা করে যাওয়ার যে সনাতনী প্রথা যুগ যুগ ধরে চলে আসছে দেশে, নিজের দলের নেতাদেরই তা থেকে বিমুখ করতে পারেননি বলে এখন আঙুল উঠছে তাঁর দিকেই।

সারদা, নারদ, রোজভ্যালি হয়ে কয়লা এবং গরুপাচার, বাংলার উপর আতসকাচ এসে পড়ে কয়েক বছর আগেই। সেই বাবদ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা দল, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট-এর আনাগোনাও বাড়তে থাকে। ২০১৩-য় কাশ্মীরের সোনমার্গে গ্রেফতার হন সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন, দেবযানী মুখোপাধ্যায়। বহু প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বর সঙ্গে সেই মামলায় নাম জড়ায় তৃণমূলের তৎকালীন সাংসদ কুণাল ঘোষ, সৃঞ্জয় বসু, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্র এবং রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন ডিজি রজত মজুমদারেরও। সারদার টাকায় তৃণমূলের ভোট প্রচারের তত্ত্বও উঠে আসে। ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনের আগে আসে নারদ মামলা। তাতে সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারী (এখন বিজেপি-তে), প্রয়াত সুলতান আহমেদ, কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়, অপরূপা পোদ্দার, সৌগত রায়, কাকলি ঘোষদস্তিদার, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, মদন মিত্র, ফিরহাদ হাকিম, ইকবাল আহমেদদের টাকা নেওয়ার ভিডিও ফুটেজ সামনে আসে। তাতে সকলে গেল গেল রব তুললেও, বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় ফেরে তৃণমূল।

আরও পড়ুন: বিজেপিই রক্ষাকবচ, শুভেন্দুর গায়ে আঁচ না লাগা প্রমাণ করছে সেকথাই?

২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগেও কাটমানি এবং আমফান ত্রাণ দুর্নীতি নিয়ে পরিস্থিতি ঘোরালো হতে শুরু করে। মাঠে-ময়দানে, রাস্তাঘাটে কাটমানি তির বিদ্ধ করে তৃণমূল নেতাদের। তারপরেও আগের চেয়ে আরও শক্তিশালী হয়ে ক্ষমতায় ফেরে তারা। কিন্তু এরপর থেকেই কয়লা এবং গরু পাচার নিয়ে সক্রিয় হতে দেখা যায় কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে। খোদ মমতার ভাইপো তথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, তাঁর স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একাধিকবার দিল্লিতে তলব করা হয়। সেই নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যে স্কুল শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে তেতে ওঠে রাজ্য। তাতে সংযোজিত হয় সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশে গরু পাচারের অভিযোগে প্রভাবশালীদের জড়িত থাকার অভিযোগ। পরিস্থিতি এতটাই ঘোরালো হয়ে ওঠে যে, স্বচ্ছ ভাবমূর্তির জন্য পরিচিত তৃণমূলের সাংসদ, অভিনেতা দেবকেও জেরার মুখে পড়তে হয়।

তবে সারদার সময় কেন্দ্রের ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার। ২০১৪-য় বিপুল ক্ষমতা নিয়ে সেখানে অধিষ্ঠিত হয় বিজেপি। অটলবিহারী বাজপেয়ীর আমলে যে বিজেপি-র সঙ্গে কেন্দ্রে জোটে যেতেও আপত্তি করেননি মমতা, নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহর বিজেপি-র সঙ্গে বরাবরই দূরত্ব রেখে চলেছেন তিনি। ফলে নেতা-মন্ত্রী-আমলাদের নামে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও, তা কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত বন্ধনীতে আটকে পড়ে। ফলে দলের নেতারা কিছু করেননি, এমন স্তাবকতায় গলা মেলান তৃণমূলের ছোট-বড়-মাঝারি সব নেতাই। বাংলা দখলের স্বপ্ন ভেঙে যাওয়ায় তৃণমূলকে শায়েস্তা করতে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করা হচ্ছে, এমন অভিযোগও করেন তাঁরা। জোড়াফুলের ঝুলিতে উজাড় করে ভোট ঢেলে দেওয়া সাধারণ মানুষও বিশ্বাস না করে পারেননি। কিন্তু ভুল ভাঙে কিছুদিনের মধ্যেই, যখন একদিকে ঝড়জল উপেক্ষা করে ধর্মতলার বুকে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া চাকরিপ্রার্থীদের কাতর মুখ ভেসে ওঠে, আর অন্য দিকে রাজ্যের দু’নম্বর মন্ত্রী (প্রাক্তন) পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বান্ধবীর বাড়ি থেকে বস্তা বস্তা টাকা, তাল তাল সোনা উদ্ধার হতে দেখা যায়।

উচ্চশিক্ষা, নামী সংস্থার প্রাক্তন কর্তা, অভিজাত পরিবারের ছেলে, দীর্ঘদিনের রাজনীতিক, স্ত্রী-বিয়োগে কাতর- এ-যাবৎ পার্থর যে ভাবমূর্তি গড়ে উঠেছিল জনমানসে, তা খানখান হয়ে যায় মুহূর্তের মধ্যে। তাতে বাড়তি মাত্রা যোগ করে ‘হাঁটুর বয়সি’ মডেল তথা অভিনেত্রী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে পার্থর ঘনিষ্ঠতা। দু’জনের মধ্যে ঠিক কী সম্পর্ক ছিল, বাদী-বিবাদী পক্ষ যদিও সেই নিয়ে কিছু খোলসা করেননি, কিন্তু ‘অপা’-র কাঁড়ি কাঁড়ি যৌথ সম্পত্তি, অর্পিতার জীবনবিমায় পার্থর নাম, পার্থর মোবাইলে অর্পিতার বিমার প্রিমিয়াম জমা পড়ার মেসেজ, গোয়েন্দা-সূত্রে প্রাপ্ত যত তথ্য সামনে আসতে থাকে, তাঁদের সম্পর্কে ততই অলিখিত সিলমোহর পড়তে থাকে সাধারণ মানুষের। দুর্নীতির সঙ্গে ‘নারীঘটিত’ এই কেচ্ছা থেকে দূরত্ব বাড়াতে শুরু করে তৃণমূলও। মন্ত্রিত্ব থেকে সরানো হয় পার্থকে। তুলেই দেওয়া হয় দলের মহাসচিব পদ, যা পার্থর দখলে ছিল। এমনকী, পার্থকে নিয়ে ‘লজ্জিত’ বলতেও শোনা যায় দলের নেতা-মন্ত্রীদের।

আর পার্থর তৈরি ক্ষত সেরে ওঠার আগেই, গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হন বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মন্ডল। মুদির দোকানে কাজ করা থেকে মাছের ব্যবসা, ‘এইট পাশ’ অনুব্রত বরাবরই মমতার স্নেহধন্য। একরকম চোখ বন্ধ করেই অনুব্রতর হাতে দীর্ঘদিন বীরভূম ছেড়ে রেখেছেন তিনি। সেই অনুব্রত বারবার তলব পেয়েও হাজিরা দেন না গোয়েন্দাদের সামনে, কথায় কথায় লালবাতির গাড়িতে চেপে পৌঁছে যান এসএসকেএম, সেরা ডাক্তারকে বাড়িতে ডেকে সাদা কাগজে প্রেসক্রিপশন লিখতে বলেন, শিক্ষিকা মেয়ে একদিনও স্কুলে না গিয়ে বেতন তোলেন, বাড়িতে চলে আসে হাজিরার খাতা, অনুব্রতর কাণ্ড যত শোনেন, ততই অবাক হতে থাকেন সাধারণ মানুষ এবং অবধারিতভাবেই সেই ক্ষোভের আঁচ গিয়ে পড়ে মমতার ওপরও।

গ্রেফতারির পরও সেই ‘কেষ্ট’-র (অনুব্রতর ডাকনাম) হয়ে গলা ফাটাতে দেখা যায় প্রকাশ্য মঞ্চে। বিধানসভা থেকে পৌরসভা, একের পর এক নির্বাচনে পরাজয়ের ধাক্কা সামলে বিধ্বস্ত বিরোধী শিবিরও অক্সিজেন পেয়ে চাঙ্গা হয়ে ওঠে মুহূর্তে। দলনেত্রীর মদত এবং প্রশ্রয় না থাকলে, তাঁর স্নেহধন্যরা এত সাহস পান কী করে, প্রশ্ন তোলেন তাঁরা, যা ভাবতে বাধ্য করে জনসাধারণকেও। তাই শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীরা যখন আগ বাড়িয়ে জানাতে যান যে, তাঁরা সকলেই চোর নন, ‘ঠাকুরঘরে কে, আমি তো কলা খাইনি’ গোছের প্রবাদই মনে পড়ে সকলের। আবার বিনয়ী সুর ভুলে যখন ‘চোর বললে চামড়া গুটিয়ে’ নেওয়ার হুমকি দিতে শুরু করেন তৃণমূল নেতারা, তা ঔদ্ধত্য এবং বেয়াদপি হিসেবেই চিহ্নিত হয়। মমতার মুখ সরিয়ে, শুধু অভিষেককে সামনে রেখে ‘নতুন তৃণমূল’ গড়ার ডাক দিয়ে, ‘পুরাতন ভিত্তি, নতুনই ভবিষ্যৎ’ পোস্টার ছাপিয়েও সেই ক্ষোভের আঁচ গলানো যায়নি এতটুকু। বরং তা নিয়ে ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ উড়ে এসেছে। মিমে ছেয়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া, যা থেকে রক্ষা পাননি খোদ মমতাও।

দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বরাবরই স্বচ্ছ ভাবমূর্তি বজায় রাখার ওপর জোর দিয়ে এসেছেন মমতা। কালীঘাটে টালির বাড়ি, পায়ে হাওয়াই চটি, পরনের ডুরে শাড়ি, গোড়া থেকেই ধোপদুরস্ত নেতাদের থেকে আলাদা করেছে তাঁকে। কিন্তু তাঁর ছত্রছায়ায় থেকে কীভাবে কোটি কোটি টাকা গিলে ফেললেন দলের নেতারা, ‘মা-মাটি-মানুষ’ দরদি নেত্রী তা টের পেলেন না কীভাবে, ‘নিজের মেয়ে’-কেই এখন প্রশ্ন করছে গোটা বাংলা। রাজনৈতিক মহলে তো বটেই, ভোটবাক্সের বিচার-বিশ্লেষণ করেন যাঁরা, তাঁদের কাছেও মমতা জননেত্রী, মানুষের নাড়ি বুঝতে অব্যর্থ। সেই মমতা নিজের দলের নেতাদের কাজকর্মের হদিশ রাখতেন না, নাকি দল বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নেতাদের ওপর থেকে নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছিলেন তিনি, উঠে আসছে সেই প্রশ্নও। তাঁর দিকে ধেয়ে আসা এই প্রশ্নবাণ কি টের পাচ্ছেন না মমতা, নাকি স্রেফ সময় নিচ্ছেন তিনি, জানতে উদগ্রীব সকলেই।

মমতা নিজে যদিও পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে কোনও ইঙ্গিত দেননি। বরং যাবতীয় জল্পনা-কল্পনার মধ্যে দুর্গাপুজোয় লম্বা ছুটির ঘোষণা করেছেন। ৫০ হাজারের পরিবর্তে ক্লাবগুলিকে এবার ৬০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার ঘোষণা করেছেন। পুজো কমিটিগুলিকে বিদ্যুতের বিলেও ৬০ শতাংশ ছাড় দিতে অনুরোধ জানিয়েছেন রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদকে। সব মিলিয়ে শারদীয়া অনুদানের অঙ্ক গিয়ে ঠেকেছে ২৫৮ কোটিতে। তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে বইকি। মহার্ঘ ভাতা থেকে সরকারি কর্মীদের বঞ্চিত রেখে খয়রাতি কেন, প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। যদিও রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, সামনের বছর পঞ্চায়েত নির্বাচন। লোকসভা নির্বাচনও রয়েছে ২০২৪-এ। তার আগে, দলের মাথায় চেপে বসা কালো মেঘ হটাতেই এমন পদক্ষেপ মমতার। বিভিন্ন এলাকায় ক্লাবের প্রভাব কতটা, তা বিলক্ষণ জানেন তিনি। তাই পুজোর অনুদান বাড়িয়ে দলের গ্রহণযোগ্যতা বজায় রাখাই এই মুহূর্তে লক্ষ্য তাঁর।

মমতার এই সিদ্ধান্তের ফলাফল আদৌ ইতিবাচক হবে কি না, তা সময়ই বলবে। তবে মানুষের মনের পরিবর্তন যে ঘটছে, তা যথার্থই টের পেয়েছেন তিনি। তাই আক্রমণাত্মক হওয়ার চেয়ে এখন অনেক বেশি তিনি রক্ষণাত্মক বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তাই আর্থিক দুর্নীতি, তছরুপের অভিযোগে দলের নেতা-মন্ত্রীরা যখন বিদ্ধ, সেই সময় মমতার এই খয়রাতি খানিকটা বিদ্রোহধর্মী বলেও বোধ হচ্ছে তাঁদের। আবার অনেকের মতে, সময় সহায়ক হলে, মমতার এই বিদ্রোহধর্মী আচরণই হয়তো মানুষকে মন পরিবর্তন করতে দেবে না। কারণ মমতাকে এভাবেই বর্ণনা করে গিয়েছেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। মমতা জন্ম থেকেই বিদ্রোহী বলে নিজের বই ‘কোয়ালিশন ইয়ার্স’-এ উল্লেখ করেছিলেন তিনি। একই সঙ্গে প্রণব লিখেছিলেন, "নির্ভীক থেকে, লড়ে নেব মনোভাব থেকে নিজেই নিজের পথ রচনা করেছেন মমতা। আজ তিনি যেখানে, তা দীর্ঘ সংগ্রাম এবং কঠোর পরিশ্রমেরই ফসল।" প্রণবের মত ছিল, "মমতার মধ্যে এমন এক দীপ্তি রয়েছে, যা মুখে বলে বোঝানো যেমন সম্ভব নয়, তেমনই তাকে উপেক্ষা করাও সম্ভব নয়।" তাই মমতায় এখনও ভরসা হারাতে নারাজ অনেকেই।

More Articles