কবে থেকে বদলাবে পরিস্থিতি? কেন এই অকাল বর্ষার আমেজ কলকাতায়?

Monsoon in Bengal : এলোপাথাড়ি ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে আকাশভাঙা বৃষ্টি, কেন এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হল বাংলা?

পঞ্জিকা মতে গ্রীষ্মকাল পড়ার অনেক আগে থেকেই গরমের দাপটে নাজেহাল হয়েছিল কলকাতাবাসী। মাথার ওপর বনবন করে ঘুরছিল পাখা, কোথাও কোথাও আবার এসি ছাড়া থাকা দায় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তারপর দুম করেই বদলে গেল পরিস্থিতি। কোথায় গরম, কোথায়ই বা রোদ্দুর, রাতারাতি বদলে যাওয়া এই ছবিটাই এখন কলকাতা সহ পার্শ্ববর্তী জেলাগুলির রোজনামচা। গত বৃহস্পতিবার থেকে আকাশের এই পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বসন্তেই নেমেছে অকাল বর্ষণ। স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়ায় নতুন করে ফিরেছে চটজলদি চলে যাওয়া শীত শীত আমেজটা। কিন্তু কেন হঠাৎ করে এমন পরিস্থিতি হল? পূর্বাভাসে কী বলেছিলেন আবহাওয়াবিদরা?

আজকাল অবশ্য আবহাওয়া নিয়ম মেনে পরিবর্তিত হয় না। কলকাতায় এখন সারা বছরই বর্ষাকাল। আরও সহজ করে বলতে গেলে, সারা বছরই নিম্নচাপ। এই নিম্নচাপ শব্দটার সঙ্গে এখন সবাই কম বেশি পরিচিত। বিনা নোটিশেই আগমন যার। দুম করে পরিচিত পরিস্থিতির বদল ঘটে, ঝমঝম করে বৃষ্টি, ঝোড়ো হাওয়া, ঠিক যেমনটা হচ্ছে শেষ কয়েকদিন ধরে। বসন্তে অকাল বর্ষণ শুরু হওয়ার ইঙ্গিত অবশ্য কিছুদিন আগেই দিয়েছিল আবহাওয়াবিদরা। চৈত্রের শুরুতে কালবৈশাখির দেখা মিলল সেই ইঙ্গিত মেনেই। বৃহস্পতিবার থেকে আকাশের ছবিটা আস্তে আস্তে বদলাতে শুরুবকরে, তাপমাত্রাও কমতে থাকে। অবশেষে পূর্বভাস মিলিয়ে রবিবার থেকে শুরু হয় এলোপাথাড়ি ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে আকাশভাঙা বৃষ্টি। ভিজে স্নান করে যায় মহানগর। সেই ভিজে যাওয়া পরিস্থিতি এখনও বদলায়নি। মাঝেমাঝে ঝিলিক মেরে খানিক রোদ উঁকি দিলেও, পরক্ষণেই মুখ ভার করে বসছে আকাশ।

আরও পড়ুন - ধেয়ে আসছে ভয়ংকর সৌরঝড়! কতটা বিপদের মুখে পড়তে চলেছে মানব সভ্যতা?

আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই কলকাতায় যে বজ্রবিদ্যুৎ সহ তুমুল বৃষ্টি শুরু হয়েছে তার সঙ্গে বইছে ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়াও। শুধু কলকাতা নয় পার্শ্ববর্তী জেলা শহরগুলোতেও একই ছবি। শনিবার দুপুরের পর থেকেই আকাশের মুখ ভার ছিল কলকাতা ও শহরতলির। তার পর থেকেই শুরু হয়ে যায় লাগাতার বৃষ্টি। পুরুলিয়া ঝাড়গ্রাম সহ বাংলার পশ্চিমাঞ্চলের একাধিক জেলার বিভিন্ন শহরের ছবিটাও প্রায় একই। তুমুল বৃষ্টি সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া। যদিও এটাকে আবহাওয়া সূত্র তরফে প্রাথমিকভাবে কালবৈশাখী বলেই চিহ্নিত করা হয়েছিল।

আবহবিদরা জানিয়েছেন, আবহাওয়ার এই খামখেয়ালিপনার জন্য দায়ী অক্ষরেখার অবস্থান। নিম্নচাপ অক্ষরেখার ওপর ঘুর্ণাবর্তের অবস্থানের জন্যই গোটা বাংলা জুড়ে এই অকাল বর্ষার পরিবেশ। এমনিতেই ১৬ মার্চ থেকে ২০ মার্চ পর্যন্ত এমন আবহাওয়ার পূর্বাভাস আগেই দিয়েছিল আলিপুর হাওয়া অফিস। বর্তমান পরিস্থিতিতে অবশ্য বল হচ্ছে আরও দিন দুয়েক চলবে এই অবস্থা। এর মধ্যে আবার উত্তরের সিকিমের কিছু জায়গার পাশাপাশি দার্জিলিংয়ের সান্দাকফুতেও ব্যাপক তুষারপাত হয়। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলিতে এই আবহাওয়া চলতে পারে ২১ মার্চ বুধবার পর্যন্ত। ২৩ মার্চ বৃহস্পতিবার থেকে আবহাওয়া উন্নতির কথা বলা হয়েছে। তবে সেদিনও কোনও কোনও জায়গায় হাল্কা বৃষ্টি হতে পারে বলে পূর্বাভাস আবহাওয়া দফতরের।

More Articles