আরজি করে 'ক্রাইম সিন'-এ কী করছিলেন ফরেনসিক অধ্যাপক দেবাশিস সোম?
CBI RG Kar Case Debasish Som: মৃতদেহ ও মৃতদেহের অঙ্গ পাচারের অভিযোগের প্রেক্ষিতেও দেবাশিস সোমের নাম উঠে এসেছে।
সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে একই সঙ্গে দু'টি মামলার তদন্ত চলছে। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের খুন ও ধর্ষণের পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে এই হাসপাতালে নানা দুর্নীতিতে প্রাক্তন অধ্যক্ষের যুক্ত থাকার অভিযোগের বিষয়েও তদন্ত চলছে। তবে শুধু সন্দীপই নন। এবার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ফরেন্সিক বিভাগের এক শিক্ষককেও জোড়া মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। সিবিআইয়ের নিজাম প্যালেসের দফতরে ডেকে পাঠানো হয়েছিল ওই শিক্ষককে। তাঁর নাম দেবাশিস সোম। আরজি করের বিভিন্ন দুর্নীতি মামলাতেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয় তাঁকে। কিন্তু শুধু সেই সংক্রান্ত জিজ্ঞাসাবাদেই থেমে থাকেনি সিবিআই। চিকিৎসক খুনের ঘটনাতে তাঁকে আবার হাজিরা দিতে হয় সিজিও কমপ্লেক্সের সিবিআই দফতরে। কে এই দেবাশিস সোম?
দেবাশিস সোম আরজি করের ফরেন্সিক বিভাগের ‘ডেমনস্ট্রেটর’। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের কাউন্সিলেরও সদস্য তিনি। কলেজের ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের (এনএমসি) কমিটিতেও আছেন তিনি। আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে বায়োমেডিক্যাল বর্জ্য নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সেই অভিযোগে নাম জড়িয়েছে দেবাশিস সোমেরও। মৃতদেহ ও মৃতদেহের অঙ্গ পাচারের অভিযোগের প্রেক্ষিতেও দেবাশিস সোমের নাম উঠে এসেছে। অভিযোগ, মৃতদেহ ময়নাতদন্ত ও তা নিহতের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার জন্যও মোটা টাকা তোলাবাজিও চলত এই হাসপাতালে। আর তা দেবাশিস সোমের নিয়ন্ত্রণেই।
আরজি কর হাসপাতালে যে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, সেই অভিযোগে টাকা নয়ছয়ের প্রসঙ্গে দেবাশিস সোমের কেষ্টপুরের বাড়িতে হানা দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তকারীরা। সেইখান তল্লাশি চালিয়ে দেবাশিস সোমকে নিয়ে নিজাম প্যালেসে নিয়ে যায় সিবিআই। রবিবার ও সোমবার তাঁকে জেরা করা হয়।
আরও পড়ুন- দেহ উদ্ধারের পর সেমিনার রুমে কাদের ভিড়? যে সব প্রশ্ন তুলে দিল আরজি কর কাণ্ডের ভাইরাল ভিডিও
তবে সোমবার তাঁকে সিজিও কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। উল্লেখ্য, সিজিও কমপ্লেক্সে আরজি করের চিকিৎসক খুন ও ধর্ষণের ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআইয়ের একটি দল। সোমবার সকালে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকেও সিজিও কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাঁর পলিগ্রাফ পরীক্ষা চলছে। সূত্রের খবর, দেবাশিস সোম সন্দীপ ঘোষের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। সন্দীপ ঘোষের ঘরের পাশেই একটি ঘরে বসেই কাজ করতেন তিনি। এখানেই শেষ না। ফরেন্সিক মেডিসিন বিভাগ নিজের দখলে রাখার চেষ্টার অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার দিন সেমিনার হলের একটি ভিডিও হঠাৎ ছড়িয়ে পড়ে। দেখা যায় অপরাধের দিন 'ক্রাইম স্পট' সেমিনার হলের মধ্যে প্রচুর মানুষের ভিড়, যার মধ্যে রয়েছেন দেবাশিস সোমও। অসমর্থিত সূত্রের ওই ভিডিওতে দেবাশিস সোমকে দেখা যাওয়াতেই তাঁকে এই খুন ও ধর্ষণ কাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। সত্যিই কি তিনি ছিলেন ঘটনাস্থলে, যদি থাকেন তাহলে একটি অপরাধ ঘটার পর, 'ক্রাইম সিনে' কী করছিলেন ওই অধ্যাপক? প্রশ্ন জাগছেই!