বসন্তের পক্স বর্ষায় কেন? রাজ্যজুড়ে হঠাৎ কেন বাড়ছে চিকেন পক্স সংক্রমণ?
Chicken Pox in Monsoon: অনেকেই বলেন, এক বার চিকেন পক্স হলে দ্বিতীয় বার হয় না। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, দ্বিতীয়, তৃতীয়বার হতেই পারে।
ক্যালেন্ডারে বর্ষা গত হয়েছে সদ্য, ভাদ্র এসেছে। বৃষ্টি আর ভ্যাপসা গরমে নাজেহাল হওয়া সময়। শরতের ফুরফুরে মেজাজ আসতে দেরি আছে, তারও চেয়ে দেরি আছে বসন্তের। তবে ক্যালেন্ডারের হিসেব গুলিয়ে, বিজ্ঞানের তত্ত্ব গুলিয়ে অন্য এক বসন্ত এসে গেছে। এই অসময়ে বসন্তের অকালবোধন। ঘরে ঘরে হানা দিচ্ছে জলবসন্ত বা চিকেন পক্স। কলকাতা সহ রাজ্যের অজস্র স্থানে জলবসন্তের প্রাদুর্ভাব চিন্তায় ফেলছে মানুষকে। বসন্তের রোগ এই বর্ষা-ভাদ্রে কেন?
আসলে গুলিয়ে গিয়েছে সবটাই। ক্যালেন্ডারে ধার্য হওয়া মাসের নিয়মে আর ঋতুবদল হয় না। বরং যে সময়ে যে আবহাওয়া থাকার কথাই নয়, দেখা যাচ্ছে তেমনই। চিকিৎসকদের একাংশ বলছেন, এই পাল্টে যাওয়া আবহাওয়াই বসন্তের অকালবোধনের কারণ। ভ্যারিসেল্লা ভাইরাস এই পাল্টে যাওয়া আবহাওয়াতেই ফের জেগে উঠছে। শুধু তো বর্ষা না, বিগত কয়েক বছরে দেখা গেছে শীত আসব আসব অবস্থাতেই মানুষের পক্স হচ্ছে। নভেম্বরে কোথায় হিমেল বাতাস বইবে মৃদু, তা না মানুষ ঘাম মুছছেন। আচমকা গরম পড়তেই ভাইরাসদের বাড়বাড়ন্ত দেখা যাচ্ছে তাই।
তাই চিকিৎসকরা বলছেন, বছরের যে কোনও সময়েই চিকেন পক্স হতে পারে। অনেকেই বলেন, এক বার চিকেন পক্স হলে দ্বিতীয় বার হয় না। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, দ্বিতীয়, তৃতীয়বার হতেই পারে। তবে প্রথমবারের মতোই মারাত্মক হবে, এমন নাও হতে পারে। এক বার আক্রান্ত হলেও এই সময়ে সুরক্ষিত থাকা অত্যন্ত জরুরি। চিকেন পক্সে আক্রান্ত হয়েছেন কিনা একদম প্রথমেই দেখে নাও বোঝা যেতে পারে, তাই ভিড় এড়িয়ে চলাই ভালো। একান্তই ভিড় না এড়াতে পারলে বাড়ি ফিরে অবশ্যই স্নান করে নেওয়া ভালো।
আরও পড়ুন- Covid-19: মাস্ক পরতে হবে আবার! পুজোর আগেই ফিরতে পারে করোনা?
হালকা জ্বর, গা, হাত, পায়ে ব্যথা, দুর্বলতা এবং সারা শরীরে র্যাশ— এই হচ্ছে চিকেন পক্সের মূল কয়েকটি উপসর্গ। রোগীর প্রতিরোধ ক্ষমতার কেমন তার উপরই নির্ভর করে জলবসন্ত কতটা বাড়াবাড়ি করবে। সাধারণ জলবসন্তে মারা যাওয়ার আশঙ্কা এখন কম। তবে চিকেন পক্স নিউমোনিয়া হলে মৃত্যুর ঝুঁকিও আছে। সেক্ষেত্রে চিকেন পক্স থেকে বুকে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। কোভিড সংক্রমণের পর অনেকেরই শ্বাসযন্ত্রের অবস্থা ভালো না। সেক্ষেত্রে বাড়তি নিরাপত্তা বজায় রাখতেই বলছেন চিকিৎসকরা।
হাঁপানি বা সিওপিডির মতো কোনও পুরনো রোগ থাকলে জলবসন্ত হওয়ার ফলে তা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। চিকেন পক্স ভাইরাস আক্রমণ করলে সঙ্গে সঙ্গেই গায়ে গুটি বেরোয় না। হালকা জ্বর, হাঁচি, কাশি ক্লান্তি আর চোখ জ্বালাই প্রাথমিক উপসর্গ। ভাইরাস শরীরে ঢোকার প্রথম পাঁচ দিনে আক্রান্তের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ হয়ে ওঠে। করোনার থেকেও দ্রুত ছড়ায় এই ভাইরাস। তাই নিজেকে আলাদা করে রেখে সঠিক চিকিৎসা দরকার।
প্রতিদিন স্নানের সময় জলে নিমপাতা ফেলে স্নান আর খাবারেও নিমপাতা খেলে উপকার মেলে। সজনে ফুলও ভীষণ উপকারী তবে এই বর্ষায় তা মেলা চাপ। সাধারণত ১২ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে স্বাভাবিক ভাবেই রোগী সুস্থ হয়ে ওঠেন। তবে ফেলে না রেখে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শে সঠিক খাবার, সঠিক পথ্য প্রয়োজন, নাহলে অবস্থা বেগতিক হতে সময় নেবে না।

Whatsapp
