কেন গ্রেফতার ডি বাপি বিরিয়ানির মালিক-তৃণমূল নেতা অনির্বাণ দাস?
D Bapi Biriyani: অভিযোগ, চুক্তি শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ঘর ছাড়ছিলেন না। বিশ্বজিৎ জানান, এবার হিসেবমতো গুদাম ছেড়ে দিতে হবে ডি বাপির মালিক অনির্বাণকে।
ব্যারাকপুর জুড়ে বিখ্যাত তাঁর বিরিয়ানি। আর্সেলান, আমিনিয়ার পাশাপাশি যে বিরিয়ানির ঠেকগুলি নিজস্ব পরিচয় গড়ে তুলেছে তার মধ্যে অন্যতম বিখ্যাত দাদাবৌদির বিরিয়ানি। পাশাপাশি, বেশ কিছুকাল ধরে নাম করছিল ডি বাপি। অস্ত্র আইনে সদ্য গ্রেফতার হয়েছেন ডি বাপি বিরিয়ানির অন্যতম কর্ণধার অনির্বাণ দাস। তবে শুধু এটুকুতেই তাঁর পরিচয় শেষ হয় না। অনির্বাণ উত্তর ২৪ পরগনার মোহনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্যও। ঠিক কী অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে? পুলিশ জানিয়েছে, জনৈক গুদাম মালিককে মারধর ও আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ভয় দেখানোর অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে।
মধ্যমগ্রাম-সোদপুর রোডে অবস্থিত ডি বাপি বিরিয়ানির রেস্তোরাঁটি। মধ্যমগ্রামের বাদামতলায় তাদের একটি গুদাম রয়েছে। বাদামতলার বাসিন্দা ও পুরসভার কর্মী বিশ্বজিৎ দত্তর সঙ্গে গুদাম ভাড়া নিয়ে ১১ মাসের চুক্তি হয়েছিল অনির্বাণ দাসের। পুলিশ বলছে, গত সোমবার সন্ধেয় গুদামের মালিক বিশ্বজিৎ অনির্বাণের সঙ্গে দেখা করতে যান। অভিযোগ, চুক্তি শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ঘর ছাড়ছিলেন না। বিশ্বজিৎ জানান, এবার হিসেবমতো গুদাম ছেড়ে দিতে হবে তাঁকে। শুরু হয় বচসা। অনির্বাণ বাড়ির মালিকের উপর চড়াও হন। গুদামের মালিককে মারধর করেন অনির্বাণ। আর তাঁর নিরাপত্তারক্ষীর আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ভয়ও দেখান। অনির্বাণের নিরাপত্তারক্ষীরও খোঁজ চলছে। এই ঘটনায় ডি বাপি বিরিয়ানির অন্যতম মালিক ও তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। দু'-দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে বারাসাত আদালত। অনির্বাণের নিরাপত্তারক্ষীর খোঁজ চলছে।
আরও পড়ুন- একা ‘দাদা-বৌদি’-ই বদলে দিয়েছে সোদপুরের ছবি! নামজাদা রেস্তোরাঁর ঠিকানা এখন মফসসল
সোমবার রাতেই মধ্যমগ্রাম থানায় অভিযোগ জানান বিশ্বজিৎ। সেই রাতেই অনির্বাণকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আপাতত দু'দিনের জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে তাঁকে। অনির্বাণ নিজে মোহনপুরের তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের সদস্য। আবার যে বাড়ির মালিক বিশ্বজিৎকে তিনি মারধর করেছেন বলে অভিযোগ, তাঁর ভাইও মধ্যমগ্রাম পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি। টিএমসিপির নেতা দীপঙ্কর দত্তই থানায় যান অভিযোগ জানাতে।
২০০৬ সালে ব্যারাকপুরে ছোট্ট ফুড জয়েন্ট দিয়ে ডি বাপির যাত্রা শুরু। বছর কয়েকের মধ্যে ডি বাপি এলাকায় জনপ্রিয়তা অর্জন করে। ধীরে ধীরে বিরিয়ানির জগতে অন্যতম বিখ্যাত নাম হয়ে ওঠে এই ফুড চেইন। উল্লেখ্য, ডি বাপির দোকানের ব্যারাকপুর রেস্তোরাঁয় গুলি চলেছিল বছর খানেক আগে। পরবর্তীতে, মধ্যমগ্রামের আউটলেটের দায়িত্বে থাকা অনির্বাণ দাসকে নানা হুমকির সম্মুখীনও হতে হয়েছে। এবার সরাসরি তাঁর বিরুদ্ধেই অভিযোগ।
২০১৯ সালে একটি জাগুয়ারের তলায় চাপা পড়ে প্রাণ যায় বাংলাদেশের দুই নাগরিকের। ওই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয় আরেক বিখ্যাত বিরিয়ানি রেস্তোরাঁ আর্সেলানের মালিকের পুত্রকে। কলকাতার শেক্সপিয়র সরণি ধরে যাচ্ছিল পারভেজ আর্সালানের জাগুয়ার, তীব্র গতিতে। লাউডন স্ট্রিটের কাছে সেটি একটি মার্সিডিজকে সজোরে ধাক্কা মেরে রাস্তার পাশে ট্রাফিক পুলিশের একটি পোস্টে ঢুকে পড়ে। তুমুল বৃষ্টির মধ্যে মঈনুল, তানিয়া ও শফী নামে তিনজন ওই পুলিশ পোস্টে আশ্রয় নিয়েছিলেন। গাড়িটি মঈনুল ও তানিয়াকে চাপা দেয়। শফীও আঘাত পান। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁদের নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মঈনুল ও তানিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন।