ইডির র‍্যাডারে সুজিত বসু! কেন ৪৫ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করল কেন্দ্রীয় এজেন্সি?

ED raids West Bengal Minister Sujit Bose’s office: শনিবার সকাল থেকে সুজিত বসুর দফতরে কয়েক ঘণ্টা ধরে তদন্ত চলে। ইডি কর্মকর্তারা দফতরের নথি, কম্পিউটার ও ইলেকট্রনিক ডিভাইস পরীক্ষা করেন।

রাজ্য রাজনীতির অন্দরে ফের তোলপাড়। নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে শুক্রবার (১০ অক্টোবর) সকাল থেকে ১৩টি জায়গায় একযোগে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি (এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট)। এই অভিযানের আওতায় এসেছেন রাজ্যের দমকল মন্ত্রী।

ইডির কর্মকর্তারা শুক্রবার সকাল থেকেই কলকাতার একাধিক জায়গায়, বিশেষ করে সল্টলেক, বাঘাযতীন ও বেলঘরিয়া অঞ্চলে হাজির হয়। মন্ত্রী সুজিত বসুর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত কয়েকজনের বাড়ি ও অফিসেও তল্লাশি চালানো হয়। দক্ষিণ দমদম পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই দত্তের বাড়িতেও তল্লাশি চালায় ইডি।

 আরও পড়ুন

কোথায় যায় ইডি-র হাতে উদ্ধার হওয়া কালো টাকা?

শুক্রবার সকাল থেকে সুজিত বসুর দফতরে কয়েক ঘণ্টা ধরে তদন্ত চলে। ইডি কর্মকর্তারা দফতরের নথি, কম্পিউটার ও ইলেকট্রনিক ডিভাইস পরীক্ষা করেন।

অভিযানের পর ইডি সূত্রে জানায়, নগদ ৪৫ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। তবে নগদ অর্থ উদ্ধারের বিষয়ে ইডি এখনও কোনো স্পষ্ট মন্তব্য করেনি। ইডির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নগদ টাকা নিয়ে এখনও তদন্ত চলছে। কিছু প্রশ্নের উত্তর এখনও মেলেনি। নগদ অর্থের উৎস, স্থান ও মালিকানা নিয়ে ইডির পক্ষ থেকেও ধোঁয়াশা থেকেই গিয়েছে।
এছাড়া ইডি এও স্পষ্ট করেনি— সুজিত বসু দফতর বা সংশ্লিষ্ট কোনো সংস্থা থেকে নগদ অর্থ আটক করা হয়েছে কি না। মন্ত্রী নিজেও এখনও সরাসরি মুখ খোলেননি।

শুক্রবার অভিযানের পর বেশ কিছু নথি ও ইলেকট্রনিক ডেটা নিয়ে কাটাছেঁড়া চলছে। যদি কোনো নির্দিষ্ট আর্থিক লেনদেনের প্রমাণ মেলে, তবে মন্ত্রী সুজিত বসু এবং তাঁর ঘনিষ্ঠদের আবারও জেরা করা হতে পারে। তদন্তের এই ধাপটি মূলত টাকা কোথা থেকে এসেছে, কাদের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে এবং শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়েছে— এই প্রশ্নগুলির উত্তর খোঁজার জন্যই।

আরও পড়ুন

সংবিধান অমান্য করছে খোদ ইডি! কেন শীর্ষ আদালতের প্রশ্নের মুখে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা?

তৃণমূলের একাধিক নেতা কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তের মুখোমুখি হয়েছেন। পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অনুব্রত মণ্ডলের পর এবার নাম উঠছে মন্ত্রী সুজিত বসুর।

একটি সংবাদমাধ্যমে বিজেপি নেতা সজল ঘোষ কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে। প্রশ্ন তুলেছেন, "এদের এত টাকা এল কোথা থেকে?" তাঁর দাবি, "নিশ্চয়ই এরা কোনো না কোনো দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। ওদের চোদ্দ পুরুষের পানের দোকান, মুদির দোকানও কারোর নেই। মানুষ স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন করবে, তাহলে এই বিলাসবহুল জীবন এল কোথা থেকে?"

রাজ্য রাজনীতিতে ইডির এই অভিযান নতুন করে এক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। নগদ ৪৫ লক্ষ টাকা যদি সত্যিই নিয়োগ দুর্নীতির টাকার সঙ্গে যুক্ত হয়, তবে এই মামলা আবারও রাজ্যেবাসীকে নাড়িয়ে দেবে। তদন্ত এখন প্রাথমিক স্তরে, তবে এই ঘটনার প্রভাব রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক উভয় ক্ষেত্রেই স্পষ্ট। এখন দেখার বিষয়— কোথা থেকে এল এই ৪৫ লক্ষ টাকা?

More Articles