সত্যজিৎ, ঋত্বিক নন; মধ্যবিত্ত সমাজকে থাপ্পড় কষিয়েছিলেন মৃণাল সেনই!
Mrinal Sen: ১৯৮২ সালে মৃণাল সেন তৈরি করলেন ‘খারিজ’। অনেকের মতে এই ছবি নাকি তৎকালীন শিক্ষিত মধ্যবিত্ত সমাজের ভিত্তিটাকেই নাড়িয়ে দিয়েছিল।
অনেকেই মনে করেন হয়তো বা সত্যও বটে যে, সত্তর সাল পরবর্তী মৃণাল সেনের ছবিতে বিদ্রোহের যে চাঞ্চল্যকর বহিঃপ্রকাশ এবং শ্রেণি সংগ্রামের মধ্য দিয়ে গড়ে তোলা আত্ম-অনুসন্ধান, কখনও কখনও সমালোচনাও, তা কিন্তু পরিচালকের সত্তর সাল পূর্ববর্তী ছবিগুলিতে খুব স্পষ্ট ছিল না। প্রথম দিককার ছবিগুলিতে আখ্যানের বাস্তবতা, ব্যক্তিকেন্দ্রিক জীবনের টানাপোড়েন, জ্বালা-যন্ত্রণা কিংবা নারী-পুরুষের সম্পর্কের উত্থান-পতন যেভাবে পরিলক্ষিত হয়, ভুবন সোম (১৯৬৯) পরবর্তী ছবিগুলি তা থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। ‘নবতরঙ্গের’ বাস্তবতায় আচ্ছাদিত এবং পরিপুষ্ট, বাস্তবতার নিরিখে আরও উন্নত শিল্পকর্ম। বস্তুত সামাজিক শোষণ, বঞ্চনা এবং শ্রেণি সংগ্রামের আঙ্গিকে মানব সভ্যতার বাস্তব সত্যের চেহারাটাকে ধরতে চাইলেন তিনি। বুর্জোয়া আদর্শের বিপরীতে দাঁড়িয়ে বিপ্লবময় সংঘাতে হয়ে উঠলেন বিদ্রোহী। তাদের বিচক্ষণতাকে (Discreet Charm) ব্যঙ্গ করতেও ছাড়লেন না। প্রচলিত ন্যারেশন ভেঙে সরাসরি কথা বলে বসলেন স্পেকটেটরের সঙ্গেই (“আপনারা React করুন, মেনে নেবেন না") আভাগাঁর্দিয় স্টাইলে শিল্প ও নৈতিক মূল্যবোধের দ্বান্দ্বিক অবস্থানকে করে তুললেন তীব্রতর। চলচ্চিত্রের বৈপ্লবিক প্রয়াসকে বুঝতে পেরেছিলেন তিনি। সেজন্যই নিশ্চিত অনুভবে পৌঁছতে হয়তো সময় নিচ্ছিলেন। প্রথম দিককার ছবিগুলোতে তাই ব্যক্তিমানুষের আখ্যানে, তার উত্থান পতনময় জীবন সংঘাতে ক্রমাগত আনাগোনা…

Whatsapp
Support quality writing
Encourge writers
Access on any device
