নাইট ডিউটিতে মহিলা চিকিৎসকের রহস্যমৃত্যু! নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে আরজিকর
Mysterious death at RG Kar Medical College: হাসপাতাল সূত্রের খবর, স্নাতকোত্তর দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া ওই ডাক্তারের বৃহস্পতিবার নাইট ডিউটি ছিল। রাত দু'টো পর্যন্ত ডিউটিও করেন তিনি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আরও দুই জুনিয়র ডাক্তার।
এবার শিরোনামে আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। আরজিকরের ইমার্জেন্সি বিল্ডিংয়ের চার তলা থেকে উদ্ধার হল মহিলা চিকিৎসকের রহস্যজনক দেহ। বৃহস্পতিবার নাইট ডিউটিতে ছিলেন তিনি। শুক্রবার সকালে সেমিনার হল থেকে মেলে তাঁর মৃতদেহ। ওই চিকিৎসক পোস্ট গ্র্যাজুয়েড সেকেন্ড ইয়ারের ট্রেনি ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, মৃত ওই চিকিৎসকের বাড়ি সোদপুরে।
কীভাবে মৃত্যু হল ওই চিকিৎসকের? তা নিয়ে এখনও নিশ্চিতভাবে কিছু বলতে পারেনি পুলিশ। উদ্ধার হওয়া দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। ঘটনার খবর পেয়েই হাসপাতালে পৌঁছন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে ফরেনসিক দলও। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এখনও এ বিষয়ে মুখ খোলেননি। যেখান থেকে চিকিৎসকের মৃতদেহটি উদ্ধার হয়, সেখানে সিসিটিভি রয়েছে কিনা, থাকলে তার ফুটেজে কী দেখা যাচ্ছে, সেসব খতিয়ে দেখার চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন: সুনীতাদের ফেরাতে ফেরাতে আগামী বছর! যে দুঃসংবাদ দিল নাসা
স্নাতকোত্তর দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া ওই ডাক্তারের বৃহস্পতিবার নাইট ডিউটি ছিল। রাত দু'টো পর্যন্ত ডিউটিও করেন তিনি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আরও দুই জুনিয়র ডাক্তার। একসঙ্গে বসে খাওয়া-দাওয়াও সেরেছিলেন তাঁরা। এরপর নাকি ওই চিকিৎসক পড়াশোনা করবেন বলে সেমিনার হলে চলে যান। শুক্রবার সকাল থেকেই তাঁর খোঁজ পড়ে। কিন্তু কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি চিকিৎসককে। পরে সেমিনার হলে তাঁর দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। হাসপাতালের একটি সূত্র বলছে, ওই তরুণীর শরীরে আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। তাঁর পোশাকও অবিন্যস্ত ছিল বলে জানা গিয়েছে। মহিলাকে শারীরিকভাবে অত্যাচার করা হয়েছিল কিনা, সে ব্যাপারেও তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। মৃত চিকিৎসকের ময়নাতদন্তের ভিডিয়োগ্রাফি করা হবে বলেও পুলিশ সূত্রে খবর। ইতিমধ্যেই হাসপাতালের অন্যান্য চিকিৎসক ও কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
মৃত্যুর কারণ এখনও জানা যায়নি। পুলিশের দাবি, ময়নাতদন্তের পরেই আসল মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে। এরই মধ্যে মাথা চাড়া দিয়েছে ওই ছাত্রীকে খুনের সম্ভাবনাও। খুনের আগে তাঁকে যৌন নিগ্রহ করা হয়েছিল কিনা তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিস। এই ঘটনায় ১১ সদস্যের তদন্ত কমিটি গড়েছে আরজিকর কর্তৃপক্ষও। ওদিকে সোদপুরে মৃতার প্রতিবেশীরাও মানতে পারছেন না এঘটনা। এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। ছোট থেকেই এলাকায় মিশুকে বলে পরিচিত ছিলেন মেধাবী ওই চিকিৎসক। সবার বিপদে আপদে পাশে দাঁড়াতেন। তাঁরা জানান, সোদপুর থেকেই যাতায়াত করতেন তিনি। বেশ কিছুদিন আগে গাড়িও কেনেন। সেই গাড়ি নিয়ে সোদপুর থেকেই প্রতিদিন যাতায়াত করতেন তিনি। হাসপাতালে কীভাবে সেই মেয়ের মৃতদেহ মিলল! তার উত্তর হাতড়াচ্ছেন সবাই।
আরও পড়ুন: চুল কেটে, পোশাক ছোট করেও শেষরক্ষা হল না! কেন রাতারাতি ওজন বেড়ে গেল বিনেশের?
খবর পেয়ে হাসপাতালে পৌঁছয় মৃতার পরিবার। কীভাবে ফুটফুটে একটি মেয়ের মৃত্যু হল এভাবে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে হইচই। ডাক্তারি পড়ুয়া, জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশের দাবি, হাসপাতালে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হোক। সিসি ক্যামেরা বসানো হোক। ক্ষুব্ধ পড়ুয়া থেকে পরিবারের লোকেরা, অনেকেরই দাবি ওই তরুণের মৃত্যুতে বিচারবিভাগীয় তদন্ত করা হোক।