ওজন হ্রাস থেকে শুরু করে কোলস্টেরল নিয়ন্ত্রণ, রোজা রাখার স্বাস্থ্যকর দিকগুলি কী কী?

Ramadan 2023 : রোজা রাখলে তার একগুচ্ছ উপকারিতাও রয়েছে। জানেন সেগুলি কী কী?

গতকাল থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে রমজান মাস। চলবে আগামী ২১ এপ্রিল পর্যন্ত। তারপর ২২ এপ্রিল উদযাপিত হবে শনিবার ঈদ-উল-ফিতর। রমজান নিয়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে চিরকালীন ঐতিহ্য। গোটা এই একটা মাস সংযমের মাস হিসেবে পালন করে ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা। সকালে সূর্যোদয়ের পর থেকে শুরু করে বিকালে সূর্যাস্ত পর্যন্ত চলে নির্জলা উপবাস। চাঁদের বিভিন্ন পর্যায়ের উপর ভিত্তি করে ইসলামিক ক্যালেন্ডার গণনা করা হয়। সেই মতোই শুরু হয় এই রমজান মাস। রমজান কথাটি এসেছে 'রামিদা' থেকে, এর অর্থ প্রচণ্ড গরম। গ্রীষ্মের প্রবল তাপদাহের মধ্যে এই নির্জলা উপবাস করাকে সংযম হিসেবেই মানেন ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা। তাই এই রমজান মাসকে আত্ম-শৃঙ্খলা এবং আত্ম-নিয়ন্ত্রণের পরীক্ষা হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা তাকওয়া অর্থাৎ শুভ চেতনা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে বলে মনে করেন তাঁরা। গুরুতর অসুস্থ, বৃদ্ধ, গর্ভবতী মহিলা ছাড়া প্রাপ্তবয়স্ক সব মুসলিমেরই রমজান মাসে রোজা বা উপবাস রাখার নিয়ম। তবে জানেন কি গবেষণায় কী বলে? রোজা  রাখারও রয়েছে বেশি কিছু স্বাস্থ্যকর দিক।

চিকিৎসকেরা যদিও নির্জলা উপবাস করাকে মোটেই ভালো হিসেবে দেখেন না, বরং নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার প্রতিই বেশি জির দিয়েছেন, তবে বেশ কয়েক বছরের দীর্ঘ গবেষণায় জানা গিয়েছে এই একমাস টানা রোজ রাখার ফলে শরীরের বেশ কিছু স্বাস্থ্যকর পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। সেগুলি হল -

আরও পড়ুন - চাঁদের গায়ে একফোঁটা আশ্চর্য আলোর বিন্দু! সন্ধ্যার আকাশে এ কোন অবাক করা দৃশ্য?

১. তারুণ্য ধরে রাখা -

গবেষকরা জানান, প্রায় কয়েক লাখ কোষ দিয়ে গঠিত হয় মানব শরীর। এবং এর প্রতিটি কোষেই শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় বর্জ্য পদার্থ সৃষ্টি হয়। এই বর্জ্য কোষ নিজেই ‘অটোফেজি’ নামক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অপসারণ ও আবার ব্যবহার উপযোগী করে তোলে। যা কোষকে সতেজ করে এবং তারুণ্য ধরে রাখতে সহায়তা করে। অন্যথায় অ্যালজেইমার্স, পারকিনসনের মতো মস্তিষ্কের রোগও হতে পারে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। তবে এই রোজা রাখলে অটোফেজি বেড়ে যায়। ফলে শরীরের বর্জ্য পদার্থ জমতে দেয় না।

২. শরীরের বাড়তি চর্বি গলতে সহায়তা করে রোজা -

আমাদের শরীরে এমনিতেই আগে থেকে এক প্রকার গ্লুকোজেন বা চিনি জমানো থাকে। রোজা রাখার কারণে একটানা দশ থেকে বারো ঘণ্টা উপবাস থাকায় শরীরকে চালানোর জন্য জমানো হাত দিতে হয়। একে মেটাবলিক সুইচ বলে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে এর মাধ্যমে বেশ কয়েকটি উপকার হওয়ার সম্ভাবনা আছে। যার একটি বড় দিক হল ওজন হ্রাস।

৩. পেটের স্বাস্থ্য-

আমাদের পেটের মধ্যে অনেক জীবাণুর বাস। যার মধ্যে বেশ কিছু উপকারী জীবাণু রয়েছে যা আমাদের রোগ প্রতিরোধবৃদ্ধিসহ নানাভাবে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। না খেয়ে থাকলে আমাদের পেটের মধ্যে সেই উপকারী জীবাণুর সংখ্যা বাড়ে।

আরও পড়ুন - জল, খাবার কিচ্ছু নয়! টানা একমাস কঠোর নিয়ম, রমজান মাসের তাৎপর্য জানুন

৪. রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ -

দিনের নির্দিষ্ট সময় উপবাস থাকার কারণে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রিত থাকে। পরবর্তীকালে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমে। এছাড়াও এই সময় প্রচুর ফল খাওয়া হয় যা সুগার নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

৫. রক্তে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ -

আমাদের রক্তে একধরণের চর্বি থাকে যাকে কোলেস্টেরল বলে। কোলেস্টেরল বেশি পরিমাণে থাকলে রক্তনালীতে চর্বি জমে তা সরু হয়ে যেতে পারে। ফলে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। রোজা রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে আনতে সহায়তা করে।

More Articles