গভীর জঙ্গলে বাস মহাদেবের, ৫০০০ বছরের পুরনো পোড়ামাটির এই শিব মন্দির আজও বিস্ময়
Ganpur forest : তাই শিবরাত্রি উপলক্ষ্যে চেনা ছন্দে ভক্তির বাইরে গিয়ে নতুন কোনও ইতিহাসের হদিশ পেতে চাইলে বেরিয়ে পড়ুন এই জঙ্গলের উদ্দেশ্যে।
শিবরাত্রির দিন বলে নয় শিব নিয়ে চর্চা বাঙালির মধ্যে চিরাচরিত হয়ে গিয়েছে। পৃথিবীর যা কিছু বিষ, তা নিজের কণ্ঠে ধারণ করেছিলেন যে মহাদেব তাঁকে নিয়ে হিন্দুদের মধ্যে ভক্তি রসের কোনওদিনই কমতি ছিল না। তাই ভ্রমণপিপাসু এমন অনেক বাঙালির কাছে যদি জঙ্গল আর শিব মন্দির একযোগে উপভোগ করার সুযোগ হয় তাহলে তো আর কথাই। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন, কলকাতা থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বেই অবস্থান করছে এমন একটি জায়গা। তাই সপ্তাহান্তের ছুটিতে আপনার গন্তব্য হতে পারে এই জায়গাটি।
আধুনিক সময় দাঁড়িয়ে লম্বা ছুটির অবকাশ প্রায় নেই বললেই চলে, তাই মানুষ এখন বেশি পছন্দ করছে কাছে পিঠে কোনও অফবিট ভ্রমণ বেছে নিতে। তাই কলকাতার কাছাকাছি অফবিট জঙ্গলের অ্যাডভেঞ্জার নিতে চাইলে সঠিক গন্তব্য হতে পারে গনপুর ফরেস্ট। এখানেই গভীর জঙ্গলের মধ্যেই রয়েছে প্রায় ৫০০০ বছরের পুরনো একটি শিব মন্দির। আশেপাশে ঘন জঙ্গল, পাতার খসখস শব্দ, আর চেনা অচেনা পাখিদের কলতানে গোটা জায়গাটি যেন আরও রহস্যময় হয়ে ওঠে। শোনা যায়, এই প্রাচীন শিব মন্দিরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে মহাভারতের পৌরাণিক কথা। তাই শিবরাত্রি উপলক্ষ্যে চেনা ছন্দে ভক্তির বাইরে গিয়ে নতুন কোনও ইতিহাসের হদিশ পেতে চাইলে বেরিয়ে পড়ুন গনপুর জঙ্গলের উদ্দেশ্যে।
আরও পড়ুন - ছয় ফুট উচ্চতা ‘বুড়ো শিব’-এর! জানেন কোথায় আছে রাজ্যের সবথেকে বড় কালো পাথরের শিবলিঙ্গ?
কলকাতার ঘিঞ্জি পরিবেশের থেকে অনেকটাই আলাদা এই জঙ্গল। ইট-কাঠ পাথরের একেবারে বিপরীতে দাঁড়িয়ে এখানে কেবল সবুজের সমারোহ। কলকাতা থেকে দূরত্ব কয়েক কিলোমিটার। বীরভূমের মল্লারপুরের কাছে রয়েছে এই জঙ্গল। রামপুরহাট থেকে সিউড়ি যাওয়ার পথে পড়ে এই জায়গাটি। জানা যায়, ইলামবাজারের জঙ্গলের থেকেও নাকি গভীর এই জঙ্গল। পুরো জঙ্গলটি জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে শাল গাছ। আর তার মধ্যেই রয়েছে ৫ হাজার বছরের পুরনো পোড়া মাটির তৈরি শিব মন্দির। এই মন্দির ঘিরে রয়েছে পৌরানিক গল্প। বলা হয়ে থাকে মহাভারতের জয়দ্রথ নাকি এই শিব মন্দিরে এসে মহাদেবের সাধনা করেছিলেন। আর মহাদেব সেই সাধনায় খুশি হবে বর দান করেছিলেন জয়দ্রথকে। তারপর থেকেই এখানে আশ্রম তৈরি হয়। অনেক সন্ন্যাসীই আসেন এই মন্দিরে উপাসনা করতে।
কীভাবে যাবেন?
হাওড়া অথবা শিয়ালদা স্টেশন থেকে বীরভূমগামী ট্রেনে চেপে রামপুরহাট স্টেশনে নামতে হবে। তারপর সেখান থেকে গাড়ি নিয়ে রওনা হয়ে হবে গণপুর জঙ্গলের উদ্দেশ্যে। রামপুরহাট থেকে সিউড়ি যাওয়ার পথেই রয়েছে এই গণপুরের জঙ্গল। যদিও এখানে জঙ্গল সাফারির কোনও ব্যবস্থা নেই, তাই নিজেদের গাড়িতেই যেতে হবে জঙ্গলের ভেতরের মন্দিরে। তবে রাতে থাকার জন্য বেছে নেওয়া যেতে শান্তিনিকেতন অথবা তারাপীঠকে। ফলে একযোগে ভ্রমণের প্ল্যানটি আরও একটু জমজমাট হয়ে যাবে তা বলাই বাহুল্য।

Whatsapp
