মাঝরাতে গ্রেফতার নোবেল! ধর্ষণ নির্যাতনের ভয়াবহ অভিযোগ
Mainul Ahsan Noble: নোবেল তার ডেমরার বাসার স্টুডিও দেখানোর কথা বলে তাঁকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। এরপর ৭মাস তাঁকে আটকে রেখে মারধর ও ধর্ষণ করা হয়।
নারী নির্যাতন মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে সংগীতশিল্পী মাইনুল আহসান নোবেলকে। তার বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টা, ধর্ষণ-সহ বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে। ১৯ তারিখ রাত আড়াইটের সময় বাংলাদেশের ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রথমে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো বার্তায় এই তথ্য জানা গিয়েছে। পরে বাংলাদেশের ডেমরা তাহনার তরফেও এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। নোবেলের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ?
২০ মে মঙ্গলবার, ডেমরা থানার ওসি মাহমুদুর রহমান বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলোকে বলেছেন- নোবেল সাত মাস ধরে একটি মেয়েকে ঘরে আটকে রেখে ধর্ষণ ও নির্যাতন করছিলেন। বাংলাদেশের জাতীয় জরুরি সেবা '৯৯৯' নম্বরে ফোন করে অভিযোগ জানানো হলে পুলিশ ডেমরার সারুলিয়ার আমতলা এলাকায় নোবেলের বাড়িতে হাজির হয়। সেখান থেকে এক মহিলাকে উদ্ধার করা হয়। ওই মহিলা থানায় গিয়ে অপহরণ এবং ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। এর পর রাত আড়াইটে নাগাদ নোবেলকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রথম আলো-তে লেখা হয়েছে, ওসি মাহমুদুর রহমান বলেছেন- "প্রাথমিকভাবে তাঁরা জানতে পেরেছেন, গত নভেম্বরে ইডেন কলেজের এক ছাত্রীকে গুলশান(বাংলাদেশ)-এ দেখা করার কথা বলে ডেকে নেন নোবেল। তাঁকে বিয়ের প্রলোভন দেখান। পরে সাত মাস ডেমরা (বাংলাদেশে) একটি বাসায় তাঁকে আটকে রাখেন তিনি। এই সময় তিনি ছাত্রীকে নির্যাতন ও ধর্ষণ করেন। এসব ঘটনা নিজের ফোনে রেকর্ড করেন। এই ভিডিও দিয়ে ছাত্রীকে তিনি ব্ল্যাকমেল করছিলেন।"
সম্প্রতি নোবেল এক তরুণীকে সিঁড়ি দিয়ে টেনেহিঁচড়ে নামাচ্ছেন এমন এক সিসিটিভি ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল। ওসি মাহমুদুর রহমান জনিয়েছেন, ভিডিওতে থাকা সেই নারী ভুক্তভোগী তরুণী। তরুণীর বাবা-মা ভিডিওটি দেখেই বাংলাদেশের টাঙ্গাইল থেকে ঢাকায় আসেন এবং তারপর বিস্তারিত জানতে পারেন। পরে তারাই জরুরী সেবাতে অভিযোগ জানান। রাত দশটা নাগাদ ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়। নোবেল প্রথমে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন পরে রাত আড়াইটে নাগাদ তাকে গ্রেফতার করা হয়। জানা গিয়েছে, নোবেল সীমান্ত দিয়ে দেশের বাইরে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন। তার জন্য তিনি একটি মাইক্রোবাসও ভাড়া করেছিলেন।
আরও পড়ুন:https://inscript.me/interview-of-nahid-islam-no-space-for-jamaat-e-islami-in-new-bangladesh
২০১৮ সালে সামাজিক মাধ্যমে নোবেলের সঙ্গে ওই তরুণীর পরিচয় হয়। ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর নোবেল মহম্মদপুর গিয়ে ওই তরুণীর সাথে দেখা করেন। নোবেল তার ডেমরার বাসার স্টুডিও দেখানোর কথা বলে তাঁকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। এরপর ৭মাস তাঁকে আটকে রেখে মারধর ও ধর্ষণ করা হয়। ধর্ষণের ভিডিও রেকর্ড করা এবং ছাত্রীকে ব্ল্যাকমেল করার অভিযোগে নোবেলের বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় গানের অনুষ্ঠান 'সারেগামাপা'-র প্রতিযোগী ছিলেন নোবেল। সেখান থেকেই জনপ্রিয় হয়েছিলেন। তার গানে মুগ্ধ সঙ্গীতপ্রেমীরা। তবে নানা ঘটনায় বারবার বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি। বিভিন্ন অভিযোগে আটকও হয়েছেন। এত পরিচিতি পাওয়ার পরও নোবেল হারিয়ে গিয়েছিলেন নেশার জগতে। বিয়েও টেকেনি। তার বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগও তুলেছিলেন তার প্রাক্তন স্ত্রী। এরপর তাকে মাদক নিরাময় কেন্দ্রেও পাঠানো হয়। ১০ মাস পর মাদক নিরাময় কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে নোবেল নিজে ভুলও স্বীকার করেন এবং নতুনভাবে নিজেকে উপস্থাপন করেন ভক্তদের কাছে। নোবেলকে ফের দেখা গিয়েছিল মঞ্চে। এখন আবার নতুন করে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে নোবেলের বিরুদ্ধে।
Whatsapp
