ফিরতে পারে বিলুপ্ত ডোডো পাখি, রাস্তায় ঘুরে বেড়াবে ডাইনোসর! জানেন কীভাবে সম্ভব?

Resurrect Dodo Birds : জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে কাজ করা আমেরিকান কোম্পানি কলোসেল বায়োসায়েন্স নামক এক সংস্থা ইতিমধ্যেই জিন প্রযুক্তি ব্যবহার করে ম্যামথ ও থাইসিনদের পুনরায় ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু করেছে।

হারানো প্রাপ্তির কথা অনেকেই শুনেছেন, একটা পুরনো ছবি কিংবা পুরনো কোনও বই হঠাৎ করে একদিন খুঁজে পেলে একটা অদ্ভুত আনন্দ হয়, সেখানে যদি জানা যায় পৃথিবী থেকে একেবারে হারিয়ে যাওয়া প্রজাতি আবার খুঁজে পাওয়া গিয়েছে, তবে বিষয়টা কেমন হবে একবার ভেবে দেখুন! হ্যাঁ যে বিষয়টা ঘটতে চলেছে সেটি ঠিক তাই। আজ থেকে বহু বহু বছর আগে একেবারে হারিয়ে গিয়েছিল যে ডোডো পাখি, বিজ্ঞানীরা আবার তাদেরই ফিরিয়ে আনার কথা বলছেন সম্প্রতি।

সময়টা ১৬৮১ সাল। ব্রিটানিকা ওয়েবসাইট অনুসারে জানা যায়, এই সময়ই মরিশাসে মারা গিয়েছিল শেষ ডোডো পাখিটি। এর পর থেকেই তাদের নাম বিলুপ্তপ্রায় তালিকা থেকে বিলুপ্তদের তালিকাভুক্ত হয়। এর পর কেটে গিয়েছে প্রায় ৪০০ বছর। কেবল ইতিহাসের পাতাতেই স্থান হয়েছে এই পাখির। পাশাপাশি যাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে তার অবশিষ্টাংশ। প্রাচীন এই পাখিটি সম্পর্কে বর্তমান প্রজন্ম এটুকুই জানত। সম্প্রতি সেই বিষয়ই নতুন দিশা দেখাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। কলোসেল বায়োসায়েন্স নামক এক সংস্থা ফের তাদের ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা করেছে বলেই জানা গিয়েছে। সত্যিই এই ঘটনাটি ঘটলে জীববিদ্যার যে নতুন একটা দিক খুলে যাবে তা বলাই বাহুল্য!

আরও পড়ুন - চেহারায় ১০০ হাতির সমান! দৈত‍্যাকার ডাইনোসরের কঙ্কাল উদ্ধার তোলপাড় বিশ্বজুড়ে

বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীর কথা উঠলে আসত ডোডোর পাখির কথা। উচ্চতায় প্রায় এক মিটার, দৈহিক ওজন ২৩ থেকে ২৫ কেজি। যদিও উড়তে পারত না এই প্রজাতির পাখিরা। বিভিন্ন সময়ে নানান গল্প-কবিতায় ফিরে ফিরে এসেছে এই ডোডো পাখির প্রসঙ্গ। শোনা যায়, ১৫০৭ সাল নাগাদ একজন পর্তুগিজ নাবিক প্রথম সন্ধান পেয়েছিলেন এই প্রজাতির পাখির। অতঃপর শিকার করে , সেই পাখির মাংসও নাকি খেয়েছিলেন তিনি। এই সন্ধানের প্রায় ৮৩ বছর পর ১৫৯০ সালের শেষ দিকে মরিশাসে আসে একদল মানুষ। মানুষের আগমন নিয়ে প্রাথমিকভাবে একটুও বিচলিত হয়নি এই পাখি, এতটাই সাহসী ছিল এরা। উপরন্তু সহজেই পোষ মেনে যায় তারা। অবশ্য তারই খেসারত দিতে হয় পাখিগুলিকে। ক্রমে ডোডো পাখির ডিমের ওপর থাবা বসাতে শুরু করে মানুষ। এইভাবেই বিলুপ্তির পথে এগিয়ে যায় ডোডো, এবং অবশেষে ১৭ শতকে সম্পূর্ণরূপে অদৃশ্য হয়ে যায় তারা। ইতিহাসের এই অধ্যায়টিকেই আবারও পুনরুদ্ধার করার পথে বিজ্ঞানীরা।

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে কাজ করা আমেরিকান কোম্পানি কলোসেল বায়োসায়েন্স নামক এক সংস্থা ইতিমধ্যেই জিন প্রযুক্তি ব্যবহার করে ম্যামথ ও থাইসিনদের পুনরায় ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু করেছে। সম্প্রতি সংস্থাটি আনুষ্ঠানিকভাবে এটি ঘোষণা করে জানিয়েছে যে, “শুধু ডোডো নয় ভবিষ্যতে এমনকী ডাইনোসরদেরও আমরা রাস্তায় আবার ঘুরে বেড়াতে দেখতে পারি। যদিও এই মুহুর্তে এটি অনেক দূরের বিষয় এবং জিন প্রযুক্তির কারণে যে প্রাণীগুলি অদৃশ্য হয়ে গিয়েছে তারা পৃথিবীতে ফিরে আসতে সক্ষম হবে কি-না তাও নিশ্চিত নয়, তবে চেষ্টা চলছে। এই প্রকল্পে ১৫ কোটি মার্কিন ডলারের অর্থায়নও হয়েছে।” অর্থাৎ গবেষণার ওপর ভরসা রেখেই এখন ইতিহাস পুনরুদ্ধারের পথে বিজ্ঞানীরা।

More Articles