পুজোর আগেই অ্যাকাউন্টে দশ হাজার, কী ভাবে পাবেন রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা?

Teachers Day 2023: ইতিমধ্যেই ২৭ লক্ষ পড়ুয়াকে এই টাকা দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। যেই খাতে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী।

পুজো এলে আগে হাসি ফুটত পাড়ার ক্লাবগুলির মুখে। কারণ রাজ্য সরকারের তরফ থেকে বড়সড় অঙ্কের অনুদান এসে ঢুকত ক্লাবের তহবিলে। ফুলে ফেঁপে উঠত কোষাগার। সেই টাকার কতখানি খরচা হত পুজোর জন্যে, আর কতখানি পুজো পরবর্তী ডিজে পার্টিতে, তার খবর শুধুই ব্রহ্মাই জানেন। তবে ক্লাবের পর এবার মুখে হাসি ফোটবার পালা এ রাজ্যের পড়ুয়াদের মুখে। পুজোর সময় বাবা-মার কাছে 'জামা-জুতো কিনে দাও' বলে বায়না করার দিন শেষ। এবার লাগে টাকা দিচ্ছে সরকার। গত বছরই কলকাতার দুর্গাপুজোকে স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেস্কো। আর সেই স্বীকৃতির প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বড় ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর। যার ফলে উপকৃত হতে চলেছেন রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা।

না, শুধু ঘোষণাই নয়। শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানমঞ্চ থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেরে ফেললেন শুভ কাজটিও। ৫ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার ধনধান্য অডিটোরিয়ামে আয়োজন করা হয়েছিল শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান। সেখানেই মমতা রাজ্যের ৯ লক্ষ ৭৮ হাজার ১২ জনের হাতে তুলে দেন দশ হাজারটি করে টাকা। পুজোর আগে এমন লক্ষ্মীলাভে কার্যতই খুশি পড়ুয়ারা। তবে ওই মঞ্চেই মুখ্যমন্ত্রী জানান, এটাই প্রথম বছর নয়। গত তিন বছর ধরেই 'তরুণের স্বপ্ন' প্রকল্পের আওতায় ছাত্রছাত্রীদের এই টাকাটা দিয়ে আসছে তৃণমূল সরকার। ইতিমধ্যেই ২৭ লক্ষ পড়ুয়াকে এই টাকা দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। যেই খাতে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী।

আরও পড়ুন: ‘জয় বাংলা’-ই অস্ত্র! স্কুলে বাংলা বাধ্যতামূলক করে কতটা এগিয়ে রইলেন মমতা?

আজ থেকে নয়। গোড়া থেকেই একাধিক জনমুখী প্রকল্পের আওতায় রাজ্যবাসীকে নানা সুবিধা দিয়ে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তা নবম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের সাইকেল দেওয়া সবুজসাথী হোক বা কন্যাশ্রীর মতো প্রকল্প। এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই, মমতার জমানায় সরকারের থেকে যে পরিমাণ ভাতা বা সুবিধা রাজ্যবাসী বিশেষত গ্রামাঞ্চলের মানুষ পেয়েছেন, তা বিরল। আর তার মধ্যেই একটি এই 'তরুণের স্বপ্ন' প্রকল্প। মুখ্যমন্ত্রী জানান, 'তরুণের স্বপ্ন' নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর নামে একটি বই রয়েছে। সেখান থেকেই এই নামটি নেওয়া। কোভিডের সময় থেকেই পড়ুয়াদের হাতে মোবাইল বা ট্য়াব তুলে দেওয়ার কথা চিন্তাভাবনা করেই এই প্রকল্পের শুরু। সবুজসাথীর আওতায় সাইকেল তো দেওয়া হচ্ছেই পড়ুয়াদের। কোভিডের কারণে শুরু হলেও সেই প্রকল্প এখনও চালিয়ে যাচ্ছে মমতা সরকার।

Kolkata news | Teachers' Day celebration, Janmashtami preparations, & more  news from Kolkata in pictures - Telegraph India

তবে এই টাকা যে সব ক্লাসের পড়ুয়ারাই পাবেন, তা কিন্তু নয়। শুধুমাত্র উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী যারা, তাঁদের অ্যাকাউন্টেই ঢুকতে চলেছে এই টাকা। যাতে তাঁরা সেই টাকায় জীবনের প্রথম মোবাইল বা ল্যাপটপ কিংবা ট্যাবলেট কিনতে পারেন। পশ্চিমবঙ্গ পরিচালিত স্কুল এবং মাদ্রাসার পড়ুয়ারাই এই সুবিধা পাবেন। তবে যেসব পড়ুয়ার পারিবারিক আয় বছরে ২ লক্ষ টাকার কম, তাঁরাই এই আর্থিক সহায়তা পাচ্ছেন বলেও জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

আরও পড়ুন: মমতা-বর্জিত একনায়কতন্ত্রের চেষ্টা আদৌ সফল হবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের?

কীভাবে মিলবে এই আর্থিক সাহায্য। না, কোনও অনলাইন পথ অবশ্য তার জন্য খোলা নেই। শুধুমাত্র নিজের স্কুল মারফৎই আবেদন করা যাবে এর জন্য। স্কুলেই জমা করতে হবে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট-সহ সমস্ত প্রয়োজনীয় তথ্য, পূরণ করতে হবে ফর্মও। অনলাইনে আবেদন করা না গেলেও, অনলাইনে ফর্মটি সহজেই ডাউনলোড করতে পারবেন পড়ুয়ারা।সব মিলিয়ে শিক্ষক দিবসের দিনই হাতে চাঁদ পেয়েছেন রাজ্যের পড়ুয়া। স্বাভাবিক ভাবেই পুজোর আগে আগে এমন সারপ্রাইজে দারুণ খুশি ছাত্রছাত্রীরা। পাশাপাশি বড় একটা খরচের হাত থেকে নিস্তার পাওয়ায় স্বস্তি পেয়েছে পরিবারও।

More Articles