CAA-তে কেন বাদ মুসলমানরা? বিতর্কিত প্রশ্নের বিস্ফোরক উত্তর দিলেন অমিত শাহ

Amit Shah on CAA: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলছেন, দেশভাগের সময় পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যার ২৩ শতাংশ ছিল হিন্দু। এখন তা কমে হয়েছে ৩.৭ শতাংশ।

সিএএ বা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বাস্তবায়নকে ঘিরে দেশজুড়ে যে দ্বন্দ্ব, দেশের নানা অংশে যে বিক্ষোভ তার নেপথ্যে থাকা একটি বড় প্রশ্ন হচ্ছে কেন ধর্মের ভিত্তিতে বিভেদ? বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় অত্যাচারের কারণে যে সংখ্যালঘুরা ভারতে এসেছেন ভারত সরকার তাঁদের নাগরিকত্ব দেবে। এই তিন দেশেই ধর্মের দিক থেকে মুসলিমরা সংখ্যাগুরু। তাই এখান থেকে আসা সংখ্যালঘুরা মুসলিম ব্যাতীত। যদি কোনও মুসলিম এই দেশগুলি থেকে অত্যাচারিত হয়ে এসে ভারতের নাগরিকত্ব খোঁজেন তাহলে কেন তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই মূল প্রশ্নটির উত্তর দিয়েছেন। পার্সি, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানরা যদি সিএএ-এর অধীনে নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্য হয় তাহলে মুসলিমরা কেন নয়? CAA বলছে, পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে নির্যাতিত সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব প্রদান করা হবে যারা ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে ভারতে এসেছেন।

পার্সি এবং খ্রিস্টান – এই দুই ধর্মের জন্মও ভারতে নয়, সেই মানুষরাও যদি নাগরিকত্ব চান তাহলে ভারত তা দিতে রাজি তাহলে মুসলিমরা বাদ কেন? অমিত শাহ স্পষ্ট বলছেন, ওই জায়গাগুলি মুসলিম জনসংখ্যার কারণেই আজ ভারতের অংশ নয়। এই অঞ্চলগুলি মুসলিমদের জন্যই দেওয়া হয়েছিল। "আমি বিশ্বাস করি যারা অখণ্ড ভারতের অংশ ছিল এবং যারা ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়েছিল তাদের আশ্রয় দেওয়া আমাদের নৈতিক ও সাংবিধানিক দায়িত্ব," বলছেন অমিত শাহ। অখণ্ড ভারত কী? অখণ্ড ভারত হচ্ছে অখণ্ড বৃহত্তর ভারত, এখন যে অঞ্চলগুলি আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মালদ্বীপ, নেপাল, মায়ানমার, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং তিব্বতের অধীনে সেই সমগ্র নিয়ে বিস্তৃত অখণ্ড ভারত।

আরও পড়ুন- মতুয়ারা হাসছেন, অসম ফুঁসছে! কেন বিজেপি শাসিত অসমে CAA-র তীব্র বিরোধিতা?

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলছেন, দেশভাগের সময় পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যার ২৩ শতাংশ ছিল হিন্দু। "এখন তা কমে হয়েছে ৩.৭ শতাংশ। কোথায় গেল এই মানুষরা? এত মানুষ তো এখানে আসেনি। এদের জোর করে ধর্মান্তরিত করা হয়েছিল, অপমান করা হয়েছিল, দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসাবে আচরণ করা হয়েছিল। তারা তাহলে কোথায় যাবে? আমাদের সংসদ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর কি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয়?” প্রশ্ন তুলছেন অমিত শাহ।

অমিত শাহ বলছেন, “১৯৫১ সালে বাংলাদেশের জনসংখ্যার ২২ শতাংশ হিন্দু ছিল। ২০১১ সালেতা কমে ১০ শতাংশ হয়েছে। তারা সব কোথায় গেল? ১৯৯২ সালে আফগানিস্তানে প্রায় ২ লক্ষ শিখ এবং হিন্দু ছিল। এখন ৫০০ জন মাত্র আছে। তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী বাঁচার অধিকার কি নেই? ভারত যখন এক ছিল, তারা আমাদেরই ছিল। তারা আমাদেরই ভাই-বোন, মা।"

বাস্তবে কিন্তু মুসলিমরা সকলেই আরামে আছেন বা অত্যাচারিত নন এমনটা নয়। মুসলিমদের মধ্যে বিবিধ ভাগ আছে যারা আবার নিজ ধর্মেরই অন্য সম্প্রদায় দ্বারা নির্যাতিত। শিয়া, বেলুচ এবং আহমদিয়া মুসলিমদের মতো নির্যাতিত সম্প্রদায় সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে অমিত শাহ বলছেন, "বিশ্বজুড়ে, এই অংশটিকে মুসলিমদের অংশ হিসাবেই বিবেচনা করা হয়। তাছাড়া মুসলমানরাও এখানে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারেন। সংবিধানে বিধান রয়েছে। তারা আবেদন করতে পারেন। জাতীয় নিরাপত্তা এবং অন্যান্য বিষয়গুলিকে মাথায় রেখে ভারত সরকার তখন সিদ্ধান্ত নেবে। তবে CAA হচ্ছে তিনটি দেশের নির্যাতিত সংখ্যালঘুরা, যারা কোনও বৈধ নথি ছাড়াই সীমান্ত অতিক্রম করেছে তাদের জন্য একটি 'বিশেষ আইন"।

More Articles