ইরানকে ‘সবক’ শেখাতে কতদূর যাবে ইজরায়েল? ভারতকেও ভুগতে হবে ফল?

Israel Iran Conflict: ইতিমধ্যেই ইরান-ইজরায়েল সংঘাতের প্রভাব এসে পড়েছে ভারতে। যুদ্ধের আবহে ভারত ও ইজরায়েলের মধ্যে আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবা বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করেছে এয়ার ইন্ডিয়া।

একদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন, অন্যদিকে প্যালেস্টাইন-ইজরায়েল সংঘাত। তারই মধ্যে লেগে গেল আরও একটা নতুন যুদ্ধ। ইজরায়েলের বিরুদ্ধে হামলা করে বসল ইরান। শনিবার রাত থেকে ইজরায়েলে তিনশোরও বেশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। যদিও ইরানের ছোড়া সমস্ত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রই প্রতিহত করেছে ইজরায়েল। নয়া সংঘাতেও ইজরায়েলের পাশেই দাঁড়িয়েছে আমেরিকা। মার্কিন বাহিনীও বহু ইরানি ড্রোন আকাশ থেকে গুলি করে নামিয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই নয়া যুদ্ধকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পশ্চিম এশিয়া।

ইজরায়েলে ইরানের আক্রমণ অবশ্য রাতারাতি কোনও ঘটনা নয়। বেশ কিছুদিন ধরেই ইরানের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে ইজরায়েল। দামাস্কাসে ইরানি দূতাবাসে সম্প্রতি হামলা চালিয়েছিল ইজরায়েল। সেই হামলার পাল্টা হিসেবে শনিবার রাতে ইজরায়েলে হামলা করে বসে ইরান। ইজরায়েলে ইরানি হামলা হতে পারে, এমন একটা পূর্বাভাস অবশ্য ছিলই। আর সেই আশঙ্কাই সত্যি হয়। ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স (IDF) সূত্রের খবর, ইরানের তরফে পশ্চিম এশিয়ার আমেরিকার দূতাবাসগুলিতে হামলা চালানোরও হুমকি দেওয়া হয়েছে।

শুধু আমেরিকাই নয়, এই সঙ্কটে ইজরায়েলের পাশে দাঁড়িয়েছে ব্রিটেন ও ফ্রান্স। দুই দেশের তরফেই ইজরায়েলে ইরানি হামলার সমালোচনা করা হয়। হামাসের সঙ্গে যখন ইজরায়েলের সংঘাত শুরু হয়েছিল, সে সময়েও ইজরায়েলের পাশে দাঁড়িয়েছিল আমেরিকা, ব্রিটেন ও ফ্রান্স। এবারও সেই বন্ধুত্বে চিড় ধরল না। ইরানের একের পর এক ড্রোন ধ্বংস করেছে আমেরিকা ও ব্রিটেনের সামরিক বাহিনী। গত ৭ অক্টোবর শুরু হয়েছিল ইজরায়েলের সঙ্গে প্যালেস্টাইনের সশস্ত্র বাহিনী হামাসের যুদ্ধ। ইজরায়েলে ঢুকে অতর্কিতে হামলা চালিয়েছিল হামাস বাহিনী। প্রায় ১৪০০ ইজরায়েলবাসীর মৃত্য়ু হয়েছিল সেই ঘটনায়। তার পরেই প্যালেস্টাইন তথা হামাসের বিরুজ্ঝে যুদ্ধঘোষণা করে দেয় ইজরায়েল। যার প্রভাব পড়েছিল গাজায়। গাজাকে কার্যত শ্মশানে পরিণত করেছে অ্যাদ্দিনে ইজরায়েল। সেই ভয়াবহ যুদ্ধ এখনও চলছে। তার মধ্যেই আবার ইজরায়েলে হামলা চালালো ইরান।

আরও পড়ুন: শ্রমিক বড় সস্তা! কেন ইজরায়েলে ৬ হাজার নির্মাণকর্মী পাঠাচ্ছে ভারত?

সামরিক ভাবে ইজরায়েল ভয়ঙ্কর রকমের শক্তিশালী দেশ। যে কারণে তাকে সমীহ করে চলে আমেরিকা , ব্রিটেন, ফ্রান্সের মতো একাধিক প্রথম বিশ্বের দেশ। ইরানের ছোঁড়া ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র তেমন ক্ষতি করতে পারেনি ইজরায়েলের। আকাশপথে হামলা প্রতিহত করার একাধিক ব্যবস্থা রয়েছে। ইজরায়েলি সামরিক বাহিনীর দাবি, ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের ৯৯ শতাংশই আকাশে থাকতে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। আয়রন-ডোমের মতো একাধিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভালো মতোই ইরানের হামলা প্রতিহত করেছে বলে খবর। হবে না-ই বা কেন, আমেরিকার সাহায্য নিয়ে তিলে তিলে এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে ইজরায়েল। তাদের কাছে রয়েছে ত্যাধুনিক ‘অ্যারো এরিয়াল ডিফেন্স সিস্টেম’। এর মাধ্যমে আকাশেই ইরানের ড্রোনগুলি চিহ্নিত করতে পেরেছেন সেনারা। সেগুলিকে লক্ষ্য করে ছোড়া হয়েছে গুলি। ইজ়রায়েলকে আমেরিকা এবং ব্রিটেনের সেনারা এই কাজে সহায়তা করেছেন। নীচ থেকে ছোড়া গুলি আকাশপথে ভেসে আসা ড্রোনে নিখুঁত ভাবে বিঁধে গিয়েছে। অধিকাংশ ড্রোনই ইজ়রায়েলের আকাশসীমা পেরোতে পারেনি।

গত ১ এপ্রিল দামাস্কাসে ইরানের কনস্যুলেটে হামলা চালিয়েছিল ইজরায়েল। তাতে ইরানের ৭ জন সেনা আধিকারিকের মৃত্যু হয়। তার পরেই পাল্টা হামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল ইরান। আমেরিকা মধ্যস্থতা করতে চেয়েছিল বটে। তবে কোনও কাজের কাজ হয়নি। সেই হামলার প্রতিশোধ হিসেবেই শনিবার গভীর রাতে ইজরায়েলকে নিশানা করে তিনশোর অধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে বসে ইরান। ইরানের পক্ষ থেকে জানানো হয়, অন্য কোনও দেশ এর মধ্যে ঢুকলে, তাদের বিরুদ্ধেও একই রকম হামলা চালাবো ইরান।

যে কোনও শুভবুদ্ধিসম্পন্ন দেশই যুদ্ধের বিপক্ষে। রাষ্ট্রপুঞ্জে ইরানের এই হামলার কড়া নিন্দা করা হয়েছে। ইজরায়েলের উপর ইরানের হামলার নিন্দা করেছে জি-৭-এর দেশগুলিও। সব পক্ষকেই সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। রবিবারই এই সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনায় বসেন তাঁরা। ইওরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতি চার্লস মিচেল বলেছেন, "আমরা সর্ব়সম্মত ভাবে ইজ়রালের বিরুদ্ধে ইরানের নজিরবিহীন হামলার তীব্র নিন্দা করছি। দু’দেশের মধ্যে তৈরি হওয়া উত্তেজনা প্রশমিত করার জন্য সব রকম পদক্ষেপ করব আমরা। গাজ়ার সঙ্কট যাতে খুব শীঘ্রই মেটানো যায় সে দিকে আমাদের নজর রয়েছে। তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করা যায় কি না তা নিয়ে আলোচনা চলছে।"

ইরানের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, তারা ইজরায়েলে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চায় না। ১ এপ্রিলে ইজরায়েলের হামলার বদলা নেওয়ার ছিল ইরানের। তা হয়ে গিয়েছে। এর পরে ইজরায়েল যদি তাঁর বিরুদ্ধে আর কোনও অস্ত্র না ধরে, তাহলে যুদ্ধের পথে হাঁটবে না তাঁরা। তবে ইজরায়ের বর্তমান সরকার দেশের সর্বকালের আগ্রাসী সরকার বলেই পরিচিত। ফলে এত সহজে ছেড়ে কথা বলবেন বলে মনে হয় না প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। হামাসের হামলার পরে গত কয়েক মাসে গাজা, ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক-সহ প্যালেস্টাইনের একাধিক এলাকাকে কার্যত ধ্বংস করে দিয়েছে ইজরায়েল। ফলে তেহরানের এই হামলাকে এত সহজে ইজরায়েল ভুলে যাবে বলে তো মনে করছে না অভিজ্ঞমহল। ইজরায়েলের সামরিক বাহিনী ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছে, আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও অন্যান্য মিত্রশক্তিদর সঙ্গে ইরানের নজিরবিহীন হামলার জবাব দেওয়ার জন্য জোট গঠন করছে ইজরায়েল। যদিও আমেরিকা ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের পথে যাবে না বলেই জানিয়েছে। ইজরায়েলকেও এখনই পাল্টা হামলার পথে যেতে বারণ করেছে আমেরিকা।

ইরান রাষ্ট্রপুঞ্জে জানিয়েছেন, আত্মরক্ষার খাতিরেই ইজরায়েলে হামলা চালিয়েছে তেহরান। যুদ্ধের পরিধি বা তীব্রতা বাড়ুক, এমনটা তারা চায় না। এদিকে, ইরানের তরফে দাবি, আমেরিকা ও পশ্চিম এশিয়ার অন্যান্য 'বন্ধু' দেশগুলিকে জানিয়েই ইজরায়েলে হামলা চালিয়েছে তারা। যদিও তাদের সেই দাবি খারিজ করেছে আমেরিকা। আপাতত বিশ্বের কাছে মাথাব্যথার ব্যাপার একটাই। ইরানের হামলার জবাব দিতে ঠিক কোন পর্যায়ে পৌঁছতে পারে ইজরায়েল? প্রতিবেশী ও মিত্র দেশগুলি বারবার ইজরায়েলকে পরামর্শ দিয়েছে স্ট্র্যাটেজিক পেশেন্স বা কৌশলগত ধৈর্য ধরার পথে হাঁটার। তবে ইজরায়েলের পক্ষে কি সেই ধৈর্য ধরা আদৌ সম্ভব। ইতিমধ্যেই বৈঠকে বসেছে ইজরায়ের ওয়ার ক্যাবিনেট। সোশ্যাল মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্স-এ বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু দেশবাসীর উদ্দেশে একটি বার্তায় সাফ জানিয়েছেন, "যাঁরা আমাদের যন্ত্রণা দেবে, আমরাও পাল্টা যন্ত্রণা দেব তাদের।" যে কোনও ভাবে যে কোনও পরিস্থিতিতে যে নিজেদের রক্ষা করতে তারা প্রস্তুত, তা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে নেতানিয়াহুর বক্তব্যে। অভিজ্ঞদের একটি অংশের দাবি, ইরানকে মোটেও ছেড়ে কথা বলবে না ইজরায়েল। এর জল গড়াবে অনেক দূর।

ঠিক কতদূর গড়াতে পারে এই ইজরায়েল-ইরান হামলার জল? ইরানকে এই যুদ্ধ মদত দিয়েছে লেবাননের জঙ্গিগোষ্ঠী হিজবুল্লাহ বা প্যালেস্টাইনের সশস্ত্র জঙ্গিগোষ্ঠী হামাসের মতো দলগুলি। ইরানে সরাসরি হামলা না চালিয়ে এই প্রক্সি অ্যালাইজ বা শরিকদের উপর হামলা চালাতে পারে কি নেতানিয়াহুর দেশ? এতদিন পর্যন্ত ইরানের সঙ্গে শত অশান্তিতেও সেই কাজটাই করেছে ইজরায়েল। এখনও পর্যন্ত কখনও তারা ইরানে সরকাসরি হামলা চালায়নি। তবে ইজরায়েলে সেই কাজটাই করেছে ইরান। ফলে ইরানের শক্তিশালী সেনা ঘাঁটি বা রিভোলিউশনারি গার্ডসের ঘাঁটি, প্রশিক্ষণ শিবির ও কমান্ড-অ্যান্ড-কন্ট্রোল সেন্টারগুলোকে যে হামলার নিশানা করে বদলা নেবে না ইজরায়েল, তা বলা যাচ্ছে না।

How Fallout Of Iran-Israel Conflict Could Impact Global Politics

গাজায় ভয়াবহ যুদ্ধকে কেন্দ্র করে ইজরায়েলে ক্ষুব্ধ বিশ্বের বহু দেশই। বিশেষত মধ্যপ্রাচ্যের বহু দেশেরই চক্ষুশূল ইজরায়েল। তবে প্রথম থেকেই ইরানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রেখেছে আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্সের মতো শক্তিধর দেশেরা। একই পথে রয়েছে ভারতও। কিছুদিন আগেই ভারতের প্রশংসা করতে দেখা গিয়েছিল ইজরায়েলকে। এমনকী ইজরায়েলকে শ্রমিক সরবরাহের চুক্তিতে সায় দিয়েছিল ভারত। ইজরায়েল-ইরান সংঘাতে নিরপেক্ষ থাকার দাবি জানিয়েছে ভারত। পশ্চিম এশিয়ার পরিস্থিতিতে ভারত উদ্বিগ্ন বলেই জানিয়েছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। অবিলম্বে শান্তি স্থাপন ও হিংসার পথ থেকে সরে এসে কূটনীতিক স্তরে সমস্যা সমাধানের ডাক দিয়েছে নয়াদিল্লি। ইজরায়েলকে কোনও রকম পাল্টা হামলা করার ব্যাপারে বারবার নিষেধ করেছে আমেরিকা। যদিও সূত্রের খবর, নেতানিয়াহু এই হামলার বিষয়ে আমেরিকাকে অদমনীয় ভাবই দেখিয়েছে। ইরানের বিরুদ্ধে কোনও রকম হিংসার পথে আমেরিকা যাবে না বলেই জানিয়ে দিয়েছে বাইডেন।

ইতিমধ্যেই ইরান-ইজরায়েল সংঘাতের প্রভাব এসে পড়েছে ভারতে। যুদ্ধের আবহে ভারত ও ইজরায়েলের মধ্যে আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবা বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করেছে এয়ার ইন্ডিয়া। ১৪ এপ্রিল থেকে কার্যকর হয়েছে এই সিদ্ধান্ত। অনির্দিষ্টকালের জন্য ইজরায়েলের প্রধান শহরগুলি থেকে ভারতে এয়ার ইন্ডিয়ার যান চলাচল বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। এরই মধ্যে আবার যুদ্ধের পরিস্থিতিতে ইরান আটক করেছে ইজরায়েলগামী একটি জাহাজকে। জাহাজটি ইজরায়েলের হলে সেখানে আটকে রয়েছেন ১৭ জন ভারতীয়। শনিবারই হরমুজ প্রণালীর কাছে ইরানি বাহিনী জাহাজটিকে আটক করে।

খবর পেয়েই নয়াদিল্লির তরফে ইরানে যোগাযোগ করা হয়েছে, যাতে ওই ১৭ জন ভারতীয় জাহাজকর্মীকে দেশে ফিরিয়ে আনা যায় নিরাপদে। ইরানের বিদেশমন্ত্রী আমির আবদুল্লাহিয়ানের সঙ্গে ইতিমধ্যেই কথা হয়েছে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্করের। তবে যুদ্ধের এই আবহে ওই জাহাজকর্মীদের জীবন নিয়ে যথেষ্ট সঙ্কটে রয়েছে ভারত।

আরও পড়ুন:হামাসের কায়দায় ইজরায়েলে হামলা হিজবুল্লাহের, নতুন যুদ্ধের শঙ্কায় কাঁপছে বিশ্ব

এদিকে ইরান এবং ইজ়রায়েলের যুদ্ধ পরিস্থিতি খারাপের দিকে এগোলে তার সরাসরি প্রভাব ফেলবে অর্থনীতিতে। বাড়তে পারে অপরিশোধিত তেলের দাম। ব্লুমবার্গের রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যারেল প্রতি অপরিশোধিত তেলের দাম ৯০ ডলার ছাড়িয়েছে। ইরান এবং ইজ়রায়েলের মধ্যে যদি ক্রমাগত সংঘাত চলতে থাকে, তবে কয়েক দিনের মধ্যেই সেই দাম ১০০ ডলার ছুঁয়ে ফেলবে। যা বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলবে। ভুক্তোভোগী হবে ভারতও। প্রয়োজনীয় অপরিশোধিত তেলের ৮০ শতাংশই ভারত আমদানি করে। যদি এ ভাবে চড়চড়িয়ে অপরিশোধিত তেলের দাম বৃদ্ধি পায়, তবে ভারতকে আমদানি খরচ মেটাতে মোটা অঙ্কের টাকা দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে ভারতে মুদ্রাস্ফীতি ঘটতে পারে। অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বাণিজ্যের ভারসাম্যহীনতা এবং চলতি হিসাবের ঘাটতি অর্থনীতিতে চাপ সৃষ্টি করবে। ইতিমধ্যেই ইরান-ইজরায়েল সংঘাতের প্রভাব পড়েছে স্টক মার্কেটে। সোমবার বাজার খুলতে না খুলতে হু হু করে নামল স্টকের গ্রাফ। বাজার খোলার কিছুক্ষণের মধ্য়েই ৭২৭ পয়েন্ট পড়ে যায় সেনসেক্স। এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের এই শেয়ার সূচক দাঁড়িয়েছিল ৭৩,৬৭৯.৫৯ পয়েন্টে। অন্যদিকে ২০০ পয়েন্ট নেমে গিয়েছে নিফটিও।  যুদ্ধের জেরে বিরাট ক্ষতির মুখে পড়েছে বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাভুক্ত প্রায় সমস্ত কোম্পানি। সোমবার বাজার খোলার কিছুক্ষণের মধ্য়েই মার্কেট থেকে উবে যায় ৪.৯৮ লাখ কোটি টাকা। 

সব মিলিয়ে ফের নতুন আরও একটা যুদ্ধ লাগার আশঙ্কায় কাঁপছে গোটা বিশ্ব। ইজরায়েলের যুদ্ধের রেকর্ড বলছে, ইরানকে এত সহজে ছেড়ে দেওয়ার বান্দা তারা নয়। গাজার যুদ্ধ নিয়েই জেরবার বিশ্ব রাজনীতি। এরই মধ্যে ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে না তো বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলিও। নতুন করে কোনও রকম বিশ্বযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হবে না তো? সব মিলিয়ে বিশ্ব রাজনীতিতে বিরাট এক সঙ্কটময় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ইরান ও ইজরায়েলের এই সংঘাতকে কেন্দ্র করে।

More Articles