মা ১১৭! ছেলে প্রায় ১০০! ভোট দিলেন ওঁরা

Lok Sabha Election 2024: রোদের মধ্য়ে বুথে গিয়ে নয়, বাড়িতে বসেই শান্তিপূর্ণ ভাবে নিজেদের ভোটটি দিয়েছেন ১১৭-র মাঝিয়াশ্বরী ও তাঁর পুত্র কালীকান্ত।

ভোট। গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় উৎসব। যার সবচেয়ে বড় অস্ত্র ভোটাধিকার। নিজের নেতা, দেশনায়ক নিজে বেছে নেওয়ার অধিকার। দেখতে দেখতে আরও একটা ভোট। দেশের ১৮তম লোকসভা নির্বাচন শুরু হচ্ছে আগামী ১৯ এপ্রিল থেকে। আর এই আঠেরোটি ভোটের প্রায় সবকটি নিজের চোখে দেখেছেন ধূপগুড়ির বাসিন্দা মাঝিয়াশ্বরী রায়। বয়স এসে চোখের দৃষ্টি ঝাপসা করেছে ঠিকই। তবে তাতেও নিজের গণতান্ত্রিক অধিকারটুকু বুঝে নিতে ভোলেননি ১১৭ বছরের মাঝিয়াশ্বরী।

লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় ভোটগ্রহণ হবে এ রাজ্যের উত্তরে, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার- এই তিনটি কেন্দ্রে। এ বছর বয়স্ক ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটগ্রহণের বিশেষ ব্যবস্থা করেছে নির্বাচন কমিশন। জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি এলাকার সাঁকোয়াঝড়া ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের পূর্ব মল্লিকপাড়ার বাসিন্দা ১১৭ বছরের মাঝিয়াশ্বরী। তাঁর পাঁচ ছেলের মধ্যে চার জন জীবিত বর্তমানে। তাঁদের সকলেরই বয়স সত্তরের উপরে। বড় ছেলে কালীকান্ত পৌঁছেছেন ৯৬-এ। মাঝিয়াশ্বরী অবশ্য এখন আর ঠিক মতো চলাফেরাও করতে পারেন না। কিন্তু ভোট দেওয়ার ব্যাপারে তাঁকে আটকানো কঠিন।

আরও পড়ুন: জন্ম ১৯০০ সালে, বয়স ১২৪! অবাক করবে বিশ্বের প্রাচীনতম মানুষের রোজের জীবন

শুক্রবার নির্বাচন কমিশনের নয়া সুবিধার সুযোগ নিয়েই নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করলেন মা ও ছেলে। রোদের মধ্য়ে বুথে গিয়ে নয়, বাড়িতে বসেই শান্তিপূর্ণ ভাবে নিজেদের ভোটটি দিয়েছেন মাঝিয়াশ্বরী ও তাঁর পুত্র কালীকান্ত। নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুসারে, ৮৫ বছরের বেশি বয়সী সকল বৃদ্ধ-বৃদ্ধাই বাড়িতে বসেই ভোট দিতে পারেন। এত বছর পর্যন্ত অবশ্য বুথে গিয়েই ভোট দিয়েছেন তিনি। ধূপগুড়ির যে এলাকায় মাঝিয়াশ্বরী থাকেন, সেই এলাকায় মোটামুটি শান্তিপূর্ণ ভোটই হয়ে এসেছে এতদিন। কোনওদিনও কোনও ঝুটঝামেলা দেখা যায়নি। যদিও বৃদ্ধার নাতির দাবি, তাঁর ঠাকুমা বুথে গিয়ে ভোট দিতে পারলেই আরও বেশি খুশি হতেন। তবে দুর্বল স্বর ও শীর্ণ ভঙ্গিতে বৃদ্ধা জানালেন, খুশি হয়েছেন তিনি ভোট দিয়ে। জানালেন, তাঁদের সময় ভোটে এমন মারামারির রেওয়াজ ছিল না।

তবে বয়স বড় বালাই। শরীর সঙ্গ ছাড়ছে আস্তে আস্তে। খাতায় কলমে অবশ্য মা ছেলের বয়স একই। আগেকার দিনে যেমন ভুলভ্রান্তি হত আর কি! তবে পরিবারের লোকজন জানালেন, বয়স ১১৭ বছর পেরিয়েছে বৃদ্ধার। ইতিমধ্যেই নাতি-পুতিদের বিয়ে দেখেছেন মাঝিয়াশ্বরী। দেখেছেন দেশের আঠোরোটি লোকসভার ভোট। অংশ নিয়েছেন সেই সব ভোটে।

আরও পড়ুন: দেশের মহিলারা বাদ! কেমন ছিল ১৯৫২ সালের প্রথম লোকসভা নির্বাচন?

স্বাধীন ভারতে প্রথম লোকসভার ভোটটি হয়েছিল ১৯৫১ থেকে ১৯৫২ সালের মাঝামাঝি। বয়সের হিসেব কষলে দেখা যাবে, তখন মাঝিয়াশ্বরী চল্লিশোর্ধ। সেই থেকেই সবকটি ভোটে নিজের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করে এসেছেন। তখনকার ভোটের থেকে অনেকাংশে বদলে গিয়েছে ভোটের ধরণ। বদলেছে রাজনীতি। পর পর দু'টি ভোটে জিতে ভারতের মসনদে রয়েছে বিজেপি সরকার। তৃতীয়বারেও কি জয় হবে মোদি সরকারেরই। নাকি শতায়ু মাঝিয়াশ্বরীর ভোটে আসবে বদলে যাবে দেশের ক্ষমতার মুখ। সেই জবাব মিলতে মিলতে অবশ্য আগামী ৪ জুন।

 

More Articles