ফের ইডি-র তলব, এবার কোন ঘটনায় বিপাকে মহুয়া?

Mohua Moitra: আগামী ১১ মার্চ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়েছে। যতদূর জানা যাচ্ছে, বিদেশি মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘনের একটি মামলায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চলেছেন ইডি অফিসারেরা।

'ঘুষের বিনিময়ে প্রশ্ন' মামলায় ইতিমধ্যেই সাংসদ পদ থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন কৃষ্ণনগরের প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। তবে তার পরেও মিলল না রেহাই। আরও একবার বিপাকের মুখে মহুয়া। ফের বহিষ্কৃত সাংসদকে সমন পাঠাল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট (ইডি)। আগামী ১১ মার্চ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়েছে। যতদূর জানা যাচ্ছে, বিদেশি মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘনের একটি মামলায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চলেছেন ইডি অফিসারেরা।

ঘুষের বিনিময়ে প্রশ্ন মামলায় ফেঁসে সাংসদ পদ হারিয়েছেন মহুয়া, খুব বেশিদিন হয়নি। দুবাইয়ের ব্য়বসায়ী বন্ধু দর্শন হিরনন্দানি থেকে টাকা আদানির বিরুদ্ধে লোকসভায় প্রশ্ন করার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। সেই মামলায় জল গড়িয়েছিল অনেক দূর। সংসদীয় ই-মেল অ্যাকাউন্ট ও পাসওয়ার্ড অপব্যবহারেরও অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। আর এই সবের ফলাফল হিসেবেই গত বছরের ডিসেম্বরে লোকসভা থেকে বহিষ্কৃত হন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র।

এরই মধ্যে দিন কয়েক আগেই হিরানন্দানি গোষ্ঠীর চারটি কার্যালয়ে অভিযান চালায় ইডি। রিয়েল এস্টেট ডেভলপার হিরানন্দানি গ্রুপের তিনটি মুম্বই অফিস ও একটি পানভেল অফিসে চলে তল্লাশি। জানা গিয়েছিল, ফরেন এক্সচেঞ্জ ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট (FEMA)-এর আওতায় বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলা হয়েছে হিরানন্দানি গ্রুপের বিরুদ্ধে। তবে এই প্রথম নয়, ২০২২ সালেও হিরানন্দানি গ্রুপের প্রায় ২৫টি অফিসে তল্লাশি চালিয়েছিল আয়কর দফতর।

আরও পড়ুন: এবার হিরানন্দানির অফিসে ইডি! মহুয়া মৈত্রকেই ঘুরপথে শিক্ষা দিতে চাইছে বিজেপি?

হিরানন্দানির অফিসে ইডি-র অভিযানের পর থেকেই জল্পনা শুরু হয়েছিল, এবার কি বিদেশি মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘনের মামলায় নাম জড়াতে চলেছে মহুয়া মৈত্রেরও। আর হলও ঠিক তেমনটাই। এবার সেই মামলাতেই ইডি ডেকে পাঠাল বহিষ্কৃত সাংসদকে। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি দিল্লির দফতরে ইডি ডেকে পাঠিয়েছিল মহুয়াকে। যতদূর জানা যায়, বিদেশি মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘনের মামলাতেই তাঁকে ডেকে পাঠানো হয় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। সে সময় হাজিরা এড়ান মহুয়া। বরং তিন সপ্তাহের জন্য সময় চেয়েছিলেন তিনি। ইডি সূত্রে খবর, বিদেশি মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইনে মহুয়ার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। অফিসারদের নজরে বিদেশি মুদ্রার লেনদেনের কয়েকটি ঘটনা রয়েছে।'

'ঘুষের বিনিময়ে প্রশ্ন' কাণ্ডে ইতিমধ্যেই যথেষ্ট হেনস্থার মুখে পড়েছেন মহুয়া। সেই মামলার তদন্তভার রয়েছে সিবিআইয়ের হাতে। প্রাথমিক তদন্ত অবশ্য করেছিল সংসদীয় কমিটিই। তাদের তদন্ত-রিপোর্টের ভিত্তিতেই পদ খোয়াতে হয়েছিল মহুয়াকে। কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদের বহিষ্কারের সুপারিশ এসেছিল লোকসভার এথিক্স কমিটির কাছ থেকেই। তারা মহুয়ার বিরুদ্ধে ৪৯৫ পৃষ্ঠার রিপোর্ট জমা দেয়। তৃণমূল ও কংগ্রেস সেই রিপোর্ট পড়ে দেখার সময় চাইলেও তা দেননি স্পিকার। রাতারাতি বহিষ্কার করা হয় মহুয়াকে।

এখানেই শেষ নয়। ঘরে-বাইরে সব জায়গাতেই যেন ধাক্কা খাচ্ছেন মহুয়া। বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে এবং আইনজীবী জয় দেহাদ্রাই, যাঁরা প্রথম মহুয়ার বিরুদ্ধে 'ঘুষ নিয়ে প্রশ্ন' করার মামলা দায়ের করেন, তাঁরা যাতে মহুয়ার বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনও 'ভুয়ো ও মানহানিকর' বিষয়বস্তু পোস্ট বা প্রচার না করেন, তা নিশ্চিত করতে দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন মহুয়া। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ হয়ে যায় দিল্লির উচ্চ আদালতে।

আরও পড়ুন:বহিষ্কার হওয়ার পরেও কেন সরকারি বাংলো ছাড়ছেন না মহুয়া মৈত্র?

তার মধ্যেই ফের ইডি-র সমন এসে পৌঁছলো মহুয়ার হাতে। লোকসভা ভোটের আগে আগে বিজেপির হাতে নয়া অস্ত্র তুলে দেবে না তো মহুয়ার নয়া মামলা। এমনিতেই নানা দিক থেকে চাপে তৃণমূল সরকার। সন্দেশখালি থেকে শুরু করে ভোটের আগে এক এক করে প্রভাবশালী নেতা, মন্ত্রীর পদত্যাগ থেকে দলত্যাগ, সে সময় মহুয়া মৈত্রকে নতুন মামলায় নতুন করে ইডি-র ডাক কতটা বিপাকে ফেলবে তৃণমূল নেতৃত্বকে? সেই উত্তরটা অবশ্য মিলবে ১১ মার্চের পরেই।

More Articles