পাকিস্তানের নির্বাচনে এই প্রথম লড়বেন হিন্দু মহিলা প্রার্থী! কে এই সাভেরা প্রকাশ?

Pakistan general elections Saveera Parkash : সাভেরা প্রকাশ পেশায় চিকিৎসক। পিপিপি-র সঙ্গে ৩৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে সম্পর্ক রয়েছে তাঁর পরিবারের।

পাকিস্তানের রাজনৈতিক ইতিহাসে এই প্রথম এমন এক ঘটনা ঘটতে চলেছে যা বিশ্বের রাজনৈতিক ও সামাজিক- দুই প্রেক্ষাপটেই গুরুত্বপূর্ণ। পাকিস্তানের সামাজিক পরিস্থিতিতে মহিলাদের অবস্থান, সংখ্যালঘু অবস্থানের মতো প্রশ্নকে নাড়িয়েছে এই ঘটনা। পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিম প্রদেশ, খাইবার পাখতুনখোয়া থেকে এই প্রথম একজন হিন্দু মহিলা আগামী বছরের সাধারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চলেছেন।

সাভেরা প্রকাশ পেশায় একজন চিকিত্সক। সাভেরার পরিবারের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক রয়েছে পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি)। PK-25 এর সাধারণ আসনের জন্য মনোনয়ন জমা দিয়েছেন সাভেরা। তিনি খাইবার পাখতুনখাওয়ার বুনের জেলা থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। পিপিপি সমর্থন করলে সাভেরা হবেন তার নির্বাচনী এলাকা বুনের থেকে জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা প্রথম মহিলা।

সাভেরা প্রকাশ আসলে কে?

সাভেরা প্রকাশ পেশায় চিকিৎসক। পিপিপি-র সঙ্গে ৩৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে সম্পর্ক রয়েছে তাঁর পরিবারের। বিশেষ করে তাঁর বাবা, অবসরপ্রাপ্ত ডাক্তার ওম প্রকাশ পাকিস্তান পিপলস পার্টির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। ২০২২ সালে অ্যাবোটাবাদ ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস উত্তীর্ণ হন সাভেরা। বর্তমানে বুনেরে পিপিপি মহিলা শাখার সাধারণ সম্পাদকের পদে রয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন- কলকাতার প্রেমিক, পাকিস্তানের প্রেমিকা! ভালবাসা জুড়ে দিল দুই দেশকে

পাকিস্তানের গণমাধ্যম ডনের একটি সাক্ষাত্কারে, সাভেরা জানাচ্ছেন, বাবার পদাঙ্কই অনুসরণ করতে চান তিনি। সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর সেবা করাই লক্ষ্য আগামীতে।

 

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, পাকিস্তানে মহিলাদের অধিকারের পক্ষে সওয়াল করার কথা জোর গলায় বলেছেন সাভেরা। মহিলাদের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য, পাক মহিলাদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করছেন সাভেরা। সাভেরা বিশেষ করে সেসব ক্ষেত্রে কাজ করতে চান যেখানে ঐতিহাসিকভাবে মহিলাদের অধিকারকে দমিয়ে রাখা হয়েছে এবং সমানাধিকারকে উপেক্ষা করা হয়েছে।

নিজে পেশায় চিকিৎসক হওয়াতে সরকারচালিত হাসপাতালের অব্যবস্থাপনার কথাও তুলে ধরেছেন সাভেরা। সাধারণ মানুষের ন্যায্য পাওনা মানুষকে পাইয়ে দিতে পারার অন্তর্নিহিত আকাঙ্ক্ষাই তাঁকে নির্বাচনের পথে নিয়ে এসেছে।

উল্লেখ্য, বুনেরের সোশ্যাল মিডিয়া প্রভাবশালী ইমরান নোশাদ খান সাভেরার নির্বাচনে প্রার্থী হওয়াকে প্রকাশ্যে সমর্থন করেছেন। নোশাদ খান মনে করছেন, পাকিস্তানে পিতৃতন্ত্রের স্থায়ী স্টিরিওটাইপ ভাঙতে সাভেরার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন, আগামীতেও করবেন। বুনের পাকিস্তানের সঙ্গে জুড়ে গিয়েছে ৫৫ বছর আগে। এই দীর্ঘ সময় পেরিয়ে, একজন মহিলা নেতৃত্ব দিতে এবং সংসদীয় রাজনীতিতে আসছেন, বিষয়টি নেহাত ছোট নয়। পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন অনুসারে, সাধারণ আসনে মহিলা প্রার্থীদের ৫% অন্তর্ভুক্তি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

More Articles