ঝাঁ চকচকে হবে ধ্বংসস্তূপ! গাজাকে নিয়ে যা পরিকল্পনা ডোনাল্ড ট্রাম্পের

Donald Trump on Gaza: একটা জাতিকে বাস্তুচ্যুত করে সেখানে সর্বাধুনিক শহর গড়ে তোলার এই পরিকল্পনা বহুদিনের। প্রাথমিকভাবে, এই পরিকল্পনা ছিল ইজরায়েলের।

২০২৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কেনেডি স্কুল অফ গভর্নমেন্টের মিডল ইস্ট ইনিশিয়েটিভের ফ্যাকাল্টি চেয়ার প্রফেসর তারেক মাসউদ সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন জ্যারেড কোরি কুশনারের। জ্যারেড কোরি কুশনার একজন আমেরিকান ব্যবসায়ী এবং বিনিয়োগকারী। সম্পর্কের দিক থেকে তিনি  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের জামাতা। ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত তিনি শ্বশুরের প্রথম প্রশাসনে একজন সিনিয়র উপদেষ্টা হিসাবে কাজ করেছেন। কুশনার তাঁর সাক্ষাৎকারে বলেন, গাজার "সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চল" "অত্যন্ত মূল্যবান" এবং সম্ভাবনাময়। তাঁর পরামর্শ, ইজরায়েলের উচিত অঞ্চলটি 'পরিষ্কার' করার সময় বেসামরিক জনগণকে সরিয়ে নেওয়া। এখানেই থেমে থাকেননি কুশনার। তিনি বলেছেন, "যদি আমি ইজরায়েলের দায়িত্বে থাকতাম, তবে আমার প্রথম অগ্রাধিকার হতো রাফাহ (প্যালেস্টাইন) শহর থেকে বেসামরিক লোকদের সরিয়ে নেওয়া। কূটনৈতিক উপায়ে সম্ভব হলে আমি তাঁদের মিশরে পাঠানোর চেষ্টা করতাম। এর পাশাপাশি, আমি নেগেভ মরুভূমিতে (দক্ষিণ ইজরায়েল) কিছু একটা নির্মাণ করতাম এবং মানুষকে সেখানে স্থানান্তরিত করতাম। আমি মনে করি এটি একটি ভালো বিকল্প, যাতে গাজা অঞ্চল পরিষ্কার করার কাজ সম্পন্ন করা যায়।" প্যালেস্টাইন স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে থাকা উচিত কিনা জানতে চাইলে কুশনার বলেন, এটি "একটি অত্যন্ত খারাপ ধারণা," যা "মূলত সন্ত্রাসকে পুরস্কৃত করারই শামিল।"

ওই বছরই, অর্থাৎ ২০২৪ সালের ৩ মে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দফতর অনলাইনে একটি নথি প্রকাশ করে। সেই নথিতে গাজার অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করার পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়েছিল। পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে গাজাকে একেবারে আধুনিক শহর হিসেবে গড়ে তোলা  হবে। পাশাপাশি গাজাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্পবন্দরের চেহারা দেওয়া হবে, যা গাজার পণ্য রপ্তানির পাশাপাশি সৌদির তেল এবং উপসাগরীয় অঞ্চলের অন্যান্য কাঁচামাল পরিবহণের জন্য ব্যবহার করা হবে। এছাড়া, গাজার উত্তরে নব-আবিষ্কৃত গ্যাসক্ষেত্রগুলির সদ্ব্যবহার করে নতুন শিল্প গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা হয়েছে। পরিকল্পনার অন্যতম একটি প্রস্তাব হলো, গাজাকে বৈদ্যুতিক গাড়ি উৎপাদনের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা। এটি বাস্তবায়িত হলে গাজা, এল-আরিশ এবং সদরোটকে সস্তা চিনা উৎপাদনের প্রতিযোগী হিসেবে গড়ে তোলার সম্ভাবনা তৈরি হবে। এই নথিতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে সম্ভাব্য একটি আধুনিক শহরের ছবিও যুক্ত করা হয়েছে।

আরও পড়ুন- ফিরিয়েছিলেন ইজরায়েলের প্রেসিডেন্ট হওয়ার প্রস্তাব, আইনস্টাইনের যে সিদ্ধান্ত ঘিরে বিতর্কের শেষ নেই আজও

৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফররত ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে সঙ্গে নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেন, যুক্তরাষ্ট্র গাজার ‘নিয়ন্ত্রণ নেবে’ এবং এর ওপর তার ‘মালিকানা’ প্রতিষ্ঠা করবে। সব প্যালেস্তিনিয়দের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার পর এই ভূখণ্ডের ওপর তিনি তাঁর দেশের ‘দীর্ঘমেয়াদি’ মালিকানা প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেন। ট্রাম্প বলেন, "আমরা গাজা উপত্যকার দখল নেব এবং সেখান থেকে সব বিপজ্জনক অবিস্ফোরিত বোমা ও অন্যান্য অস্ত্রশস্ত্র ধ্বংস করার দায়দায়িত্ব নেব।" তিনি আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্র এই উপত্যকার বিধ্বস্ত বাড়িগুলি ‘সমান’ করবে, সেখানে ‘অর্থনৈতিক উন্নয়নের কাজ' চালাবে, প্রচুর চাকরির ব্যবস্থা করবে এবং বিশ্ববাসীর জন্য বাড়ি তৈরি করবে। গাজাকে ‘মৃত্যু ও ধ্বংসের প্রতীক’ বলে উল্লেখ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। গাজার বাসিন্দাদের অন্য কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই বলেই তাঁরা সেখানে ফিরতে চান, এমনটা দাবি করেন তিনি। ট্রাম্প বলেন, ‘মানবিক হৃদয়’ ও ‘ধনসম্পদ’ নিয়ে প্রতিবেশী দেশগুলোতে গাজায় বসবাসকারী ১৮ লাখ প্যালেস্তিনিয়র চলে যাওয়া উচিত। ট্রাম্প বলেন, "আমি একটি দীর্ঘমেয়াদি মালিকানা দেখতে পাচ্ছি, যা মধ্যপ্রাচ্যের এই অংশে দারুণ স্থিতিশীলতা নিয়ে আসবে। আমি বেশ কয়েক মাস ধরে খুব নিবিড়ভাবে এই নিয়ে গবেষণা করেছি।" তবে তিনি শুধু গাজার মালিকানাস্বত্ব দখলে নেওয়ার কথা বলেই থেমে যাননি, গ্রিনল্যান্ড ও পানামার ভূখণ্ডের প্রতি তাঁর প্রবল আগ্রহের কথাও বিশ্ববাসীকে জানিয়ে রেখেছেন কোনও আন্তর্জাতিক নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই।

জামাতা কুশনার, শ্বশুর ট্রাম্প এবং ধর্ম ভাই নেতানিয়াহু হঠাৎই কথাগুলি বলেননি। একটা জাতিকে বাস্তুচ্যুত করে সেখানে সর্বাধুনিক শহর গড়ে তোলার এই পরিকল্পনা বহুদিনের। প্রাথমিকভাবে, এই পরিকল্পনা ছিল ইজরায়েলের। নেতানিয়াহুর গাজার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কেন্দ্রে ছিল এই অঞ্চলের ঐতিহাসিক বাণিজ্যিক গুরুত্বর ভাবনা। এটি পূর্ব-পশ্চিম বাণিজ্য পথের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল, যা বাগদাদ-মিশর এবং ইয়েমেন-ইউরোপ বাণিজ্য রুটের সংযোগস্থলে অবস্থিত। নেতানিয়াহুর গাজা পুনর্গঠন পরিকল্পনায় ইজরায়েলের কর্তৃত্বের কথা থাকলেও প্যালেস্তিনিয়দের সম্পূর্ণ উৎখাত করার কথা বলা হয়নি। বরং বলা হয়েছিল, গাজা পুনর্গঠন ও অর্থনৈতিক পুনর্নির্মাণের দ্বিতীয় ধাপে ইজরায়েল ধীরে ধীরে তার নিরাপত্তা দায়িত্ব কমিয়ে আনবে এবং আরব জোট 'গাজা পুনর্বাসন কর্তৃপক্ষ' নামে একটি সংস্থা গঠন করবে। এই সংস্থা গাজার পুনর্গঠন এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নেবে। পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে 'মার্শাল প্ল্যান' বাস্তবায়ন ও একটি ডি-র‍্যাডিক্যালাইজেশন প্রোগ্রাম পরিচালনা করা হবে। কিন্তু ইজরায়েল ৭ অক্টোবর, ২০২৩-এ হামাস-নেতৃত্বাধীন হামলার পর উপকূলীয় গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করার পরপরই এক অন্য পরিকল্পনা তৈরির কাজ শুরু হয় আন্তর্জাতিক রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী সংস্থা ট্রাম্প অর্গানাইজেশনে। রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের পারিবারিক কোম্পানি এই ট্রাম্প অর্গানাইজেশন। রাষ্ট্রপতি ট্রাম্পের মেয়ে ইভানকা ট্রাম্পের স্বামী জারেড কুশনার গাজা পুনর্গঠনের নতুন পরিকল্পনার রচয়িতা। বিভিন্ন সময়ে জামাতা কুশনারকে অসাধারণ সম্পদ এবং বিশ্বস্ত উপদেষ্টা হিসেবে বর্ণনা করেছেন ট্রাম্প। বিশেষ মধ্যপ্রাচ্য দূত হিসেবে 'আব্রাহাম চুক্তি' বাস্তবায়নের মাধ্যমে ইজরায়েল এবং বেশ কয়েকটি আরব দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন কুশনার। তবে ইজরায়েলের সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করাতেই সীমাবদ্ধ ছিল না জারেডের ভূমিকা। এর পেছনে ব্যবসায়িক স্বার্থও জড়িত ছিল।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, তিনি মধ্যপ্রাচ্যের অনেক শাসকের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং আজও তা বজায় রেখেছেন। এই সম্পর্কই তাঁকে সম্পত্তি উন্নয়নের ধারণা দিতে অনুপ্রাণিত করে— বিশেষত গাজায় হোটেল নির্মাণের পরিকল্পনা। এরপর তিনি গাজার বিকল্প হিসেবে মধ্যপ্রাচ্যে 'রিভিয়েরা' নামটি পরিচিত করানোর চেষ্টা করেন। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য, ২০২১ সালে জারেড একটি ব্যক্তিগত সংস্থা 'অ্যাফিনিটি পার্টনার্স' গঠন করেন, যাতে বিশাল অঙ্কের তহবিল সংগ্রহ করা যায়। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট না থাকলেও গাজায় সম্পত্তি নির্মাণের আকাঙ্খা তখন আর কেবল কথার কথা ছিল না। ২০২৫ সালে ট্রাম্প আবার ক্ষমতায় ফিরে আসবেন, এই বিশ্বাস থেকেই ২০২৪ সালে জারেড ইজরায়েলকে গাজার প্যালেস্তিনিয়দের সরিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে গাজাকে একটি বিশাল ব্যবসায়িক কেন্দ্রে পরিণত করার পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করার কথা বলেছিলেন। তবে জারেডের পরিকল্পনা শুধু গাজাবাসীদের সরিয়ে দেওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। তিনি এমনকী কোথায় তাদের স্থানান্তরিত করা হবে, সেটিও পরিকল্পনা করেছেন। তিনি দক্ষিণ ইজরায়েলের নেগেভ মরুভূমিতে তাদের স্থানান্তরের পরামর্শ দেন, কারণ তাঁর মতে, সেখানে প্যালেস্তিনিয়রা শান্তিতে ও স্বাচ্ছন্দ্যে বসবাস করতে পারবে। পূর্ব পরিকল্পনা মতোই ২০২৫ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার রাষ্ট্রপতি পদে আসীন হবার পরেই  গাজাবাসীদের স্থানান্তরের এই পরিকল্পনাটি আরও ব্যাপকভাবে প্রচারিত হতে শুরু করেছে।

আরও পড়ুন- ৪৬ হাজার মৃত, অনাহারে সাড়ে তিন লাখ! যুদ্ধের ১৫ মাসে যা যা ক্ষতি হয়েছে গাজার

এখন, ইজরাযেল অধিকৃত ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক ধ্বংস করতে ব্যস্ত। আমেরিকার রাজনৈতিক ও গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের প্রবল সমর্থনপুষ্ট নেতানিয়াহু এবং তাঁর দুর্নীতিগ্রস্ত সঙ্গীরা এই এলাকাকে ধুলো এবং স্মৃতিতে পরিণত করার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ১৯৪৮ সাল থেকেই এটি ছিল চূড়ান্ত লক্ষ্য। আর আমেরিকার একের পর এক ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ইজরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ এবং কূটনৈতিক সুরক্ষা দিয়ে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে সাহায্য করেছে— গাজা ও ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক থেকে প্যালেস্তিনিয়দের চিরতরে বিতাড়িত করার জন্য।প্রায় ৮ দশক ধরে দেখে আসা গাজা এবং ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক থেকে প্যালেস্তিনিয়দের জাতিগতভাবে উৎখাত করার স্বপ্নে নবতম সংযোজন সেখানে সাগর তীরবর্তী বিলাসবহুল রিসর্ট তৈরি করা। একটি জাতিকে নির্মূলের এই স্বপ্ন ভাগ করে নিয়েছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সদ্য প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিমি কার্টার, সদ্য প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন, তাঁর প্রতারণাপূর্ণ পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এবং ডেমোক্র্যাটিক পার্টির 'প্রভাবশালী ব্যক্তিরা', যারা এক ভুয়ো 'দুই-রাষ্ট্র সমাধানে' আগ্রহ দেখানোর ভান করতেন অথচ ইজরায়েলকে বিপুল অস্ত্র সরবরাহ করতেন এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব বারবার প্রত্যাখ্যান করতেন। বাইডেন ও ব্লিঙ্কেন, নেতানিয়াহুর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন বাধ্য পুতুলের মতো। যখন ইজরায়েল নিরস্ত্র প্যালেস্তিনিয়দের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে গাজাকে বসবাসের অযোগ্য ধ্বংসস্তূপে পরিণত করছিল, কথা ও কাজে, ব্লিঙ্কেন ও বাইডেন ট্রাম্পের বিকৃত পরিকল্পনার মঞ্চ প্রস্তুত করেছেন। একমাত্র পার্থক্য হলো, বর্তমান ইজরায়েল-উপাসক হোয়াইট হাউসের বাসিন্দা কিছুটা পরিশীলিত ভাষার আড়ালে লুকানো বিষয়গুলো সরাসরি প্রকাশ করে ফেলেছেন। ইজরায়েল-আমেরিকা জোট যা করেছে এবং করতে চায় তা জাতিগত নিধনের আওতায় পড়ে— এটি শুধু বক্তৃতার হাতিয়ার নয়, এটি আন্তর্জাতিক আইনের প্রতিষ্ঠিত সত্য।

ট্রাম্পের জাতিগত নিধনমুখী বক্তব্য প্রকাশ করে দিয়েছে যে, তথাকথিত যুদ্ধবিরতি চুক্তির দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপ, যা গাজার পুনর্গঠনের শর্ত নির্ধারণ করে, সম্পূর্ণ ভণ্ডামি। ট্রাম্প ও ইজরায়েলের বর্ণবাদী দক্ষিণপন্থী মন্ত্রিসভা নিশ্চিত করবে যে গাজা কখনও পুনর্গঠিত হবে না। তারা একসঙ্গে কাজ করে এমন একটা পরিস্থিতি রাখবে যে প্যালেস্তিনিয়রা প্রতিকূল পরিবেশ, দারিদ্র্য, রোগব্যাধি ও দুর্দশার মাঝে অব্যাহতভাবে দুর্বল থেকে যাবে। কোনও বাড়ি নেই, কাজ নেই, স্কুল নেই, হাসপাতাল নেই, গ্রন্থাগার নেই, খেলার মাঠ নেই- এই ভয়ঙ্কর বাস্তবতায়, অনেক প্যালেস্তিনিয় নাগরিক একমাত্র বিকল্প ভাবতে শুরু করবে যে গাজা এবং ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক ছেড়ে নতুন জীবনের সন্ধান করা, যেখানে বাস্তবসম্মত সম্ভাবনা ও প্রতিশ্রুতি থাকবে। এটাই ট্রাম্প, কুশনার, নেতানিয়াহুর বর্তমান পরিকল্পনার ভয়ঙ্কর দিক—প্যালেস্তিনিয়দের বাধ্য করা, গাজায় থেকে গিয়ে হতাশা ও নিরাশার শিকার হও, অথবা অনিচ্ছাসত্ত্বেও অন্য কোথাও আশ্রয় খুঁজতে যাও, যেমন আগেও অনেকে করেছে। ট্রাম্প, কুশনার, নেতানিয়াহুরা জানেন, সময় এবং অবিরাম দখলদারিত্ব তাদের পক্ষেই রয়েছে। কেননা প্যালেস্টাইনের আত্মরক্ষার লড়াইকে সন্ত্রাসবাদী হামলা আখ্যা দিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের নিন্দা ও পরিত্যাগ করেছে এবং হিংস্র নেকড়ে-শাবকদের হাতে ছেড়ে দিয়েছে।

More Articles