কোথা থেকে এল ভয়াবহ নিপা ভাইরাস? জেনে নিন
কোথা থেকে এল ভয়াবহ নিপা ভাইরাস? জেনে নিন। কেরলে জারি হয়েছে সতর্কতা, কী রোগের লক্ষণ? বিস্তারিত পড়ুন।
ঘোষণা করা হয়ে গেছে কন্টেনমেন্ট জোন। বিপদ-মাত্রার ভিত্তিতে ভাগ করা হচ্ছে এলাকা। বুধবার কেরালায় নিপা ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৫। বিপদ তালিকায় প্রায় ৭০০ জন ব্যক্তি। কেরালার স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ জানিয়েছেন, এঁদের মধ্যে ৭৭ জন ব্যক্তি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছেন।
এই পরিস্থিতিতে ব্যাপক সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে সরকারের তরফেও। প্রায় কোভিডের মতোই একই ধাঁচে চলছে বিধিনিষেধ।
১. ঝুঁকিপূর্ণ নিপা আক্রান্ত ব্যক্তিদের বাড়ির বাইরে বেরোতে নিষেধ করা হয়েছে।
২. ৯ টি পঞ্চায়েতের মোট ৫৮ টি ওয়ার্ড কন্টেনমেন্ট জোন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। সেখানে দোকানপাট খোলা রাখার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
৩. অনুষ্ঠান, সমাবেশে জমায়েতের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
৪. জাতীয় সড়ক দিয়ে চলাচলকারী বাস এবং অন্যান্য গণপরিবহন থামবে না কন্টেনমেন্ট জোনে।
৫.কোঝিকোড়ে ঘোষণা হয়েছে দুদিনের ছুটি।
আরও পড়ুন-করোনার পরে কি নিপা! হু হু করে সংক্রমণে বাড়ছে উদ্বেগ, কীভাবে সতর্কতা?
এর আগে ২০১৮,২০১৯ এবং ২০২১ সালে নিপা ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়েছিল কেরালায়। এর মধ্যে ২০১৮ সালে মৃত্যুর হার ছিল অত্যন্ত বেশি, ১৮ জন আক্রান্তের মধ্যে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এইবছর যে নিপা ভাইরাসের প্রকোপ দেখা যাচ্ছে তা বাংলাদেশি নিপা ভাইরাস। যা সংক্রমণের দিক থেকে কিছুটা কম ক্ষতিকর হলেও, এই জাতীয় নিপা ভাইরাসের আক্রমণে মৃত্যু হার খুব বেশি। এই ভাইরাস সাধারণত পশুপাখি বা সংক্রমিত খাদ্যের মাধ্যমে কোনও ব্যক্তির দেহে প্রবেশ করে। এরপর এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তির দেহে দ্রুত সংক্রমণ ছড়ায়। পার্শ্ববর্তী রাজ্য তামিলনাড়ু কেরালা থেকে আগত ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা বাধ্যতামূলক ঘোষণা করেছে। কেরালার এই ঘটনার ফলে সতর্ক হয়েছে পার্শ্ববর্তী রাজ্য কর্ণাটকও। কেরালা থেকে আসা দ্রব্য, ফলমূল সবই নজরের মধ্যে আছে কর্ণাটক পুলিশের। রাজ্যের সীমান্তে জারি হয়েছে সতর্কতা। WHO এবং ICMR এর মত অনুযায়ী গোটা কেরালা রাজ্যই বিপদসীমায় অবস্থান করছে।
সংক্রমণের লক্ষণ:
দেখে নেওয়া যাক নিপা ভাইরাস সংক্রমণের লক্ষণগুলি কী কী।
১.জ্বর
২.মাথা যন্ত্রণা
৩. সর্দি-কাশি
৪. শ্বাসকষ্ট
৫.বমি
আরও পড়ুন- হুহু করে বাড়ছে ডেঙ্গি ম্যালেরিয়া, কী ভাবে সতর্ক হবেন?
এমনকি সংক্রমণ বাড়াবাড়ি রকমের হলে ব্রেন-ডেথের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এই নিপা ভাইরাসের আক্রমণ প্রথম দেখা গেছিল ১৯৯৯ সালে মালেশিয়া এবং সিঙ্গাপুরের শূকর প্রতিপালনকারীদের মধ্যে। সেখান থেকেই এই ভাইরাসের ভয়াবহতা টের পাওয়া গেছিল। এরপরে বিভিন্ন সময়ে ভারতেও এই ভাইরাসের আক্রমণ দেখা যায়। বাদ যায়নি বাংলাদেশও। পশ্চিমবঙ্গ এবং কেরালায় বেশ কয়েকবার নিপা ভাইরাসের আক্রমণ দেখা গেছে। তার মধ্যে মড়কের আকার ধারণ করেছিল শিলিগুড়িতে ২০০১ সালে, নদিয়ায় ২০০৭ সালে এবং কেরালায় ২০১৮ সালে। কত দ্রুত মুক্তি মিলবে এই জীবন-কাড়া ভাইরাসের হাত থেকে? সেদিকে তাকিয়ে দেশবাসী।