অনেক সয়েছি আর না! কেন রাষ্ট্রনেতা বলসোনারোকে ছুড়ে ফেলে দিল ব্রাজিলের জনতা

Lula De Silva wins in Brazil: ব্রাজিলের বর্তমান প্রেসিডেন্ট বলসোনারোকে হারিয়ে লুলা হতে চলেছেন এই দেশের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট।

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে হলো হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। তবে শেষ হাসি হাসলেন ব্রাজিলের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বামপন্থী প্রার্থী লুইস ইনাসিও লুলা দা সিলভা। ব্রাজিলের বর্তমান প্রেসিডেন্ট বলসোনারোকে হারিয়ে তিনি হতে চলেছেন এই দেশের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট। বিবিসি-র দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শেষ ধাপের ভোট গণনা-শেষে লুলা দা সিলভা পেয়েছেন ৫০.৮ শতাংশ ভোট আর অন্যদিকে বলসোনারো পেয়েছেন ৪৯.২ শতাংশ ভোট। এর আগে ২০০৩ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট ছিলেন লুলা। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও নির্বাচনে জিতে তিনি রাজনৈতিকভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় করেছিলেন।

আর জয়লাভ করেই দেশের শান্তি এবং ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন লুলা। ব্রাজিলে গতকাল রোববার দেওয়া বক্তব্যে তিনি আমাজনকে বাঁচিয়ে রাখার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। ৭৭ বছর বয়সি বামপন্থী এই নেতা নিজের বিজয়ী ভাষণে বলছেন, "আমি আজ বিশ্বকে বলতে চাই, ব্রাজিল ফিরে এসেছে। জলবায়ু-সংকটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ব্রাজিল তার অবস্থান ফিরিয়ে নিতে প্রস্তুত রয়েছে।" বিশেষত, আমাজন বনরক্ষায় ব্রাজিল কাজ করবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। শুধু ভোটার নয়, ব্রাজিলের ২১ কোটি ৫০ লক্ষ মানুষের জন্য কাজ করবেন বলেন লুলা। ব্রাজিলজুড়ে বর্তমানে লুলা সমর্থকদের উল্লাস। সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী জানুয়ারিতে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ব্রাজিলের রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব নেবেন লুলা।

আরও পড়ুন: ব্রিটেনের ইতিহাসে প্রথমবার! মাত্র দু’মাসের মধ্যে কেন তিনবার বদল হল প্রধানমন্ত্রীর

'মিনি ট্রাম্প' বলসোনারো
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন প্রসঙ্গে একটি মন্তব্য করেছিলেন, 'যখন একপক্ষ মনে করে যে নির্বাচনে মাত্র দু'টি ফল হতে পারে- তারা জিতবে আর হারলে নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে। তখন গণতন্ত্র টিকে থাকতে পারে না।' হয়তো সেই সময় প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যাপারে এই মন্তব্য করলেও, বাইডেনের এই মন্তব্য ব্রাজিলের জন্য একইরকমভাবে প্রাসঙ্গিক। তার কারণ, নিজের জয়ের ব্যাপারে কার্যত আত্মবিশ্বাসী ছিলেন বলসোনারো। তিনি ঘোষণা করে দিয়েছিলেন, চূড়ান্ত জয় তাঁরই হবে। আর কোনও ভাবে যদি তিনি জয় পেতে ব্যর্থ হন, তাহলে এর পিছনে দায়ী থাকবে ব্রাজিলের নির্বাচনী ব্যবস্থা এবং নির্বাচন কর্তৃপক্ষ। ঠিক যেরকম, যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের সময় করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

যদিও, ব্রাজিলে নির্বাচনের ফলাফল স্বচ্ছই হওয়ার কথা। এই দেশের ইলেকট্রনিক ভোটিং সিস্টেম নিয়ে খুব একটা বেশি সংশয় নেই। এই যন্ত্রের ফল বদলে ফেলা খুব একটা সহজ কাজ নয়। তাহলে, প্রতিপক্ষের থেকে কোন জায়গায় পিছিয়ে পড়লেন বলসোনারো? যেখানে তিনি বারংবার বলে এসেছিলেন, মতামত জরিপ ঠিক নয়, তিনিই জেতার পথে রয়েছেন, সেখানে কীভাবে বলসোনারো-কে হারিয়ে এগিয়ে গেলেন লুলা দ‍্য সিলভা?

২০১৮ সালে দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান এবং অপরাধ নির্মূল করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট পদে বসেছিলেন বলসোনারো। তবে তারপর সমর্থকদের কাছে টানার কৌশল গ্রহণ করেছিলেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ক্রমাগত অপব্যবহারের মতো বিষয়গুলি ব্রাজিলে নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়ে উঠেছিল বলসোনারোর সময়ে। তার পাশাপাশি বলসোনারোর ব্রাজিলের প্রায় ৭ লাখ মানুষ করোনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন। এই সংখ্যা একক দেশ হিসেবে বিশ্বে দ্বিতীয়। দীর্ঘদিন করোনাভাইরাসের ভয়াবহতাকে উপেক্ষা করেছেন তিনি। লকডাউন, টিকাকরণ, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক পরা, এসব কথা বিশ্বাস করেন না তিনি।

গত আট বছরে লাতিন আমেরিকার সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশটির জিডিপি প্রবৃদ্ধিও হয়েছে ঋণাত্মক। মানুষের মধ্যে দারিদ্রের হার বেড়েছে। বলসোনারো যদিও তাঁর শাসন আমলের একেবারে শেষ সময়ে এসে গরিব পরিবারগুলোর জন্য অর্থ-সহায়তার হাত বাড়িয়েছিলেন, তবে এতে প্রয়োজন পূরণ হয়নি। ভঙ্গুর অর্থনীতি, রফতানি-খাতে দুর্বলতা- ব্রাজিলের সামনে হয়ে উঠেছিল করোনা-পরবর্তী সময়ের বড় চ্যালেঞ্জ।

ব্রাজিল সরকারের হিসেব অনুযায়ী, ২০২২ সালে দেশের বাজেট-ঘাটতি ১,২২৫ কোটি মার্কিন ডলারে পৌঁছে যায়। এরপরে সরকারের পক্ষে সামাজিক কর্মসূচি নেওয়া কঠিন হয়ে পড়তে শুরু করে। ফলে বাড়তে থাকে গরিব মানুষের সংখ্যা। লুলা যেখানে ব্রাজিলের দারিদ্রকে দ্রুতগতিতে দমন করতে সক্ষম হয়েছিলেন, সেই নিরিখে ততটা সফলতা পাননি বলসোনারো। তাই বলসোনারো-র আমলকে অনেকেই 'সামাজিক পশ্চাৎপদতার আমল' হিসেবে চিহ্নিত করেন।

তবে বলসোনারোর সাম্রাজ্য পতনের সবচেয়ে বড় কারণটি ছিল আমাজনের ক্ষতিসাধন। লাতিন আমেরিকায় বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশটিতে আমাজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গোটা বিশ্বের পরিবেশ-রক্ষায় আমাজনের একটা বড় ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু, বলসোনারোর আমলে আমাজন উজাড় হওয়ার হার ৭০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। আমাজন রক্ষায় কোনও ব‍্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ ওঠে বলসোনারোর বিরুদ্ধে। এই একটি অভিযোগটিই হয়ে বলসোনারোর সাম্রাজ্যের কফিনের শেষ পেরেক।

বলসোনারোর উত্থান ও পতন
১৯৫৫ সালের ২১ মার্চ ব্রাজিলের সাও পাওলোর একটি শহরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন বলসোনারো। তাঁর বাবা ছিলেন একজন দন্ত-চিকিৎসক। ব্রাজিলিয়ান সেনাবাহিনী পরিচালিত স্কুলে পড়াশোনা করেন তিনি এবং ১৯৭৭ সালে আগুলহাস নিগ্রাস মিলিটারি একাডেমী থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর প্রায় ১৭ বছর সেনাবাহিনীতে কাজ করেছিলেন তিনি। তিনি ছত্রিসেনা হিসেবে কাজ করেছিলেন একটা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত। এরপর ১৯৮৬ সালে সেনাবাহিনীর বেতন ব্যবস্থা নিয়ে নিবন্ধ লিখে বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। ফলে, এই মাত্র দু'বছরের মধ্যে ১৯৮৮ সালে সেনাবাহিনী থেকে তাঁকে বিতাড়িত করা হয়। যদিও সহকর্মী এবং জনসাধারণের কাছে প্রশংসার পাত্র হয়ে উঠেছিলেন তিনি সেই সময় থেকেই।

সেই জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে ১৯৮৯ সালে রিও ডি জেনেইরো সিটি কাউন্সিলের নির্বাচনে জয়লাভ করেন বলসোনারো। দু'বছর পর ব্রাজিলের ফেডারেল চেম্বার অফ ডেপুটি-তে রিও ডি জেনেইরোর প্রতিনিধিত্ব করে একটি আসনে জেতেন তিনি। তখন থেকেই সামাজিক ইস্যুতে রক্ষণশীলদের পক্ষে বক্তব্যের জন্য খ্যাতি পেতে শুরু করেন তিনি। বিভিন্ন মন্তব্যের কারণে রাজনৈতিক অঙ্গনে তিনি বিশেষ পরিচিতি পান।

এরপর বিদেশি সম্পর্ক এবং জাতীয় প্রতিরক্ষা কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বলসোনারো। মানবাধিকার এবং সংখ্যালঘু অধিকার কমিশনের সদস্য ছিলেন তিনি। ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে ১৯৯৩ সালে প্রকাশিত পার্টি-তে যোগদান করেন তিনি। পরে ১৯৯৫ সালে দলটি ব্রাজিলিয়ান প্রগ্রেসিভ পার্টিতে আত্মপ্রকাশ করে। তখন থেকেই ব্রাজিলের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ মুখ হয়ে ওঠেন বলসোনারো। ২০০৩ সালে তিনি লেবার পার্টি-তে যোগ দিলেও দু'বছর পরে আবারও নিজের পুরনো দলে ফিরে আসেন। ২০১৬ পর্যন্ত নিজের পুরনো দলে থাকলেও, সেই দল কখনওই ব্রাজিলে জয়লাভ করতে পারত না। ফলে ২০১৬ সালে তিনি সোশ্যাল ক্রিশ্চান পার্টিতে যোগদান করেন। সেখান থেকেই পরিবর্তিত হয় বলসোনারোর ভাগ্য।

ব্রাজিলের অর্থনীতির অবস্থা তখন বেশ খারাপ। লুলার উত্তরসূরি দিলমা রুসেফের ওয়ার্কার্স পার্টির শাসন আমলে দেশটিতে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা যায়। এছাড়াও মূলধারার রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে করতে শুরু করে নানা অভিযোগ। পরিস্থিতির কথা বিচার করে ২০১৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন বলসোনারো। সহজাতভাবেই গণতন্ত্রের সমর্থক না হলেও, বিপরীতে ভালো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় সহজেই জয়লাভ করেন বলসোনারো। তিনি জানতেন, ব্রাজিলের সামরিক শাসনের ইতিহাস খুব একটা বেশি পুরনো নয়। ১৯৮৫ সালে শেষ হয়েছে ব্রাজিলের সামরিক শাসন। এখনো দেশের সেনাবাহিনী সরকারের একটা বড় জায়গা দখল করে রয়েছে। ফলে সেই জনপ্রিয়তাকে ভালোভাবেই কাজে লাগান তিনি।

কিন্তু, করোনা-পরবর্তী সময় থেকে পতন হতে শুরু করে বলসোনারো সাম্রাজ্যের। করোনাকালে চূড়ান্ত অব্যবস্থার পাশাপাশি শুরু হয় সারা দেশে নিয়মিত সহিংসতা। তিনি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই অস্ত্র-নিয়ন্ত্রণ আইনের ফাঁকফোকর আরও বিস্তৃত হতে শুরু করে। দেশটিতে এই মুহূর্তে ২০ লক্ষ মানুষের হাতে ব্যক্তিগত অস্ত্র রয়েছে। দেশটির পুলিশবাহিনী শক্তিশালী হলেও, ব্রাজিলের এত মানুষের হাতে সামরিক অস্ত্র গোটা ব্রাজিলে বিশৃঙ্খলার পরিচিতি তৈরি করে দেয়। অন্যদিকে, আমাজন ধ্বংসকারীর তকমাও লেগে যায় বলসোনারোর গায়ে, যা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে বলসোনারোর পতনকে।

লুলা-কে কেন বেছে নিল ব্রাজিলের জনতা
লুলা-র পরাজয় ঘটলে ব্রাজিলের জনগণের একটা বড় অংশ যে দেশের গণতন্ত্র এবং নির্বাচনী ব্যবস্থার ওপর থেকে আস্থা হারাবে, একথা আগেই বলেছিলেন বিশ্লেষকরা। তাঁদের মতে, ২০০৩ সালে লুলা যখন প্রথমবারের মতো ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট হন, তখন দেশের অর্থনীতি প্রবৃদ্ধির পথে এগিয়ে ছিল। এমনকী, অর্থনীতিকে ভালো অবস্থানে রেখে তিনি ২০১০ সালে বিদায় নিয়েছিলেন তিনি। ‌তাঁর উদারনীতি ব্রাজিলের সমাজব্যবস্থাকে দারুণভাবে প্রভাবিত করেছিল।

বিশ্বের সবথেকে বড় আমদানি বাজার হলো চিন। আর এই বাজারের সবথেকে বড় সরবরাহকারী ছিল ব্রাজিল। আকরিক লোহা থেকে শুরু করে মুরগি, চিনি, সবকিছুই ব্রাজিল থেকে চিনে রফতানি হতো। এই রপ্তানির লভ্যাংশের বড় অংশ সামাজিক উন্নয়ন কার্যক্রমে ব্যয় করেছিল লুলা প্রশাসন। তাঁর আট বছরের শাসন-আমলে ৪.৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল অর্থনীতির। ‌প্রায় ৪ কোটি মানুষ দারিদ্রের কশাঘাত থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছিলেন সেই সময়।

একযুগ পরে এখন ব্রাজিলের অর্থনীতি সম্পূর্ণরূপে অন্যরকম। রফতানি খাতে দুর্বলতা, ভঙ্গুর অর্থনীতি, সবকিছুই এখন ব্রাজিলের সামনে চ্যালেঞ্জ। করোনাভাইরাস-পরবর্তী সময়ে ব্রাজিলের পর্যটন শিল্পেও একটা ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ব্রাজিল অর্থনীতির পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী বছর বাজেট ঘাটতির পরিমাণ আরও বেশি বাড়তে পারে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। সেই কারণেই মূলত এমন মানুষকে ব্রাজিলের জনতা বেছে নিয়েছেন, যিনি অর্থনীতির উন্নতিসাধন আগেও ঘটিয়েছেন।

তবে লুলা-র ইমেজও যে একেবারে পরিচ্ছন্ন, তা কিন্তু নয়। ক্ষমতায় থাকাকালীন তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির এবং অনিয়মের নানা অভিযোগ উঠেছে। এমনকী, দুর্নীতি এবং অনিয়মের অভিযোগে বিচার হয়েছে তাঁর। একটা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত কারাবাস ভোগ করেছেন তিনি। তবে তাঁর আমলে দেশজুড়ে পরিচালিত সামাজিক কর্মসূচি আজকেও ব্রাজিলবাসীর মনে লুলা-র প্রতি সম্মান ধরে রেখেছে। সেই কারণেই ব্রাজিলের রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা, ব্রাজিলের দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনৈতিক ব্যবস্থায় বলসোনারো-র থেকে লুলা হয়ে উঠেছেন ভালো বিকল্প।

More Articles