পোলিও, হাম অথবা কোভিড ভ্যাকসিন, জানেন কবে থেকে ভারতে চালু হল জাতীয় টিকা দিবস?

National vaccination day 2023 : কোনও ব্যক্তি এবং সম্প্রদায়কে সংক্রামক রোগের হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে টিকাই, তাই অন্ধবিশ্বাস নয়, বেছে নিন বিজ্ঞানকে

ক্যালেন্ডার বলছে আজ ১৬ মার্চ, অর্থাৎ জাতীয় টিকা দিবস। টিকার গুরুত্ব যে ঠিক কতখানি তা অবশ্য নতুন করে বলে দেওয়ার অপেক্ষা রাখে না। সম্প্রতি করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে বিশ্ব জুড়ে তোলপাড় চলেছে। শুধু কোভিড কেন, একটা শিশুর জন্মের পর থেকেই নিয়মমাফিক চলে বেশ কিছু টিকাকরণ। এবং এই টিকাই হল শিশুর সুস্থ জীবনের অন্যতম চাবিকাঠি। তাই নিয়ম করে পোলিও, হেপাটাইটিস বি হাম, রুবেলা, টিটেনাস ইত্যাদি বিভিন্ন প্রকার টিকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে সরকার থেকে। একটা সময় ছিল, আমাদের দেশেই বহু শিশু ভুগতো পোলিও রোগে, টিকা আবিষ্কারের পর থেকে সেই চিত্রটা বদলেছে। তাই টিকার প্রয়োজনীয়তাকে স্মরণ করেই বছরের এই একটা দিন জাতীয় টিকা দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

মূলত, পালস পোলিও টিকাদান কর্মসূচির সূচনাকে স্মরণকরেই প্রতি বছর ১৬ মার্চ এই দিবসটি পালিত হয় এ দেশে। কোনও ব্যক্তি এবং সম্প্রদায়কে সংক্রামক রোগের হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে টিকাই। এই বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে আবিষ্কৃত এই টিকাই পোলিও, হাম, রুবেলা এবং টিটেনাসের মতো রোগকে প্রাণঘাতী হওয়া থেকে বিরত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছ। এই জাতীয় টিকা দিবস টিকা নেওয়ার অনুস্মারক হিসাবে কাজ করে এবং ব্যক্তি ও সমাজের জন্য টিকার মূল সুবিধাগুলিকে তুলে ধরে।

আরও পড়ুন - চুপি চুপি কেড়ে নিতে পারে জীবন, কেন এত বাড়ছে নীরবে হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা?

জাতীয় টিকা দিবসের ইতিহাস

১৯৯৫ সালের ১৬ মার্চ, দীর্ঘদিনের অপেক্ষা এবং গবেষণার পর এ দেশে জাতীয় স্তরে চালু হয় পালস পোলিও টিকাকরণ। সেই থেকে ভারত সরকার ওই দিনটিকে স্মরণ করার জন্য প্রতি বছর জাতীয় টিকা দিবস হিসাবে পালন করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) গ্লোবাল পোলিও নির্মূল উদ্যোগের অংশ হিসাবে ১৯৯৫ সালের এই দিনে ওরাল পোলিও ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছিল, যা আবিষ্কারের কাজ শুরু হয়েছিল ১৯৮৮ সালে। শূন্য থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুদের জনস্বাস্থ্য কেন্দ্রে মৌখিকভাবে দুই ফোঁটা টিকা গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে বর্তমানে। প্রসঙ্গত, পোলিও টিকাকরণ কর্মসূচির ইতিবাচক ফল স্বরূপ ২০১৪ সালের ২৭ মার্চ WHO ভারতকে সম্পূর্ণ পোলিও-মুক্ত বলে ঘোষণা করে।

জাতীয় টিকা দিবসের তাৎপর্য

“আপনি যদি আপনার শিশুকে পোলিও থেকে বাঁচাতে চান, তাহলে অবশ্যই যোগ দিন টিকাকরণ কর্মসূচিতে, অন্ধবিশ্বাস নয়, বেছে নিন বিজ্ঞানকে”, বলেছিলেন কার্ল সেগান। অপরদিকে শিশু থেকে শুরু করে যে কোনও বয়সীদের ক্ষেত্রে সংক্রামক রোগ প্রতিরোধে টিকাকরণের গুরুত্ব নিয়ে সচেতন করেন ব্র্যাড ম্যাককে, থেরেসা ট্যাম, সেথ বার্কলে, জেফরি ক্লুগার সহ বিশিষ্ট গবেষকরা। তাই নতুন করে বলে দেওয়ার অপেক্ষা রাখে না যে কোন সংক্রামক রোগের বিরুদ্ধে টিকাই হতে পারে মহৌষধি। আর এই টিকা আবিষ্কারের পিছনে জড়িয়ে থাকা সমস্ত কর্মী এবং গবেষকদের কাজকে সম্মান জানাতেই ভারত সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় টিকা দিবসের সূচনা করা হয়। পাশাপাশি এই দিনটির মাধ্যমে সামগ্রিক টিকাকরণের গুরুত্ব কে আরো স্পষ্ট করে তুলে ধরা হয় সাধারণ মানুষের কাছে।

More Articles