ইন্দিরাকে প্রধানমন্ত্রী করেছিলেন, ইন্দিরার হাতেই শেষও হয়ে যান! কে ছিলেন কামরাজ?

Indira Gandhi Vs Kumaraswami Kamaraj: ইন্দিরাকে প্রধানমন্ত্রী করলেও ক্ষমতার রাশ নিজের হাতে রাখতে চেয়েছিলেন মাদ্রাজের 'বৃদ্ধ সিংহ' কামরাজ।

উন্নয়নের মাপকাঠিতে দক্ষিণি রাজ্যগুলি দেশের অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় অনেকটা এগিয়ে। এই উন্নতির মূলে ছিলেন এমন এক ব্যক্তি যিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ হেলায় ছেড়ে দেন। দলকে সংগঠিত করবেন বলে ছেড়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর পদও। নিজে স্কুলে যেতে পারেননি বলে পণ করেছিলেন রাজ্যের সকল শিশুর শিক্ষা সুনিশ্চিত করবেন। পরবর্তীকালে মহাত্মা গান্ধির দ্বারা অনুপ্রাণিত হয় রাজনীতিতে আসেন এবং অচিরেই স্নেহধন্য হয়ে ওঠেন পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর। পরবর্তীকালে নেহরুর কন্যা অর্থাৎ ইন্দিরা গান্ধির রাজনৈতিক আত্মপ্রকাশ ঘটে তাঁর হাত ধরেই। আর ভবিতব্য এমনই যে, ইন্দিরার হাতেই শেষ হয় এই ব্যক্তির রাজনৈতিক জীবন। ভারতীয় রাজনীতির বিস্তৃত নায়ক কুমারস্বামী কামরাজের জীবন এক আশ্চর্য কাহিনি।

১৯০৩ সালে মাদ্রাজের এক দরিদ্র কৃষক পরিবারে জন্ম হয় কামরাজের। ১৯৩০-এর দশকে রাজনীতিতে প্রবেশ এবং ১৯৫৪ সালে তৎকালীন মাদ্রাজের মুখ্যমন্ত্রী হন তিনি। সরকারি স্কুলে বিনামূল্যে স্কুল ইউনিফর্ম, বইখাতা এবং মিড-ডে মিল প্রকল্প চালু করা ছিল তারই মস্তিষ্কপ্রসূত। টানা তিনটি বিধানসভা নির্বাচন জিতে যেখানে অন্যান্য নেতারা রাজ্যের গণ্ডি পেরিয়ে জাতীয় স্তরে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে চান, কামরাজ ছিলেন ব্যতিক্রমী।

১৯৬৩ সালে অগাস্ট মাসের শেষার্ধে চেন্নাই এসেছিলেন জওহরলাল নেহরু। সেই সময় এক বিকেলে চেন্নাইয়ের রাজভবনে নেহরুর সঙ্গে কথা বলতে যান কামরাজ। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা চলে বৈঠক। সেই বৈঠকে এমন কিছু ছক কষা হয়েছিল যা ভারতীয় রাজনীতির গতিপথ পাল্টে দেয়। বিধানসভা নির্বাচনে জিতেও কামরাজ বুঝতে পেরেছিলেন রাজ্যে দল ক্রমশ ক্ষয়িষ্ণু হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে সংগঠনের কাজ করতে ইচ্ছুক ছিলেন কামরাজ। মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরিয়ে তাঁকে রাজ্যের দলীয় সভাপতি করে দেওয়ার আর্জি রাখেন তিনি। কামরাজ নেহরুকে জানান শুধু মাদ্রাজই নয়, বরং সারা দেশজুড়ে বিভিন্ন রাজ্যে পার্টির অবস্থা এই রকমই। দলের প্রভাবশালী নেতারা ক্রমশ ক্ষমতালোলুপ এবং স্বার্থসিদ্ধির জন্যে তৎপর হয়ে উঠেছেন। সহজ কথায়, অতি প্রভাবশালী নেতাদের ডানা ছেঁটে ফেলার প্রস্তাব দিয়েছিলেন কামরাজ। কামরাজের কথায় সায় দেন নেহরু। যথারীতি প্রস্তাব পাস হয়ে যায় কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির মিটিংয়ে। ফলস্বরূপ ১৯৬৩ সালে গান্ধি জয়ন্তীর দিন কামরাজসহ দেশের ছয়জন মুখ্যমন্ত্রী এবং ছয়জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ইস্তফা দেন। এই নেতাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন লাল বাহাদুর শাস্ত্রী, মোরারজি দেশাই, বাবু জগজীবন রাম, বিজু পট্টনায়ক, চন্দ্রকান্ত পাটিল, অতুল্য ঘোষ, চন্দ্রভানু গুপ্তরা। পরবর্তীকালে রাজনীতি বিশেষজ্ঞরা এই ঘটনাকে 'কামরাজ প্ল্যান' বলে ডাকেন।

লাল বাহাদুর শাস্ত্রী, কামরাজ এবং জওহরলাল নেহরু

আরও পড়ুন- সত্যিই লম্পট, নিষ্ঠুর নন? আসলে কতটা নিরীহ, উদার ছিলেন সিরাজদৌলা?

খাতায়-কলমে পরিকল্পনাটি দেখলে মনে হবে, সংগঠনকে আরও স্বচ্ছ এবং মজবুত করার চেষ্টা করছিলেন কামরাজ। কিন্তু আদতে এই কামরাজ প্ল্যানের মূল লক্ষ্য ছিল জওহরলাল নেহরুর রাজনৈতিক উত্তরাধিকারিকে সুরক্ষিত রাখা। মনে করা হয়, ইন্দিরা গান্ধির রাজনৈতিক অভিষেকের পথ মসৃণ করতেই গৃহীত হয়েছিল কামরাজ প্ল্যান। জওহরলাল নেহরু এবং কামরাজের আসল অভিসন্ধির কথা কিছুটা হলেও বুঝতে পেরেছিলেন আচার্য্য জে বি কৃপালিনী। এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে তিনি সংসদে আনেন স্বাধীন ভারতের প্রথম অবিশ্বাস প্রস্তাব। স্বাভাবিকভাবেই বিপুল সংখ্যাবলের কারণে সেই অবিশ্বাস প্রস্তাব খারিজ হয়ে যায়। এই ঘটনার কয়েক মাসের মধ্যেই মৃত্যু হয় প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর। একই সঙ্গে কংগ্রেসে শুরু হয়ে যায় ক্ষমতার টানাপড়েন। কে হবেন দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী?

কংগ্রেসের অন্দরে মূলত তিনটি নাম উঠে আসে প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য। প্রথম জন ছিলেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা তথা তৎকালীন বিদেশমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রী। দ্বিতীয় জন ছিলেন মোরারজি দেশাই এবং তৃতীয় প্রার্থী নেহরুর কন্যা ইন্দিরা গান্ধি। তবে ইন্দিরা প্রথমেই নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর দৌড় থেকে সরিয়ে নেন। পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ কামরাজ জানতেন মোরারজি দেশাইকে একবার প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসালে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরানো মুশকিল হবে। তাই সবদিক বিবেচনা করে লাল বাহাদুর শাস্ত্রীকে ভারতের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী করার সিদ্ধান্ত নেন কামরাজ। কথিত আছে, কামরাজ লাল বাহাদুর শাস্ত্রীকে প্রশ্ন করেছিলেন, আপনার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী কে হবে? জবাবে শাস্ত্রী বলেছিলেন, "যদি আমি আমার পাঁচ বছরের কার্যকাল পুরো করতে না পারি তাহলে ইন্দিরা গান্ধি। আর যদি করে ফেলি তাহলে হয় মোরারজি দেশাই নয় যশবন্তরাও চৌহান।" বাস্তবে হয়েছিলও তাই।

১৯৬৬ সালে লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর মৃত্যুর পর কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে। মোরারজি দেশাই যেকোনও মতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন। বাধ্য হয়ে কংগ্রেস সংসদীয় দলে ভোটাভুটির প্রস্তাব দেন কামরাজ। ভোটাভুটি হয়। ফলাফলের দিন সকাল থেকেই ভিড় জমতে থাকে দিল্লিতে কংগ্রেসের সদর দপ্তরে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে সাংবাদিক এবং কর্মীদের ভিড়। অবশেষে জনৈক কংগ্রেস নেতা বেরিয়ে এসে ঘোষণা করেন, 'Its the girl'। অর্থাৎ কংগ্রেস সংসদীয় দলের ভোটে জয়ী হয়েছেন ইন্দিরা। ১৯৬৬ সালের ২৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নেন ইন্দিরা গান্ধি। শোনা যায়, এই ভোটাভুটির পূর্বে অতুল্য ঘোষ কামরাজকে অনুরোধ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য। জবাবে কামরাজ বলেছিলেন, "No Hindi, No English, How?" ভাষার দোহাই দিয়ে প্রধানমন্ত্রী না হলেও সফলভাবে নিজের পছন্দের প্রার্থীকেই প্রধানমন্ত্রী করেছিলেন কামরাজ। তবে কয়েক বছরের মধ্যেই এটি তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল বলে প্রমাণিত হয়।

১৯৬৬ সালে প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার পর ইন্দিরা এবং কামরাজ

ইন্দিরাকে প্রধানমন্ত্রী করলেও ক্ষমতার রাশ নিজের হাতে রাখতে চেয়েছিলেন মাদ্রাজের 'বৃদ্ধ সিংহ' কামরাজ। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী হয়েই ইন্দিরা ঠিক করেছিলেন কংগ্রেসের এই বৃদ্ধমণ্ডলীকে রাজনীতি থেকে নির্বাসন দেওয়ার। ইন্দিরা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার এক বছরের মধ্যেই কামরাজের সঙ্গে তাঁর মনোমালিন্য শুরু হয়। সেবছর কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সঙ্গে আলোচনা না করেই ডলারের সাপেক্ষে ভারতীয় টাকার অবমূল্যায়নের সিদ্ধান্ত নেন ইন্দিরা। ফলে দেশে বৃদ্ধি পায় মুদ্রাস্ফীতি এবং ক্ষুব্ধ হন কামরাজ। কিন্তু শিয়রে ছিল ১৯৬৭ লোকসভা নির্বাচন। তাই চুপ থাকার সিদ্ধান্তই নেন কামরাজ। সেই লোকসভা নির্বাচনে অত্যন্ত খারাপ ফলাফল করে কংগ্রেস। ২৮৫ আসন জিতে কোনওরকমে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় তারা। পঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, বিহার-সহ একাধিক রাজ্যে পর্যুদস্ত হয় কংগ্রেস। ভোটে দাঁড়িয়ে নিজেই হেরে যান কামরাজ। ডিএমকে-র এক ছাত্রনেতার কাছে হারতে হয় তাঁকে। ভোটের আগে তিনি একটি কুখ্যাত বয়ান দিয়েছিলেন সংবাদমাধ্যমে। অতি-আত্মবিশ্বাসী কামরাজ বলেছিলেন, "আমি কামরাজ। আমি বিছানায় শুয়ে শুয়েও ভোট জিততে পারি।"

'৬৭-র নির্বাচনের পর কংগ্রেসের অন্দরে সমীকরণ ক্রমশ পাল্টাতে থাকে। নামমাত্র সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ায় দিল্লিতে কামরাজের সিন্ডিকেটের সামনে মাথা নত করতে হয় ইন্দিরাকে। সিন্ডিকেটের নির্দেশে, মোরারজি দেশাইকে উপ-প্রধানমন্ত্রী করতে বাধ্য হন ইন্দিরা গান্ধি। তবে বছর দুয়েকের মধ্যেই নিজের পুরনো রূপে ফেরেন তিনি। এবার সরাসরি 'ওল্ড গার্ড'-দের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা। ১৯৬৯ সালের মে মাসে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য কংগ্রেসের তরফে নীলম সঞ্জীব রেড্ডির নাম প্রস্তাবিত হয়। বর্ষীয়ান এই কংগ্রেস নেতাকে রাষ্ট্রপতি করতে চেয়েছিলেন কামরাজ। ইন্দিরা শুরুতে কিছু না বললেও শেষ মুহূর্তে তৎকালীন উপরাষ্ট্রপতি ভি ভি গিরি-কে 'ইন্ডিপেন্ডেন্ট ক্যান্ডিডেট' হিসেবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে নামিয়ে দেন। নির্বাচনের আগের রাতে সকল কংগ্রেসিদের উদ্দেশ্যে ইন্দিরা গান্ধি ঘোষণা করেন, "আপনারা অন্তরাত্মার আওয়াজে ভোট দিন"। এই 'অন্তরাত্মার আওয়াজে' পরাজিত হতে হয় নীলম সঞ্জীব রেড্ডিকে এবং ইন্দিরার মনোনীত প্রার্থী ভি ভি গিরি ভারতের রাষ্ট্রপতি হন।

আরও পড়ুন- ব্রেকফাস্টে খেতেন নেতাদের, জ্যোতি বসু বলতেন ‘পাগলা কুকুর’! কে ছিলেন আসলে টি এন শেষণ?

কামরাজের চাপেই মোরারজি দেশাইকে উপপ্রধানমন্ত্রী করেন ইন্দিরা

এই ঘটনায় চূড়ান্ত ক্ষুব্ধ হন কামরাজ, নিজলিঙ্গপ্পা, অতুল্য ঘোষরা। ১৯৬৯ সালের নভেম্বর মাসে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে দল থেকে বহিষ্কৃত করা হয় ইন্দিরাকে। তবে এরকম কিছু হতে পারে ভেবে আগে থেকেই ঘুঁটি সাজিয়ে রেখেছিলেন ইন্দিরা। দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েও প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেননি তিনি। স্বভাবতই সংসদে তাঁকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে নির্দেশ দেন স্পিকার। ২৮৫ জন কংগ্রেস সাংসদের মধ্যে ২২৯ জন কংগ্রেস সাংসদ ভোট দেন ইন্দিরার পক্ষে। সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য প্রয়োজন ছিল কমপক্ষে ২৬২টি ভোট। তখন ইন্দিরাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন তামিলনাড়ুর তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী করুণানিধি এবং বামনেতা জ্যোতি বসু। ডিএমকে এবং বামফ্রন্টের সাংসদরা ইন্দিরাকে সমর্থন করেন। নির্দল সাংসদরাও ইন্দিরাকেই সমর্থন করেন। এরপর কংগ্রেসে আড়াআড়ি দু'টি ভাগ হয়ে যায়। কামরাজসহ ওল্ড গার্ডরা থেকে যান কংগ্রেস অর্গানাইজেশন অর্থাৎ Congress (O)-তে। অন্যদিকে ইন্দিরার নেতৃত্বে তৈরি হয় কংগ্রেস (রুলিং) কিংবা Congress (R)।

'৭১-এর নির্বাচনে বিপুল ভোটে জেতে কংগ্রেস

১৯৭১ সালের লোকসভা নির্বাচনে কামরাজকে রাজনৈতিকভাবে শেষ করার জন্য মোক্ষম চাল দেন ইন্দিরা। তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী করুণানিধির সঙ্গে সরাসরি জোট বাঁধেন তিনি। তামিলনাড়ুতে একদিকে কংগ্রেস (আর) এবং ডিএমকে অন্যদিকে কংগ্রেস অর্গানাইজেশন। সেবার লোকসভা নির্বাচনে তামিলনাড়ুতে মাত্র সাতটি আসনে লড়েছিল কংগ্রেস (আর)। বাকি আসন ছেড়ে দেওয়া হয় ডিএমকে-কে। ইন্দিরার এই চাল আক্ষরিক অর্থেই মাস্টারস্ট্রোক ছিল। সারাদেশে কংগ্রেস অর্গানাইজেশনের সব প্রার্থী নির্বাচন হেরে যায়, জেতেন শুধুমাত্র কামরাজ। কংগ্রেস অর্গানাইজেশনের একমাত্র সাংসদ হিসেবে লোকসভায় যান তিনি। এই ঘটনার পর শুরু হয় 'ঘর ওয়াপসি'। আস্তে আস্তে ইন্দিরা শিবিরে ফিরে যেতে শুরু করেন সকলে। এই সময় ইন্দিরা গান্ধি নিজে গিয়ে কামরাজকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দেন। কামরাজের মতো অভিজ্ঞ নেতাকে ক্যাবিনেটে সামিল করতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু রাজনৈতিক সন্ধি করতে রাজি ছিলেন না কামরাজ। এরপর সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে আসতে থাকেন কামরাজ। দেশের অন্যতম শক্তিশালী এক নেতা ক্রমশ এক বিস্মৃত নায়কে পরিণত হন। ১৯৭৫ সালের ২ অক্টোবর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন কুমারস্বামী কামরাজ। লক্ষণীয়, ঠিক ১২ বছর আগে অর্থাৎ ২ অক্টোবর ১৯৬৩ সালে গৃহীত হয়েছিল কামরাজ প্ল্যান, যা প্রশস্ত করে দিয়েছিল ইন্দিরার রাজনৈতিক পথ। আর এই ইন্দিরার হাতেই শেষ হয় তাঁর রাজনৈতিক জীবন।

More Articles