পাক্কা এক বছর পর মেটানো যাবে দাম, ভারতের কোথায় পাওয়া যাচ্ছে EMI-তে আম কেনার সুযোগ?

EMI for Mangoes: দেশের মধ্যে এই প্রথম, জানেন কিস্তিতে আমের দাম শোধ করার সুযোগ দিচ্ছে কারা?

ফেলো কড়ি মাখো তেল নয়, বরং ঠিক উল্টো! জিনিস নিয়ে বাড়ি চলে যান, দাম মেটানোর কথা পড়ে ভাবলেও চলবে! বর্তমান সময় অবশ্য এই ধার বাকির একটা পোশাকি নাম এসেছে বাজারে, যাকে বলে EMI। Equated monthly installment অর্থাৎ মাসে মাসে টাকা পরিশোধ করা বলতে যা বোঝায়। আজকাল বাড়ি, গাড়ি, দামী সোনার গয়না, অথবা কোনও ইলেকট্রনিক্স দ্রব্যাদি কেনার ক্ষেত্রে অবশ্য এই প্রথা এখন বেশ জনপ্রিয়। এতে একসঙ্গে অনেকটা টাকা মেটানোর ঝামেলা নেই, সময় সুযোগ মতো আপনার আয় এবং ব্যয়ের সমতা রেখে মাসিক কিস্তিতে দাম মেটালেই চলবে। তবে কিনা এই একই নিয়ম প্রযোজ্য হচ্ছে এবার আমের ক্ষেত্রেও?

শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি, এবার আমও মিলবে EMIতে। টিভি, ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিনের ক্ষেত্রে যদি চলে পারে EMI পরিষেবা, তবে আমের ক্ষেত্রে কেন নয়? মূলত এই প্রশ্নকে সামনে রেখেই অভিনব পদক্ষেপ নিয়েছেন পুনের এক ব্যবসায়ী। তাঁর রী অভিনব ঘটনার কথা সামনে আসতেই নেট মাধ্যমে রাতারাতি ভাইরাল হয়ে যায় বিষয়টি। সারা দেশেই এখন এই বিশেষ আম বিক্রি ঘিরে আলোচনা তুঙ্গে।

প্যাচপ্যাচে ঘাম, হাঁসফাঁস পরিস্থিতি, হাজারটা রোগ, মাত্রারিক্ত বিদ্যুতের বিল গরমকালের এই সবকটা খারাপ অনুষঙ্গের পাশে একমাত্র যেটা মনপসন্দ, সেটা হল আম। সবকিছু খারাপকে উপেক্ষা করা যায় কেবল এই একটা স্বাদের জন্যই। আম নিয়ে অবশ্য জনতার চিরকালের আদিখ্যেতা। তাই আমজনতা শব্দবন্ধের ব্যবহারও বেশি। কিছুদিন আগেই মালদহের বাজারে ঝড় তুলেছিল শীতের আম! শীতের কমলালেবুর পাশেই জাঁকিয়ে বসেছিল খোদ গরমকালের ফলটি। একটা আম বিকিয়েছিল কড়কড়ে একশো টাকা দামে। কেজি কেজি কেনার সুযোগ না থাকলেও অন্তত এক পিস আম কিনে মন ভরিয়েছিলেন আমবাঙালি।

আরও পড়ুন - গাছ পাহারা দেয় নিরাপত্তারক্ষী এবং কুকুর! জানেন বিশ্বের সবচেয়ে দামী আম কোনটি?

এদিকে চৈত্র মাস প্রায় শেষের পথে, গরমের দাপটে অবশ্য বৈশাখ মাস বলেই ভ্রম হতে পারে। ইতিমধ্যেই সন্ধের দিকে দু এক দিন কালবৈশাখী সদৃশ কালচৈত্রীর দেখা মিলেছে বাংলায়। আমের ফলনও হয়েছে বেশ ভালোই। গাছে গাছে ঝুলছে কাঁচা আম। বাজারেও ভরে গিয়েছে সবুজ আম। আর কয়েকদিনের মধ্যেই হিমসাগর, ল্যাংড়া, ফজলি, বোম্বাই, পেয়ারাফুলি, গোলাপখাস ইত্যাদি নামে আমের বাজার ছেয়ে যাবে নিশ্চিত। কিন্তু ভারতের বাজারে আম কেনার এতদিনের রীতিতেই এবার আস্তে চলেছে নয়া বদল।

পুনের বিখ্যাত গুরুকৃপা ট্রেডার্স অ্যান্ড ফ্রুট প্রডাক্টসের গৌরব সনসের থেকে আম কেনার ক্ষেত্রে শুরু হল ইএমআই পরিষেবা। তবে এই পরিষেবা মিলবে কেবল দামী আলফানসো আমার ক্ষেত্রেই। প্রসঙ্গত, মহারাষ্ট্রের কোঙ্কণ এলাকার দেবগড় এবং রত্নগিরির আলফানসো বা হাপুস আম বিশ্ববিখ্যাত। ফলে ভারতের বিভিন্ন এলাকা তো বিতেই এমনকী বিশ্বের অন্যান্য প্রান্ত থেকেও প্রতিবছরই বরাত আসে। এবার সেই ব্যবসাকে সম্বল করে নতুন পথ নিলেন পুনের এই ব্যবসায়ী সংস্থা। EMI চালু করলে একদিকে যেহেতু একসঙ্গে টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে না তাই যেমন অনেক মধ্যবিত্তরাই এই আন কেনার সুযোগ পাবেন তেমনই পাশাপাশি বিক্রিও বেড়ে যাবে। তবে এ ক্ষেত্রে একটি শর্ট আছে, কমপক্ষে পাঁচ হাজার টাকার আম অবশ্যই কিনতে হবে, তবে পাওয়া যাবে EMI এর সুবিধা।

উল্লেখ্য, বর্তমানে খুচরো বাজারে এক ডজন আলফানসো আমের মূল্য ৮০০ থেকে ১৩০০ টাকা। যেভাবে কিস্তিতে অন্যান্য জিনিস কেনা হয় সেভাবেই পুনের এই দোকান থেকে কেনা যাবে আলফানসো আম। ক্রেডিট, ডেবিট কার্ড অথবা অনলাইন ট্রানজেকশনের মাধ্যমে কিনতে হবে এই আম। জানা গিয়েছে, আম কেনার পর ৩, ৬ বা ১২ মাসের কিস্তিতে শোধ করা যাবে দাম। তবে ভারতের বাজারে আম নিয়ে এমন ঘটনা যে এই প্রথম তা বলাই বাহুল্য।

More Articles