বারেবারে বিপদসঙ্কেতেও নড়েনি টনক, টাইটানিকের শেষ রাত এক আস্ত দুঃস্বপ্ন

Sinking of the RMS Titanic: হঠাৎই টাইটানিকের ফাস্ট অফিসার মুর্ডক জাহাজটি বাঁ দিকে চালানোর অর্ডার দিয়ে দেন, আর বাঁ দিকেই ছিল ওই আইসবার্গ। ফলে আর বাঁচানো গেল না জাহাজটিকে।

টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে শেষমেশ সেই টাইটানিক-পরিণতি। পাঁচ যাত্রীকে নিয়ে টাইটানিকের মতোই আটলান্টিক মহাসাগরে সলিল সমাধি হলো ওশান গেটের পরীক্ষামূলক ডুবোজাহাজ টাইটানের। হিসাব মতো এতক্ষণে অক্সিজেন শেষ। তাই ধরে নেওয়া যেতে পারে ওই ডুবোজাহাজের ভিতরেই চিরঘুমে ঘুমিয়ে পড়েছেন অভিযাত্রীরা। বৃহস্পতিবার রিমোট কন্ট্রোলড একটি যান টাইটানিকের বো (সূচালো অগ্রভাগ)-এর থেকে ৫০০ মিটার দূরে একটি ডুবোজাহাজের ধ্বংসাবশেষ চিহ্নিত করে। ওশান গেটের বক্তব্য অনুযায়ী, ওই ধ্বংসাবশেষ টাইটান সাবমেরিনেরই। কিন্তু সব কিছুর পরেও একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সকলের মাথায়, কেন সেই অভিশপ্ত জাহাজটিকে দেখার জন্য এত উতলা হলেন ওই পাঁচ ধনকুবের? কেন এভাবে একটা পরীক্ষামূলক সাবমেরিনে চড়ে এতটা সমুদ্রের এতটা গভীরে যেতে রাজি হলেন তারা? সর্বোপরি, কেন এতগুলো বছর কেটে যাওয়ার পরেও এখনও সবাইকে প্রলুব্ধ করে টাইটানিক? কী ঘটেছিল আসলে ওই রাতে টাইটানিকের সঙ্গে? রিলের সঙ্গে রিয়েলের মিল কতটা? নাকি সবটাই বানানো?

টাইটানিক কিন্তু একমাত্র জাহাজ নয়, যা প্রথম যাত্রাতে ডুবে গিয়েছিল। এর আগেও বহু জাহাজই প্রথম যাত্রাতেই অতল সমুদ্রে ডুবে গিয়েছিল। আর তাতে প্রাণহানিও কম হয়নি। হিমশৈলের সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে ডুবে যাওয়া জাহাজের তালিকাতে টাইটানিক ছাড়াও আরও অনেক জাহাজ রয়েছে। কিন্তু সেগুলির কথা ক'জনই বা মনে রেখেছে! কিন্তু সবার স্মৃতিতে আজও অক্ষয় টাইটানিক। এই জাহাজ ও তাঁর ভরাডুবি নিয়ে তৈরি হয়েছে একাধিক সিনেমা। লেখা হয়েছে অজস্র বই। ১৯৫৫ সালে সমুদ্রের অতলে তলিয়ে যাওয়া টাইটানিককে নতুন করে ফিরিয়ে এনেছিলেন জন ওয়ালটার লর্ড। 'আ নাইট টু রিমেম্বার' বইয়ের মাধ্যমে নতুন জীবন দিয়েছিলেন তিনি টাইটানিককে। তবে সারা বিশ্বে টাইটানিকের নাম ছড়িয়ে দেওয়ার কৃতিত্ব জেমস ক্যামেরনেরই প্রাপ্য। ১৯৯৭ সালে তিনি যদি টাইটানিক ছবিটি না-তৈরি করতেন, তাহলে হয়তো এই জাহাজের ব্যাপারে এত কিছু জানতেই পারতেন না মানুষ।'

আরও পড়ুন: দৈব না দুর্বিপাক! টাইটানিকের অতল রহস্যে হারাল টাইটানও

টাইটানিক নিয়ে এত গবেষণা, এত সমালোচনার পরেও জাহাজটিকে নিয়ে রহস্যের যেন কোনো শেষ নেই। অলিম্পিক, নাকি টাইটানিক, সেই বিবাদ তো রয়েছেই। কিন্তু তার থেকেও বড় রহস্য, ১৯১২ সালের সেই রাতের ঘটনা। কী হয়েছিল সেই রাতে? কীভাবে ৭০০ মানুষ বেঁচে ফিরলেন ওই ডুবন্ত জাহাজ থেকে? আর কীভাবেই বা মাত্র ২ ঘন্টা ৪০ মিনিটেই ডুবে গেল 'আনসিংকেবল' টাইটানিক? জাহাজের ক্যাপ্টেন এবং অফিসাররা তখন কী করছিলেন? কেন আশেপাশে কোন জাহাজ ছিল না বাঁচানোর জন্য? কিছু কিছু বিষয় এখনো কল্পনা প্রসূত হলেও, কিছুটা সত্যি এখন আমরা জানি। তাহলে চলুন একেবারে শুরু থেকেই শুরু করা যাক।

১৯০৯ সালের ৩১ মার্চ ব্রিটিশ শিপিং কোম্পানি হোয়াইট স্টার লাইনের মালিকানায় প্রথম শুরু হয় টাইটানিকের নির্মাণকাজ। ব্রিটেনের বেলফাস্টের হারলান্ড উলফ জাহাজ নির্মাণ কেন্দ্রে তৈরি হয়েছিল এটি। এই জাহাজটি ডিজাইন করেন আয়ারল্যান্ডের সেই সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় শিপ ডিজাইনার উইলিয়াম পিরি। যৌথ ভাবে টাকা ঢেলেছিল ইন্টারন্যাশনাল মার্চেন্টাইল মেরিন কর্পোরেশন ও মার্কিন ধনকুবের জন পিয়ারপন্ড মরগান। রাতারাতি নয়। তৈরি হয়ে যাওয়ার পর দীর্ঘ চার বছর সময় নেওয়া হয়েছিল। শেষমেশ ১৯১২ সালের ৩১ মার্চ টাইটানিককে সমুদ্রের বুকে ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয় হোয়াইট স্টার লাইন। টাইটানিকের পুরো নাম ছিল রয়াল মেল শিপ অর্থাৎ আরএমএস টাইটানিক।

টাইটানিককে এমনভাবেই তৈরি করা হয়েছিল, যাতে তা সমস্ত ধরনের ঝড় এবং জলোচ্ছ্বাসের মধ্যে দিয়েও সমুদ্রের বুক চিতিয়ে চলতে পারে। টাইটানিক তৈরিতে সেই সময় খরচ হয়েছিল ৭.৫ মিলিয়ন ডলার। স্বাভাবিক ভাবেই টাইটানিক নিয়ে মানুষের প্রত্যাশা ছিল চরমে। জাহাজটি সর্বাধিক ৩,৫৪৭ জন যাত্রী এবং নৌ-কর্মী বহন করতে পারত। জাহাজটির মোট দৈর্ঘ্য ছিল ৮৮৩ ফুট। ফার্স্ট ক্লাসের যাত্রীদের জন্য ছিল বিলাসবহুল ডাইনিং, যেখানে একসঙ্গে ৫৫০ জন বসে খাওয়ার ব্যবস্থা ছিল। এছাড়াও ছিল সুদৃশ্য সুইমিং পুল, জিমনেসিয়াম, ক্যাফে, স্কোয়াশ কোর্ট, আরও কত কি! বৈদ্যুতিক ব্যবস্থাও ছিল দুর্দান্ত। একটি বিশাল প্রধান ফটক, চারটি সুবিশাল চিমনি, কী ছিল না টাইটানিকে! চিমনিগুলির মধ্যে তিনটি ছিল সক্রিয় এবং চতুর্থটি ব্যবহার হতো বায়ু চালানোর জন্য। তার সঙ্গে ছিল সম্পূর্ণ ওয়াটার টাইট ১৬টি কম্পার্টমেন্ট। সাধারণ ভাবে এই কম্পার্টমেন্টগুলিতে জল ঢোকা সম্ভব নয়। কিন্তু যদি নিচের চারটি কম্পার্টমেন্টে কোনও ভাবে জল ঢুকেও যায়, সেক্ষেত্রেও এই জাহাজ খুব সহজেই চলতে পারবে। সেই কারণেই টাইটানিককে 'আনসিংকেবল' আখ্যা দেওয়া হয়েছিল।

এরপরেই এল সেই দিন। ১৯১২ সালের ১০ এপ্রিল, মোট ২,২২৩ জন যাত্রী নিয়ে ইংল্যান্ডের সাউথ আমটন বন্দর থেকে নিউইয়র্কের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করল টাইটানিক। প্রথম শ্রেণীতে ছিলেন ৩২৫ জন যাত্রী , দ্বিতীয় শ্রেণীতে ছিলেন ২৮৫ জন এবং তৃতীয় শ্রেণীতে ছিলেন ৭১০ জন। এছাড়া জাহাজকর্মী ছিলেন ৮৯৯ জন। এতগুলো মানুষ শুধুমাত্র সমুদ্রের রোমাঞ্চকর ভ্রমণের অভিজ্ঞতার জন্যই টাইটানিকের যাত্রী হতে চেয়েছিলেন। আসলে সেই সময় টাইটানিকের ভাড়া ছিল বেশ চড়ার দিকে। তা সত্ত্বেও ওই অভিজ্ঞতা জীবনে একবার পেতে চেয়েছিলেন যাত্রীরা। কারণ সেই সময় ব্রিটেন থেকে আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে আমেরিকায় পৌঁছনোটা খুব একটা সহজ ব্যপার ছিল না। সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসের ভয়ে ছোটখাটো জাহাজে এতটা দূরত্ব পাড়ি দেওয়ার প্রশ্নই উঠত না। এসব কারণেই টাইটানিকের যাত্রার খবরে গোটা বিশ্বে হইচই পড়ে দিয়েছিলেন। সেদিনে যাত্রীরা আসলে চেয়েছিলেন, ইতিহাসের পাতায় কোনও ভাবে তাঁদের নামটুকুও থেকে যাক।

এই যাত্রা শুরুর ঠিক চারদিন পরে অর্থাৎ ১৯১২ সালের ১৪ এপ্রিল দুপুর দুটোর দিকের ঘটনা। আমেরিকা নামে একটি জাহাজ রেডিওর মাধ্যমে টাইটানিককে এই মর্মে সংকেত দেয় যে তাদের যাত্রাপথের সামনে একটা বিশাল বড় হিমশৈল রয়েছে। মেসাবা নামের জাহাজ থেকেও রেডিওর মাধ্যমে একই সতর্কবাণী এসেছিল টাইটানিকের কাছে। সেই সময় টাইটানিকের রেডিও যোগাযোগ অপারেটরের দায়িত্বে ছিলেন জ্যাক পিলিপাস। কিন্তু দু'বার সতর্কবাণী আসার পরেও সেগুলি অপ্রয়োজনীয় মনে করে মূল কেন্দ্রে এই সতর্কবাণী পাঠাননি জাহাজকর্মীরা। আর সেখানেই হয়েছিল সবচেয়ে বড় ভুল।

টাইটানিকের দুর্ঘটনার মাত্র ৪০ মিনিট আগেও ক্যালফর্নিয়ান শিপের রেডিও অপারেটার আইসবার্গের ব্যাপারে জানাতে টাইটানিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন । কিন্তু টাইটানিকের রেডিও অপারেটর জ্যাক পিলিপাস ফের সেই বার্তাকে অপ্রয়োজনীয় মনে করে লাইন কেটে দেন। এতগুলো সংকেত আসার পরেও শুধুমাত্র অবহেলার কারণেই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে টাইটানিক। রাত তখন ১১:৪৫ মিনিট। টাইটানিক উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের বুক চিরে এগিয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ, একটা বিশাল বড় হিমশৈলের সঙ্গে ধাক্কা লাগলো টাইটানিকের। তাপমাত্রা তখন শূন্য ডিগ্রীর কাছাকাছি। জাহাজের ক্যাপ্টেন এডওয়ার্ড জন স্মিথ বুঝলেন, অনেকটা দেরি হয়ে গেছে।

হঠাৎই টাইটানিকের ফাস্ট অফিসার মুর্ডক জাহাজটি বাঁ দিকে চালানোর অর্ডার দিয়ে দেন, আর বাঁ দিকেই ছিল ওই আইসবার্গ। ফলে আর বাঁচানো গেল না জাহাজটিকে। টাইটানিকের একটা দিক ওই হিমশৈলের সঙ্গে প্রচন্ড ধাক্কা খেয়ে এগিয়ে যেতে শুরু করে। টাইটানিকের প্রায় ৯০ মিটার অংশে চিড় দেখা দেয়। এই সমস্ত সমুদ্রের উপরের তাপমাত্রা শূন্য ডিগ্রি থাকার কারণে এই হিমশৈল গুলির আট ভাগ জলের নিচে থাকে। ফলে এর বড় অংশ চোখে দেখা যায় না।

চারটি জলপূর্ণ কম্পার্টমেন্ট নিয়ে ভেসে চলার শক্তি ছিল জাহাজটি। কিন্তু পাঁচটি কম্পার্টমেন্টের মধ্যে ততক্ষণে জল ঢুকে গিয়েছে। যে বারোটি জল প্রতিরোধী দরজা ছিল, ভেঙে যায় সেগুলোও। ক্যাপ্টেন স্মিথ মূল নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রে এসে পুরো জাহাজটিকে বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি। গ্রেট ব্যাংক অফ নিউ ফাউন্ডল্যান্ডের সামনে ধীরে ধীরে আটলান্টিক মহাসাগরের নিচে তলিয়ে যেতে শুরু করে টাইটানিক। ১৫ তারিখ মধ্যরাত্রে অর্থাৎ বারোটার পর লাইফ বোট নিচে নামতে থাকে। যাত্রীরা নিজে নিজের প্রাণ বাঁচাতে নেমে পড়েন লাইফবোটে। কিন্তু লাইফবোট ছিল মাত্র ১৬ টি। আসলে সেখানেও ছিল খামতি। টাইটানিক জাহাজটিতে ৬৪ টি লাইফ বোট বহনের জায়গা ছিল, যা প্রায় ৪ হাজার যাত্রীর প্রাণ বাঁচাতে পারত। কিন্তু এত বেশি সংখ্যক লাইফ বোট নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেনি জাহাজ কর্তৃপক্ষ। ফলে মাত্র ১৬টি বোটে ১১৭৮ জন যাত্রীকেই বাঁচানো সম্ভব হয়েছিল।

দুর্ঘটনার পরে বিভিন্ন দিকে জরুরি বিপদ সংকেত পাঠিয়েছিল টাইটানিক। সেগুলোর মধ্যে যে শিপ সাড়া দিয়েছিল তাদের মধ্যে অন্যতম ছিল মাউন্ট টেম্পল। টাইটানিকের সবথেকে কাছে সেইসময় ছিল কার্পেথিয়া নামে একটি নৌকো। কিন্তু সেই সমস্ত জাহাজের নির্দিষ্ট জায়গায় আসতে অনেক বেশি সময় লাগে। একাধিকবার রকেট ছোড়ার চেষ্টাও হয়েছিল। কিন্তু তাতেও বিশেষ লাভ হয়নি। মোটামুটি রাত ২:০৫ নাগাদ জাহাজের সম্পূর্ণ মাথা একেবারে জলের কাছাকাছি চলে আসে। ২:১৭ মিনিটে জাহাজের সামনের দিকে ডেক পর্যন্ত জল ঢুকে যায়। শেষ পর্যন্ত টাইটানিক ছেড়ে বেরিয়ে যায় সবকটি লাইফ বোট। বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যুৎ সিস্টেম। বেশি ওজনের কারণে টাইটানিকের পিছনের অংশটা সামনে অংশ থেকে ভেঙে বেরিয়ে যায়। ফলে জাহাজের সম্মুখভাগটা আরও বেশি জলে তলিয়ে যেতে থাকে। বায়ুজনিত কারণে কিছুক্ষণ ভাসলেও জাহাজের পিছনেরঅংশও রাত ২:২০ মিনিট নাগাদ ধীরে ধীরে সমুদ্রের অতলে তলিয়ে যেতে শুরু করে।

অনেকেই মনে করেন, অভিশপ্ত ছিল টাইটানিক। দুর্ঘটনার পর ডেইলি স্টার পত্রিকার প্রতিবেদনে একের পর এক অশুভ ঘটনার কথা সামনে আসতে তাকে। জানা যায় জাহাজ নির্মাণের সময় রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয় ৮ শ্রমিকের। টাইটানিক যাত্রার বহুমূল্য টিকিট কেটেও শেষ পর্যন্ত টিকিট বাতিল করেছিলেন ৫০ জন যাত্রী। পরবর্তীকালে এরা সকলেই জানান, বিপদের সঙ্কেত কিছুটা হলেও আঁচ করতে পেরেছিলেন তাঁরা। টাইটানিকের উপরে অশুভ ছায়া রয়েছে, তা মালুম হয়েছিল আগেই। এখানেই শেষ নয়, যাত্রা শুরুর মুখেও বেশ কয়েক বার দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল টাইটানিক। গোড়াতেই এবার কয়লার গুদামে আগুনও লেগে গিয়েছিল নাকি!

আরও পড়ুন: আশ্চর্য মিল! টাইটানিকে মৃত দম্পতির বংশধরই নিখোঁজ ডুবোজাহাজ টাইটানের চালকের স্ত্রী!

আরও একটি রহস্যজনক ঘটনা ঘটেছিল যাত্রা শুরুর আগে। খ্রিস্টান প্রথা অনুসারে, কোনও জাহাজ সমুদ্রে প্রথমবার যাত্রা শুরু করার আগে জাহাজের গায়ে শ্যাম্পেনের বোতল ভাঙার রীতি ছিল সেসময়। মনে করা হত, এর ফলে জাহাজটি সমুদ্রের সবরকম বিপদ থেকে সুরক্ষিত থাকবে। তবে টাইটানিকের গায়ে শ্যাম্পেনের বোতল মারা হলেও সেই শ্যাম্পেনের বোতল নাকি ভাঙা যায়নি কোনও মতেই।

তবে এ সবের থেকেও বড় দুশ্চিন্তার ছিল মমির অভিশাপ। কারও কারও মতে, টাইটানিকে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল মিশরীয় একটি মমি। আর সেটি ছিল মিশরের সব থেকে অশুভ মমি। অনেকে মনে করেন এই মমির অভিশাপের কারণেই জাহাজের এমন পরিণতি। এমনকী একশো বছর পরেও ওই জাহাজ দেখতে আসছেন তাঁদেরকেও গ্রাস করেছে এই মমির অভিশাপই। যদিও এ সবটাই কল্পনা। এর স্বপক্ষে বা বিপক্ষে কোনও রকম প্রমাণ নেই এখনও পর্যন্ত। কিন্তু যেভাবে টাইটানিক ধ্বংস হয়েছিল এবং যেভাবে এতদিন বাদে টাইটানিক দেখতে গিয়ে ফের আরও একটি ডুবোজাহাজ তলিয়ে গেল, তাতে অনেকেই মনে করছেন, শুধু দুর্ঘটনা নয়, টাইটানিকের সঙ্গে ওতপ্রতো ভাবে জড়িয়ে রয়েছে কোনও এক সর্বনাশা অভিশাপ।

More Articles